পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - শিঙ্গায় ফুৎকার
৫৫২৯-[৯] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলার বাণী- (فإِذا نُقر فِي النَّاقور) “যেদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে”- (সূরাহ্ আল মুদ্দাসসির ৭৪: ৮)-এর মধ্যে (نَاقُورِ) (না-কূর) দ্বারা শিঙ্গা এবং (یَوۡمَ تَرۡجُفُ الرَّاجِفَۃُ ۙ) সেদিন ভূকম্পন প্রকম্পিত করবে”- (সূরা আন্ নাযি’আত ৭৯:৬)। এর মধ্যে (الرَّاجِفَۃُ ۙ) (রা-জিফাহ) দ্বারা প্রথম ফুৎকার এবং (تَتۡبَعُهَا الرَّادِفَۃُ ؕ) “তারপর আসবে আরেকটি ভূকম্পন”- (সূরা আন্ নাযি’আত ৭৯: ৭) (الرَّادِفَۃُ ؕ) (রা-দিফাহ) দ্বারা দ্বিতীয় ফুৎকারের অর্থ গ্রহণ করা হয়েছে। (বুখারী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب النفخ فِي الصُّور)
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى (فإِذا نُقر فِي النَّاقور) : الصّور قَالَ: و (الرجفة) : النَّفْخَةُ الْأُولَى وَ (الرَّادِفَةُ) : الثَّانِيَةُ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ فِي تَرْجَمَة بَاب رواہ البخاری (کتاب الرقاق باب 43 قبل ح 6517 تعلیقًا) * اسندہ ابن جریر فی تفسیرہ (29 / 95) و سندہ ضعیف ، علی بن ابی طلحۃ عن ابن عباس : منقطع کما تقدم 5117) ۔ (صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (نَاقُورِ) থেকে উদ্দেশ্য শিঙ্গা। আয়াতের অর্থ হলো যখন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন কাফিরদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে। (یَوۡمَ تَرۡجُفُ الرَّاجِفَۃُ ۙ) আয়াতে (راجِفَةُ) থেকে উদ্দেশ্য হলো এতে পৃথিবী ও পাহাড় নড়ে উঠবে এবং কম্পিত হবে। (راجِفَةُ) শব্দটি (رجف) থেকে বের হয়েছে। যার অর্থ নড়াচড়া করা, প্রকম্পিত হওয়া। (تَتۡبَعُهَا الرَّادِفَۃُ ؕ) আয়াতে (رَادِفَةُ) থেকে উদ্দেশ্য দ্বিতীয় ফুৎকার যা প্রথমটির পরে হবে। এর অর্থ একটি বস্তুর পরে আরেকটি পৌছা। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৭৯)
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (الرَّاجِفَۃُ) হলো সে মহাপ্রলয় যখন আসমান জমিন প্রকম্পিত হবে। আর সেটা প্রথম ফুৎকারের সময় ঘটিতব্য অবস্থা সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। আর (الرَّادِفَۃُ ؕ) হলো সে মহাঘটনা যা প্রথমটার পরে সংঘটিত হবে। আর সেটা হচ্ছে দ্বিতীয় ফুৎকার।
(الصُّورُ) এর আলোচনা কুরআনের সূরাহ্ আ'আম, মু'মিনূন, নামল, যুমার, কাফ বিভিন্ন সূরায় একাধিকবার বর্ণিত হয়েছে। শব্দটি সোয়াদ বর্ণে পেশ ও ওয়াও বর্নে সুকূনযোগে। এভাবে প্রসিদ্ধ কিরাআতে ও হাদীসসমূহে রয়েছে। এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, দেহসমূহে ফুৎকার দেয়ার উদ্দেশ্য হলো যাতে আত্মাগুলো দেহে ফিরে আসে। তবারী একদল মানুষ থেকে বর্ণনা করে বলেন, তারা বলেন: শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া থেকে উদ্দেশ্য হলো দেহসমূহে যাতে আত্মাগুলো ফিরে আসে। যেমন আল্লাহ বলেন (وَ نَفَخۡتُ فِیۡهِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ) “আর তাতে আমার পক্ষ হতে রুহ ফুঁকে দেব”- (সূরা আল হিজর ১৫: ২৯, সোয়াদ ৩৮:৭২)।
আবূ শায়খ ‘কিতাবুল উযমায় ওয়াহ্ ইবনু মুনাব্বিহ-এর সূত্রে বলেন, আল্লাহ তা'আলা শিঙ্গাকে সৃষ্টি করেছেন সাদা মতি দ্বারা নির্মল কাঁচপাত্রে, অতঃপর ‘আরশকে বললেন, শিঙ্গাকে নিয়ে ঝুলিয়ে রাখতে। তারপর বললেন, (كن) (হয়ে যাও)। এতে ইসরাফীল আলায়হিস সালাম সৃষ্টি হলেন। অতঃপর তিনি ইসরাফীলকে শিঙ্গা নিয়ে থাকার জন্য নির্দেশ দিলে তিনি তা গ্রহণ করলেন। তাতে সৃষ্টিকুলের রূহ সংখ্যক ছিদ্র রয়েছে। তারপর তিনি লম্বা হাদীস বর্ণনা করলেন। এতে আছে সমস্ত আত্মাকে শিঙ্গায় জমা করা হবে। অতঃপর আল্লাহ ইসরাফীল আলায়হিস সালাম-কে আদেশ দিলে তাতে ফুৎকার দিবেন। ফলে সব আত্মা দেহে প্রবেশ করবে। এভাবে প্রথমে শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে। (ফাতহুল বারী ১১ খণ্ড, ৪৩ নং অধ্যায় باب نفخ الصور এর তা'লীক)