পরিচ্ছেদঃ ১৪/৩৮. নপুংসকদের বিধান।
১/২৫৭৪। সাঈদ ইবনে সা’দ ইবনে উবাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে একটি বিকলাঙ্গ ও দুর্বল লোক বাস করতো। লোকেরা তার ব্যাপারে কোন আশঙ্কা করতো না। কিন্তু একদা বাড়ির এক ক্রীতদাসীর সাথে সে যেনায় লিপ্ত হলে লোকেরা তাজ্জব বনে যায়। সাদ ইবনে উবাদা (রাঃ) তার বিষয়টি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পেশ করলেন। তিনি বলেনঃ তাকে এক শত বেত্রাঘাত করো। লোকজন বললো, হে আল্লাহর নবী! সে এ শাস্তি সহ্য করতে (স্বাস্থ্যগতভাবে) দুর্বল (অক্ষম)। তাকে যদি আমরা এক শত বেত্রাঘাত করি তবে সে মারা যেতে পারে। তিনি বলেনঃ তাহলে তোমরা একশত শাখাবিশিষ্ট একটি গাছের ডাল লও এবং তা দ্বারা তাকে একবার প্রহার করো (আহমাদ, ৫/২২২২)।
২/২৫৭৪(১)। সুফিয়ান ইবনে ওয়াকী-আল-মুহারিবী-মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক-ইয়াকুব ইবনে আবদুল্লাহ-আবূ উমামা ইবনে সাহল-সাদ উবনে উবাদা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা) ২. সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ইমাম বুখারী মন্তব্য করেছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তার হাদিস বর্জন করেছেন। ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৪১৮, ১১/২০০ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু সুফইয়ান বিন ওয়াকী এর কারণে সানাদটি সন্দেহযুক্ত। সঠিক সানাদ হলঃ মুহাম্মাদ বিন ইসহাক এর সুত্রে সাঈদ বিন সা'দ বিন উবাদাহ। হাদিসটির ১০৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি জাল, ২১ টি খুবই দুর্বল, ৫৬ টি দুর্বল, ২০ টি হাসান, ৬ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আবু দাউদ ৪৪৭২, আহমাদ ২৩৩৮৮, দারাকুতনী ৩১৩১, ৩১৩২, ৩১৩৩, ৩১৩৪, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১৬১৩৩, ১৬১৩৪, মুজামুল আওসাত ৬৬০, শারহুস সুন্নাহ ২৫৯০, ২৫৯১।
بَاب الْمُخَنَّثِينَ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، قَالَ كَانَ بَيْنَ أَبْيَاتِنَا رَجُلٌ مُخْدَجٌ ضَعِيفٌ فَلَمْ يُرَعْ إِلاَّ وَهُوَ عَلَى أَمَةٍ مِنْ إِمَاءِ الدَّارِ يَخْبُثُ بِهَا فَرَفَعَ شَأْنَهُ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " اجْلِدُوهُ ضَرْبَ مِائَةِ سَوْطٍ " . قَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ هُوَ أَضْعَفُ مِنْ ذَلِكَ لَوْ ضَرَبْنَاهُ مِائَةَ سَوْطٍ مَاتَ . قَالَ " فَخُذُوا لَهُ عِثْكَالاً فِيهِ مِائَةُ شِمْرَاخٍ فَاضْرِبُوهُ ضَرْبَةً وَاحِدَةً " .
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
It was narrated that Sa'eed bin Sa'd bin `Ubadah said:
“There was a man living among our dwellings who had a physical defect, and to our astonishment he was seen with one of the slave women of the dwellings, committing illegal sex with her. Sa'd bin 'Ubadah referred his case to the Messenger of Allah (ﷺ), who said: 'Give him one hundred lashes.' They said: 'O Prophet (ﷺ) of Allah (ﷺ), he is too weak to bear that. If we give him one hundred lashes he will die.' He said: “Then take a branch with a hundred twigs and hit him once.”
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৫৭৪-[২০] সা’ঈদ ইবনু সা’দ ইবনু ’উবাদাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন সা’দ ইবনু ’উবাদাহ্(রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এমন ব্যক্তিকে ধরে আনলেন, যে ছিল বিকলাঙ্গ ও ব্যাধিগ্রস্ত। তাকে এলাকার এক বাঁদীর সাথে যিনাগ্রস্ত অবস্থায় দেখা যায়। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন একটি খেজুরের বড় ছড়া নিয়ে আসো যার মধ্যে ছোট ছোট একশত শাখা রয়েছে এবং তা দ্বারা লোকটিকে একবার আঘাত কর। (শারহুস্ সুন্নাহ্; ইবনু মাজাহ্-তে অনুরূপ একটি বর্ণনা আছে)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ سَعِيدِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ أَنَّ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ كَانَ فِي الْحَيِّ مُخْدَجٍ سقيم فَوجدَ على أمة من إمَائِهِمْ بخبث بِهَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُذُوا لَهُ عِثْكَالًا فِيهِ مِائَةُ شِمْرَاخٍ فَاضْرِبُوهُ ضَرْبَة» . رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ مَاجَه نَحوه
ব্যাখ্যা: (سَقِيْمٍ) এমন অসুস্থ যা সুস্থ হওয়ার আশা করা যায় না।
ইবনু মালিক বলেনঃ এ হাদীসটি ‘আমলযোগ্য না কেননা তা সরাসরি কুরআনের বিরোধী, কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللّٰهِ
অর্থাৎ- ‘‘আল্লাহর বিধান কার্যকরের কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়’’- (সূরা আন্ নূর ২৪ : ২)। আর হাদীসের ভাষ্যমতে প্রহার করা দয়ার উদ্রেক হওয়া তবে এটা ভুল ব্যাখ্যা, তাফসীরে হাদীস ও ফিক্হী দৃষ্টিভঙ্গিতে। তাফসীরের দৃষ্টিতে অর্থ হলো : দয়ার উদ্রেক না হয় তবে আনুগত্য ও হাদ্দ বাস্তবায়নে। অতঃপর তোমরা সে হাদ্দকে বাতিল করবে বা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে। এজন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ لَوْ سَرَقَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ مُحَمَّدٍ لَقَطَعْتُ يَدَهَا মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মেয়ে ফাত্বিমাও চুরি করে তাহলে আমি তার হাত অবশ্যই কেটে দিবো। অনুরূপ ভাবার্থ বায়যাভীও বলেছেন।
কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ হাদীসে দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হয় যে, শাসক শাস্তি প্রয়োগকৃত ব্যক্তির প্রতি খেয়াল রাখবে এবং তার জীবন সংরক্ষণ করবে। আর যদিও রোগী ব্যক্তির ওপর হাদ্দ প্রয়োগ করে হদ প্রয়োগ দেরী করবে না তবে যদি গর্ভবতী হয় তাহলে গর্ভপাত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। যা ‘আলী (রাঃ)-এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. ব্যভিচারীর দণ্ড - অসুস্থ ব্যক্তির উপর হাদ্দ জারী করা প্রসঙ্গে
১২১৫। সাঈদ ইবনু সা’দ ইবনু উবাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমাদের মহল্লায় একটা জীর্ণ শীর্ণ ক্ষুদ্র লোক বাস করত। সে তাদের কোন এক দাসীর সাথে নোংরা কাজ (যিনা) করে ফেলে। ফলে সা’দ এ ঘটনা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে ব্যক্ত করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ওর উপর হদ্দ জারি করো। লোকেরা বললো: সে এর থেকে অনেক দুর্বল (একশ দুররা তো বরদাস্ত করার কোন শক্তি ওর নেই)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: একটা ডাল, নাও, যাতে একশো শাখা থাকে, তারপর তাকে ঐটি দিয়ে একবার প্রহার কর ফলে লোকেরা তাই করলো।[1]
وَعَنْ سَعِيدِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كَانَ بَيْنَ أَبْيَاتِنَا رُوَيْجِلٌ ضَعِيفٌ, فَخَبَثَ بِأَمَةٍ مِنْ إِمَائِهِمْ, فَذَكَرَ ذَلِكَ سَعْدٌ لِرَسُولِ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: «اضْرِبُوهُ حَدَّهُ». فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ! إِنَّهُ أَضْعَفُ مِنْ ذَلِكَ, فَقَالَ: «خُذُوا عِثْكَالًا فِيهِ مِائَةُ شِمْرَاخٍ, ثُمَّ اضْرِبُوهُ بِهِ ضَرْبَةً وَاحِدَةً». فَفَعَلُوا. رَوَاهُ أَحْمَدُ, وَالنَّسَائِيُّ, وَابْنُ مَاجَهْ, وَإِسْنَادُهُ حَسَنٌ. لَكِنْ اخْتُلِفَ فِي وَصْلِهِ وَإِرْسَالِهِ
-
صحيح. رواه أحمد (522)، والنسائي في «الكبرى» (4/ 313)، وابن ماجه (2754)
Sa'id bin Sa'd bin 'Ubadah (RAA) narrated, 'A small weak man was staying in our tribe, and he committed adultery with one of their slave-women. Sa'd mentioned this to the Messenger of Allah (ﷺ), and thereupon he said, "Flog him (according to) the prescribed penalty." The people then said, 'O Messenger of Allah! He is too weak to bear it.' The Messenger of Allah (ﷺ) then said, "Get a stalk of the raceme of a palm tree with a hundred twigs and strike him just once." So, they did. Related by Ahmad, An-Nasa'i and Ibn Majah with a good chain of narrators.