পরিচ্ছেদঃ ১৫৮. যদি কেউ স্বীয় স্ত্রীকে ‘আলবাত্তাতা’ (অবশ্যই তালাক দিলাম বা এক শব্দে তিন তালাক দিলাম বলে) তালাক প্রদান করে।
২২০৪. মুহাম্মদ ইবন ইউনুস ...... রুকানা ইবন ইয়াযীদ (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে পূবোর্ক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
باب فِي الْبَتَّةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُونُسَ النَّسَائِيُّ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ، حَدَّثَهُمْ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِدْرِيسَ، حَدَّثَنِي عَمِّي، مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ عَنِ ابْنِ السَّائِبِ، عَنْ نَافِعِ بْنِ عُجَيْرٍ، عَنْ رُكَانَةَ بْنِ عَبْدِ يَزِيدَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ .
The tradition mentioned above has also been transmitted by Rukanah bin Yazid from the Prophet (ﷺ) through a different chain of narrators.
পরিচ্ছেদঃ ২১. পাগড়ী সম্পর্কে।
৪০৩৪. কুতায়বা ইবন সাঈদ (রহঃ) .... মুহাম্মদ ইবন আলী ইবন রুকানা (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রুকানা একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কুস্তি লড়লে, তিনি তাকে পরাস্ত করেন। রুকানা (রাঃ) আরো বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আমাদের ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্য এই যে, আমরা টুপির উপর পাগড়ী ব্যবহার করি এবং তারা তা করে না।
باب فِي الْعَمَائِمِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الْحَسَنِ الْعَسْقَلاَنِيُّ، عَنْ أَبِي جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ رُكَانَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رُكَانَةَ، صَارَعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَصَرَعَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رُكَانَةُ وَسَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " فَرْقُ مَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْمُشْرِكِينَ الْعَمَائِمُ عَلَى الْقَلاَنِسِ " .
Narrated Ali ibn Rukanah:
Ali quoting his father said: Rukanah wrestled with the Prophet (ﷺ) and the Prophet (ﷺ) threw him on the ground. Rukanah said: I heard the Prophet (ﷺ) say: The difference between us and the polytheists is that we wear turbans over caps.
পরিচ্ছেদঃ ১০/১৯. চূড়ান্ত (বাত্তা) তালাক।
১/২০৫১। রুকানাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি (ইয়াযীদ) তার স্ত্রীকে চূড়ান্ত (বাত্তা) তালাক দিলেন। অতঃপর তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তাঁকে (বিধান) জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেনঃ তুমি এর দ্বারা কিনিয়াত করেছিলে? ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন, এক তালাকের। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহর শপথ! তুমি কি এক তালাকেরই নিয়াত করেছিলে? ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি এক তালাকেরই ইচ্ছা করেছিলাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তাঁর স্ত্রী ফেরত দিলেন।
মুহাম্মাদ বিন মাজাহ বলেন, আমি আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মাদ ত্বানাফিসী কে বলতে শুনেছি, এ হাদীস খুব ভাল মানের নয়। ইবনু মাজাহ বলেন, আবূ উবাইদাহ নাজিয়াহ বর্জন করেছেন ও আহমাদ তাকে কাপুরুষ বলেছেন।
তাহকীক আলবানীঃ যঈফ। উক্ত হাদিসের রাবী যুবায়র বিন সাঈদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৬৩, ৯/৩০৪ নং পৃষ্ঠা) ২. আবদুল্লাহ বিন আলী বিন ইয়াযীদ বিন রুকানাহ সম্পর্কে আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন,তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৩৪, ১৫/৩২৩ নং পৃষ্ঠা) ৩. আলী বিন ইয়াযীদ বিন রুকানাহ সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার কিছু বিষয় অজ্ঞাত। ইমাম বুখারী বলেন, তার হাদিস বিশুদ্ধ নয়। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৫২, ২১/১৭৪ নং পৃষ্ঠা)
بَاب طَلَاقِ الْبَتَّةِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ عَنْ الزُّبَيْرِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ بْنِ رُكَانَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ الْبَتَّةَ فَأَتَى رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ فَقَالَ مَا أَرَدْتَ بِهَا قَالَ وَاحِدَةً قَالَ اللهِ مَا أَرَدْتَ بِهَا إِلَّا وَاحِدَةً قَالَ اللهِ مَا أَرَدْتُ بِهَا إِلَّا وَاحِدَةً قَالَ فَرَدَّهَا عَلَيْهِ
قَالَ مُحَمَّد بْن مَاجَةَ سَمِعْت أَبَا الْحَسَنِ عَلِيَّ بْنَ مُحَمَّدٍ الطَّنَافِسِيَّ يَقُولُ مَا أَشْرَفَ هَذَا الْحَدِيثَ قَالَ ابْن مَاجَةَ أَبُو عُبَيْدٍ تَرَكَهُ نَاجِيَةُ وَأَحْمَدُ جَبُنَ عَنْهُ.
It was narrated from 'Abdullah bin 'Ali bin Yazid bin Rukanah, from his father, from his grandfather, that:
he divorced his wife irrevocably, then he came to the Messenger of Allah (ﷺ) and asked him. He said: "What did you mean by that?" He said: "One (divorce)." He said: "By Allah did you only mean one (divorce) thereby?" He said: "By Allah, I meant one." Then he sent her back to him. (Da'if)Muhammad bin Majah said: I heard Abul-Hasan ' Ali bin Muhammad Tanafisi saying: "How noble is this Hadith." Ibn Majah said: 'Abu 'Ubaid left it (i.e., did not accept its narration) and Ahmad was fearful of it (i.e., of narrating it)."
পরিচ্ছেদঃ কেউ যদি স্ত্রীকে ‘‘আলবাত্তা" (অকাট্য) শব্দে তালাক দেয়।
১১৭৮. হান্নাদ (রহঃ) ....... রুকানা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি আমার স্ত্রীকে ’আল বাত্তা’ শব্দে তালাক দিয়েছি। তিনি বললেনঃ এতে তুমি কয় তালাকের নিয়াত করেছ? আমি বললামঃ এক তালাকের। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম? আমি বললামঃ আল্লাহর কসম। তিনি বললেনঃ তবে তুমি যা নিয়্যাত করেছ তাই। - ইবনু মাজাহ ২০৫১, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৭৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]
এই হাদীসটি এই সূত্র ছাড়া আমরা অবহিত নয়। সাহাবী ও অপরাপর আলিমদের মধ্যে আলবত্তা শব্দে তালাক সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে। উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি আলবত্তা তালাককে এক তালাক বলে গণ্য করেছেন। পক্ষান্তরে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি এটিকে তিন তালাক বলে গণ্য করেছেন। কোন কোন আলিম বলেন, এতে স্বামীর নিয়্যত গ্রহনীয়। সে যদি একের নিয়্যত করে তবে এক হবে আর তিনের নিয়্যত করলে তিন হবে। কিন্তু দুইয়ের নিয়্যত করলে একই হবে। এ হলো ইমাম ছাওরী ও কুফাবাসী আলিমগণের অভিমত। ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) বলেন, যে স্ত্রীকে ’আল-বাত্তা’ শব্দে তালাক দেওয়া হয়েছে তার সাথে সঙ্গম হয়ে থাকলে তা তিন তালাক বলে গণ্য হবে। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, যদি সে এক তালাকের নিয়্যত করে তবে এক তালাক রাজঈ হবে এবং সে আবার তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবে। আর দুই তালাকের নিয়ত করলে দুই-ই হবে এবং তিনের নিয়্যত করলে তিন-ই হবে।
باب مَا جَاءَ فِي الرَّجُلِ يُطَلِّقُ امْرَأَتَهُ الْبَتَّةَ
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ رُكَانَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي طَلَّقْتُ امْرَأَتِي الْبَتَّةَ . فَقَالَ " مَا أَرَدْتَ بِهَا " . قُلْتُ وَاحِدَةً . قَالَ " وَاللَّهِ " . قُلْتُ وَاللَّهِ . قَالَ " فَهُوَ مَا أَرَدْتَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ فِيهِ اضْطِرَابٌ . وَيُرْوَى عَنْ عِكْرِمَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رُكَانَةَ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلاَثًا . - وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي طَلاَقِ الْبَتَّةِ فَرُوِيَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّهُ جَعَلَ الْبَتَّةَ وَاحِدَةً وَرُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ أَنَّهُ جَعَلَهَا ثَلاَثًا . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِيهِ نِيَّةُ الرَّجُلِ إِنْ نَوَى وَاحِدَةً فَوَاحِدَةٌ وَإِنْ نَوَى ثَلاَثًا فَثَلاَثٌ وَإِنْ نَوَى ثِنْتَيْنِ لَمْ تَكُنْ إِلاَّ وَاحِدَةً . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ فِي الْبَتَّةِ إِنْ كَانَ قَدْ دَخَلَ بِهَا فَهِيَ ثَلاَثُ تَطْلِيقَاتٍ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ إِنْ نَوَى وَاحِدَةً فَوَاحِدَةٌ يَمْلِكُ الرَّجْعَةَ وَإِنْ نَوَى ثِنْتَيْنِ فَثِنْتَانِ وَإِنْ نَوَى ثَلاَثًا فَثَلاَثٌ .
Abdullah bin Yazid bin Rukanah narrated from his father, from his grandfather who said:
'O Messenger of Allah! I irrevocably divorced my wife.' So he said: 'What did you intend by that?' I said: 'One (divorce).' He said: '(Do you swear) By Allah?' I said: 'By Allah.' He said: 'Then it is as you intended.'"
পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৮৩-[১০] রুকানাহ্ ইবনু ’আব্দ ইয়াযীদ হতে বর্ণিত। তিনি স্বীয় স্ত্রী সুহায়মাহ্-কে নিশ্চিত তালাক দিলেন। অতঃপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বিষয়টি অবহিত করে বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এক ত্বলাক (তালাক)ের নিয়্যাত করেছি, অন্য কিছু নয়। এটা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! তুমি কি এক তালাক ব্যতীত অন্য কিছু নিয়্যাত করনি? আমি বললাম, আল্লাহর কসম! এক তালাক ব্যতীত অন্য কিছু নিয়্যাত করিনি। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, রুকানাহ্ তার স্ত্রীকে ’উমার (রাঃ)-এর যুগে দ্বিতীয় এবং ’উসমান (রাঃ)-এর যুগে তৃতীয় তালাক দেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী; কিন্তু নিশ্চয় তারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্বলাক (তালাক)ের উল্লেখ করেননি)[1]
وَعَنْ رُكَانَةَ بْنِ عَبْدِ يَزِيدَ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ سُهَيْمَةَ الْبَتَّةَ فَأَخْبَرَ بِذَلِكَ النَّبِيَّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم وَقَالَ: وَالله مَا أردتُ إِلَّا وَاحِدَةً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَاللَّهِ مَا أَرَدْتَ إِلَّا وَاحِدَةً؟» فَقَالَ ركانةُ: واللَّهِ مَا أردتُ إِلَّا وَاحِدَة فَرَدَّهَا إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَطَلَّقَهَا الثَّانِيَةَ فِي زَمَانِ عُمَرَ وَالثَّالِثَةَ فِي زَمَانِ عُثْمَانَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ إِلَّا أَنَّهُمْ لَمْ يَذْكُرُوا الثانيةَ وَالثَّالِثَة
ব্যাখ্যা: রুকানাহ্ ইবনু ‘আব্দ ইয়াযীদ তার স্ত্রী সুহায়মাহ্-কে الْبَتَّةَ ‘‘আল বাত্তাহ্’’ তালাক প্রদান করেন। ‘আল বাত্তাহ্’ অর্থ নিশ্চিত, অবশ্যই; অর্থাৎ তিনি তার স্ত্রীকে নিশ্চিত তালাক দিয়েছিলেন যা নিশ্চিত কার্যকর। কেউ যদি স্ত্রীকে ‘আল বাত্তাহ্’ তালাক দেয় তা কত তালাক হবে- এ নিয়ে ইমাম ও ফুকাহায়ে কিরামের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মতে এ অবস্থায় এক ত্বলাকে রজ্‘ঈ পতিত হবে। তবে যদি দুই অথবা তিনের নিয়্যাত করে তবে তার নিয়্যাত মোতাবেকই হবে।
ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ ‘আল বাত্তাহ্’ তালাক এক ত্বলাকে বায়্যিনাহ্ বলে বিবেচিত হবে। তিনের নিয়্যাত করলে তিন হবে।
ইমাম মালিক-এর মতে, তিন-ই হবে। সালাফ ও খালাকের একদল মুহাক্কিকের মতে এক তালাক রজ্‘ঈ হওয়াটাই অধিক যুক্তিযুক্ত। কেননা একত্রে প্রদত্ত তিন তালাক তিন তালাক হয় না, বরং এক হওয়ার পক্ষে সহীহ মুসলিমে একাধিক বিশুদ্ধ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে, আবূ বাকর-এর খিলাফাতকালে, অতঃপর ‘উমার (রাঃ)-এর খিলাফাতের প্রথম দুই বছর পর্যন্ত একত্রে প্রদত্ত তিন তালাককে এক তালাক বলে গণ্য করা হতো..........। (সহীহ মুসলিম- হাঃ ৩৭৪৬)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৪৩৪০-[৩৭] রুকানাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের ও মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্য হলো টুপির উপরে পাগড়ী বাঁধা। অর্থাৎ- আমরা টুপির উপর পাগড়ী বাঁধি আর তারা টুপি ছাড়া পাগড়ী বাঁধে। (তিরমিযী, তিনি বলেছেনঃ এ হাদীসটি গরীব এবং তার সানাদটিও মজবুত নয়।)[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে আছে ‘‘আবূ জা‘ফার ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু রুকানাহ্’’ নামে একজন বর্ণনাকারী। যিনি মাজহূল, এছাড়াও তিনি তার পিতা থেকে তিনিও মাজহূল। বিস্তারিত দেখুন- সিলসিলাতুয্ য‘ঈফাহ্ ৬০৭২। আবুল হাসান আল ‘আসকালানী নামের বর্ণনাকারীও মাজহূল। তিরমিযী ১৭৮৪ নং হাদীসের আলোচনা।
الْفَصْلُ الثَّانِي
وَعَن ركَانَة عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «فَرْقُ مَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْمُشْرِكِينَ الْعَمَائِمُ عَلَى الْقَلَانِسِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَإِسْنَاده لَيْسَ بالقائم
ব্যাখ্যাঃ (عَمَائِمٌ) ‘‘আমায়িম’’ শব্দটি ‘ইমামাহ্’ শব্দের বহুবচন। এ হাদীসে ‘আমায়িম’ দ্বারা ‘ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করাকে বুঝানো হয়েছে। আল ‘আযীযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মুসলিমরা টুপি পরিধান করে এবং তার উপরে পাগড়ী পরিধান করে। শুধু টুপি পরিধান করা মুশরিকদের বেশ-ভূষা। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন যে, এ হাদীসের মর্মার্থ হলো, আমরা টুপির উপর পাগড়ী পরতাম আর মুশরিকরা শুধু টুপি পরেই তুষ্ট থাকতো। তবে এ হাদীসটি যেহেতু সানাদ ও অর্থের দিক দিয়ে গ্রহণযোগ্য নয় সেহেতু এটির ব্যাখ্যায় বেশি কথা না বলে এ কথা বলাই যথেষ্ট যে, হাফিয ইবনুল কইয়িম (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘‘যাদুল মা‘আদ’’ গ্রন্থে বলেছেন,
وكان يلبَسُها ويلْبَسُ تحتها القَلَنسُوة. وكان يلبَس القلنسُوة بغير عمامة، ويلبَسُ العِمامة بغير قلنسُوة
‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাগড়ী পরিধান করতেন এবং তার নীচে টুপি পরতেন। তিনি পাগড়ী ছাড়া শুধু টুপিও পরতেন, আবার টুপি ছাড়া শুধু পাগড়ীও পরতেন।’’
ইমাম সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘‘জামি‘ আস্ সগীর’’-এ ত্ববারানীর সূত্রে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সাদা টুপি পরতেন। আল ‘আযীযী-এর মতে, এ বর্ণনাটির সানাদ হাসান। রওয়ানী ও ইবনু আসাকির ইবনু ‘আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে,
كان يلبس القلانس تحت العمائم وبغير العمائم، ويلبس العمائم بغير قلانس، وكان يلبس القلانس اليمانية، وهن البيض المضربة ويلبس القلانس ذوات الاَذان في الحرب، وكان ربما نزع قلنسوته فجعلها سترة بين يديه وهو يصلي.
‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাগড়ীর নিচে টুপি পরিধান করেতেন আবার পাগড়ী ছাড়াও টুপি পরিধান করেতেন। আবার টুপি ছাড়াও পাগড়ী পরিধান করতেন। তিনি সাদা রঙের ইয়ামানী মুদারী টুপি পরিধান করতেন। আর তিনি যুদ্ধের মধ্যে বিশেষ টুপি পরিধান করতেন। অনেক সময় তিনি সালাত আদায়ের জন্য মাথা থেকে টুপি খুলে সেটিকে নিজের সামনে সুতরাহ্ হিসেবে ব্যবহার করতেন।’’ (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪০৭৪)