পরিচ্ছেদঃ পিতৃপুরুষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে হুশিয়ারী! কেননা কোন ব্যক্তির তার বাবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এক প্রকার কুফরী
৪১৪. আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর খিলাফত কালে আব্দুর রহমান বিন ‘আউফ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুকে (কুরআন) পড়াতাম। কুরআন পাঠকালে আব্দুর রহমান বিন ‘আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু যতোটা শিহরিত হয়ে যেতেন, অতটা অন্য কেউ শিহরিত হতো না। আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, “একদিন আমি আব্দুর রহমান বিন ‘আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ফলে আমি তাঁর বাড়িতে অপেক্ষা করছিলাম। এমন সময় তিনি উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছ থেকে আসেন। যখন তিনি ফিরে আসেন, তখন আমাকে বলেন, “আপনি যদি এক্ষুণি এক ব্যক্তিকে দেখতেন, যে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে এই এই বলেছে! এসময় উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু জীবনের শেষ হজ্জে মিনায় ছিলেন। তখন আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে বলেন, “এক ব্যক্তি উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে এসে বলেন, “এক ব্যক্তি বলেছে যে, “যদি উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মারা যান, তবে আমি ওমুক ব্যক্তির হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবো।
এই খবর উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে পৌঁছলে, উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু তখন বলেন: “আমি সন্ধায় মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে এদের সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করবো, যারা মুসলিম উম্মাহর (খিলাফতের) বিষয়টি ছিনিয়ে নিতে চায়।”
তখন আব্দুর রহমান রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন, “আমি বললাম: হে আমিরুল মু‘মিনুন, আজকের এই দিনে এমনটি করবেন না। কেননা সময়টি হজ্জের মৌসুম, এই সময় উচ্ছৃংখল, নিম্নশ্রেণির অনেক সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়। এই লোকগুলোই আপনার মাজলিসে বেশি থাকবে। আমার আশংকা হয় যে, আজ যদি আপনি এদের মাঝে বক্তব্য প্রদান করেন, তবে এরা আপনার বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যাবে, তারা আপনার কথা যথাস্থানে ব্যবহার করবে না। মদীনায় যাওয়া পর্যন্ত আপনি বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ মদীনা হলো হিজরত ও সুন্নাহর জায়গা, এখানে আপনি খাস করে উলামা ও সম্মানিত ব্যক্তিদের নিয়ে ইচ্ছামত কথা বলতে পারবেন, তারা আপনার কথা বুঝবে, সংরক্ষন করবে এবং সেটাকে তারা যথাস্থানে প্রয়োগ করবে।” উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন: “আল্লাহ চাহে তো যদি আমি মদীনায় নিরাপদে পৌঁছি, তবে সর্বপ্রথম আমি এই বিষয়েই আলোচনা করবো।” আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুমা বলেন, “অতঃপর যিলহজ্জ মাসের শেষের দিকে যখন আমরা মদীনায় পৌঁছলাম, এবং যখন শুক্রবার সমাগত হলো, তখন আমি অন্ধ ব্যক্তির মতো (অর্থাৎ সময় হয়েছে কি হয় নাই তার পরোওয়া না করে) তাড়াতাড়ি মসজিদে গেলাম, সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম যে, সা‘ঈদ বিন যাইদ আমার আগেই এসেছেন এবং তিনি মিম্বারের ডান পাশের দিকে বসেছেন। আমি গিয়ে তার পাশে বসলাম, আমার হাঁটুর সাথে তাঁর হাটু লাগছিল। একটু পরেই উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মিম্বারের দিকে আসেন। উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মিম্বার অভিমুখে আসছেন এমন সময় আমি সা‘ঈদ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুকে বললাম, “আজ তিনি মিম্বারে এমন কথা বলবেন, যা তাঁর পূর্বে কেউ কখনই বলেননি।” সা‘ঈদ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু আমার কথাকে অস্বীকার করেন এবং বলেন, “তিনি এমন কী কথা বলতে পারেন, যা তাঁর পূর্বে কেউ বলেননি?”
উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মিম্বারে যখন বসেন, তখন মুয়ায্যিন আযান দেন। যখন আযান শেষ করেন, তখন উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু দাঁড়ান, শাহাদাহ পাঠ করেন এবং আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা ও গুণকীর্তন করেন। তারপর বলেন: “অতঃপর, আজ আমি আপনাদের সামনে একটি কথা বলবো, যা বলা আমার ভাগ্যে নির্ধারিত ছিল। হতে পারে এটি আমার মৃত্যুর পুর্বক্ষণ। কাজেই যে ব্যক্তি তা অনুধাবন করতে পারবে, এবং সংরক্ষণ করতে পারবে, সে যেন তা অন্যের কাছে বর্ণনা করে, তার বাহন তাকে যে পর্যন্ত নিয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এই আশংকা করবে যে, সে তা সংরক্ষন করতে পারেনি, তার জন্য আমি বৈধ মনে করি না যে, সে আমার নামে মিথ্যা কথা বলবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, তিনি তাঁর উপর যা কিছু অবতীর্ণ করেছেন, তার মধ্যে রজমের আয়াত ছিল। আমরা তা পাঠ করেছি, অনুধাবন করেছি এবং সংরক্ষন করেছি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে রজম বাস্তবায়ন করেছেন এবং তাঁর পরে আমরাও রজম বাস্তবায়ন করেছি। আমার আশংকা হয় যে, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর কেউ হয়তো বলবে, “আল্লাহর কসম, আমরা তো আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাচ্ছি না।” ফলে তারা আল্লাহর নাযিলকৃত একটি ফরয বিধান পরিত্যাগ করবে।
আল্লাহর কিতাবে রজম সত্য এটি তাদের উপর প্রযোজ্য হবে বিবাহিত নারী-পুরুষের মাঝে যারা ব্যভিচার করবে, যখন প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হবে অথবা কোন নারী স্বামী ছাড়া গর্ভবতী হবে অথবা কেউ ব্যভিচারের কথা স্বীকার করবে। কুরআনে আরো ছিল, “তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। কেননা পিতৃপুরষদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কুফরি।”
তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা আমার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করবে না, যেভাবে খ্রীষ্টানরা মরিয়ম তনয় ‘ঈসা আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেছিল। নিশ্চয়ই আমি একজন বান্দা। কাজেই তোমরা বলবে, “আল্লাহর বান্দা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”
অতঃপর আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, আপনাদের মাঝে ওমুক ব্যক্তি বলেছে যে, “আল্লাহর কসম, যদি উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মারা যান, তাহলে আমি ওমুকের কাছে বাইয়াত গ্রহণ করবো।” কোন ব্যক্তি যেন এর মাধ্যমে ধোঁকা না খেয়ে বলে যে, আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর বাইয়াত গ্রহণ আকস্মিক ছিল। অতঃপর সেটি পূর্ণতা পেয়েছে। জেনে রাখুন যে, তাঁর ব্যাপারটি এমন ছিল ঠিকই কিন্তু মহান আল্লাহ এর অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করেছেন। আর আপনাদের মাঝে বর্তমানে এমন মানুষ নেই যার কাছে আবু বকরের মত মানুষ তাদের গর্দান সমর্পন করবে। নিশ্চয়ই যেদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মৃত্যু বরণ করেন, সেদিনও তিনি আমাদের মাঝে সর্বোত্তম ব্যক্তি ছিলেন।
আলী, যুবাইর এবং তাঁদের সাথে যারা ছিলেন, তাঁরা আমাদের থেকে পিছে থাকেন। পুরো আনসাররাও পিছে থাকেন এবং তাঁরা বানু সা‘ঈদা গোত্রের ছাদের নিচে সমবেত হন। আর মুহাজিরগণ আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর কাছে একত্রিত হন।
আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গৃহে ছিলাম এমন সময় এক ব্যক্তি দেয়ালের পিছন থেকে ডাকছিলেন, “হে উমার বিন খাত্তাব রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু, আপনি বাইরে আসুন।” আমি বললাম, “তুমি আমার থেকে দূর হও। কারণ তোমার কাছে যাওয়ার চেয়ে আমাদের এখানে অনেক ব্যস্ততা রয়েছে।” তিনি বলেন, “এক ঘটনা ঘটে গেছে, আর সেখানে আপনাকে অবশ্যই যেতে হবে। আনসারগণ বানু সা‘ঈদা গোত্রের ছাদের নিচে একত্রিত হয়েছেন, কাজেই কিছু ঘটার আগেই তাদের কাছে যান। অন্যথায় পরে আপনাদের ও তাঁদের মাঝে এই নিয়ে যুদ্ধ হতে পারে!” আমি তখন আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুকে বললাম, “আপনি আমাদের নিয়ে আমাদের এই আনসার ভাইদের নিকট নিয়ে চলুন।” অতঃপর আমরা তাঁদের উদ্দেশ্যে চললাম। আমাদের সাথে আবু উবাইদাহ ইবনুল জার্রাহ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর সাথে সাক্ষাত হলো। আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু তাঁর হাত ধরলেন। অতঃপর তিনি আমার ও তাঁর মাঝে চলতে লাগলেন। এভাবে যখন আমরা তাঁদের কাছাকাছি পৌঁছলাম, তখন দুইজন সৎ ব্যক্তির সাথে আমাদের সাক্ষাত হয়। তাঁরা দুইজন (আনসারী) কওমের ক্রিয়াকলাপ আমাদেরকে জানালেন।
তাঁরা বললেন: “হে মুহাজির সম্প্রদায়, আপনারা কোথায় যাচ্ছেন?” আমি বললাম: “আমাদের আনসার ভাইদের কাছে যাচ্ছি।” তাঁরা বলেন: “হে মুহাজির সম্প্রদায়, আপনারা যদি তাঁদের কাছে না যান, এটা আপনাদের জন্য কোন দূষনীয় হবে না। আপনারা আপনাদের কাজ সম্পাদন করুন।” আমি বললাম: “আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমরা তাঁদের কাছে যাবো।” অতঃপর আমরা তাঁদের কাছে গেলাম। আমরা দেখতে পেলাম যে, তাঁরা বানু সা‘ঈদা গোত্রের ছাদের নিচে সমবেত হয়েছেন। আমরা আরো দেখতে পেলাম যে, তাঁদের মাঝে এক ব্যক্তি চাদরাবৃত। আমি বললাম: “ইনি কে?” তাঁরা জবাব দিলেন: “সা‘দ বিন ‘উবাদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু।” আমি বললাম: “তাঁর কী হয়েছে?” তাঁরা বললেন: “তিনি পীড়িত।” এরপর যখন আমরা বসলাম, তখন আনসার ভাষ্যকার বক্তব্য দিলেন। তিনি আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন: “অতঃপর, আমরা আনসারুল্লাহ (আল্লাহর দ্বীনের সাহায্যকারী), ইসলামের সেনাবাহিনী। হে মুহাজির সম্প্রদায়, আপনারা আমাদের একটি দল। আপনাদের কিছু লোক তাঁরা খিলাফত নিয়ে নিতে চাচ্ছে।” উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “তাঁরা আমাদেরকে মূল থেকে বের করে দিতে চাচ্ছে এবং আমাদেরকে সেখান থেকে নামিয়ে দিতে চাচ্ছে। তিনি বলেন:
উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন, যখন তিনি বক্তব্য শেষ করলেন, তখন আমি কথা বলতে উদ্যত হলাম। আমি সুন্দর, চমকপ্রদ কিছু কথা প্রস্তুত করেছিলাম আবু বকরের উপস্থিতিতে বলার জন্য, আমি তা বলে এই ব্যাপারে তাঁদের রাগ-ক্ষোভ কিছুটা কমাতে। যখন আমি কথা বলার জন্য উদ্যত হলাম, তখন আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বললেন: “থামুন।” আমি তাঁকে রাগাতে অপছন্দ করলাম। ফলে তিনি কথা বললেন। তিনি আমার চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল ও গুরুগম্ভীর ছিলেন। আল্লাহর কসম, আমি বলার জন্য যেসব চমকপ্রদ কথা প্রস্তুত করেছিলাম তার একটি কথাও তিনি ছাড়েননি বরং সব কথাই তিনি আমার মতো অথবা তার চেয়েও উত্তমভাবে উপস্থিত বাকপটুতায় বলেন। তিনি শাহাদাহ পাঠ করেন এবং আল্লাহর যথাযোগ্য গুণকীর্তন করলেন। তারপর বললেন, আম্মা বা‘দ, হে আনসার সম্প্রদায়, আপনারা নিজেদের যে কল্যানের কথা বললেন, আপনারা সেটার উপযুক্ত। তবে নেতৃত্বের ব্যাপারটি আরবরা কুরাইশদের এই গোত্র ছাড়া অন্য কারো জন্য হওয়ার সাথে পরিচিত নয়। তাঁরা আরবদের মাঝে আবাসস্থল ও বংশীয় দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ। আমি আপনাদের জন্য এই দুই ব্যক্তির যে কোন একজনকে মনোনিত করছি। আপনারা আপনাদের ইচ্ছামত তাদের যে কোন একজনের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করুন।” এই বলে তিনি আমার ও আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুমা এর হাত ধরেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে যা কিছু বলেছেন এই কথাটা ছাড়া আর কোন কিছুই আমার খারাপ লাগেনি। আল্লাহর কসম, পাপ হবে না- এমন কোন বিষয়ে আমাকে আগে পাঠানো হয় অতঃপর আমার শিরোচ্ছেদ করা হবে- সেটা আমার কাছে অধিকতর বেশি পছন্দনীয় এমন কওমের আমীর হওয়ার চেয়ে, যাদের মাঝে আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিদ্যমান আছেন! তবে মৃত্যুর সময় যদি আমার মনের অবস্থার পরিবর্তন হয়, সেটা ভিন্ন কথা!
অতঃপর আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু যখন বক্তব্য শেষ করলেন, তখন আনসারী এক যুবক বললেন: “আমি এমন এক পিলার যাতে খোশ-পাঁচড়াযুক্ত উট তাদের অসুখ নিরাময়ের জন্য এতে গা ঘষে। (অর্থাৎ আমি উচ্চবংশজাত) আমি খেজুরবিশিষ্ট্য এমন গাছ, যা পতিত হওয়া থেকে রক্ষার জন্য সহযোগী রয়েছে। (অর্থাৎ সাহায্য-সহযোগিতা ও প্রতিরোধ করার জন্য আমার বংশ-বুনিয়াদ রয়েছে) (আমার মত হলো) আমাদের মধ্য থেকে একজন আমীর হোক আর আপনাদের মধ্য থেকে একজন আমীর হোক। ”উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন: “এরপর হৈচৈ বেড়ে যায় আমি আরো বেশি মতানৈক্য হওয়ার আশংকা করলাম। ফলে আমি বললাম: “হে আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু, আপনার হাত বাড়িয়ে দিন।” তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করলাম। এরপর মুহাজির ও আনসারগণও তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। এভাবে আমরা সা‘দ বিন ‘উবাদাহ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর উপর বিজয় লাভ করি।” এসময় তাঁদের মাঝে এক ব্যক্তি বললেন যে, আপনারা তো সা‘দ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুকে মেরে ফেললেন।” তখন আমি রাগের বশবর্তী হয়ে বললাম: “আল্লাহ সা‘দকে মেরে ফেলুন। কারণ সে ক্ষতি ও ফিতনা সৃষ্টি করতে চায়। আল্লাহর কসম, বর্তমান এই সময়ে আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আর কোন কিছুকে মনে করিনি। আমরা আশংকা করেছিলাম, বাইয়াত গ্রহণ করার আগে যদি আমরা লোকজনকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দেই, তাহলে তারা আমাদের অনুপস্থিতিতে বাইয়াত গ্রহণ করবে, তখন হয়তো আমাদের পছন্দ না সত্তেও তার হাতে আমাদের বাইয়াত নিতে হবে নতুবা তাদের বিরোধিতা করতে হবে, তখন মতবিরোধ ও দ্বন্দ শুরু হবে। কাজেই কেউ যেন ধোঁকাগ্রস্থ হয়ে এমনটা না বলে যে, আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর বাইয়াত গ্রহণ আকস্মিক ছিল এবং সেটি পূর্ণতা পেয়েছে। জেনে রাখুন যে, সেটি আকস্মিক ছিল ঠিকই কিন্তু মহান আল্লাহ এর অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করেছেন। আর আপনাদের মাঝেও বর্তমানে আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর মত মানুষ নেই।”[1]
ইমাম মালিক রহিমাহুল্লাহ বলেন, “আমাকে ইমাম যুহরী বর্ণনা করেছেন যে, ‘উরওয়া বিন যুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বর্ণনা করেছেন যে, দুইজন আনসারী ব্যক্তি যারা মুহাজিরদের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন, তারা হলেন ‘উআইম বিন সা‘ঈদা এবং মা‘ন বিন ‘আদী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা। ইমাম মালিক রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, ইমাম যুহরী রহিমাহুল্লাহ সা‘ঈদ বিন মুসাইয়িব রহিমাহুল্লাহর কাছে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, যিনি বলেছিলেন যে, “আমি এমন এক পিলার যাতে খোশ-পাঁচড়াযুক্ত উট তাদের অসুখ নিরাময়ের জন্য এতে গা ঘষে। (অর্থাৎ আমি উচ্চবংশজাত)” তিনি বানু সালিমাহ গোত্রের লোক, তাঁর নাম হুবাব বিন মুনযির।
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ رضى الله تعالى عَنْهُ قَوْلُ عُمَرَ إِنَّ بَيْعَةَ أَبِي بَكْرٍ كَانَتْ فَلْتَةً وَلَكِنَّ اللَّهَ وَقَى شَرَّهَا يُرِيدُ أَنَّ بَيْعَةَ أَبِي بَكْرٍ كَانَ ابْتِدَاؤُهَا مِنْ غَيْرِ مَلَأٍ وَالشَّيْءُ الَّذِي يَكُونُ عَنْ غَيْرِ مَلَأٍ يُقَالُ لَهُ الْفَلْتَةُ وَقَدْ يُتَوَقَّعُ فِيمَا لَا يَجْتَمِعُ عَلَيْهِ الْمَلَأُ الشَّرُّ فقَالَ وَقَى اللَّهُ شَرَّهَا يُرِيدُ الشَّرَّ الْمُتَوَقَّعَ فِي الْفَلَتَاتِ لَا أَنَّ بَيْعَةَ أَبِي بَكْرٍ كَانَ فِيهَا شر.
আবু হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন: “আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর বাইয়াত গ্রহণ আকস্মিক ঠিকই কিন্তু মহান আল্লাহ এর অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করেছেন” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর বাইয়াতের সূচনা বহু লোকের মাধ্যমে হয়নি। আর যে জিনিস অনেক লোকের মাধ্যমে হয়না, তাকে আকস্মিক বলা হয়। যে বিষয়ে অনেক লোক একত্রিত হয় না, তাতে মন্দ কিছু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য তিনি বলেছেন, “আল্লাহ এর অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করেছেন” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আকস্মিক ঘটনায় মন্দ কিছু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেটি। এর দ্বারা এমনটা উদ্দেশ্য নয় যে, আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর বাইয়াত এর মাঝে অনিষ্টতা রয়েছে।”
ذِكْرُ الزَّجْرِ عَنِ الرَّغْبَةِ عَنِ الْآبَاءِ إِذْ رَغْبَةُ الْمَرْءِ عَنْ أَبِيهِ ضَرْبٌ مِنَ الْكُفْرِ
أَخْبَرَنَا الْحَسَنُ بْنُ سُفْيَانَ بِنَسَا وَأَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْمُثَنَّى بِالْمَوْصِلِ وَالْفَضْلُ بْنُ الْحُبَابِ الْجُمَحِيُّ بِالْبَصْرَةِ وَاللَّفْظُ لِلْحَسَنِ قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ بن أَخِي جُوَيْرِيَةَ بْنِ أَسْمَاءَ قَالَ حَدَّثَنَا عَمِّي جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ كَانَ يقرىء عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ فِي خِلَافَةِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ فَلَمْ أَرَ رَجُلًا يَجِدُ مِنَ الْأَقْشَعْرِيرَةِ مَا يَجِدُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ عِنْدَ الْقِرَاءَةِ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَجِئْتُ أَلْتَمِسُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ يَوْمًا فَلَمْ أَجِدْهُ فَانْتَظَرْتُهُ فِي بَيْتِهِ حَتَّى رَجَعَ مِنْ عِنْدِ عُمَرَ فَلَمَّا رَجَعَ قَالَ لِي لَوْ رَأَيْتَ رَجُلًا آنِفًا قَالَ لِعُمَرَ كَذَا وَكَذَا وَهُوَ يَوْمَئِذٍ بِمِنًى فِي آخِرِ حَجَّةٍ حَجَّهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَذَكَرَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ لِابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَجُلًا أَتَى إِلَى عُمَرَ فَأَخْبَرَهُ أَنَّ رَجُلًا قَالَ وَاللَّهِ لَوْ مَاتَ عُمَرُ لَقَدْ بَايَعْتُ فُلَانًا قَالَ عُمَرُ حِينَ بَلَغَهُ ذَلِكَ إِنِّي لَقَائِمٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ الْعَشِيَّةَ فِي النَّاسِ فَمُحَذِّرُهُمْ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يَغْتَصِبُونَ الْأُمَّةَ أَمَرَهُمْ. فقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فقلت يا أمير الؤمنين لَا تَفْعَلْ ذَلِكَ يَوْمَكَ هَذَا فَإِنَّ الْمَوْسِمَ يَجْمَعُ رَعَاعَ النَّاسِ وَغَوْغَاءَهُمْ وَإِنَّهُمْ هُمُ الَّذِينَ يَغْلِبُونَ عَلَى مَجْلِسِكَ فَأَخْشَى إِنْ قُلْتَ فِيهِمُ الْيَوْمَ مَقَالًا أَنْ يَطِيرُوا بِهَا وَلَا يَعُوهَا وَلَا يَضَعُوهَا عَلَى مَوَاضِعِهَا أَمْهِلْ حَتَّى تَقْدَمَ الْمَدِينَةَ فَإِنَّهَا دَارُ الْهِجْرَةِ وَالسُّنَّةِ وَتَخْلُصَ لِعُلَمَاءِ النَّاسِ وَأَشْرَافِهِمْ فَتَقُولُ مَا قُلْتَ مُتَمَكِّنًا فَيَعُوا مَقَالَتَكَ وَيَضَعُوهَا عَلَى مَوَاضِعِهَا. قَالَ عُمَرُ وَاللَّهِ لَئِنْ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ صَالِحًا لَأُكَلِّمَنَّ بِهَا النَّاسَ في أول مقام أقومه. قال بن عَبَّاسٍ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فِي عَقِبِ ذِي الْحِجَّةِ وَجَاءَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ هَجَّرْتُ صَكَّةَ الْأَعْمَى لِمَا أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَوَجَدْتُ سَعِيدَ بْنَ زَيْدٍ قَدْ سَبَقَنِي بِالتَّهْجِيرِ فَجَلَسَ إِلَى رُكْنٍ جَانِبَ الْمِنْبَرِ الْأَيْمَنِ فَجَلَسْتُ إِلَى جَنْبِهِ تَمَسُّ رُكْبَتِي رُكْبَتَهُ فَلَمْ يَنْشَبْ عُمَرُ أَنْ خَرَجَ فَأَقْبَلَ يَؤُمُّ الْمِنْبَرَ فَقُلْتُ لِسَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ وَعُمَرُ مُقْبِلٌ وَاللَّهِ لَيَقُولَنَّ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى هَذَا الْمِنْبَرِ الْيَوْمَ مَقَالَةً لَمْ يَقُلْهَا أَحَدٌ قَبْلَهُ فَأَنْكَرَ ذَلِكَ سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ وَقَالَ مَا عَسَى أَنْ يَقُولَ مَا لَمْ يَقُلْهُ أَحَدٌ قَبْلَهُ فَلَمَّا جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ فَلَمَّا أَنْ سَكَتَ قَامَ عُمَرُ فَتَشَهَّدَ وَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي قَائِلٌ لَكُمْ مَقَالَةً قَدْ قُدِّرَ لِي أَنْ أَقُولَهَا لَعَلَّهَا بَيْنَ يَدَيْ أَجْلِي فَمَنْ عَقَلَهَا وَوَعَاهَا فَلْيُحَدِّثْ بِهَا حَيْثُ انْتَهَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ وَمَنْ خَشِيَ أَنْ لَا يَعِيَهَا فَلَا أُحِلُّ لَهُ أَنْ يَكْذِبَ عَلَيَّ إِنَّ اللَّهَ جَلَّ وَعَلَا بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ فَكَانَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ فَقَرَأْنَاهَا وَعَقَلْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا وَرَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ وَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ وَاللَّهِ مَا نَجِدُ آيَةَ الرَّجْمِ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَيَتْرُكَ فَرِيضَةً أَنْزَلَهَا اللَّهُ وَإِنَّ الرَّجْمَ فِي كِتَابِ اللَّهِ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أُحْصِنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ إِذَا قَامَتِ الْبَيِّنَةُ أَوْ كَانَ الْحَبَلُ أَوِ الِاعْتِرَافُ. ثُمَّ إِنَّا قَدْ كُنَّا نَقْرَأُ أَنْ "لَا تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ فَإِنَّ كُفْرًا بِكُمْ أَنْ تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ". ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم قال "لا تطروني كما أطري بْنَ مَرْيَمَ فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدٌ فَقُولُوا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ". ثُمَّ إِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ فُلَانًا مِنْكُمْ يَقُولُ وَاللَّهِ لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ لقد بايعت فلانا فلا يغرن امرءاً أن يقول إن بيعة أبي بكر كانت فَلْتَةً فَتَمَّتْ فَإِنَّهَا قَدْ كَانَتْ كَذَلِكَ إِلَّا أَنَّ اللَّهَ وَقَى شَرَّهَا وَلَيْسَ فِيكُمْ مَنْ تُقْطَعُ إِلَيْهِ الْأَعْنَاقُ مِثْلَ أَبِي بَكْرٍ وَإِنَّهُ كَانَ مِنْ خَيْرِنَا حِينَ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِنَّ عَلِيًّا وَالزُّبَيْرَ وَمَنْ مَعَهُمَا تَخَلَّفُوا عَنَّا وَتَخَلَّفَتِ الْأَنْصَارُ عَنَّا بِأَسْرِهَا وَاجْتَمَعُوا فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ وَاجْتَمَعَ الْمُهَاجِرُونَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَبَيْنَا نَحْنُ فِي مَنْزِلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ رَجُلٌ يُنَادِي مِنْ وَرَاءِ الْجِدَارِ اخْرُجْ إلي يا بن الْخَطَّابِ فَقُلْتُ إِلَيْكَ عَنِّي فَإِنَّا مَشَاغِيلُ عَنْكَ فقَالَ إِنَّهُ قَدْ حَدَثَ أَمْرٌ لَا بُدَّ مِنْكَ فِيهِ إِنَّ الْأَنْصَارَ قَدِ اجْتَمَعُوا فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ فَأَدْرِكُوهُمْ قَبْلَ أَنْ يُحْدِثُوا أَمْرًا فَيَكُونُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ فِيهِ حَرْبٌ فَقُلْتُ لِأَبِي بَكْرٍ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى إِخْوَانِنَا هَؤُلَاءِ مِنَ الْأَنْصَارِ فَانْطَلَقْنَا نَؤُمُّهُمْ فَلَقِيَنَا أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ فَأَخَذَ أَبُو بَكْرٍ بِيَدِهِ فَمَشَى بَيْنِي وَبَيْنَهُ حَتَّى إِذَا دَنَوْنَا مِنْهُمْ لَقِينَا رجلان صالحان فذكرا الذي صنع القوم وقالا أَيْنَ تُرِيدُونَ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ فَقُلْتُ نُرِيدُ إِخْوَانَنَا مِنْ هَؤُلَاءِ الْأَنْصَارِ قَالَا لَا عَلَيْكُمْ أَنْ لَا تَقْرَبُوهُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ اقْضُوا أَمَرَكُمْ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لَنَأْتِيَنَّهُمْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَاهُمْ فَإِذَا هُمْ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ فَإِذَا بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ رَجُلٌ مُزَّمِّلٌ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قالوا سعد بن عبادة قُلْتُ فَمَا لَهُ قَالُوا هُوَ وَجِعٌ فَلَمَّا جَلَسْنَا تَكَلَّمَ خَطِيبُ الْأَنْصَارِ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَنَحْنُ أَنْصَارُ اللَّهِ وَكَتِيبَةُ الْإِسْلَامِ وَأَنْتُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ رَهْطٌ مِنَّا وَقَدْ دَفَّتْ دَافَّةٌ مِنْ قَوْمِكُمْ قَالَ عُمَرُ وَإِذَا هُمْ يُرِيدُونَ أَنْ يَخْتَزِلُونَا مِنْ أَصْلِنَا وَيَحُطُّوا بِنَا مِنْهُ قَالَ فَلَمَّا قَضَى مَقَالَتَهُ أَرَدْتُ أَنْ أَتَكَلَّمَ وَكُنْتُ قَدْ زَوَّرْتُ مَقَالَةً أَعْجَبَتْنِي أُرِيدُ أَنْ أَقُومَ بِهَا بَيْنَ يَدَيْ أَبِي بَكْرٍ وَكُنْتُ أُدَارِي مِنْ أَبِي بَكْرٍ بَعْضَ الْحِدَّةِ فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَتَكَلَّمَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى رِسْلِكَ فَكَرِهْتُ أَنْ أُغْضِبَهُ فَتَكَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ وَهُوَ كَانَ أَحْلَمَ مِنِّي وَأَوْقَرَ وَاللَّهِ مَا تَرَكَ مِنْ كَلِمَةٍ أَعْجَبَتْنِي فِي تَزْوِيرِي إِلَّا تَكَلَّمَ بِمِثْلِهَا أَوْ أَفْضَلَ فِي بَدِيهَتِهِ حَتَّى سَكَتَ فَتَشَهَّدَ أَبُو بَكْرٍ وَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ أَيُّهَا الْأَنْصَارُ فَمَا ذَكَرْتُمْ فِيكُمْ مِنْ خَيْرٍ فَأَنْتُمْ أَهْلُهُ وَلَنْ تَعْرِفَ الْعَرَبُ هَذَا الْأَمْرَ إِلَّا لِهَذَا الْحَيِّ مِنْ قُرَيْشٍ هُمْ أَوْسَطُ الْعَرَبِ نَسَبًا وَدَارًا وَقَدْ رَضِيتُ لَكُمْ أَحَدَ هَذَيْنِ الرَّجُلَيْنِ فَبَايِعُوا أَيُّهُمَا شِئْتُمْ فَأَخَذَ بِيَدِي وَبِيَدِ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ فَلَمْ أَكْرَهْ مِنْ مَقَالَتِهِ غَيْرَهَا كَانَ وَاللَّهِ أَنْ أُقَدَّمَ فَتُضْرَبَ عُنُقِي لَا يُقَرِّبُنِي ذَلِكَ إِلَى إِثْمٍ أحب إلي من أن أُؤَمَّرَ عَلَى قَوْمٍ فِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ إِلَّا أَنْ تَغَيَّرَ نَفْسِي عِنْدَ الْمَوْتِ فَلَمَّا قَضَى أَبُو بَكْرٍ مَقَالَتَهُ قَالَ قَائِلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ أَنَا جُذَيْلُهَا الْمُحَكَّكُ وَعُذَيْقُهَا الْمُرَجَّبُ مِنَّا أَمِيرٌ وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ قَالَ عُمَرُ فكثر اللغظ وَارْتَفَعَتِ الْأَصْوَاتُ حَتَّى أَشْفَقْتُ الِاخْتِلَافَ قُلْتُ ابْسُطْ يَدَكَ يَا أَبَا بَكْرٍ فَبَسَطَ أَبُو بَكْرٍ يَدَهُ فَبَايَعَهُ وَبَايَعَهُ الْمُهَاجِرُونَ وَالْأَنْصَارُ وَنَزَوْنَا عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فقَالَ قَائِلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ قَتَلْتُمْ سَعْدًا قَالَ عُمَرُ فَقُلْتُ وَأَنَا مُغْضَبٌ قَتَلَ اللَّهُ سَعْدًا فَإِنَّهُ صَاحِبُ فِتْنَةٍ وَشَرٍّ وَإِنَّا وَاللَّهِ مَا رَأَيْنَا فِيمَا حَضَرَ مِنْ أَمْرِنَا أَمْرٌ أَقْوَى مِنْ بَيْعَةِ أَبِي بَكْرٍ فَخَشِينَا إِنْ فَارَقْنَا الْقَوْمَ قَبْلَ أَنْ تَكُونَ بَيْعَةٌ أَنْ يُحْدِثُوا بَعْدَنَا بَيْعَةً فَإِمَّا أَنْ نُبَايِعَهُمْ عَلَى مَا لَا نَرْضَى وَإِمَّا أَنْ نُخَالِفَهُمْ فَيَكُونُ فَسَادًا فَلَا يَغْتَرَّنَّ امْرٌؤٌ أَنْ يقول إن بيعة أبي بكر كانت فلتة فَتَمَّتْ فَقَدْ كَانَتْ فَلْتَةً وَلَكِنَّ اللَّهَ وَقَى شَرَّهَا أَلَا وَإِنَّهُ لَيْسَ فِيكُمُ الْيَوْمَ مِثْلُ أَبِي بَكْرٍ. قَالَ مَالِكٌ أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُ أَنَّ الرَّجُلَيْنِ الْأَنْصَارِيَّيْنِ اللَّذَيْنِ لَقِيَا الْمُهَاجِرِينَ هُمَا عُوَيْمُ بْنُ سَاعِدَةَ وَمَعْنُ بْنُ عَدِيٍّ وَزَعَمَ مَالِكٌ أَنَّ الزُّهْرِيَّ سمع سعيد بن الْمُسَيِّبِ يَزْعُمُ أَنَّ الَّذِي قَالَ يَوْمَئِذٍ أَنَا جُذَيْلُهَا الْمُحَكَّكُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ يُقَالُ لَهُ حُبَابُ بْنُ الْمُنْذِرِ. الراوي : عَبْد اللَّهِ بْن عَبَّاسٍ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 414 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.