৩১৪

পরিচ্ছেদঃ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাহায্যে আল্লাহর নি‘আমতের শুকরিয়া করা ওয়াজিব, বিশেষত নি‘আমত যদি কোন বিপদাপদের পর আসে

৩১৪. আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন: “বানী ইসরাঈলদের মাঝে তিনজন ব্যক্তি ছিলেন; একজন কুষ্ঠরোগী, একজন টাক বিশিষ্ট্য, আরেকজন অন্ধ। মহান আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। তিনি তাদের নিকট একজন ফেরেস্তা পাঠালেন। ফেরেস্তা কুষ্ঠরোগীর কাছে আসলেন এবং বললেন: “তোমার কাছে কোন জিনিস সবচেয়ে প্রিয়?” তিনি উত্তরে বললেন: “শরীরের সুন্দর রং, সুন্দর চামড়া।” ফেরেস্তা আবার বললেন: তোমার কাছে কোন সম্পদ সবচেয়ে বেশি প্রিয়?” সে জবাবে বললো: “উট।” অতঃপর ফেরেস্তা  তার শরীর বুলিয়ে দিলেন ফলে তার কুষ্ঠরোগ ভালো হয়ে গেলো। এবং তাকে একটি দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রী দেওয়া হলো। অতঃপর ফেরেস্তা বললেন: “মহান আল্লাহ আপনাকে এতে বারাকাহ দিন।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তারপর ফেরেস্তা কেশহীন টেকো ব্যক্তির কাছে আসেন এবং বলেন: কোন জিনিস তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়?” তিনি বলেন: “সুন্দর চুল। যদি আমার এই অবস্থা দূর হতো, যার কারণে মানুষ আমাকে ঘৃণা করে!” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “অতঃপর ফেরেস্তা তাকে বুলিয়ে দিলেন, ফলে তার রোগ ভালো হয়ে গেলো। তাকে সুন্দর চুল দেওয়া হলো। তিনি বলেন: “কোন সম্পদ তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়?” তিনি জবাবে বললেন: “গরু।” তাকে একটি গর্ভবতী গাভী দেওয়া হলো। অতঃপর ফেরেস্তা বললেন: “মহান আল্লাহ তোমাকে এতে বারাকাহ দিন।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তারপর ফেরেস্তা অন্ধ ব্যক্তির কাছে আসেন এবং বলেন: কোন জিনিস তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়?” তিনি বলেন: “যদি মহান আল্লাহ আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতেন, যার ফলে আমি মানুষকে দেখতে পেতাম!” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “অতঃপর ফেরেস্তা তাকে বুলিয়ে দিলেন, ফলে আল্লাহ তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন। তিনি বলেন: “কোন সম্পদ তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়?” তিনি জবাবে বললেন: “ছাগল।” তাকে একটি গর্ভবতী ছাগী দেওয়া হলো। অতঃপর ফেরেস্তা বললেন: “মহান আল্লাহ তোমাকে এতে বারাকাহ দিন।” তারপর উষ্ট্রী, গাভী ও ছাগী বাচ্চা দেয়। ফলে একজনের উপত্যকা ভর্তি উট হয়ে যায়, একজনের উপত্যকা ভর্তি গরু হয়ে যায় আরেকজনের উপত্যক ভর্তি ছাগল হয়ে যায়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তারপর ফেরেস্তা আগের আকৃতিতে কুষ্ঠরোগীর কাছে আসেন এবং বলেন: “আমি একজন মুসাফির গরীব মানুষ, সফরে আমার উপায়-উপকরণ শেষ হয়ে গেছে। কাজেই এখন মহান আল্লাহ তারপর আপনার সাহায্য ছাড়া আমার লক্ষ্যে পৌঁছার কোন উপায় নেই। আমি আপনার কাছে ঐ সত্তার দোহাই দিয়ে একটি উট চাচ্ছি, যিনি আপনাকে শরীরের সুন্দর রং, সুন্দর চামড়া ও সম্পদ দান করেছেন- যাতে আমি আমার সফরে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি।” তখন সে বলে: “এরকম আরো অনেক হক আছে।” (কাজেই তোমাকে আমি সাহায্য করতে পারবো না!) তখন ফেরেস্তা তাকে বলেন: “আমি যেন আপনাকে চিনতে পারছি! আপনি কি কুষ্ঠরোগী ছিলেন না, মানুষ আপনাকে ঘৃণা করতো? আপনি কি দরিদ্র ছিলেন না, অতঃপর আল্লাহ আপনাকে সম্পদ দান করেছেন?” তখন সে বলে: “আমি এই সম্পদ আমার উর্দ্ধতন পূর্বপুরুষদের পরম্পরা সূত্রে পেয়েছি!” ফেরেস্তা তাকে বলেন: “যদি তুমি মিথ্যা বলে থাকো, তবে আল্লাহ আপনাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিক।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তারপর ফেরেস্তা আগের আকৃতিতে কেশহীন টেকো ব্যক্তির কাছে আসেন এবং তাকেও এই ব্যক্তির মতোই বলেন। এই ব্যক্তিও ঐ ব্যক্তির মতো প্রতি উত্তর দেয়। ফলে ফেরেস্তা বলেন: “যদি তুমি মিথ্যা বলে থাকো, তবে আল্লাহ আপনাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিক।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তারপর ফেরেস্তা আগের আকৃতিতে অন্ধ ব্যক্তির কাছে আসেন এবং বলেন: “আমি একজন মুসাফির গরীব মানুষ, সফরে আমার উপায়-উপকরণ শেষ হয়ে গেছে।” তখন সেই ব্যক্তি বলেন: “আমি অন্ধ ছিলাম। আল্লাহ আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। কাজেই আপনার যা ইচ্ছা গ্রহণ করুন যা ইচ্ছা রেখে দিন। আল্লাহর কসম, আজ আপনি আল্লাহর নামে যা কিছুই নেন না কেন, আমি আপনার সাথে কোন কঠিন আচরণ করবো না।” ফেরেস্তা বলেন: “আপনি আপনার সম্পদ রেখে দিন। বস্তুত আপনাদের পরীক্ষা করা হয়েছে। আল্লাহ আপনার প্রতি খুশি হয়েছেন আর আপনার অপর দুই সঙ্গীর উপর নারায হয়েছেন।”[1]

ذِكْرُ الْإِخْبَارِ عَمَّا يَجِبُ عَلَى الْمَرْءِ مِنَ الشُّكْرِ لِلَّهِ جَلَّ وَعَلَا بِأَعْضَائِهِ عَلَى نِعَمِهِ وَلَا سِيَّمَا إِذَا كَانَتِ النِّعْمَةُ تَعْقِبُ بَلْوَى تعتريه

أَخْبَرَنَا أَبُو يَعْلَى، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخٍ، حَدَّثَنَا همَّام بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي عَمْرَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ حَدَّثَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: "إِنَّ ثَلَاثَةً فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ: أَبْرَصَ وَأَقْرَعَ وَأَعْمَى، فَأَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَبْتَلِيَهُمْ فَبَعَثَ إِلَيْهِمْ مَلَكًا، فَأَتَى الْأَبْرَصَ، فقَالَ: أَيُّ شَيْءٍ أَحَبُّ إِلَيْكَ؟ قَالَ: لَوْنٌ حَسَنٌ، وجلد حسن. قال: فأي المال أحب إِلَيْكَ قَالَ الْإِبِلُ فَمَسَحَهُ فَذَهَبَ عَنْهُ قَالَ وَأُعْطِيَ نَاقَةً عُشَرَاءَ فقَالَ بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِيهَا. قَالَ وَأَتَى الْأَقْرَعَ فقَالَ أَيُّ شَيْءٍ أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ شَعْرٌ حَسَنٌ وَيَذْهَبُ عَنِّي هَذَا الَّذِي قَدْ قَذِرَنِي النَّاسُ قَالَ فَمَسَحَهُ فَذَهَبَ عَنْهُ وَأُعْطِيَ شَعْرًا حَسَنًا قَالَ فَأَيُّ الْمَالِ أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ الْبَقَرُ قَالَ فَأُعْطِيَ بَقَرَةً حَافِلَةً قَالَ بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِيهَا. قَالَ وَأَتَى الْأَعْمَى فقَالَ أَيُّ شَيْءٍ أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ أَنْ يَرُدَّ اللَّهُ إِلَيَّ بَصَرِي فَأُبْصِرَ بِهِ النَّاسَ فَمَسَحَهُ فَرَدَّ اللَّهُ إِلَيْهِ بَصَرَهُ قَالَ فَأَيُّ الْمَالِ أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ الْغَنَمُ قَالَ فَأُعْطِيَ شَاةً وَالِدًا وَأُنْتِجَ هَذَانِ وَوَلَّدَ هَذَا فَكَانَ لِهَذَا وَادٍ مِنَ الْإِبِلِ وَلِهَذَا وَادٍ مِنَ الْبَقَرِ وَلِهَذَا وَادٍ مِنَ الغنم. قَالَ: ثُمَّ أَتَى الْأَبْرَصَ فِي صُورَتِهِ وَهَيْئَتِهِ فقَالَ: رَجُلٌ مِسْكِينٌ وَابْنُ سَبِيلٍ انْقَطَعَتْ بِيَ الْحِبَالُ فِي سَفَرِي فَلَا بَلَاغَ بِيَ الْيَوْمَ إِلَّا بِاللَّهِ ثُمَّ بِكَ أَسْأَلُكَ بِالَّذِي أَعْطَاكَ اللَّوْنَ الْحَسَنَ وَالْجِلْدَ الْحَسَنَ وَالْمَالَ بَعِيرًا أَتَبَلَّغُ بِهِ فِي سَفَرِي فقَالَ: الْحُقُوقُ كَثِيرَةٌ فقَالَ: كَأَنِّي أَعْرِفُكَ أَلَمْ تَكُنْ أَبْرَصَ يَقْذَرُكَ النَّاسُ فَقِيرًا فَأَعْطَاكَ اللَّهُ الْمَالَ؟ فقَالَ: إِنَّمَا ورثتُ هَذَا الْمَالَ كَابِرًا عَنْ كَابِرٍ فقَالَ: إِنْ كنتَ كَاذِبًا فصيَّرَكَ اللَّهُ إِلَى مَا كُنْتَ قَالَ: ثُمَّ أَتَى الْأَقْرَعَ فِي صُورَتِهِ فقَالَ لَهُ مِثْلَ مَا قَالَ لِهَذَا فَرَدَّ عَلَيْهِ مِثْلَ مَا رَدَّ هَذَا فقَالَ: إِنْ كُنْتَ كَاذِبًا فَصَيَّرَكَ اللَّهُ إِلَى مَا كُنْتَ وَأَتَى الْأَعْمَى فِي صُورَتِهِ وَهَيْئَتِهِ فقَالَ: رَجُلٌ مِسْكِينٌ وَابْنُ سَبِيلٍ انْقَطَعَتْ بِيَ الْحِبَالُ فِي سَفَرِي! فقَالَ: قَدْ كُنْتُ أَعْمَى فردَّ اللَّهُ عَلَيَّ بَصَرِي فَخُذْ مَا شِئْتَ وَدَعْ مَا شِئْتَ فَوَاللَّهِ لَا أَجْهَدُكَ الْيَوْمَ شَيْئًا أَخَذْتَهُ لِلَّهِ فقَالَ: أَمْسِكْ مَالَكَ فَإِنَّمَا ابْتُلِيتُمْ فقد رضي عنك وسُخِطَ على صاحبيك) الراوي : أَبو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 314 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.