পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাশর
৫৫৩৯-[৮] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন সকল মানুষ ঘর্মাক্ত হয়ে পড়বে, যা তাদের ঘাম জমিনের সত্তর গজ পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে, এমনকি তা দু’কান পর্যন্ত পৌছে লাগামে পরিণত হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول (بَاب الْحَشْر)
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَعْرَقُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ فِي الْأَرْضِ سَبْعِينَ ذِرَاعًا وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ آذَانَهُمْ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (6532) و مسلم (61 / 2863)، (7205) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: বায়হাক্বীতে ‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, সেদিনের বিপদ খুব কঠিন হবে। এমনকি ঘাম কাফিরের মুখ বরাবর হবে। তাঁকে বলা হলো, মু'মিনরা কোথায় থাকবে? তিনি (সা.) বললেন, তারা থাকবে স্বর্ণের চেয়ারের উপরে। আর তাদেরকে মেঘ ছায়া দান করবে। আবূ মূসা (রাঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে, কিয়ামতের দিন মানুষের মাথার উপর সূর্য থাকবে। আর তাদের ‘আমালসমূহ মাথার উপর ছায়া দিবে।
ইবনু আবূ শায়বায় সালমান (রাঃ) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন সূর্যকে দশ বছরের তাপ প্রদান করা হবে। অতঃপর তা মানুষের খুলির কাছাকাছি করা হবে যেন তা ধনুকের রশির সমান। মানুষেরা ঘর্মাক্ত হবে, এতে ঘাম চুয়ে মানুষের দেহের সমান হয়ে যাবে। এত উঁচু হয়ে যাবে যে, মানুষেরা ঘড় ঘড় আওয়াজ করবে। সে তাপে সেদিন মুমিন নারী-পুরুষের কোন ক্ষতি হবে না।
আবূ ইয়ালা (রাঃ)-এর বর্ণনায় আছে, কিয়ামতের দিন ঘাম মানুষের মুখ পরিমাণ হবে যেমন মুখে লাগাম থাকে। এতে সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! জাহান্নামে দিয়ে হলেও এখান থেকে আমাকে অবকাশ দিন। এসব অবস্থা হাশরের ময়দানে ঘটবে। তাদের ‘আমল অনুযায়ী শাস্তির অবস্থা বিভিন্ন রকম হবে। আর কাফিররা তো কঠিন বিপদে অবস্থান করবে।
হাদীসের প্রকাশ্য অর্থানুযায়ী মানুষ এই বিপদের অন্তর্ভুক্ত। তবে অন্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, এটা বিশেষ এক শ্রেণি, তারা সংখ্যায় বেশি। এর মধ্য থেকে বাদ দেয়া হয়েছে নবীদেরকে, শহীদদের ও আরো যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করেন। অতএব সবচেয়ে বেশি ঘাম হবে কাফিরদের, অতঃপর কবীরা গুনাহগারদের, অতঃপর পরবর্তী শ্রেণিদের। কাফিরদের সংখ্যার তুলনায় মুসলিমদের সংখ্যা অতি নগণ্য হবে।
এগুলো সব অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনয়নের অন্তর্ভুক্ত, যে এথেকে বিরত থাকবে, সে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এসব জানিয়ে দেয়ার উপকারিতা হলো যাতে শ্রোতাগণ সতর্ক হয় এবং ঐসব বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। (ফাতহুল বারী ১১শ খণ্ড, হা. ৬৫৩২)