পরিচ্ছেদঃ ঈমান ও ইসলাম একই জিনিসের দুই নাম এই মর্মে বর্ণনা
১৫৮. প্রখ্যাত তাবি’ঈ তাউস রহিমাহুল্লাহ বলেন: এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে বললেন: ’আপনি কি যুদ্ধ করবেন না?’ তখন আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন: ’নিশ্চয়ই আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: ’ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। যথা: এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই, সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, রমযানের সিয়াম পালন করা ও বায়তুল্লাহর হজ্জ করা।”[1]
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ: هَذَانِ خَبَرَانِ خَرَجَ خِطَابُهُمَا عَلَى حَسَبِ الْحَالِ لِأَنَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَكَرَ الْإِيمَانَ ثُمَّ عَدَّهُ أَرْبَعَ خِصَالٍ ثُمَّ ذَكَرَ الْإِسْلَامَ وَعَدَّهُ خَمْسَ خِصَالٍ وَهَذَا مَا نَقُولُ فِي كُتُبِنَا بِأَنَّ الْعَرَبَ تَذْكُرُ الشَّيْءَ فِي لُغَتِهَا بِعَدَدٍ مَعْلُومٍ وَلَا تُرِيدُ بِذِكْرِهَا ذَلِكَ الْعَدَدَ نَفْيًا عَمَّا وَرَاءَهُ وَلَمْ يُرِدْ بِقَوْلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الْإِيمَانَ لَا يَكُونُ إِلَّا مَا عُدَّ فِي خبر بن عَبَّاسٍ لِأَنَّهُ ذَكَرَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَيْرِ خَبَرٍ أَشْيَاءَ كَثِيرَةً مِنَ الْإِيمَانِ ليست في خبر بن عمر ولا بن عباس اللذين ذكرناهما.
আবু হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন: “এই দুই হাদীসের বক্তব্য অবস্থা অনুযায়ী হয়েছে। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানের কথা উল্লেখ করেছেন তারপর ঈমানকে চারটি বৈশিষ্ট্যে গণনা করেছেন। তারপর তিনি ইসলামের কথা আলোচনা করেছেন এবং ইসলামকে পাঁচটি বৈশিষ্ট্যে গণনা করেছেন। এটা আমরা আমাদের কিতাবে বলে থাকি যে, আরবরা কোন কোন সময় তাদের ভাষায় নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেন, এবং এর মাধ্যমে অন্য সংখ্যাকে নাকচ করে শুধুমাত্র ঐ সংখ্যাকেই উদ্দেশ্য নেন না। এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বক্তব্য দ্বারা এটা আদৌ উদ্দেশ্য নয় যে, আব্দুল্লাহ বিন আব্বাসের হাদীসে যে বৈশিষ্ট্যগুলো গণনা করা হয়েছে অন্য কিছুতে ঈমান নেই। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য একাধিক হাদীসে অনেক বিষয়কে ঈমানের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের উল্লেখিত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস ও আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম এর হাদীসে নেই।”
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (ইরওয়াউল গালীল: ৭৪১)
ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ الْإِيمَانَ وَالْإِسْلَامَ اسْمَانِ لِمَعْنًى وَاحِدٍ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْأَزْدِيُّ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ عَنْ حَنْظَلَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ بْنَ خَالِدٍ يُحَدِّثُ طَاوُسًا أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِابْنِ عُمَرَ: أَلَا تَغْزُو؟ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ: إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: "بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَصِيَامِ رَمَضَانَ وَحَجِّ البيت".
الراوي : ابْن عُمَرَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 158 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.
পরিচ্ছেদঃ ঈমান ও ইসলাম একই জিনিসের দুই নাম এই মর্মে বর্ণনা
১৫৯. আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আসলেন। এমন সময় একজন ব্যক্তি তাঁর কাছে হেঁটে আসলেন, অতঃপর তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন: ’হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ঈমান কী?’ জবাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’ঈমান হলো আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, রাসূলগণ ও তাঁর সাক্ষাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা, পরকালের পুনরুত্থানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।’ তিনি বললেন: ’হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইসলাম কী?’ জবাবে তিনি বললেন: ’ইসলাম হলো তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না, ফরয সালাত আদায় করবে, ফরয যাকাত প্রদান করবে এবং রমযানের সিয়াম পালন করবে।’ তিনি বললেন: ’হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইহসান কী?’ জবাবে তিনি বললেন: ’ইহসান হলো তুমি এমনভাবে ইবাদত করবে যে, যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছো। যদি তুমি তাকে দেখতে না পাও তবে (মনে করবে যে) নিশ্চয়ই তিনি তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন।’ তিনি আবারো বললেন: ’হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?’ তিনি বলেন: ’এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞেসকারীর চেয়ে বেশি অবগত নন। তবে অচিরেই আমি কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে বলবো। কিয়ামতের আলামত হলো তুমি দাসীকে দেখবে তার মুনীবকে প্রসব করতে, দেখবে বিবস্ত্র, নগ্নপদ ব্যক্তিদের মানুষের নেতা হতে। কিয়ামতের জ্ঞান ঐ পাঁচটি বিষয়ের অন্তর্গত, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট রয়েছে কিয়ামতের জ্ঞান।” (সূরা লুকমান: ৩৪।) তারপর লোকটি চলে যায়। অতঃপর সাহাবীগণ তাঁকে খোঁজ করেন, কিন্তু তাঁকে পাননি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ’উনি জিবরীল আলাইহিস সালাম, তিনি এসেছিলেন, মানুষকে দ্বীন শিক্ষা দিতে।’[1]
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আস সহীহাহ: ২৯০৩।)
ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ الْإِيمَانَ وَالْإِسْلَامَ اسْمَانِ لِمَعْنًى وَاحِدٍ
أخبرنا عبد الله من مُحَمَّدٍ الْأَزْدِيُّ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ عَنْ أَبِي حَيَّانَ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا بَارِزًا لِلنَّاسِ إِذْ أَتَاهُ رَجُلٌ يَمْشِي فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ مَا الْإِيمَانُ؟ قَالَ: (أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَرُسُلِهِ وَلِقَائِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ الْآخِرِ) قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَا الْإِسْلَامُ؟ قَالَ:
(لَا تُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلَاةَ الْمَكْتُوبَةَ وَتُؤَدِّي الزَّكَاةَ الْمَفْرُوضَةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ) قَالَ: يَا مُحَمَّدُ مَا الْإِحْسَانُ؟ قَالَ:
(أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ) قَالَ يَا مُحَمَّدُ فمتى الساعة؟ قال: (ما المسؤول عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ وَسَأُحَدِّثُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا: إِذَا وَلَدَتِ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا ورأيتَ الْعُرَاةَ الْحُفَاةَ رؤوس النَّاسِ فِي خَمْسٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا اللَّهُ: {إن الله عنده علم الساعة .. } الآية [لقمان: 34] ثُمَّ انْصَرَفَ الرَّجُلُ فَالْتَمَسُوهُ فَلَمْ يَجِدُوهُ فَقَالَ: (ذاك جبريل جاء ليُعَلِّمَ الناس دينهم).
الراوي : أَبُوْ هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 159 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.