পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - শিঙ্গায় ফুৎকার
৫৫২২-[২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন জমিনকে মুষ্ঠির মধ্যে নিয়ে নেবেন, আর আকাশকে ডান হাতে পেঁচিয়ে নেবেন। অতঃপর বলবেন, আমিই বাদশাহ, দুনিয়ার বাদশাহগণ কোথায়? (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول (بَاب النفخ فِي الصُّور )
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَقْبِضُ اللَّهُ الْأَرْضَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَطْوِي السَّمَاءَ بِيَمِينِهِ ثُمَّ يَقُولُ: أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ مُلُوكُ الْأَرْضِ؟ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (4812) و مسلم (23 / 2787)، (7050) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: (الْمَلِكُ) এখানে দুটি অর্থের সম্ভাবনা রয়েছে। (এক) এর অর্থ ক্ষমতা। তখন সেটা আল্লাহর সত্তাগত গুণ হিসেবে গণ্য হবে। (দুই) তার অর্থ জোর খাটানো বা পরিবর্তন করা। তখন এটা কর্মগত গুণ হিসেবে ধর্তব্য হবে। এ হাদীসে আল্লাহর ডান হাতের প্রমাণ বিদ্যমান যা আল্লাহর জাতের গুণের অন্যতম। তবে তার হাত কোন মাখলুকের হাতের মতো নয়, যেমনটি মুজাসসামাহ তথা কায়াবাদীগণ আকৃতি বর্ণনা করে থাকে। এ হাদীস দ্বারা জামিয়াদের মতো খণ্ডন হয়ে যায়। কারণ সব সৃষ্টি মরে যাওয়ার পরে ধ্বংস হয়ে গেলে কোন কিছু আর মাখলুক হিসেবে থাকে না, তাহলে কিভাবে আল্লাহর কালামকে মাখলুক বলা যাবে? যখন কেউ থাকবে না তখন আল্লাহ বলবেন: আজ কার রাজত্ব? যখন কেউ উত্তর দেয়ার থাকবে না। তখন আল্লাহ তা'আলা নিজেই নিজের উত্তর দিয়ে বলবেন, প্রতাপশালী এক আল্লাহর জন্যই সবকিছু। আর যারা বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ তা'আলা কথাকে সৃষ্টি করেন, অতঃপর যাকে ইচ্ছা তাকে শুনিয়ে থাকেন তাদের মতটিও এর দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। কারণ যখন আল্লাহ তা'আলা এ কথা বলবেন তখন কোন মাখলুক জীবিত থাকবে না। সেজন্য তিনি নিজেই স্বীয় উত্তর দিয়ে বলবেন, (..لِلّٰهِ الۡوَاحِدِ الۡقَهَّارِ) “অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার অধিকারী এক ও একক আল্লাহর”- (সূরাহ্ ইউসুফ ১২: ৩৯, সোয়াদ ৩৮: ৫, আহ্ যুমার ৩৯: ৪, আল মু'মিন ৪০: ১৬)। অতএব প্রমাণ হলো যে, তিনি এসব কথা বলবেন। আর তার কথাগুলো হচ্ছে। তাঁর সত্তাগতগুণ যা মাখলুক নয়।
ইসহাক ইবনু রহ্ওয়াই বলেন: এ কথা সঠিক যে, কুল মাখলুক ধ্বংস হবার পরে আল্লাহ বলবেন, আজ কার রাজত্ব? যখন এর উত্তর কেউ দিবে না তখন আল্লাহ স্বীয় জবাবে বলবেন, (..لِلّٰهِ الۡوَاحِدِ الۡقَهَّارِ) ..”প্রবল পরাক্রান্ত এক আল্লাহর”- (সূরাহ্ আল মু'মিন ৪০: ১৬)।
হিশাম ইবনু উবায়দুল্লাহ -এর বর্ণনায় রয়েছে: তিনি বলেন, যখন সমস্ত সৃষ্টিজীব মারা যাবে এবং আল্লাহ ব্যতীত যখন কেউ বাকী থাকবে না, তখন আল্লাহ বলবেন, (لِمَنِ الۡمُلۡکُ الۡیَوۡمَ) “আজ একচ্ছত্র কর্তৃত্ব কার?” (সূরাহ্ আল মু'মিন ৪০: ১৬)। কিন্তু কেউ এর উত্তর দিবে না। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা নিজের কথার জবাব নিজে দিয়ে বলবেন, (..ِلِلّٰهِ الۡوَاحِدُ الۡقَهَّارُ)। অতএব এটা আল্লাহ তা'আলার কথা এতে কারো সন্দেহ নেই। আর এটা কোন ওয়াহীও নয়। কারণ সব প্রাণ মৃত্যুর করাল গ্রাসে নিপতিত হয়েছে, অতএব আল্লাহ নিজেই এর উত্তর দিবেন। (ফাতহুল বারী ১৩ খণ্ড, হা. ৭৩৮২)