পরিচ্ছেদঃ ১৮/৪০. আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে আনুগত্য নেই
১/২৮৬৩। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলকামা ইবনে মুজাযযিয (রাঃ) কে একটি সামরিক বাহিনীর অধিনায়ক নিয়োগ করেন। আমিও তাতে শরীক ছিলাম। তিনি যখন গন্তব্যে পৌঁছেন অথবা পথিমধ্যে ছিলেন, তখন একদল সৈন্য তার নিকট (কোন বিষয়ে) অনুমতি চাইলে তিনি তাদের অনুমতি দিলেন এবং আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা ইবনে কায়েস আস-সাহমী (রাঃ)-কে তাদের অধিনায়ক নিযুক্ত করেন। যেসব লোক আবদুল্লাহ (রাঃ) -র সঙ্গী হয়ে জিহাদ করেছে, আমিও তাদের সাথে ছিলাম। লোকেরা পথিমধ্যে ছিল। এ অবস্থায় একদল লোক উত্তাপ গ্রহণের জন্য অথবা অন্য কোন কাজে আগুন প্রজ্জ্বলিত করলো। আবদুল্লাহ (রাঃ) তাদের বলেন (তিনি কিছুটা রসিক প্রকৃতির ছিলেন), আমার নির্দেশ শোনা ও আনুগত্য করা কি তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়? তারা বললো হ্যাঁ।
তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে যা করার নির্দেশই দিবো তোমরা কি তাই করবে? তারা বললো হ্যাঁ। তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে চূড়ান্ত নির্দেশ দিচ্ছি যে, তোমরা এই আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ো। কতক লোক (আগুনে ঝাঁপ দেয়ার জন্য) দাঁড়িয়ে গেলো এবং কোমর বাঁধলো। তিনি যখন দেখলেন, লোকেরা সত্যিই আগুনে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত হয়েছে, তখন বললেন, থামো। আমি তোমাদের সাথে ঠাট্টা করেছি। (রাবী বলেন) আমরা ফিরে এলে লোকেরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ ঘটনা উল্লেখ করলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কেউ তোমাদেরকে আল্লাহর নাফরমানি করার নির্দেশ দিলে তোমরা তার আনুগত্য করবে না।
তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন আমর সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তিনি সালিহ। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি কখনো হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনু আদী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় সমস্যা নেই। ইমাম নাসাঈ তাকে সিকাহ বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫১৩, ২৬/২১২ নং পৃষ্ঠা)
بَاب لَا طَاعَةَ فِي مَعْصِيَةِ اللهِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْحَكَمِ بْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ عَلْقَمَةَ بْنَ مُجَزِّزٍ عَلَى بَعْثٍ وَأَنَا فِيهِمْ فَلَمَّا انْتَهَى إِلَى رَأْسِ غَزَاتِهِ أَوْ كَانَ بِبَعْضِ الطَّرِيقِ اسْتَأْذَنَتْهُ طَائِفَةٌ مِنَ الْجَيْشِ فَأَذِنَ لَهُمْ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ حُذَافَةَ بْنِ قَيْسٍ السَّهْمِيَّ فَكُنْتُ فِيمَنْ غَزَا مَعَهُ فَلَمَّا كَانَ بِبَعْضِ الطَّرِيقِ أَوْقَدَ الْقَوْمُ نَارًا لِيَصْطَلُوا أَوْ لِيَصْنَعُوا عَلَيْهَا صَنِيعًا فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ - وَكَانَتْ فِيهِ دُعَابَةٌ - أَلَيْسَ لِي عَلَيْكُمُ السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ قَالُوا بَلَى . قَالَ فَمَا أَنَا بِآمِرِكُمْ بِشَىْءٍ إِلاَّ صَنَعْتُمُوهُ قَالُوا نَعَمْ . قَالَ فَإِنِّي أَعْزِمُ عَلَيْكُمْ إِلاَّ تَوَاثَبْتُمْ فِي هَذِهِ النَّارِ . فَقَامَ نَاسٌ فَتَحَجَّزُوا فَلَمَّا ظَنَّ أَنَّهُمْ وَاثِبُونَ قَالَ أَمْسِكُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ فَإِنَّمَا كُنْتُ أَمْزَحُ مَعَكُمْ . فَلَمَّا قَدِمْنَا ذَكَرُوا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَمَرَكُمْ مِنْهُمْ بِمَعْصِيَةِ اللَّهِ فَلاَ تُطِيعُوهُ " .
It was narrated from Abu Sa’eed Al-Khudri that the Messenger of Allah (ﷺ) sent ‘Alqamah bin Mujazziz at the head of a detachment, and I was among them. When he reached the battle site, or when he was partway there, a group of the army asked permission to take a different route, and he gave them permission, and appointed ‘Abdullah bin Hudhafah bin Qais As-Sahmi as their leader, and I was one of those who fought alongside with him. When we were partway there, the people lit a fire to warm themselves and cook some food. ‘Abdullah, who was a man who liked to joke, said:
“Do I not have the right that you should listen to me and obey?” They said: “Yes.” He said: “And if I command you to do something, will you not do it?” They said: “Of course.” He said: “Then I command you to jump into this fire.” Some people got up and got ready to jump, and when he saw that they were about to jump, he said: “Restrain yourselves, for I was joking with you.” When we came to Al-Madinah, they mentioned that to the Prophet (ﷺ), and the Messenger of Allah (ﷺ) said: “Whoever among you commands you to do something that involves disobedience to Allah, do not obey him.”
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৪০. আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে আনুগত্য নেই
২/২৮৬৪। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ পাপকাজ ব্যতীত যে কোন কাজে মুসলিম ব্যক্তির উপর (নেতৃবৃন্দের) আনুগত্য করা অপরিহার্য, তা তার মনঃপূত হোক বা না হোক। অতএব পাপ কাজের নির্দেশ দেয়া হলে তা শোনাও যাবে না, আনুগত্যও করা যাবে না।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
بَاب لَا طَاعَةَ فِي مَعْصِيَةِ اللهِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَجَاءٍ الْمَكِّيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " عَلَى الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ الطَّاعَةُ فِيمَا أَحَبَّ أَوْ كَرِهَ إِلاَّ أَنْ يُؤْمَرَ بِمَعْصِيَةٍ فَمَنْ أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ فَلاَ سَمْعَ وَلاَ طَاعَةَ " .
It was narrated from Ibn ‘Umar that the Messenger of Allah (ﷺ) said:
“The Muslim is obliged to obey (the ruler) whether he likes it or not, unless he is commanded to commit an act of disobedience. If he is commanded to commit a sin then he should neither listen nor obey.”
পরিচ্ছেদঃ ১৮/৪০. আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে আনুগত্য নেই
৩/২৮৬৫। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ অচিরেই আমার পরে এমন সব লোক তোমাদের নেতা হবে, যারা সুন্নাতকে বিলুপ্ত করবে, বিদআতের অনুসরণ করবে এবং নামায নির্দিষ্ট ওয়াক্ত থেকে বিলম্বে পড়বে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি তাদের (যুগ) পাই, তবে কী করবো? তিনি বলেনঃ হে উম্মু আবদ-এর পুত্র! তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছো যে, তুমি কী করবে? যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যাচরণ করে, তার আনুগত্য করা যাবে না।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. ইয়াহইয়া বিন সুলায়ম সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইমাম বুখারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সা'দ বলেন, তিনি সিকাহ। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭২৬৯, ৩৩/১৬২ নং পৃষ্ঠা) ২. কাসিম বিন আবদুর রহমান বিন আবদুল্লাহ বিন মাসউদ সম্পর্কে আবদুর রহমান বিন ইউসুফ বিন খিরাস বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সালিহ। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭৯৯, ২৩/ ৩৭৯ নং পৃষ্ঠা) ৩. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনুল মাদীনী, ইবনু আবু শায়বাহ, আমর ইবনুল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা)
بَاب لَا طَاعَةَ فِي مَعْصِيَةِ اللهِ
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، ح وَحَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " سَيَلِي أُمُورَكُمْ بَعْدِي رِجَالٌ يُطْفِئُونَ السُّنَّةَ وَيَعْمَلُونَ بِالْبِدْعَةِ وَيُؤَخِّرُونَ الصَّلاَةَ عَنْ مَوَاقِيتِهَا " فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ أَدْرَكْتُهُمْ كَيْفَ أَفْعَلُ قَالَ " تَسْأَلُنِي يَا ابْنَ أُمِّ عَبْدٍ كَيْفَ تَفْعَلُ لاَ طَاعَةَ لِمَنْ عَصَى اللَّهَ " .
It was narrated from ‘Abdullah bin Mas’ud that the Prophet (ﷺ) said:
“Among those in charge of you, after I am gone, will be men who extinguish the Sunnah and follow innovation. They will delay the prayer from its proper time.” I said: “O Messenger of Allah, if I live to see them, what should I do?” He said: “You ask me, O Ibn ‘Abd, what you should do? There is no obedience to one who disobeys Allah.”