লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - আশ্রয় প্রার্থনা করা
২৪৫৯-[৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ
’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়াল মাগ্রামি ওয়াল মা’সামি, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিন্ ’আযা-বিন্ না-রি ওয়া ফিত্নাতিন্ না-রি ওয়া ওয়া ফিতনাতিল কব্রি ’আযা-বিল কব্রি ওয়ামিন্ শার্রি ফিত্নাতিল গিনা-, ওয়ামিন্ শার্রি ফিত্নাতিল ফাকরি ওয়ামিন্ শার্রি ফিত্নাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-লি, আল্ল-হুম্মাগসিল খত্বা-ইয়া-ইয়া বিমা-য়িস্ সালজি ওয়াল বারাদি ওয়া নাক্কি কলবী কামা- ইউনাক্কাস্ সাওবুল আবয়াযু মিনাদ্দানাসি ওয়াবা-’ইদ্ বায়নী ওয়াবায়না খত্বা-ইয়া-ইয়া কামা- বা’আদ্তা বায়নাল মাশরিকি ওয়াল মাগ্রিব’’
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে অলসতা, বার্ধক্য, ঋণ ও গুনাহ থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জাহান্নামের আগুন, জাহান্নামের পরীক্ষা, কবরের পরীক্ষা ও শাস্তি হতে, স্বচ্ছলতার পরীক্ষার মন্দাভাব ও দারিদ্রের পরীক্ষার মন্দাভাব হতে এবং মাসীহুদ (কানা) দাজ্জালের পরীক্ষার অনিষ্টতা হতে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহসমূহ বরফের ও শিলার পানি দিয়ে ধুয়ে দাও। আমার অন্তরকে পরিষ্কার করে দাও যেভাবে সাদা কাপড়, ময়লা হতে পরিষ্কার করা হয় এবং আমার ও আমার গুনাহের মধ্যে এমন ব্যবধান তৈরি করে দাও যেমনভাবে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে রেখেছো।)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْإِسْتِعَاذَةِ
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَالْمَغْرَمِ وَالْمَأْثَمِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ النَّارِ وَفِتْنَةِ النَّارِ وَفِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْغِنَى وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْفَقْرِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِمَاءِ الثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّ قَلْبِي كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ وَبَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمغْرب»
ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসের (اَلْهَرَمِ) ‘‘আল হারাম’’ বলতে বার্ধক্যকে বুঝানো হয়েছে। যখন মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি ক্রমশ লোপ পেতে থাকে, আল্লাহর আনুগত্যমূলক কাজকর্ম পালনে অক্ষমতা আসে, কিছু ‘ইবাদাত পালনে অলসতা আসে, ইন্দ্রিয় শক্তি দুর্বল হতে থাকে। এমতাবস্থায় ইন্দ্রিয় শক্তির সুস্থতা ও সঠিক বুঝ ক্ষমতা থাকাসহ দীর্ঘ বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার প্রতি এ হাদীসে দু‘আ করতে বলা হয়েছে।
এখানে আগুনের শাস্তি দ্বারা এর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। ‘আল্লামা কারী বলেছেনঃ এর অর্থ হলো আমি জাহান্নামী বা আগুনের অধিবাসী হওয়া থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই। (فِتْنَةِ النَّارِ) বা আগুনের ফিতনা দ্বারা এমন ফিতনাহ্ বা পরীক্ষাকে বুঝানো হয়েছে যা আগুনের শাস্তির দিকে নিয়ে যায়। এর দ্বারা জাহান্নামের প্রহরীদের প্রশ্নকেও বুঝানো হতে পারে, যার কথা ৬৭ নং সূরার ৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে। ফিতনা দ্বারা মূলত পরীক্ষা, কাঙ্ক্ষিত বহু অর্জনে গাফলতি, দীন থেকে প্রত্যাবর্তন করার জন্য বাধ্য করা; বিভ্রান্তি, গুনাহ, কুফর, ‘আযাব ইত্যাদি বুঝানো হয়। কবরের ফিতনা বলতে কবরে নিয়োজিত দু’জন মালাকের (ফেরেশতার) করা প্রশ্নের উত্তরে বেদিশা হয়ে যাওয়া।
ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শয়তান মৃত ব্যক্তিকে তার কবরে কুমন্ত্রণা দেয় যাতে করে সে মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাগণের) করা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে না পারে।
ধনীর ফিতনার অনিষ্টতা হচ্ছে অহংকার, অবাধ্যতা, হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও গুনাহের কাজে তা খরচ করা, সম্পদের ও সম্মানের অহংকার করা, সম্পদের যে ফরয ও নফল হক রয়েছে তা হকদারকে প্রদান করতে কৃপণতা করা।
দারিদ্র্যতার ফিতনার অনিষ্টতা হচ্ছে বিরক্ত হওয়া, অধৈর্য হওয়া, প্রয়োজনে হারাম কিংবা এর সদৃশ কোন কর্মে পতিত হওয়া। কারীর মতে, এটা হচ্ছে ধনীদের হিংসা করা, তাদের ধন-সম্পদ কামনা করা, আল্লাহ তার জন্য যা বণ্টন করেছেন তাতে অসন্তুষ্ট হওয়া ইত্যাদি সহ এমন সকল কর্ম যার শেষ পরিণতি প্রশংসনীয় নয়।