পরিচ্ছেদঃ চতুষ্পদ প্রাণীর প্রতি সদাচারণ না করার ব্যাপারে সতর্কীকরণ
৫৪৬. সাহল বিন হানযালাহ আল আনসারী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ‘উআইনা এবং আকরা‘রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে কিছু সাহায্য চান। ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে আদেশ করেন, তাদের জন্য অনুদান লিখে দিতে। মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাই করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাতে সীল মোহর মেরে দেন এবং সেটি তাদেরকে প্রদান করার নির্দেশ দেন। অতঃপর ‘উআইনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করেন, এতে কী রয়েছে?” মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাকে যা লিখে দেওয়ার আদেশ করা, এতে তাই রয়েছে।” অতঃপর ‘উআইনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তা গ্রহণ করেন এবং সেটি তাঁর পাগড়ীর সাথে বেঁধে নেন। আর আকরা‘, তিনি বলেন, আমি কি এমন চিঠি বহন করে নিয়ে যাবো, এটা তো ধোঁকার চিঠির মতো, আমি আদৌ জানিনা এতে কী রয়েছে?”
তারপর মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাদের উভয়ের কথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কোন এক প্রয়োজনে বের হলেন। অতঃপর তিনি অতিক্রম করলেন একটি উটের পাশ দিয়ে, যা মসজিদে নববীর দরজার পাশে দিনের প্রথম প্রহরে বাঁধা ছিল। তারপর তিনি দিনের শেষ ভাগে আবার সেখান দিয়ে অতিক্রম করেন, সেসময়ও উটটি সেই অবস্থাতেই ছিল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “এই উটের মালিক কোথায়?” অতঃপর তাকে খোঁজা হলো কিন্তু পাওয়া গেলো না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমরা এসব চতুষ্পদ প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করবে। সুস্থ অবস্থায় তোমরা এদের উপর আরোহন করবে এবং মোটা-তাজা অবস্থায় (জবেহ করে গোসত) ভক্ষন করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেন গোস্বা অবস্থায় বলেন: “নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি মানুষের কাছে সাহায্য চায়, অথচ তার কাছে এই পরিমাণ সম্পদ আছে, যা দিয়ে মানুষের থেকে অমুখাপেক্ষী থাকতে পারে, তবে সে ব্যক্তি (এর মাধ্যমে) জাহান্নামের অঙ্গার বৃদ্ধি করে নেয়। রাবী বলেন: “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কী পরিমাণ সম্পদ থাকলে, একজন ব্যক্তি মানুষের কাছে চাওয়া থেকে অমুখাপেক্ষী থাকতে পারে?” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “ যখন তার কাছে সকাল ও সন্ধার খাবার মজুদ থাকে।”[1]
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: قَوْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (يُغَدِّيهِ وَيُعَشِّيهِ): أَرَادَ بِهِ عَلَى دَائِمِ الْأَوْقَاتِ وَفِي قَوْلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (ارْكَبُوهَا صِحَاحًا) كَالدَّلِيلِ عَلَى أَنَّ النَّاقَةَ الْعَجْفَاءَ الضَّعِيفَةَ يَجِبُ أَنْ يُتنكَّب رُكُوبُهَا إِلَى أَنْ تَصِحَّ وَفِي قَوْلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (وَكُلُوهَا سِمَانًا) دَلِيلٌ عَلَى أَنَّ النَّاقَةَ الْمَهْزُولَةَ الَّتِي لَا نِقْيَ لَهَا يُسْتَحَبُّ تَرْكُ نَحْرِهَا إِلَى أَنْ تَسْمَنَ.
আবু হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বক্তব্য “যখন তার কাছে সকাল ও সন্ধার খাবার মজুদ থাকে।” এর দ্বারা তিনি সবসময় উদ্দেশ্য নিয়েছেন। তাঁর বাণী “সুস্থ অবস্থায় তোমরা এদের উপর আরোহন করবে।” এর মাঝে যে দলীল রয়েছে যে, দুর্বল, জীর্ণ-শীর্ণ উষ্ট্রী সুস্থ-সবল না হওয়া পর্যন্ত তাতে আরোহন করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বক্তব্য “মোটা-তাজা অবস্থায় (জবেহ করে গোসত) ভক্ষন করবে।” এতে দলীল রয়েছে যে, দুর্বল উট যার হাড্ডিতে মজ্জা নেই, সেটা মোটা-তাজা না হওয়া পর্যন্ত জবেহ না করা মুস্তাহাব।”
হাদীসটিকে আল্লামা শু‘আইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ বুখারীর শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহ আবু দাউদ: ১৪৪১।)
ذِكْرُ الزَّجْرِ عَنْ تَرْكِ تَعَاهُدِ الْمَرْءِ ذَوَاتَ الْأَرْبَعِ بِالْإحْسَانِ إِلَيْهَا
أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ الْحُبَابِ قَالَ: حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ: حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ قَالَ: حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو كَبْشَةَ السَّلُولِيُّ: أَنَّهُ سَمِعَ سَهْلَ بْنَ الْحَنْظَلِيَّةِ الْأَنْصَارِيَّ أَنَّ عُيَيْنَةَ وَالْأَقْرَعَ سَأَلَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا فَأَمَرَ مُعَاوِيَةَ أَنْ يَكْتُبَ بِهِ لَهُمَا فَفَعَلَ وَخَتَمَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَمَرَهُ بدفعه إليهما فأما عيينة فقَالَ مَا فِيهِ فقَالَ فِيهِ مَا أُمِرْتُ بِهِ فَقَبَّلَهُ فَقَبَّلَهُ وَعَقَدَهُ فِي عِمَامَتِهِ وَأَمَّا الْأَقْرَعُ فقَالَ: أَحْمِلُ صَحِيفَةً لَا أَدْرِي مَا فِيهَا كَصَحِيفَةِ الْمُتَلَمِّسِ؟ فَأَخْبَرَ مُعَاوِيَةُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَوْلِهِمَا فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَاجَتِهِ فَمَرَّ بِبَعِيرٍ مُنَاخٍ عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ ثُمَّ مَرَّ بِهِ مِنْ آخِرِ النَّهَارِ وَهُوَ عَلَى حَالِهِ فقَالَ: (أَيْنَ صَاحِبُ هَذَا الْبَعِيرِ؟ ) فابتُغي فَلَمْ يُوجَدْ فقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (اتَّقُوا اللَّهَ فِي هَذِهِ الْبَهَائِمِ ارْكَبُوهَا صِحَاحًا وَكُلُوهَا سِمَانًا كَالْمُتَسَخِّطِ آنِفًا إِنَّهُ مَنْ سَأَلَ وَعِنْدَهُ مَا يُغْنِيهِ فَإِنَّمَا يَسْتَكْثِرُ مِنْ جَمْرِ جَهَنَّمَ) قَالَ: يَا رَسُولَ الله وما يغنيه؟ قال: (يُغَدِّيهِ ويعشيه.)
الراوي : سَهْل بْن الْحَنْظَلِيَّةِ الْأَنْصَارِيّ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 546 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.