৪৬৭৭

পরিচ্ছেদঃ ৬৫/৯/১৯. আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ আর ঐ তিন ব্যক্তির প্রতিও তিনি কৃপাদৃষ্টি করলেন যাদের ব্যাপার (তাওবাহ) স্থগিত রাখা হয়েছিল। এমনকি যখন যমীন প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের উপর সংকুচিত হয়ে গেল এবং তাদের জীবনও তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে পড়ল। আর তারা বুঝতে পারল যে, আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া ব্যতীত কোন আশ্রয় পাওয়ার উপায় নেই, তখন তিনি তাদের প্রতি কৃপাদৃষ্টি করলেন, যাতে তারা তাওবাহ করে। নিশ্চয় আল্লাহই মহান তাওবাহ ক্ববূলকারী, পরম দয়ালু। (সূরাহ বারাআত ৯/১১৮)

৪৬৭৭. ’আবদুর রহমান ইবনু ’আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রহ.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছি, যে তিনজনের তওবা কবূল হয়েছিল, তার মধ্যে তিনি একজন। তিনি বদরের যুদ্ধ ও তাবূকের যুদ্ধ এ দু’টি ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর থেকে পশ্চাতে থাকেননি। কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক যুদ্ধ হতে সূর্যোদয়ের সময় মদিনা্য় ফিরে আসলে আমি (মিথ্যার পরিবর্তে) সত্য প্রকাশের দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করলাম। তিনি [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যে কোন সফর হতে সাধারণত সূর্যোদয়ের সময় ফিরে আসতেন এবং সর্বপ্রথম মসজিদে গিয়ে দু’রাক’আত নফল সালাত আদায় করতেন। (তাবূকের যুদ্ধ থেকে এসে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সঙ্গে এবং আমার সঙ্গীদের সঙ্গে কথা বলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন, অথচ আমাদের ব্যতীত অন্য যারা যুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত ছিল, তাদের সঙ্গে কথা বলায় কোন প্রকার বাধা প্রদান করলেন না।

সুতরাং লোকেরা আমাদের সঙ্গে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে লাগলেন। আমার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিল যে, যদি এ অবস্থায় আমার মৃত্যু এসে যায়, আর নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার জানাযাহর সালাত আদায় না করেন, অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাত হলে আমি মানুষের কাছে এই অবস্থায় থেকে যাব তারা কেউ আমার সঙ্গে কথাও বলবে না, আর আমার জানাযার সালাতও আদায় করবে না। এরপর (পঞ্চাশ দিন পর) আল্লাহ তা’আলা আমার তওবা কবূল করে তাঁর [নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর] প্রতি আয়াত অবতীর্ণ করেন। তখন রাতের শেষ-তৃতীয়াংশ বাকী ছিল।

সে রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন, উম্মু সালামাহ (রাঃ) আমার প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উম্মু সালামাহ! কা’বের তওবা কবূল করা হয়েছে। উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, তাকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য কাউকে তার কাছে পাঠাব? নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এখন খবর পেলে সব লোক এসে জমা হয়ে যাবে। তারা তোমাদের ঘুম নষ্ট করে দিবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত আদায়ের পর আমাদের তওবা কবূল হওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা খুশীতে এমন চমকাচ্ছিল যেন চাঁদের টুকরা।

যেসব মুনাফিক মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অসন্তুষ্টি থেকে] রেহাই পেয়েছিল, তাদের চেয়ে তওবা কবূলের ব্যাপারে আমরা তিনজন পিছনে পড়ে গিয়েছিলাম, এরপর আল্লাহ তা’আলা আমাদের তওবা কবূল করে আয়াত অবতীর্ণ করেন।

(তাবূকের যুদ্ধে) অনুপস্থিতদের মধ্যে যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে এবং যারা মিথ্যা অজুহাত দেখিয়েছে তাদের জঘন্যভাবে নিন্দাবাদ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, ’’তারা তোমাদের কাছে ওযর পেশ করবে যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসবে। আপনি বলে দিনঃ তোমরা ওযর পেশ করো না, আমরা কখনও তোমাদের বিশ্বাস করব না; আল্লাহ তো আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন তোমাদের খবর; আর ভবিষ্যতেও আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য রাখবেন এবং তাঁর রাসূলও’’- (সূরাহ বারাআত ৯/৯৪)।[২৭৫৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৩১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৩১৭)

بَاب :{وَّعَلَى الثَّلٰثَةِ الَّذِيْنَ خُلِّفُوْا طحَتّٰىٓ إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنْفُسُهُمْ وَظَنُّوْآ أَنْ لَّا مَلْجَأَ مِنَ اللهِ إِلَّآ إِلَيْهِ طثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوْبُوْا طإِنَّ اللهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ ع}.

مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ ابْنُ أَبِيْ شُعَيْبٍ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ أَعْيَنَ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ أَنَّ الزُّهْرِيَّ حَدَّثَهُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ وَهُوَ أَحَدُ الثَلَاثَةِ الَّذِيْنَ تِيْبَ عَلَيْهِمْ أَنَّهُ لَمْ يَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةٍ غَزَاهَا قَطُّ غَيْرَ غَزْوَتَيْنِ غَزْوَةِ الْعُسْرَةِ وَغَزْوَةِ بَدْرٍ قَالَ فَأَجْمَعْتُ صِدْقِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ضُحًى وَكَانَ قَلَّمَا يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ سَافَرَهُ إِلَّا ضُحًى وَكَانَ يَبْدَأُ بِالْمَسْجِدِ فَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ وَنَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ كَلَامِيْ وَكَلَامِ صَاحِبَيَّ وَلَمْ يَنْهَ عَنْ كَلَامِ أَحَدٍ مِنَ الْمُتَخَلِّفِيْنَ غَيْرِنَا فَاجْتَنَبَ النَّاسُ كَلَامَنَا فَلَبِثْتُ كَذَلِكَ حَتَّى طَالَ عَلَيَّ الْأَمْرُ وَمَا مِنْ شَيْءٍ أَهَمُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَمُوْتَ فَلَا يُصَلِّيْ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ يَمُوْتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَكُوْنَ مِنْ النَّاسِ بِتِلْكَ الْمَنْزِلَةِ فَلَا يُكَلِّمُنِيْ أَحَدٌ مِنْهُمْ وَلَا يُصَلِّيْ وَلَا يُسَلِّمُ عَلَيَّ فَأَنْزَلَ اللهُ تَوْبَتَنَا عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ بَقِيَ الثُّلُثُ الْآخِرُ مِنْ اللَّيْلِ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ أُمِّ سَلَمَةَ وَكَانَتْ أُمُّ سَلَمَةَ مُحْسِنَةً فِيْ شَأْنِيْ مَعْنِيَّةً فِيْ أَمْرِيْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا أُمَّ سَلَمَةَ تِيْبَ عَلَى كَعْبٍ قَالَتْ أَفَلَا أُرْسِلُ إِلَيْهِ فَأُبَشِّرَهُ قَالَ إِذًا يَحْطِمَكُمْ النَّاسُ فَيَمْنَعُوْنَكُمْ النَّوْمَ سَائِرَ اللَّيْلَةِ حَتَّى إِذَا صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَاةَ الْفَجْرِ آذَنَ بِتَوْبَةِ اللهِ عَلَيْنَا وَكَانَ إِذَا اسْتَبْشَرَ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةٌ مِنَ الْقَمَرِ وَكُنَّا أَيُّهَا الثَلَاثَةُ الَّذِيْنَ خُلِّفُوْا عَنِ الْأَمْرِ الَّذِيْ قُبِلَ مِنْ هَؤُلَاءِ الَّذِيْنَ اعْتَذَرُوْا حِيْنَ أَنْزَلَ اللهُ لَنَا التَّوْبَةَ فَلَمَّا ذُكِرَ الَّذِيْنَ كَذَبُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمُتَخَلِّفِيْنَ وَاعْتَذَرُوْا بِالْبَاطِلِ ذُكِرُوْا بِشَرِّ مَا ذُكِرَ بِهِ أَحَدٌ قَالَ اللهُ سُبْحَانَهُ (يَعْتَذِرُوْنَ إِلَيْكُمْ إِذَا رَجَعْتُمْ إِلَيْهِمْ طقُلْ لَّا تَعْتَذِرُوْا لَنْ نُّؤْمِنَ لَكُمْ قَدْ نَبَّأَنَا اللهُ مِنْ أَخْبَارِكُمْ طوَسَيَرَى اللهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُوْلُه”) الْآيَةَ.

محمد حدثنا احمد ابن ابي شعيب حدثنا موسى بن اعين حدثنا اسحاق بن راشد ان الزهري حدثه قال اخبرني عبد الرحمن بن عبد الله بن كعب بن مالك عن ابيه قال سمعت ابي كعب بن مالك وهو احد الثلاثة الذين تيب عليهم انه لم يتخلف عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في غزوة غزاها قط غير غزوتين غزوة العسرة وغزوة بدر قال فاجمعت صدقي رسول الله صلى الله عليه وسلم ضحى وكان قلما يقدم من سفر سافره الا ضحى وكان يبدا بالمسجد فيركع ركعتين ونهى النبي صلى الله عليه وسلم عن كلامي وكلام صاحبي ولم ينه عن كلام احد من المتخلفين غيرنا فاجتنب الناس كلامنا فلبثت كذلك حتى طال علي الامر وما من شيء اهم الي من ان اموت فلا يصلي علي النبي صلى الله عليه وسلم او يموت رسول الله صلى الله عليه وسلم فاكون من الناس بتلك المنزلة فلا يكلمني احد منهم ولا يصلي ولا يسلم علي فانزل الله توبتنا على نبيه صلى الله عليه وسلم حين بقي الثلث الاخر من الليل ورسول الله صلى الله عليه وسلم عند ام سلمة وكانت ام سلمة محسنة في شاني معنية في امري فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم يا ام سلمة تيب على كعب قالت افلا ارسل اليه فابشره قال اذا يحطمكم الناس فيمنعونكم النوم ساىر الليلة حتى اذا صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم صلاة الفجر اذن بتوبة الله علينا وكان اذا استبشر استنار وجهه حتى كانه قطعة من القمر وكنا ايها الثلاثة الذين خلفوا عن الامر الذي قبل من هولاء الذين اعتذروا حين انزل الله لنا التوبة فلما ذكر الذين كذبوا رسول الله صلى الله عليه وسلم من المتخلفين واعتذروا بالباطل ذكروا بشر ما ذكر به احد قال الله سبحانه (يعتذرون اليكم اذا رجعتم اليهم طقل لا تعتذروا لن نومن لكم قد نبانا الله من اخباركم طوسيرى الله عملكم ورسوله”) الاية.


Narrated `Abdullah bin Ka`b:

I heard Ka`b bin Malik who was one of the three who were forgiven, saying that he had never remained behind Allah's Messenger (ﷺ) in any Ghazwa which he had fought except two Ghazwat Ghazwat- Al-`Usra (Tabuk) and Ghazwat-Badr. He added. "I decided to tell the truth to Allah's Messenger (ﷺ) in the forenoon, and scarcely did he return from a journey he made, except in the forenoon, he would go first to the mosque and offer a two-rak`at prayer. The Prophet (ﷺ) forbade others to speak to me or to my two companions, but he did not prohibit speaking to any of those who had remained behind excepting us. So the people avoided speaking to us, and I stayed in that state till I could no longer bear it, and the only thing that worried me was that I might die and the Prophet (ﷺ) would not offer the funeral prayer for me, or Allah's Messenger (ﷺ) might die and I would be left in that social status among the people that nobody would speak to me or offer the funeral prayer for me. But Allah revealed His Forgiveness for us to the Prophet (ﷺ) in the last third of the night while Allah's Messenger (ﷺ) was with Um Salama. Um Salama sympathized with me and helped me in my disaster. Allah's Messenger (ﷺ) said, 'O Um Salama! Ka`b has been forgiven!' She said, 'Shall I send someone to him to give him the good tidings?' He said, 'If you did so, the people would not let you sleep the rest of the night.' So when the Prophet (ﷺ) had offered the Fajr prayer, he announced Allah's Forgiveness for us. His face used to look as bright as a piece of the (full) moon whenever he was pleased. When Allah revealed His Forgiveness for us, we were the three whose case had been deferred while the excuse presented by those who had apologized had been accepted. But when there were mentioned those who had told the Prophet (ﷺ) lies and remained behind (the battle of Tabuk) and had given false excuses, they were described with the worse description one may be described with. Allah said: 'They will present their excuses to you (Muslims) when you return to them. Say: Present no excuses; we shall not believe you. Allah has already informed us of the true state of matters concerning you. Allah and His Apostle will observe your actions." (9.94)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৫/ কুরআন মাজীদের তাফসীর (كتاب التفسير)