লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চুল আঁচড়ানো
৪৪৬১-[৪৩] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের মধ্যে ইবনুল হানযালিয়্যাহ্ (রাঃ) নামক জনৈক ব্যক্তি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খুরয়ম আল আসাদী লোকটি ভালো, তবে যদি তার মাথার চুল খুব লম্বা না হত এবং পরনের লুঙ্গি না ঝুলাত (টাখনু গিরার নিচ পর্যন্ত)। পরে খুরয়ম-এর কাছে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ কথাগুলো পৌঁছলে তিনি ছুরি নিয়ে চুলকে দু’ কানের লতি পর্যন্ত কেটে ফেললেন এবং লুঙ্গিকে অর্ধ গোড়ালি পর্যন্ত উঠিয়ে নিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَن ابنِ الحنظليَّةِ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نِعْمَ الرَّجُلُ خُرَيْمٌ الْأَسْدِيُّ لَوْلَا طُولُ جُمَّتِه وإسبال إزراه» فَبَلَغَ ذَلِكَ خُرَيْمًا فَأَخَذَ شَفْرَةً فَقَطَعَ بِهَا جمته إِلَى أُذُنَيْهِ وَرفع إزراه إِلَى أَنْصَاف سَاقيه. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যাঃ (نِعْمَ الرَّجُلُ خُرَيْمٌ) খুরয়ম কতই না ভালো লোক। কারো অধিক প্রশংসায় এমন বাক্য ব্যবহার হয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুরয়ম (রাঃ)-এর প্রশংসামূলক ক্রিয়া দ্বারা প্রশংসার পর তার মাঝের দু’টি আপত্তিকর দিক তুলে ধরলেন। অর্থাৎ তার জুম্মাহ্ লম্বা ও লুঙ্গি লটকিয়ে পরার অভ্যাস না থাকলে সে অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিল। হাদীসের এ অংশ থেকে চুলকে লম্বা করে জুম্মায় পরিণত করা এবং লুঙ্গি ঝুলিয়ে পরা অপছন্দ কর্ম বলে প্রমাণিত হয়। লুঙ্গি বা পাজামা ইত্যাদি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা হারাম। বিভিন্ন হাদীসের মাধ্যমে তা প্রমাণিত। অতএব রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কাজটি অপছন্দ করা স্বাভাবিক। কিন্তু চুল লম্বা হওয়া বিশেষ তা জুম্মাহ্ পরিমাণ হলে তা মন্দ নয়। নির্ধারিত পরিমাণের পর তা কেটে ফেলতে হবে বলেও কোন দলীল নেই। বরং আমরা ইতোপূর্বে দেখলাম যে, এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুলের সুন্নাত। এ প্রশ্নের জবাবে ‘উলামায়ে কিরাম বলেনঃ হতে পারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার লম্বা চুলের গর্ব টের পেয়েছেন। দীর্ঘ জুম্মাহ্ চুল দ্বারা হয়ত তিনি বড়াই করতেন বলে রসূল তার এ চুল অপছন্দ করেন। চুলের সাথে লুঙ্গি ঝুলিয়ে পরার কথা বলা এদিকে ইঙ্গিত বহন করে। অহংকারবশত লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা আরবদের রীতি ছিল।
হাদীস থেকে এ কথাও প্রমাণিত হয় যে, বদনামের উদ্দেশ্য ছাড়া যদি কারো অদৃশ্যে তার কোন দোষ এভাবে বলা হয় যে, সে শুনলে তা অপছন্দ করবে না বরং দোষণীয় কাজটি ছেড়ে দিবে, এমন হলে উক্ত দোষের বিবরণ দেয়া গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে না। খুরয়ম -এর কাছেও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ বাণী যাওয়ার সাথে সাথে তিনি তার পূর্বোক্ত ‘আমল থেকে ফিরে আসেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)