পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পবিত্র স্ত্রীগণের মর্যাদা
৬১৮৮-[৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, তোমাকে তিন রজনীতে স্বপ্নযোগে আমাকে দেখানো হয়েছে। একজন মালাক (ফেরেশতা) তোমাকে রেশমি কাপড়ে জড়িয়ে নিয়ে এসে আমাকে বলেন, ইনি আপনার স্ত্রী। তখন আমি তোমার চেহারার কাপড় খুললাম। তখন দেখতে পেলাম, তুমিই। অতঃপর আমি (মনে মনে) বললাম, এটা যদি আল্লাহর তরফ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই পূর্ণ হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول (بَابُ مَنَاقِبِ أَزْوَاجِ)
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: أُريتُكِ فِي الْمَنَامِ ثَلَاثَ لَيَالٍ يَجِيءُ بِكِ الْمَلَكُ فِي سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيرٍ فَقَالَ لِي: هَذِهِ امْرَأَتُكَ فَكَشَفْتُ عَنْ وَجْهِكِ الثَّوْبَ فَإِذَا أَنْتِ هِيَ. فَقُلْتُ: إِنْ يَكُنْ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللَّهِ يُمْضِهِ . مُتَّفق عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (3895) و مسلم (79 / 2438)، (6283) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: শারহুন নাবাবীর গ্রন্থে কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এ স্বপ্নটি যদি তাঁর নুবুওয়্যাতের পূর্বে হয়ে থাকে এবং অনর্থক স্বপ্ন থেকে মুক্ত হয়ে থাকে তাহলে তার অর্থ হলো এটি একটি সত্য স্বপ্ন। আর যদি নুবুওয়্যাতের পরে হয় তাহলে তার তিনটি অর্থ হতে পারে।
১) স্বপ্নটা যদি প্রত্যক্ষ হয় তাহলে তার কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি পরোক্ষ হয় তাহলে তার ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। এখন সন্দেহ হলো যে, এই স্বপ্নটি কি প্রত্যক্ষ ছিল নাকি পরোক্ষ?
২) “আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর সাথে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর বিবাহ দ্বারা কি দুনিয়ার বিবাহ উদ্দেশ্য নাকি জান্নাতের বিবাহ? যদি দুনিয়ার বিবাহ উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে তো আল্লাহ তা বাস্তবায়ন করেছেন। এখন সন্দেহ হলো যে, এই স্বপ্নের মাধ্যমে কি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ‘আয়িশার সাথে দুনিয়ার বিবাহ উদ্দেশ্য নাকি জান্নাতের বিবাহ?
৩) কোন সন্দেহ নেই। প্রত্যক্ষভাবেই এই সংবাদ দেয়া হয়েছে যা বাস্তবায়িত হয়েছে। (শারহুন নাবাবী ১৫শ খণ্ড, ১৮২ পৃ., হা, ২৪৩৮)
মিরক্বাতুল মাফাতীহ প্রণেতা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বিবাহের ব্যপারে প্রস্তাব দিয়েছেন এবং নুবুওয়্যাতের দশম বছরে শাওয়াল মাসে মক্কায় তাকে বিবাহ করেছেন। দ্বিতীয় হিজরীতে শাওয়াল মাসে মদীনায় তার সাথে বাসর করেন। তখন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বয়স ছিল ৮ বছর ১০ মাস। আবার কেউ কেউ বলেন, হিজরতের ৭ মাস পরেই রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সাথে বাসর করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সাথে ৯ বছর জীবনযাপন করেন। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করেন তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর বয়স ছিল ১৮ বছর। রাসূলুল্লাহ (সা.) ‘আয়িশাহ্ ছাড়া আর কোন কুমারী নারীকে বিবাহ করেননি।
‘আয়িশাহ (রাঃ) ছিলেন একজন ফকীহ জ্ঞানী বিশুদ্ধভাষিণী এবং অনেক মর্যাদার অধিকারিণী। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে অনেক হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার থেকেও অনেক সাহাবী ও তাবি'ঈ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আয়িশাহ (রাঃ) ১৭ই রমাযানে মঙ্গলবার রাতে ৫৭/৫৮ বছর বয়সে মদীনায় মৃত্যুবরণ করেন। রাতেই তাকে দাফন করার আদেশ করা হয়। অতঃপর তাকে বাক্বী কবরস্থানে দাফন করা হয়। আর জানাযার সালাত আদায় করিয়ে ছিলেন আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)- (মিরকাতুল মাফাতীহ)।