লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চুল আঁচড়ানো
৪৪৫০-[৩২] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির চুল আছে, সে যেন তা যত্ন নেয়া রাখে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ كَانَ لَهُ شعرٌ فليُكرمه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যাঃ (فَلْيُكْرِمْهُ) অর্থাৎ সে যেন তার অর্থাৎ চুলের সম্মান করে। চুলের সম্মান বলতে চুলের যত্ন নেয়া। অর্থাৎ চুলের সৌন্দর্য বর্ধন করা, ধোয়ার মাধ্যমে চুল পরিচ্ছন্ন রাখা, তেল ব্যবহার করা এবং তাকে এলোমেলো না রাখা। কেননা পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যতা পছন্দনীয় বস্তু। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
ইমাম মুনযিরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসটি বাহ্যত উপরের হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক, যে হাদীসে ঘন ঘন চুল চিরুনি করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং যে হাদীসে জীর্ণতার কথা বলা হয়েছে, যদি জীর্ণতার হাদীসকে বিশুদ্ধ ধরা হয়। অতএব উভয় হাদীসের মাঝে এভাবে সামঞ্জস্য হতে পারে যে, ঘন ঘন চিরুনি না করার হাদীস ঐ ব্যক্তির জন্য যে অসুস্থ বা অধিক ঠাণ্ডার কারণে নিয়মিত চুল চিরুনি করতে কষ্ট হয়। অতএব যেটা তার জন্য কষ্টদায়ক সেটার জন্য নিজের ওপর কষ্ট চাপিয়ে নেয়ার প্রয়োজন নেই। বরং মাঝে মাঝে চিরুনি করলেই চলে। আবার এও হতে পারে যে, আবূ কতাদাহ্ দিনে দু’বার মাথায় তেল দেয়াকে সুন্নাত মনে করে নিতে পারেন এবং সুন্নাতের উপর ‘আমল করতে দিনে দু’বার মাথায় তেল দেয়া জরুরী মনে করতেন। তাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জানিয়ে দিলেন যে, সুন্নাত হলো মাঝে মাঝে বাদ দেয়া। বিশেষ করে চুলের যত্ন ও চিরুনি যাকে তার কর্মব্যস্ততা থেকে ফিরিয়ে রাখে, তাকে এ কথা জন্য জানিয়ে দেয়া উদ্দেশ্য যে, চুল বারবার চিরুনি করা কোন জরুরী বিষয় নয়। বরং এটি বৈধ। যে চায় করতে পারে। যে চায় না করতেই হবে এমন নয়।
শামসুদ্দীন ইবনুল কইয়্যিম (রহিমাহুল্লাহ) এ হাদীসের ব্যাখ্যায় মুনযির-এর এই বক্তব্য পুরোটা উল্লেখ করেন। এরপর বলেন, এই আমরা এ ধরনের সামঞ্জস্য বিধানের প্রয়োজন দেখি না। বরং সঠিক কথা হলো, চুলের যত্ন নেয়ার হাদীস এবং ঘন ঘন চিরুনি না করার হাদীসের মাঝে কোন ধরনের সংঘর্ষ নেই। কেননা বান্দা চুলের যত্ন নিতে নির্দেশিত। আর বিলাসিতায় আধিক্যতা অবলম্বনে নিষিদ্ধ। তাই সে চুলের যত্ন নিবে তবে বিলাসিতা ও চুল নিয়ে মত্ত থাকাকে তার অভ্যাস বানাবে না। বরং মাঝে মাঝে বাদ দিয়ে চিরুনি করবে। উভয় হাদীসের এভাবে অর্থ নেয়াই উত্তম। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪১৫৯)