পরিচ্ছেদঃ ১৮/১০. নৌযুদ্ধের ফযীলাত
১/২৭৭৬। আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) এর খালা উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক দিন আমার ঘরে ঘুমালেন। তিনি হাসতে হাসতে জাগ্রত হলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে কে হাসালো? তিনি বলেনঃ আমার উম্মাতের কতক লোককে সমুদ্রপৃষ্ঠে উপবিষ্ট অবস্থায় আমার সামনে পেশ করা হয়েছে, যেভাবে বাদশাহ সিংহাসনে উপবিষ্ট থাকে। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আপনি আল্লাহর নিকট দোয়া করুন যাতে তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন।
আনাস (রাঃ) বলেন, তিনি তার জন্য দোয়া করলেন। তিনি পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন, অতঃপর পূর্বের ন্যায় জাগ্রত হলেন। উম্মু হারাম (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্বানুরূপ জবাব দেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আপনি আল্লাহর নিকট দোয়া করুন যাতে তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আনাস (রাঃ) বলেন, মুসলিমগণ মুআবিয়া ইবনে আবূ সুফিয়ান (রাঃ)-র নেতৃত্বে সর্বপ্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা হলে উম্মু হারাম (রাঃ)ও তার স্বামী উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ)-এর সাথে জিহাদে রওয়ানা হলেন। তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করেন। আরোহণের জন্য তার নিকট একটি জন্তুযান আনা হলো। জন্তুটি তাকে ছুড়ে ফেলে দিলে তিনি তাতে নিহত হন।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
بَاب فَضْلِ غَزْوِ الْبَحْرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ حَبَّانَ، - هُوَ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ - عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ خَالَتِهِ أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ، أَنَّهَا قَالَتْ نَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا قَرِيبًا مِنِّي ثُمَّ اسْتَيْقَظَ يَبْتَسِمُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَضْحَكَكَ قَالَ " نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَىَّ يَرْكَبُونَ ظَهْرَ هَذَا الْبَحْرِ كَالْمُلُوكِ عَلَى الأَسِرَّةِ " . قَالَتْ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ . قَالَ فَدَعَا لَهَا ثُمَّ نَامَ الثَّانِيَةَ فَفَعَلَ مِثْلَهَا ثُمَّ قَالَتْ مِثْلَ قَوْلِهَا فَأَجَابَهَا مِثْلَ جَوَابِهِ الأَوَّلِ . قَالَتْ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ قَالَ " أَنْتِ مِنَ الأَوَّلِينَ " . قَالَ فَخَرَجَتْ مَعَ زَوْجِهَا عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ غَازِيَةً أَوَّلَ مَا رَكِبَ الْمُسْلِمُونَ الْبَحْرَ مَعَ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ فَلَمَّا انْصَرَفُوا مِنْ غَزَاتِهِمْ قَافِلِينَ فَنَزَلُوا الشَّامَ فَقُرِّبَتْ إِلَيْهَا دَابَّةٌ لِتَرْكَبَ فَصَرَعَتْهَا فَمَاتَتْ .
It was narrated from Anas bin Malik that his maternal aunt Umm Harim bint Milhan said:
“The Messenger of Allah (ﷺ) slept near me one day, then he woke up smiling. I said: ‘O Messenger of Allah, what has made you smile?’ He said: ‘People of my nation who were shown to me (in my dream) riding across this sea like kings on thrones.’ I said: ‘Supplicate to Allah to make me one of them.’” So he prayed for her. Then he slept again, and did likewise, and she said the same as she said before, and he replied in the same manner. She said: “Pray to Allah to make me one of them,” and he said: “You will be one of the first ones.” He said: “Then she went out with her husband, ‘Ubadah bin Samit, as a fighter, the first time that the Muslims crossed the sea with Mu’awiyah bin Abu Sufyan. On their way back, after they had finished fighting, they stopped in Sham. An animal was brought near for her to ride it, but it threw her off, and she died.”
পরিচ্ছেদঃ ১৮/১০. নৌযুদ্ধের ফযীলাত
২/২৭৭৭। আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ একটি নৌযুদ্ধ দশটি স্থলযুদ্ধের সমতুল্য। আর সমুদ্রে যার মাথাঘুরানি হবে সে মহান আল্লাহর রাস্তায় রক্তে রঞ্জিত (নিহত) ব্যক্তির সমতুল্য।
তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. মুআবিয়াহ বিন ইয়াহইয়া সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী, আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবুল কাসিম আল-বাগাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৬৯, ২৮/২২৪ নং পৃষ্ঠা) ২. লায়স বিন আবু সুলায়ম সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০১৭, ২৪/২৭৯ নং পৃষ্ঠা)
بَاب فَضْلِ غَزْوِ الْبَحْرِ
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ لَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادٍ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " غَزْوَةٌ فِي الْبَحْرِ مِثْلُ عَشْرِ غَزَوَاتٍ فِي الْبَرِّ وَالَّذِي يَسْدَرُ فِي الْبَحْرِ كَالْمُتَشَحِّطِ فِي دَمِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ سُبْحَانَهُ " .
It was narrated from Abu Darda’ that the Messenger of Allah (ﷺ) said:
“A military expedition by sea is like ten expeditions by land. The one who suffers from seasickness is like one who gets drenched in his own blood in the cause of Allah.”
পরিচ্ছেদঃ ১৮/১০. নৌযুদ্ধের ফযীলাত
৩/২৭৭৮। আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ একজন শহীদ নৌযোদ্ধার মর্যাদা দু’জন শহীদ স্থলযোদ্ধার সমান। আর নৌ-পথে যার মাথাঘুরানি হয়, তার মর্যাদা স্থলযুদ্ধে শহীদের মর্যাদার সমান। আর দু’টি ঢেউয়ের মধ্যবর্তী দূরত বঅতিক্রমকারীর মর্যাদা আল্লাহর আনুগত্যে সারা দুনিয়া সফরকারীর সমান। আল্লাহ তা’আলা মৃত্যুদূতকে নৌযোদ্ধা ব্যতীত সকলের রূহ হরণ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। স্বয়ং আল্লাহ নৌযোদ্ধার রূহ নিয়ে নেন। তিনি যুদ্ধে শহীদের সকল গুনাহ মাফ করেন তার ঋণ ব্যতীত, কিন্তু নৌ-যুদ্ধে শহীদের সকল গুনাহ এবং ঋণও মাফ করেন।
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী গুফায়র বিন মা'দান আশ-শামী সম্পর্কে আবু জা'ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম তিরমিযি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৬৫, ২০/১৭৬ নং পৃষ্ঠা)
بَاب فَضْلِ غَزْوِ الْبَحْرِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ الْجُبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا عُفَيْرُ بْنُ مَعْدَانَ الشَّامِيُّ، عَنْ سُلَيْمِ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " شَهِيدُ الْبَحْرِ مِثْلُ شَهِيدَىِ الْبَرِّ وَالْمَائِدُ فِي الْبَحْرِ كَالْمُتَشَحِّطِ فِي دَمِهِ فِي الْبَرِّ وَمَا بَيْنَ الْمَوْجَتَيْنِ كَقَاطِعِ الدُّنْيَا فِي طَاعَةِ اللَّهِ وَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَكَلَ مَلَكَ الْمَوْتِ بِقَبْضِ الأَرْوَاحِ إِلاَّ شَهِيدَ الْبَحْرِ فَإِنَّهُ يَتَوَلَّى قَبْضَ أَرْوَاحِهِمْ وَيَغْفِرُ لِشَهِيدِ الْبَرِّ الذُّنُوبَ كُلَّهَا إِلاَّ الدَّيْنَ وَلِشَهِيدِ الْبَحْرِ الذُّنُوبَ وَالدَّيْنَ " .
It was narrated that Sulaim bin ‘Amr said:
I heard Abu Umamah saying: I heard the Messenger of Allah (ﷺ) say: “The martyr at sea is like two martyrs on land, and the one who suffers seasickness is like one who gets drenched in his own blood on land. The time spent between one wave and the next is like a lifetime spent in obedience to Allah. Allah has appointed the Angel of Death to seize souls, except for the martyr at sea, for Allah Himself seizes their souls. He forgives the martyrs on land for all sins except debt, but (He forgives) the martyr at sea all his sins and his debt.”