লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১৭. ইবন সায়্যাদের আলোচনা
৭০৯০। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হারামালা ইবনু ইমরান আত-তুজীবী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একদল মানুষ সহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ইবনু সায়্যাদের নিকট গেলেন। তখন তাকে বনী মাগলার কিল্লার নিকট একদল বালকের সাথে ক্রীড়ারত অবস্থায় পেলেন। তখন ইবনু সায়্যাদ বালিগ হবার কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। কিন্তু সে তা জানত না। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত দ্বারা তার পৃষ্ঠে আঘাত করে বললেন, তুমি কি সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, আমি আল্লাহর রাসুল? এ কথা শুনে ইবনু সায়্যাদ তার প্রতি তাকাল এবং বলল যে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মীদের রাসূল। অতঃপর ইবনু সায়্যাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করল যে, আপনি কি সাক্ষ্য দেন যে, আমি আল্লাহর রাসুল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ছেড়ে দিলেন এবং (এর সরাসরি উত্তর না দিয়ে) বললেন আমি ঈমান আনয়ন করেছি আল্লাহর প্রতি ও তার রাসুলগণের প্রতি।
এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি কি দেখতে পাও? ইবনু সায়্যাদ বলল, আমার নিকট সত্যবাদী ও মিথ্যাবদী লোক আসে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার বিষয়টি সঠিক-বেঠিক মিশ্রিত (হযবরল) হযে গিয়েছে। তোমাকে জিজ্ঞেস করার জন্য একটি কথা আমি মনে মনে গোপন রেখেছি। ইবনু সায়্যাদ বলল, তা হচ্ছে دخ (ধুয়া)। তৎপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দূর হয়ে যা। তুই তোর পরিধি অতিক্রম করতে পারবি না। অতঃপর উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে ছেড়ে দিন। আমি এক্ষণি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি সে দাজ্জাল হয়, তবে তো তাকে হত্যা করতে সক্ষম হবে না। আর যদি সে দাজ্জাল না হয় তবে তাকে হত্যা করার মাঝে কোন কল্যাণ নেই।
সালাম ইবন আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, পরবর্তী সময়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং উবায় ইবনু কাব (রাঃ) সেই খেজুর বাগানের দিকে চললেন, যেখানে ইবনু সায়্যাদ বসবাস করত। বাগানের মধ্যে এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃক্ষের আড়ালে আত্মগোপন করতে চেষ্টা করছিলেন, যাতে ইবনু সায়্যাদ তাঁকে দেখার পূর্বে তিনি তার কথা শুনে নেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখলেন যে, সে তার বিছানায় একটি চাঁদরে আবৃত অবস্থায় গুনগুন করে কি যেন বলছিল। এদিকে ইবনু সায়্যাদের মা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখল যে, তিনি বৃক্ষের আড়ালে আত্নগোপনের চেষ্টা করছেন। সে ততক্ষণাৎ ইবনু সায়্যাদকে বলে উঠলঃ হে সাফ! এটা ইবনু সায়্যাদের নাম। মুহাম্মাদ এসে গেছে। (এ কথা শুনতেই) ইবনু সায়্যাদ বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার মা তাকে সাবধান না করলে সে পরিষ্কার বলে ফেলত।
সালিম (রহঃ) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেছেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের উদ্দেশ্যে একটি বক্তৃতা দিলেন। তাতে আল্লাহ তা’আলার যথাযোগ্য প্রশংসা ও গুনকীর্তনের পর দাজ্জালের কথা উল্লেখ করলেন এবং বললেনঃ আমি তোমাদেরকে দাজ্জালের ফিৎনা সম্পর্কে সতর্ক করছি যেমন প্রত্যেক নবী তাঁর সম্প্রদায়কে এ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। এমনকি নূহ (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর কাওমকে এ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তবে এ সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে একটি বিষয় পরিস্কারভাবে বলে দিচ্ছি যা কোন নবী তার সম্প্রদায়কে বলেননি। তা হল এই যে, তোমরা জেনে রাখ, দাজ্জাল কানা হরে। আল্লাহ তাআলা কানা নন।
ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক সাহাবী তাকে অবহিত করেছেন যে, যে দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। সে দিন তিনি বলেছেন, যে তাঁর চক্ষুদ্বয়ের মাঝখানে কাফির (كافر) অথবা (ك ف ر) লেখা থাকবে। যে ব্যক্তি তার কার্যক্রম অপছন্দ করবে সে তা পাঠ করতে পারবে অথবা প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তই তা পাঠ করতে সক্ষম হবে। তিনি এও বলেছেন যে, তোমরা জেনে রাখ যে, তোমাদের কোন ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্বে তার প্রতিপালককে দেখতে সক্ষম হবে না।
باب ذِكْرِ ابْنِ صَيَّادٍ
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَرْمَلَةَ بْنِ عِمْرَانَ التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنِي ابْنُ، وَهْبٍ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ أَخْبَرَهُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ انْطَلَقَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَهْطٍ قِبَلَ ابْنِ صَيَّادٍ حَتَّى وَجَدَهُ يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ عِنْدَ أُطُمِ بَنِي مَغَالَةَ وَقَدْ قَارَبَ ابْنُ صَيَّادٍ يَوْمَئِذٍ الْحُلُمَ فَلَمْ يَشْعُرْ حَتَّى ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ظَهْرَهُ بِيَدِهِ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاِبْنِ صَيَّادٍ " أَتَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ " . فَنَظَرَ إِلَيْهِ ابْنُ صَيَّادٍ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ الأُمِّيِّينَ . فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ فَرَفَضَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ " آمَنْتُ بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ " . ثُمَّ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَاذَا تَرَى " . قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ يَأْتِينِي صَادِقٌ وَكَاذِبٌ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " خُلِّطَ عَلَيْكَ الأَمْرُ " . ثُمَّ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنِّي قَدْ خَبَأْتُ لَكَ خَبِيئًا " . فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ " هُوَ الدُّخُّ " . فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اخْسَأْ فَلَنْ تَعْدُوَ قَدْرَكَ " . فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ ذَرْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَهُ . فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنْ يَكُنْهُ فَلَنْ تُسَلَّطَ عَلَيْهِ وَإِنْ لَمْ يَكُنْهُ فَلاَ خَيْرَ لَكَ فِي قَتْلِهِ " . وَقَالَ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ انْطَلَقَ بَعْدَ ذَلِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ الأَنْصَارِيُّ إِلَى النَّخْلِ الَّتِي فِيهَا ابْنُ صَيَّادٍ حَتَّى إِذَا دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم النَّخْلَ طَفِقَ يَتَّقِي بِجُذُوعِ النَّخْلِ وَهُوَ يَخْتِلُ أَنْ يَسْمَعَ مِنِ ابْنِ صَيَّادٍ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَرَاهُ ابْنُ صَيَّادٍ فَرَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُضْطَجِعٌ عَلَى فِرَاشٍ فِي قَطِيفَةٍ لَهُ فِيهَا زَمْزَمَةٌ فَرَأَتْ أُمُّ ابْنِ صَيَّادٍ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَتَّقِي بِجُذُوعِ النَّخْلِ فَقَالَتْ لاِبْنِ صَيَّادٍ يَا صَافِ - وَهُوَ اسْمُ ابْنِ صَيَّادٍ - هَذَا مُحَمَّدٌ . فَثَارَ ابْنُ صَيَّادٍ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْ تَرَكَتْهُ بَيَّنَ " . قَالَ سَالِمٌ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّاسِ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ الدَّجَّالَ فَقَالَ " إِنِّي لأُنْذِرُكُمُوهُ مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلاَّ وَقَدْ أَنْذَرَهُ قَوْمَهُ لَقَدْ أَنْذَرَهُ نُوحٌ قَوْمَهُ وَلَكِنْ أَقُولُ لَكُمْ فِيهِ قَوْلاً لَمْ يَقُلْهُ نَبِيٌّ لِقَوْمِهِ تَعَلَّمُوا أَنَّهُ أَعْوَرُ وَأَنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَيْسَ بِأَعْوَرَ " . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ ثَابِتٍ الأَنْصَارِيُّ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ بَعْضُ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَوْمَ حَذَّرَ النَّاسَ الدَّجَّالَ " إِنَّهُ مَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ كَافِرٌ يَقْرَؤُهُ مَنْ كَرِهَ عَمَلَهُ أَوْ يَقْرَؤُهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ " . وَقَالَ " تَعَلَّمُوا أَنَّهُ لَنْ يَرَى أَحَدٌ مِنْكُمْ رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ حَتَّى يَمُوتَ " .
'Abdullah b. Umar reported:
'Umar b. Khattab went along with Allah's Messenger (ﷺ) in the company of some persons to Ibn Sayyad that he found him playing with children near the battlement of Bani Maghala and Ibn Sayyad was at that time just at the threshold of adolescence and he did not perceive (the presence of Holy Prophet) until Allah's Messenger (ﷺ) struck his back with his hands. Allah's Messenger (ﷺ) said: Ibn Sayyad, don't you bear witness that I am the messenger of Allah? Ibn Sayyad looked toward him and he said: I bear witness to the fact that you the messenger of the unlettered. Ibn Sayyad said to the Allah's Messenger (ﷺ): Do you bear witness to the fact that I am the messenger of Allah? Allah's Messenger (ﷺ) rejected this and said: I affirm my faith in Allah and in His messengers. Then Allah's Messenger (ﷺ) said to him: What do you see? Ibn Sayyad said: It is a Dukh. Thereupon Allah's Messenger (ﷺ) said: May you be disgraced and dishonoured, you would not not be able to go beyond your rank. 'Umar b. Khattab said: Allah's Messenger, permit me that I should strike his neck. Thereupon Allah's Messenger (ﷺ) said: If he is the same (Dajjal) who would appear near the Last Hour, you would not be able to overpower him, and if he is not that there is no good for you to kill him. 'Abdullah b. 'Umar further narrated that after some time Allah's Messenger (ﷺ) and Ubayy b. Ka'b went towards the palm trees where Ibn Sayyad was. When Allah's Messenger (ﷺ) went near the tree he hid himself behind a tree with the intention of hearing something from Ibn sayyad before Ibn Sayyad could see him, but Allah's Messenger (ﷺ) saw him on a bed with a blanket around him from which a murmuring sound was being heard and Ibn Sayyad's mother saw Allah's Messenger (ﷺ) behind the trunk of the palm tree. She said to Ibn Sayyad: Saf (that being his name), here is Muhammad. Thereupon Ibn Sayyad jumped up murmuring and Allah's Messenger (ﷺ) said: If she had left him alone he would have made things clear. Abdullah b. Umar told that Allah's Messenger (ﷺ) stood up amongst the people and lauded Allah as He deserved, then he made a mention of the Dajjal and said: I warn you of him and there is no Prophet who has not warned his people against the Dajjal. Even Noah warned (against him) but I am going to tell you a thing which no Prophet told his people. You must know that he (the Dajjal) is one-eyed and Allah, the Exalted and Glorious, is not one-eyed. Ibn Shihab said: 'Umar b. Thabit al-Ansari informed me that some of the Companions of Allah's Messenger (ﷺ) informed him that the day when Allah's Messenger (ﷺ) warned people against the Dajjal, he also said: There would be written between his two eyes (the word) Kafir (infidel) and everyone who would resent his deeds would be able to read or every Muslim would be about to read, and he also said: Bear this thing in mind that none amongst you would be able to see Allah, the Exalted and Glorious, until he dies.