পরিচ্ছেদঃ ৪৪. ইমামের বসা অবস্থায় যে ব্যক্তি তার পিছনে সালাত আদায় করে তার সম্পর্কে
১২৮৮. আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, (একদা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি ঘোড়ায় আরোহন করলেন এবং তা হতে পড়ে ডান পাশে আঘাতপ্রাপ্ত হলেন। ফলে তিনি বসে সালাত আদায় করলেন, আর আমরাও তাঁর সাথে বসে সালাত আদায় করলাম। তারপর যখন তিনি সালাত থেকে বিরত হলেন, তিনি বললেন: “ইমাম এজন্যই বানানো হয়, যাতে তার অনুসরণ করা হয়। সুতরাং তার বিপরীত করো না। বরং সে যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তোমরাও তখন দাঁড়িয়ে আদায় করবে। আর সে যখন রুকূ’ করে, তোমরাও তখন রুকূ’ করবে, আবার সে যখন (মাথা) উত্তোলন করে, তোমরাও মাথা উত্তোলন করবে। আর সে যখন ’সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ্’ বলেন তোমরা তখন বলো ’রব্বানা লাকাল হামদ’। আর সে বসে সালাত আদায় করলে তোমরা সকলেই বসে সালাত আদায় করবে।[1]
তাখরীজ: সহীহ বুখারী ৩৭৮; সহীহ মুসলিম ৪১১। আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাওসিলী ৩৫৩৮; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ২১০২, ২১০৩; মুসনাদুল হুমাইদী নং ১২২৩ এ।
بَاب فِيمَنْ يُصَلِّي خَلْفَ الْإِمَامِ وَالْإِمَامُ جَالِسٌ
أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكِبَ فَرَسًا فَصُرِعَ عَنْهُ فَجُحِشَ شِقُّهُ الْأَيْمَنُ فَصَلَّى صَلَاةً مِنْ الصَّلَوَاتِ وَهُوَ جَالِسٌ فَصَلَّيْنَا مَعَهُ جُلُوسًا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ إِنَّمَا جُعِلَ الْإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَلَا تَخْتَلِفُوا عَلَيْهِ فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ وَإِنْ صَلَّى قَاعِدًا فَصَلُّوا قُعُودًا أَجْمَعُونَ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪. ইমামের বসা অবস্থায় যে ব্যক্তি তার পিছনে সালাত আদায় করে তার সম্পর্কে
১২৮৯. উবাউদুল্লাহ ইবনু আব্দুল্লাহ বলেন, আমি আয়িশার নিকট প্রবেশ করে তাঁকে বললাম, আপনি কি আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসুস্থতা সম্পর্কে হাদীস শোনাবেন না?
তখন তিনি বললেন, হাঁ, অবশ্যই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ভারী (রোগে কাতর) হয়ে গেলেন, তখন তিনি বললেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে নিয়েছে? আমরা বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তারা আপনার প্রতিক্ষায় রয়েছে। তিনি বললেন: “আমার জন্য গামলায় পানি নিয়ে এসো।”
আয়িশা বলেন, আমরা পানি দিলাম। ফলে তিনি গোসল করলেন। তারপর তিনি যেতে উদ্যত হলেন, কিন্তু মুর্ছা গেলেন। এরপর জ্ঞান ফিরে এলে বললেন: লোকেরা কি সালাত আদায় করে নিয়েছে? আমরা বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তারা আপনার প্রতিক্ষায় রয়েছে। তিনি বললেন: “আমার জন্য গামলায় পানি নিয়ে এসো।”
আয়িশা বলেন, আমরা পানি দিলাম। ফলে তিনি গোসল করলেন। তারপর তিনি যেতে উদ্যত হলেন, কিন্তু মুর্ছা গেলেন। এরপর জ্ঞান ফিরে এলে বললেন: লোকেরা কি সালাত আদায় করে নিয়েছে? আমরা বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তারা আপনার প্রতীক্ষায় রয়েছে।
আয়িশা বলেন, লোকেরা সর্বশেষ ঈশার সালাতের অপেক্ষায় মসজিদে অবস্থান করছিল।
তিনি বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বাকর কে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বলার জন্য লোক পাঠালেন।
তিনি বলেন, লোকটি আবু বাকরের নিকট এসে তাঁকে বললো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনাকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে আদেশ দিয়েছেন।
তখন আবু বাকর - যিনি অত্যন্ত দয়ালূ ব্যক্তি ছিলেন- তিনি বললেন, হে উমার, আপনি লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করুন।
উমার তাঁকে বললেন, আপনিই এর অধিক উপযুক্ত।
আয়িশা বলেন, তারপর এ দিনগুলিতে আবু বাকরই লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন।
তিনি বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন একটু হালকা বোধ করলেন, তখন তিনি দু’ ব্যক্তির মাঝে (তাদের উপর ভর করে) যুহরের সালাতের জন্য বের হলেন, আর তাদের দু’জনের একজন ছিলেন আব্বাস, আর আবু বাকর তখন লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। যখন আবু বাকর তাঁকে দেখলেন, তিনি পিছিয়ে যেতে চাইলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ইশারায় পিছিয়ে না যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি (পার্শ্ববর্তী) দু’জনকে বললেন: “আমাকে তার পাশে বসিয়ে দাও।” ফলে তারা দু’জন তাঁকে আবু বাকরের পাশে বসিয়ে দিলো।
আয়িশা বলেন, এরপর আবু বাকর দাঁড়িয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সালাতের অনুসরণে সালাত আদায় করছিলেন এবং লোকেরা আবু বাকরের অনুসরণে সালাত আদায় করছিল। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বসা অবস্থায় ছিলেন।
উবাইদুল্লাহ বলেন, এরপর আমি আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাসের নিকট গিয়ে তাকে বললাম, আমি কি আপনার নিকট সেই হাদীস উপস্থাপন করব না, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসুস্থতা সম্পর্কে আয়িশা আমার নিকট বর্ণনা করেছেন?তখন তিনি বললেন, নিয়ে আসো। ফলে আমি আয়িশার হাদীসটি তার নিকট উপস্থাপণ করলাম। তখন তিনি এর কোনো কিছুই অস্বীকার করেন নি। তবে তিনি বললেন, আব্বাসের সাথে অপর যে ব্যক্তি ছিল, তিনি কি তার নাম তোমাকে বলেছেন? আমি বললাম, না তো। তখন তিনি বললেন, তিনি ছিলেন আলী ইবনু আবী তালিব।[1]
তাখরীজ: সহীহ বুখারী ১৯৮ (অন্য বিভিন্ন স্থানসমূহেও); মুসলিম ৪১৮।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাওসিলী ৪৪৭৮; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ২১১৬, ২১১৮, ২১১৯, ২১২৪; মুসনাদুল হুমাইদী নং ২৩৫ এ।
بَاب فِيمَنْ يُصَلِّي خَلْفَ الْإِمَامِ وَالْإِمَامُ جَالِسٌ
أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زَائِدَةُ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ لَهَا أَلَا تُحَدِّثِينِي عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ بَلَى ثَقُلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ قُلْنَا لَا هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ قَالَتْ فَفَعَلْنَا فَاغْتَسَلَ ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ فَقُلْنَا لَا هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ فَفَعَلْنَا ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ فَقُلْنَا لَا هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَتْ وَالنَّاسُ عُكُوفٌ فِي الْمَسْجِدِ يَنْتَظِرُونَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِصَلَاةِ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ قَالَتْ فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ قَالَتْ فَأَتَاهُ الرَّسُولُ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُكَ بِأَنْ تُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَكَانَ رَجُلًا رَقِيقًا يَا عُمَرُ صَلِّ بِالنَّاسِ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ أَنْتَ أَحَقُّ بِذَلِكَ قَالَتْ فَصَلَّى بِهِمْ أَبُو بَكْرٍ تِلْكَ الْأَيَّامَ قَالَتْ ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ وَجَدَ مِنْ نَفْسِهِ خِفَّةً فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا الْعَبَّاسُ لِصَلَاةِ الظُّهْرِ وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِيَتَأَخَّرَ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ لَا يَتَأَخَّرَ وَقَالَ لَهُمَا أَجْلِسَانِي إِلَى جَنْبِهِ فَأَجْلَسَاهُ إِلَى جَنْبِ أَبِي بَكْرٍ قَالَتْ فَجَعَلَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي وَهُوَ قَائِمٌ بِصَلَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَاعِدٌ قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ فَدَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَهُ أَلَا أَعْرِضُ عَلَيْكَ مَا حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ هَاتِ فَعَرَضْتُ حَدِيثَهَا عَلَيْهِ فَمَا أَنْكَرَ مِنْهُ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ أَسَمَّتْ لَكَ الرَّجُلَ الَّذِي كَانَ مَعَ الْعَبَّاسِ قُلْتُ لَا فَقَالَ هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ