লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্র বাণীঃ ومن دونهما جنتان "এবং এ উদ্যানদ্বয় ব্যতীত আরো দু'টি উদ্যান রয়েছে" (৫৫ঃ ৬২)
সুরা আর-রাহমান
وَقَالَ مُجَاهِدٌ بِحُسْبَانٍ كَحُسْبَانِ الرَّحَى وَقَالَ غَيْرُهُ وَأَقِيمُوا الْوَزْنَ يُرِيدُ لِسَانَ الْمِيزَانِ وَالْعَصْفُ بَقْلُ الزَّرْعِ إِذَا قُطِعَ مِنْهُ شَيْءٌ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَ فَذَلِكَ الْعَصْفُ وَالرَّيْحَانُ رِزْقُهُ وَالْحَبُّ الَّذِي يُؤْكَلُ مِنْهُ وَالرَّيْحَانُ فِي كَلَامِ الْعَرَبِ الرِّزْقُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ وَالْعَصْفُ يُرِيدُ الْمَأْكُولَ مِنْ الْحَبِّ وَالرَّيْحَانُ النَّضِيجُ الَّذِي لَمْ يُؤْكَلْ وَقَالَ غَيْرُهُ الْعَصْفُ وَرَقُ الْحِنْطَةِ وَقَالَ الضَّحَّاكُ الْعَصْفُ التِّبْنُ وَقَالَ أَبُو مَالِكٍ الْعَصْفُ أَوَّلُ مَا يَنْبُتُ تُسَمِّيهِ النَّبَطُ هَبُورًا وَقَالَ مُجَاهِدٌ الْعَصْفُ وَرَقُ الْحِنْطَةِ وَالرَّيْحَانُ الرِّزْقُ وَالْمَارِجُ اللَّهَبُ الْأَصْفَرُ وَالْأَخْضَرُ الَّذِي يَعْلُو النَّارَ إِذَا أُوقِدَتْ وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَنْ مُجَاهِدٍ رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ لِلشَّمْسِ فِي الشِّتَاءِ مَشْرِقٌ وَمَشْرِقٌ فِي الصَّيْفِ وَرَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ مَغْرِبُهَا فِي الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ لَا يَبْغِيَانِ لَا يَخْتَلِطَانِ الْمُنْشَآتُ مَا رُفِعَ قِلْعُهُ مِنْ السُّفُنِ فَأَمَّا مَا لَمْ يُرْفَعْ قَلْعُهُ فَلَيْسَ بِمُنْشَأَةٍ وَقَالَ مُجَاهِدٌ كَالْفَخَّارِ كَمَا يُصْنَعُ الْفَخَّارُ الشُّوَاظُ لَهَبٌ مِنْ نَارٍ وَنُحَاسٌ النُّحَاسُ الصُّفْرُ يُصَبُّ عَلَى رُءُوسِهِمْ فَيُعَذَّبُونَ بِهِ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ يَهُمُّ بِالْمَعْصِيَةِ فَيَذْكُرُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ فَيَتْرُكُهَا مُدْهَامَّتَانِ سَوْدَاوَانِ مِنْ الرِّيِّ صَلْصَالٍ طِينٌ خُلِطَ بِرَمْلٍ فَصَلْصَلَ كَمَا يُصَلْصِلُ الْفَخَّارُ وَيُقَالُ مُنْتِنٌ يُرِيدُونَ بِهِ صَلَّ يُقَالُ صَلْصَالٌ كَمَا يُقَالُ صَرَّ الْبَابُ عِنْدَ الْإِغْلَاقِ وَصَرْصَرَ مِثْلُ كَبْكَبْتُهُ يَعْنِي كَبَبْتُهُ فَاكِهَةٌ وَنَخْلٌ وَرُمَّانٌ وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ الرُّمَّانُ وَالنَّخْلُ بِالْفَاكِهَةِ وَأَمَّا الْعَرَبُ فَإِنَّهَا تَعُدُّهَا فَاكِهَةً كَقَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَى فَأَمَرَهُمْ بِالْمُحَافَظَةِ عَلَى كُلِّ الصَّلَوَاتِ ثُمَّ أَعَادَ الْعَصْرَ تَشْدِيدًا لَهَا كَمَا أُعِيدَ النَّخْلُ وَالرُّمَّانُ وَمِثْلُهَا أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ ثُمَّ قَالَ وَكَثِيرٌ مِنْ النَّاسِ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ وَقَدْ ذَكَرَهُمْ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَوَّلِ قَوْلِهِ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ وَقَالَ غَيْرُهُ أَفْنَانٍ أَغْصَانٍ وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ مَا يُجْتَنَى قَرِيبٌ وَقَالَ الْحَسَنُ فَبِأَيِّ آلَاءِ نِعَمِهِ وَقَالَ قَتَادَةُ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ يَعْنِي الْجِنَّ وَالْإِنْسَ وَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِي شَأْنٍ يَغْفِرُ ذَنْبًا وَيَكْشِفُ كَرْبًا وَيَرْفَعُ قَوْمًا وَيَضَعُ آخَرِينَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ بَرْزَخٌ حَاجِزٌ الْأَنَامُ الْخَلْقُ نَضَّاخَتَانِ فَيَّاضَتَانِ ذُو الْجَلَالِ ذُو الْعَظَمَةِ وَقَالَ غَيْرُهُ مَارِجٌ خَالِصٌ مِنْ النَّارِ يُقَالُ مَرَجَ الْأَمِيرُ رَعِيَّتَهُ إِذَا خَلَّاهُمْ يَعْدُو بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَيُقَالُ مَرَجَ أَمْرُ النَّاسِ مَرِيجٍ مُلْتَبِسٌ مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ اخْتَلَطَ الْبَحْرَانِ مِنْ مَرَجْتَ دَابَّتَكَ تَرَكْتَهَا سَنَفْرُغُ لَكُمْ سَنُحَاسِبُكُمْ لَا يَشْغَلُهُ شَيْءٌ عَنْ شَيْءٍ وَهُوَ مَعْرُوفٌ فِي كَلَامِ الْعَرَبِ يُقَالُ لَأَتَفَرَّغَنَّ لَكَ وَمَا بِهِ شُغْلٌ يَقُولُ لَآخُذَنَّكَ عَلَى غِرَّتِكَ
وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَ এর মাঝে বর্ণিত الْوَزْنَ হচ্ছে পাল্লার ডান্ডি। وَالْعَصْفُ ঘাস, ফসল পাকার পূর্বে যে চারাগুলোকে কেটে ফেলা হয় তাদেরকেই اَلْعَصْفُ বলা হয়। الرَّيْحَانُ শস্যের পাতা এবং যমীন থেকে উৎপাদিত দানা যা ভক্ষণ করা হয় আরবী ভাষায় রিযকের অর্থে ব্যবহৃত হয়। কারো মতে, الْعَصْفُ খাওয়ার উপযোগী দানা এবং الرَّيْحَانُ খাওয়ার অনুপযোগী পাকা দানা। মুজাহিদ ব্যতীত অন্যান্য মুফাসসির বলেছেন, اَلْعَصْفُ গমের পাতা। দাহ্হাক (রহ.) বলেন, اَلْعَصْفُ মানে ভূষি। আবূ মালিক (রহঃ) বলেন, সর্বপ্রথম যা উৎপন্ন হয় তাকে اَلْعَصْفُ বলা হয়। হাবশী ভাষায় তাকে هَبُوْرًا হাবুর বলা হয়। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, اَلْعَصْفُ গমের পাতা। الرَّيْحَانُ খাদ্য। الْمَارِجُ হলুদ এবং সবুজ বর্ণের অগ্নিশিখা যা আগুনের উপরে দেখা যায় যখন তা জ্বালানো হয়। মুজাহিদ (রহঃ) থেকে কোন কোন মুফাসসির বলেন, رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ সূর্যের শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন উদয়স্থান। তেমনি رَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ শীত ও গ্রীস্মকালে সূর্যের দুই অস্তস্থল। لَا يَبْغِيَانِ তারা মিলিত হয় না। الْمُنْشَاٰتُ নদীতে পাল তোলা নৌকা। আর যে নৌকার পাল তোলা হয়নি তাকে الْمُنْشَاٰتُ বলা হয় না। মুজাহিদ বলেন, نُحَاسٌ পিতল, যা তাদের মাথার উপর ঢালা হবে এবং এর দ্বারা তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। خَافَ مَقَامَ رَبِّهٰ সে গুনাহ্ করার ইচ্ছে করে; কিন্তু তার আল্লাহর কথা মনে পড়ে যায়। অবশেষে সে গুনাহ্ করার ইচ্ছা ত্যাগ করে। الشُّوَاظُ অগ্নি শিখা। مُدْهَآمَّتَانِ দেখতে কালো হবে সজীবতার কারণে। صَلْصَالٍ মাটি বালির সঙ্গে মিশে পোড়া মাটির মত ঝনঝন করে। বলা হয় صَلْصَالٍ দুর্গন্ধময়। শব্দটির মূল ছিল صَلَّ صَلْصَالٍ বলা হয় যেমন صَرَّالْبَابُ বলা হয় এবং صَرَّصَرَّ الْبَابُ ও বলা হয়। (অর্থাৎ مضاعف رباعى থেকে مضاعفثلاثى এর উৎপত্তি)। যেমন كَبْكَبْتُه ব্যবহার করা হয়। যার মূল فَاكِهَةٌ وَّنَخْلٌ وَّرُمَّانٌ ফলমূল, খেজুর ও আনার। কারো মতে খেজুর ও আনার ফল নয়; কিন্তু আরবীয় লোকেরা এগুলোকেও ফল বলে গণ্য করে।
খেজুর ও আনার ফলমূলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও উপরোক্ত আয়াতে ফলমূলের কথা উল্লেখ করে এরপর খেজুর ও আনারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ এর মাঝে সকল সালাতের প্রতি যত্নবান হবার নির্দেশ প্রদান করতঃ পরে আবার বিশেষভাবে আসরের সালাতের প্রতি বিশেষ যত্নবান হবার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যেমনভাবে أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللهَ يَسْجُدُ لَه مَنْ فِي السَّمَوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে....। (সূরাহ হাজ্জ ২২/২৮)-এর মধ্যে সকল মানুষ অন্তর্ভুক্ত থাকা সত্ত্বেও وَكَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ আয়াতাংশটি পরে উল্লেখ করা হয়েছে (সুতরাং খেজুর ও আনারকে ফলমূল বহির্ভূত বলা ঠিক নয়)। মুজাহিদ (রহঃ) ছাড়া অন্যান্য মুফাসসির বলেন, أَفْنَانٍ ডালাসমূহ। وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ দুই উদ্যানের ফল হবে তাদের নিকটবর্তী- (সূরাহ আর্ রহমান ৫৫/৫৪)।
উভয় উদ্যানের ফল যা পাড়া হবে তা খুবই নিকটবর্তী হবে। হাসান (রহঃ) বলেন, فَبِأَيِّاٰلَآءِ আল্লাহর কোন অনুগ্রহকে? ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, মানব এবং দানব জাতিকে বোঝাবার জন্য رَبِّكُمَا দ্বি-বচনের صيغه ব্যবহার করা হয়েছে। আবুদ্ দারদা (রাঃ) বলেন, كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِيْ شَأْنٍ (তিনি প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ কার্যে রত)-এর ভাবার্থ হচ্ছে, প্রত্যহ তিনি মানুষের গুনাহ ক্ষমা করেন, বিপদ বিদূরিত করেন, এক সম্প্রদায়কে সুউচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন এবং অপর সম্প্রদায়ের অবনতি ঘটান। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, بَرْزَخٌ অন্তরাল। الْأَنَامُ সৃষ্ট জীব। نَضَّاخَتَانِ খায়ের ও বারাকাতে উচ্ছলিত। ذُو الْجَلَالِ মহিমাময়। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) ব্যতীত অন্যান্য মুফাসসির বলেছেন, مَارِجُ নির্ধূম অগ্নিশিখা। রাজা প্রজাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দেয়ার পর তারা যখন পরস্পর পরস্পরের প্রতি অবাধে অত্যাচার করতে আরম্ভ করে তখন বলা হয়, اَلَامِيْرُ مَرَجَ الَامِيْرُ رِعَيَّتَه مَرَجَ اَمْرُ النَّاسِ মানুষের বিষয়টি গোলমেলে হয়ে পড়েছে। مَرِيْجٍ দোদুল্যমান। مَرَجَ الْبَحْرَيْنٍ দুই সমুদ্র পরস্পর মিলিত হয়ে গিয়েছে। مَرَجْتَ دَابَّتَكَ এর উৎপত্তি অর্থাৎ তুমি ছেড়ে দিয়েছ। سَنَفْرُغُ لَكُمْ অচিরেই আমি তোমাদের হিসাব গ্রহণ করব কারণ কোন অবস্থা আল্লাহ্ তা’আলাকে অন্য অবস্থা হতে গাফিল করতে পারে না। এ ধরনের ব্যবহার-বিধি আরবী ভাষায় সুপ্রসিদ্ধ। যেমন বলা হয়, لَا تَفَرَّ غَنَّ لَكَ অথচ তার কোন ব্যস্ততা নেই (বরং এ ধরনের কথা ধমক-স্বরূপ বলা হয়ে থাকে)। এ বাক্যের মাধ্যমে বক্তা শ্রোতাকে এ কথাই বোঝাতে চায় যে, অবশ্যই আমি তোমাকে তোমার এ গাফলতের মজা আস্বাদন করাব।
৪৫১৮। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) ... কায়স (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূল বলেছেন, (জান্নাতে) দুটি উদ্যান থাকবে। এই দুটির সকল পাত্র এবং এর অভ্যন্তরের সকল বস্তু রূপার তৈরি হবে। এবং (জান্নাতে) আরও দুটি উদ্যান থাকবে। এই দুটির সকল পাত্র এবং এর অভ্যন্তরের সকল বস্তু সোনার তৈরি হবে। জান্নাতে-আদনের মধ্যে জান্নাতবাসীরা তাদের রবকে দেখবে। জান্নাতবাসী এবং তাদের রবের এই দর্শনের মাঝে আল্লাহর সত্তার উপর জড়ানো তাঁর বড়ত্বের পর্দা ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
باب قوله ومن دونهما جنتان
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي الأَسْوَدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ الْعَمِّيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " جَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ، آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا، وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلَى رَبِّهِمْ إِلاَّ رِدَاءُ الْكِبْرِ عَلَى وَجْهِهِ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ ".
Narrated `Abdullah bin Qais:
Allah's Messenger (ﷺ) said, "Two gardens, the utensils and the contents of which are of silver, and two other gardens, the utensils and contents of which are of gold. And nothing will prevent the people who will be in the Garden of Eden from seeing their Lord except the curtain of Majesty over His Face."