লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
কারামাত শব্দের অর্থ সম্মানিত হওয়া, মর্যাদাবান হওয়া, মহৎ হওয়া ও উদার হওয়া।
পরিভাষায় ঐ অলৌকিক কর্মকে কারামাত বলা হয় যা নেককার মু’মিনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, কিন্তু তা নুবুওয়্যাতের দাবির সাথে হবে না এবং তার উদ্দেশ্য কাফির ও মুশরিকদের বিরোধিতা ও মোকাবেলায়ও হবে না। কেননা যে অলৌকিক কর্ম নুবুওয়্যাতের দাবীর সাথে হয় এবং তার উদ্দেশ্য কাফির ও মুশরিকদের বিরোধিতা ও মোকাবেলা হয়, তাকে মু’জিযা বলা হয়। এর দ্বারা মু’জিযাহ্ ও কারামাতের পার্থক্য গেল বুঝা গেল। ওয়ালীদের কারামাতসমূহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আতের নিকট প্রমাণিত। আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা’আতের ’আক্বীদাহ হলো ওয়ালীদের কারামাতের প্রতি ঈমান রাখা। আর তা সত্য। এটা এমন একটা বিষয় যা আল্লাহ তার কোন কোন বান্দাকে যখন দরকার তখন অথবা তার শত্রুদেরকে দেখানোর জন্য ও তাঁর দীনকে বিজয়ী করার জন্য দিয়ে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ, যখন তাদের খাদ্য দরকার তখন খাবার দান, পিপাসিত হলে পানি দান; তারা জানে না যে, তা কোথা থেকে আসলো অথবা অনেক দূর থেকে খাবার আসা, এ জাতীয় অনেক কিছু সংঘটিত হওয়া। অথবা খাবারে বরকত হওয়া। এটা প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্যভাবে হতে পারে। তবে সে আল্লাহর ওয়ালীকে অবশ্যই আল্লাহর ও তাঁর রসূলের দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে।
আর যদি সে লোক ইসলামী শারী’আতের পাবন্দি না করে, তবে তাঁর কর্ম কারামাত বলে পরিগণিত হবে না। এটা তখন শয়তানের কর্ম হিসেবে বিবেচিত হবে। আর তা শয়তানদের ফিতনাহ্। কারামাত প্রকাশিত হয় কেবল আল্লাহর মুমিন বান্দাদের নিকট থেকে। যারা আল্লাহর দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত ও তাঁর শারী’আতের অনুসারী বলে জানা যায়। এদের দ্বারা আল্লাহ যে বিশেষ কর্ম সম্পাদন করিয়ে নেন তাকে কারামাত বলে।
(ইমাম ইবনু বায, নূরুন ’আলাদ দারব, কওলু আহলিস্ সুন্নাতি ওয়াল জামা’আতি ফিল কারামাত)
৫৯৪৪-[১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন উসায়দ ইবনু হুযায়র ও ’আব্বাদ ইবনু বিশর (রাঃ) তাঁদের কোন এক প্রয়োজনে দীর্ঘ রাত্র অবধি নবী (সা.) -এর সাথে কথাবার্তা বলতে থাকেন। রাত্রটি ছিল ঘোর অন্ধকার। অতঃপর যখন তারা (বাড়ির উদ্দেশে) রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছ হতে যাত্রা করলেন এ সময় তাদের প্রত্যেকের হাতে ছোট এক একটি লাঠি ছিল। পথে বের হওয়ার পর তাদের একজনের লাঠিটি প্রদীপের মতো আলো দিতে লাগল। আর তারা সে লাঠির আলোয় পথ চলতে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের উভয়ের পথ পৃথক পৃথক হলো, তখন অপরজনের লাঠিটিও আলোকিত হয়ে উঠল। অবশেষে তাঁরা প্রত্যেকে নিজ নিজ লাঠির আলোয় নিজেদের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন। (বুখারী)
الفصل الاول ( بَاب الكرامات)
عَن أَنس أَنَّ أُسَيْدَ بْنَ حُضَيْرٍ وَعَبَّادَ بْنَ بِشْرٍ تَحَدَّثَا عِنْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَاجَةٍ لَهُمَا حَتَّى ذَهَبَ مِنَ اللَّيْلِ سَاعَةٌ فِي لَيْلَةٍ شَدِيدَةِ الظُّلْمَةِ ثُمَّ خَرَجَا مِنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ينقلبان وبيد كل مِنْهُمَا عُصَيَّةٌ فَأَضَاءَتْ عصى أَحَدِهِمَا لَهُمَا حَتَّى مَشَيَا فِي ضَوْئِهَا حَتَّى إِذَا افْتَرَقَتْ بِهِمَا الطَّرِيقُ أَضَاءَتْ لِلْآخَرِ عَصَاهُ فَمَشَى كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا فِي ضَوْءِ عَصَاهُ حَتَّى بلغ أَهله رَوَاهُ البُخَارِيّ رواہ البخاری (3805) ۔ (صَحِيح)
ব্যাখ্যা: সহীহুল বুখারীর অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, ঐ দু’জন সাহাবী ঘোর অন্ধকার রাতে রাসূল (সা.) -এর নিকট হতে উঠে বাইরে আসলেন, সে সময় মনে হলো যেন তাদের সাথে দু'টি প্রদীপ আছে, যা তাদের পথকে আলোকিত করে তাদের সাথে চলছে। অতঃপর যখন সাহাবীদ্বয় এমন স্থানে পৌছালেন যেখান থেকে তাদের বাড়ির পথ পৃথক পৃথক তখন তারা একজন অন্যজন থেকে পৃথক হলেন। তখন দেখা গেল যে, তাদের উভয়ের সাথে এক একটি প্রদীপ রয়েছে। এভাবেই তারা তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে পৌছে গেলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ, মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ১৭৮ পৃষ্ঠা)।