পরিচ্ছেদঃ ৪৯. সূরা আল-ফাতহ
৩২৬২। ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) বলেন, এক সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছু বললে তিনি নির্বাক থাকেন। আমি আমার কথার পুনরাবৃত্তি করলে তিনি এবারও নীরব রইলেন। আমি আমার কথা পুনর্ব্যক্ত করলে এবারও তিনি নীরব থাকেন। অতএব আমি আমার জন্তুযান হাকিয়ে এক পাশে চলে গেলাম এবং মনে মনে বললাম, হে খাত্তাবের পুত্র! তোমার মা তোমাকে হারাক। তুমি তিন তিনবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করে বিরক্ত করলে, অথচ একবারও তিনি কথা বলেননি। এখন তোমার প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তিনি বলেন, মুহুর্তকাল অতিবাহিত না হতেই আমি শুনতে পেলাম, কে যেন চিৎকার করে আমাকে ডাকছে। অতএব আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ হে ইবনুল খাত্তাব। আজ রাতে আমার উপর এমন একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে, যার পরিবর্তে সারা জগতের সকল কিছু আমাকে দেয়া হলেও আমি তা পছন্দ করব না। সেই সূরাটি হল (অনুবাদ): “নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়"- (সূরা ফাত্হ ১)।
সহীহঃ বুখারী (৪৮৩৭)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। কোন কোন বর্ণনাকারী হাদীসটি মালিক হতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ عَثْمَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، رضى الله عنه يَقُولُ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فَكَلَّمْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَكَتَ ثُمَّ كَلَّمْتُهُ فَسَكَتَ ثُمَّ كَلَّمْتُهُ فَسَكَتَ فَحَرَّكْتُ رَاحِلَتِي فَتَنَحَّيْتُ وَقُلْتُ ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ نَزَرْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَ مَرَّاتٍ كُلُّ ذَلِكَ لاَ يُكَلِّمُكَ مَا أَخْلَقَكَ أَنْ يَنْزِلَ فِيكَ قُرْآنٌ قَالَ فَمَا نَشِبْتُ أَنْ سَمِعْتُ صَارِخًا يَصْرُخُ بِي قَالَ فَجِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " يَا ابْنَ الْخَطَّابِ لَقَدْ أُنْزِلَ عَلَىَّ هَذِهِ اللَّيْلَةَ سُورَةٌ مَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِهَا مَا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ : (إنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا ) " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ مَالِكٍ مُرْسَلاً .
Narrated Malik bin Anas:
from Zaid bin Aslam, from his father who said: "I heard 'Umar bin Al-Khattab [may Allah be pleased with him] saying: 'We were with the Messenger of Allah (ﷺ) during one of his journeys when I said something to him but he was silent. Then I said something again but he was silent. I quickened my pace of mount to go to the other wise. I said: "May your mother lose you O Ibn Al-Khattab! You pestered the Messenger of Allah (ﷺ) three times, each time he did not reply to you! You deserve that something be revealed about you in the Qur'an.'" He ('Umar) said: "It was not long before I heard a voice calling me.' So I came to the Messenger of Allah (ﷺ) and he said: "O Ibn Al-Khattab! A Surah was revealed to me last night which is dearer to me than what the sun rises upon: Verily, We have given you a manifest victory (48:1).'"
পরিচ্ছেদঃ ৪৯. সূরা আল-ফাতহ
৩২৬৩। আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ হুদাইবিয়া হতে প্রত্যাবর্তনের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “যেন আল্লাহ তা’আলা তোমার অতীত ও ভবিষ্যৎ ভুলসমূহ মাফ করেন”— (সূরা আল-ফাত্হ ২), তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার উপর এমন একটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যা আমার নিকটে দুনিয়ার সব কিছু হতে বেশি প্রিয়। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের সামনে আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন।
তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুবারাকবাদ! এটি আপনার জন্য অভিনন্দন। আপনার সাথে কেমন আচরণ করা হবে, তাতো আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের সাথে কেমন ব্যবহার করা হবে? তখন তার উপর এ আয়াত অবতীণ হয়ঃ “তা এজন্য যে, তিনি ঈমানদার পুরুষ ও মহিলাদের জান্নাতে দাখিল করাবেন, যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হয় নহরসমূহ। সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে এবং তিনি তাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন। এটাই আল্লাহ তা’আলার সমীপে মহা সাফল্য।" (সূরা আল-ফাত্হ ২)
সনদ সহীহ, বুখারী (৪৭১২) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুবারকবাদ..... এই অংশটুকু মুরসাল, মুসলিম (৫/১৭৬) আনাস হতে ঐ অতিরিক্ত অংশ ব্যতীত, তা শাজ।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ এ অনুচ্ছেদে মুজাম্মি ইবনু জারিয়াহ্ (রাযিঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، رضى الله عنه قَالَ أُنْزِلَتْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَ : (ليغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ ) مَرْجِعَهُ مِنَ الْحُدَيْبِيَةِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ أُنْزِلَتْ عَلَىَّ آيَةٌ أَحَبُّ إِلَىَّ مِمَّا عَلَى الأَرْضِ ثُمَّ قَرَأَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ فَقَالُوا هَنِيئًا مَرِيئًا يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَدْ بَيَّنَ اللَّهُ لَكَ مَاذَا يُفْعَلُ بِكَ فَمَاذَا يُفْعَلُ بِنَا فَنَزَلَتْ عَلَيْهِ : ( ليُدْخِلَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأَنْهَارُ ) حَتَّى بَلَغَ : (فوزًا عَظِيمًا ) قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَفِيهِ عَنْ مُجَمِّعِ بْنِ جَارِيَةَ .
Narrated Anas [May Allah be pleased with him]:
"While the Messenger of Allah (ﷺ) was returning from Al-Hudaibiyyah it was revealed to him, 'That Allah may forgive you your sins of the past and the future (48:2).' So the Prophet (ﷺ) said: 'An Ayah has been revealed to me which is dearer to me than whatever is upon the earth.' Then the Prophet (ﷺ) recited it for them and they said: 'Congratulations O Messenger of Allah! Allah has explained what He will do with you, but what will He do with us?' So (the following) was revealed: 'That He may admit the believing men and the believing women into Gardens under which rivers flow' up to (His Saying) 'a supreme success (48:5).'"
পরিচ্ছেদঃ ৪৯. সূরা আল-ফাতহ
৩২৬৪। আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, একদা আশিজন কাফির ফজরের সময় তান’ঈম পাহাড় হতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণকে হত্যা করার উদ্দেশে নেমে আসে। তারা সকলেই গ্রেপ্তার হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ছেড়ে দিলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) “তিনি সেই সত্তা যিনি (মক্কা উপত্যকায় তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পর) তাদের হাত তোমাদের হতে এবং তোমাদের হাত তাদের হতে নিবারিত করেছেন। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা’আলা তা দেখেন”- (সূরা ফাত্হ ২৪)।
সহীহঃ সহীহ আবূ দাউদ (২৪০৮), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ ثَمَانِينَ، هَبَطُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ مِنْ جَبَلِ التَّنْعِيمِ عِنْدَ صَلاَةِ الصُّبْحِ وَهُمْ يُرِيدُونَ أَنْ يَقْتُلُوهُ فَأُخِذُوا أَخْذًا فَأَعْتَقَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( هُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُمْ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated Anas:
that eighty people swooped down from the mountain of At-Tan'im to kill the Messenger of Allah (ﷺ) during Salat As-Subh, but he captured them and (later) let them go. So Allah revealed the Ayah: And it is He Who has withheld their hands from you and your hands from them (48:24).
পরিচ্ছেদঃ ৪৯. সূরা আল-ফাতহ
৩২৬৫। উবাই ইবনু কাব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার বানী (অনুবাদ) “তিনি তাদেরকে তাকওয়ার বাক্যে সুদৃঢ় করলেন"- (সূরা ফাত্হ ২৬) প্রসঙ্গে বলেনঃ এ বাক্যের অর্থ হল, কালিমা “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ"।
সহীহ
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু হাসান ইবনু কাযা’আর সনদে এ হাদীস মারফুরূপে জেনেছি। এ হাদীস প্রসঙ্গে আমি আবূ যুর’আকে প্রশ্ন করলে তিনি উপর্যুক্ত সূত্র ব্যতীত এটিকে মারফুরূপে রিওয়ায়াত হওয়া প্রসঙ্গে অজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ قَزْعَةَ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ حَبِيبٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ الطُّفَيْلِ بْنِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَ : ( وألْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَى ) قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الْحَسَنِ بْنِ قَزْعَةَ قَالَ وَسَأَلْتُ أَبَا زُرْعَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَلَمْ يَعْرِفْهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
Narrated At-Tufail bin Ubayy bin Ka'b:
from his father, from the Prophet (ﷺ) (regarding this Ayah): 'And made them stick to the word of Taqwa (48:26).' He (ﷺ) said (the word is): "La Ilaha Illallah."