পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩১৯৯। কাবুস ইবনু আবূ যাবইয়ান (রহঃ) বলেন যে, তার পিতা তাকে বলেছেন, আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলামঃ আপনি কি বলেন, আল্লাহ তা’আলার বাণী “আল্লাহ তা’আলা কোন ব্যক্তির বক্ষে দুটি হৃদয় তৈরী করেননি" (সূরাঃ আল-আহ্যাব-৪), এর অর্থ কি? তিনি বললেন, একদিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলেন। নামাযে তার কিছু (ওয়াসওয়াসা জাতীয়) ক্রটি হয়। যেসব মুনাফিক তার সাথে নামায আদায় করে তারা একে অপরকে বলল, তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ না যে, তার দুটি হৃদয় আছে? একটি হৃদয় তোমাদের সাথে, অন্যটি হৃদয় তাদের সাথে থাকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “কোন ব্যক্তির বক্ষে আল্লাহ তা’আলা দুটি হৃদয় তৈরী করেননি”।
সনদ দুর্বল
আবদ ইবনু হুমাইদ-আহমাদ ইবনু ইউনুস হতে তিনি যুহাইর (রহঃ) সূত্রে উপরের হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান।
এ সনদটিও দুর্বল
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا صَاعِدٌ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، أَخْبَرَنَا قَابُوسُ بْنُ أَبِي ظَبْيَانَ، أَنَّ أَبَاهُ، حَدَّثَهُ قَالَ قُلْنَا لاِبْنِ عَبَّاسٍ أَرَأَيْتَ قَوْلَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : (ما جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِنْ قَلْبَيْنِ فِي جَوْفِهِ ) مَا عَنَى بِذَلِكَ قَالَ قَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا يُصَلِّي فَخَطَرَ خَطْرَةً فَقَالَ الْمُنَافِقُونَ الَّذِينَ يُصَلُّونَ مَعَهُ أَلاَ تَرَى أَنَّ لَهُ قَلْبَيْنِ قَلْبًا مَعَكُمْ وَقَلْبًا مَعَهُمْ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (ما جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِنْ قَلْبَيْنِ فِي جَوْفِهِ ) .
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
Narrated Zuhair:
"Qabus bin Abi Zabyan narrated to us, that his father narrated to him, he said: 'We said to Ibn 'Abbas: "What is the meaning of the saying of Allah the Mighty and Sublime: Allah has not made for any man two hears inside his body.? (33:4)" He said: "The Prophet of Allah (ﷺ) stood one day for Salat, then he was unsure (regarding how much he had prayed). The hypocrites who prayed with him said: 'Don't you see that he has two hearts, a heart with you and another with them?' So Allah revealed: 'Allah has not made for any man two hearts inside his body.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০০। আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমার চাচা আনাস ইবনু নাযর- যার নামানুসারে আমার নাম রাখা হয়েছে- বলেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। ব্যাপারটি তার নিকট অসহনীয় লাগছিল। তিনি বলেন, মুশরিকদের সাথে প্রথম যে যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত ছিলেন আমি তাতে অনুপস্থিত রইলাম। আল্লাহর কসম! যদি তিনি আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেন তবে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই দেখবেন আমি কি করি। এ কথা বলার সাথে সাথে তার ভয় হল যে, তিনি বিপরীতের কিছু বলেন কি না।
পরবর্তী বছর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে উহুদের যুদ্ধে শরীক হন। উহুদে যেতে পথিমধ্যে সা’দ ইবনু মুআয (রাযিঃ)-এর সাথে তার দেখা হয়। তিনি প্রশ্ন করেন, হে আবূ আমর! কোথায় যাচ্ছ? তিনি বললেন, আহা! জান্নাতের ঘ্রাণের দিকে। আমি উহুদের দিকে তা অনুভব করছি।
(বর্ণনাকারী বলেন), তিনি যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হন। তার শরীরে আশিরও বেশি জখম ছিল। এর মধ্যে কিছু ছিল তরবারির আঘাত, কিছু বর্শার আঘাত এবং কিছু তীরের আঘাত। আমার ফুফু রুবাই বিনতু নাযর (রাযিঃ) বলেন, জখমের কারণে আমি আমার ভাইকে চিনতে পারছিলাম না। শুধু তার আঙ্গুলের গোছা দেখেই তাকে চিনতে পেরেছি। তার সম্পর্কেই এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ
(অনুবাদ) “ঈমানদার ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু লোক আল্লাহ তা’আলার সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করেছে (শহীদ হয়েছে) এবং কেউ অপেক্ষায় রয়েছে। তারা নিজেদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি"- (সূরা আহযাব ২৩)।
সহীহঃ মুসলিম (৬/৪৫-৪৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ عَمِّي أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ سُمِّيتُ بِهِ لَمْ يَشْهَدْ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكَبُرَ عَلَيْهِ فَقَالَ أَوَّلُ مَشْهَدٍ شَهِدَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غِبْتُ عَنْهُ أَمَا وَاللَّهِ لَئِنْ أَرَانِيَ اللَّهُ مَشْهَدًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيَرَيَنَّ اللَّهُ مَا أَصْنَعُ . قَالَ فَهَابَ أَنْ يَقُولَ غَيْرَهَا فَشَهِدَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ مِنَ الْعَامِ الْقَابِلِ فَاسْتَقْبَلَهُ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ فَقَالَ يَا أَبَا عَمْرٍو أَيْنَ قَالَ وَاهًا لِرِيحِ الْجَنَّةِ أَجِدُهَا دُونَ أُحُدٍ فَقَاتَلَ حَتَّى قُتِلَ فَوُجِدَ فِي جَسَدِهِ بِضْعٌ وَثَمَانُونَ مِنْ بَيْنِ ضَرْبَةٍ وَطَعْنَةٍ وَرَمْيَةٍ فَقَالَتْ عَمَّتِي الرُّبَيِّعُ بِنْتُ النَّضْرِ فَمَا عَرَفْتُ أَخِي إِلاَّ بِبَنَانِهِ . وَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةَُ : (رجالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلاً ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated Anas:
"My paternal uncle Anas bin An-Nadr - after whom I was named - did not participate in the battle of Badr with the Messenger of Allah (ﷺ). This distressed him and he said: 'I was absent from the first battle which the Messenger of Allah (ﷺ) attended. By Allah! If Allah gives me the opportunity to participate in another battle along with the Messenger of Allah (ﷺ), then Allah will see what I will do!'" He said: "He did not want to say more than that. A year later, he attended the battle of Uhud, where he saw Sa'd bin Mu'adh and said: 'O Abu 'Amr where are you going?' He said: 'I long for the fragrance of Paradise and I have found it near the mountains of Uhud.' He fought them until he was killed. They found more than eighty wounds on his body, be they from blows of a sword, puncture wounds, or arrows. My paternal aunt Ar-Ruba'i bin An-Nadr said: 'I could not recognize my brother except by his finger tips.' And this Ayah was revealed: 'Among the believers are men who have been true to their covenant with Allah; of them some have fulfilled their vow, and some of them are still waiting, but they have never changed in the least (33:23).'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০১। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তার চাচা বদরের যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি (চাচা) বলেন, এটাই ছিল প্রথম যুদ্ধ যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের বিরুদ্ধে পরিচালনা করেন। অথচ এই প্রথম যুদ্ধেই আমি অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। আল্লাহ তা’আলা যদি ভবিষ্যতে মুশরিকদের বিরুদ্ধে আমাকে কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ দেন, তবে তিনি দেখবেন আমি কি করি।
তারপর উহুদের যুদ্ধে মুসলিমরা পরাজয়ের সম্মুখীন হলে তিনি বলেন, “হে আল্লাহ! মুশরিকরা যে বিপদ নিয়ে এসেছে আমি তা হতে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর মুসলিমরা যা করেছে সে প্রসঙ্গে তোমার নিকট ওজরখাহি করছি।" তারপর তিনি সামনে আগালেন। তার সঙ্গে সা’দ (রাযিঃ)-এর সাক্ষাৎ হলে তিনি বলেন, হে ভাই! তুমি কি করছ, আমি তোমার সাথে আছি। (সা’দ বলেন) কিন্তু সে যা করল আমি তা করতে ব্যর্থ হলাম। তার দেহে আশির বেশি জখম পাওয়া গেল।
এর কতগুলো ছিল তরবারির আঘাত, কতগুলো বর্শার আঘাত এবং কতগুলো তীরের আঘাত। আমরা বলাবলি করতাম যে, তার ও তার বন্ধুদের বিষয়ে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছেঃ (অনুবাদ) তাদের ভিতর কেউ কেউ ইচ্ছা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময় আসার অপেক্ষায় রয়েছে"- (সূরা আহযাব ২৩)।
সহীহঃ বুখারী (২৮০৫)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ)-এর চাচার নাম আনাস ইবনু নাযর।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عَمَّهُ، غَابَ عَنْ قِتَالِ، بَدْرٍ فَقَالَ غِبْتُ عَنْ أَوَّلِ، قِتَالٍ قَاتَلَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمُشْرِكِينَ لَئِنِ اللَّهُ أَشْهَدَنِي قِتَالاً لِلْمُشْرِكِينَ لَيَرَيَنَّ اللَّهُ كَيْفَ أَصْنَعُ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ انْكَشَفَ الْمُسْلِمُونَ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَبْرَأُ إِلَيْكَ مِمَّا جَاءَ بِهِ هَؤُلاَءِ . يَعْنِي الْمُشْرِكِينَ وَأَعْتَذِرُ إِلَيْكَ مِمَّا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ . يَعْنِي أَصْحَابَهُ ثُمَّ تَقَدَّمَ فَلَقِيَهُ سَعْدٌ فَقَالَ يَا أَخِي مَا فَعَلْتَ أَنَا مَعَكَ فَلَمْ أَسْتَطِعْ أَنْ أَصْنَعَ مَا صَنَعَ . فَوُجِدَ فِيهِ بِضْعٌ وَثَمَانُونَ مِنْ ضَرْبَةٍ بِسَيْفٍ وَطَعْنَةٍ بِرُمْحٍ وَرَمْيَةٍ بِسَهْمٍ فَكُنَّا نَقُولُ فِيهِ وَفِي أَصْحَابِهِ نَزَلَتْ : (فمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ ) . قَالَ يَزِيدُ يَعْنِي هَذِهِ الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَاسْمُ عَمِّهِ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ .
Narrated Anas bin Malik:
"My paternal uncle was absent from the fighting of Badr, so he said: 'I was absent from the first fight the Messenger of Allah (ﷺ) fought with idolaters, so if Allah grants me to participate in a fight with the idolaters, then Allah will see what I will do!' So on the Day of Uhud, when the Muslims were driven back he said: 'O Allah! Indeed I am innocent before you of what these people - meaning the idolaters - have done, and I beg of You to excuse these people for what they have done - meaning the Companions. Then he went forward and met up with Sa'd. He said: 'O my brother! Whatever you do, I am with you!' But he was not able to do the same as him. He was found with more than eighty wounds, between blows with the sword, thrusts of a spear, or arrow wounds. We would say: 'It was about him and his companions that (the following) was revealed: 'Of them some have fulfilled their vow, and some of them are still waiting, but they have never changed in the least (33:23). (One of the narrators) Yazid said: "Meaning this Ayah."
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০২। মূসা ইবনু ত্বালহা (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি মুআবিয়াহ (রাযিঃ)-এর নিকট প্রবেশ করলে তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে একটি সুসংবাদ শুনাব না? আমি বললাম, হ্যাঁ অবশ্যই। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ যারা নিজেদের ইচ্ছা পূর্ণ করেছে, ত্বালহা (রাযিঃ) তাদের দলে।
হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (১২৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উল্লেখিত সনদসূত্রে মু’আবিয়াহ (রাযিঃ) হতে এ হাদীস জেনেছি এবং এটি মূসা ইবনু ত্বালহা হতে তার বাবার সনদে বর্ণিত হয়েছে।
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْقُدُّوسِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَطَّارُ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ يَحْيَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَقَالَ أَلاَ أُبَشِّرُكَ قُلْتُ بَلَى . قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " طَلْحَةُ مِمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثَ مُعَاوِيَةَ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَإِنَّمَا رُوِيَ عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ عَنْ أَبِيهِ .
Narrated Musa bin Talhah:
"I entered upon Mu'awiyah and he said:' Shall I not give you some good news?' I said: 'Of course!' He said: 'I heard the Messenger of Allah (ﷺ) saying: 'Talhah is among those who fulfilled their vow.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৩। তালহা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ এক মূৰ্খ বেদুঈনকে বলল, তুমি গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন কর, “যারা নিজেদের মানৎ পূর্ণ করেছে" দ্বারা কাদের বুঝানো হয়েছে? সাহাবীগণ সরাসরি তার নিকট এ কথা প্রশ্ন করতে সাহস পাননি। তারা তাকে সম্মান ও সমীহ করতেন। বিদুঈন তার নিকট ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করলে তিনি মুখ ফিরিয়ে নেন। সে আবারো তাকে প্রশ্ন করলে তিনি এবারও মুখ ফিরিয়ে নেন। সে আবারো তাকে প্রশ্ন করলে তিনি এবারও মুখ ফিরিয়ে নেন।
তারপর আমি মসজিদের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। আমার পরনে ছিল সবুজ কাপড়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখে বললেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়, যে মানৎ পূর্ণকারীদের বিষয়ে প্রশ্ন করেছে? বেদুঈন বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এই আমি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যারা নিজেদের মানৎ পূর্ণ করেছে এ লোক (ত্বালহা) তাদের একজন।
হাসান সহীহঃ সহীহাহ (১/৩৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধু ইউনুস ইবনু বুকাইরের সনদে এ হাদীস জেনেছি।
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ مُوسَى، وَعِيسَى، ابْنَىْ طَلْحَةَ عَنْ أَبِيهِمَا، طَلْحَةَ أَنَّ أَصْحَابَ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالُوا لأَعْرَابِيٍّ جَاهِلٍ سَلْهُ عَمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ مَنْ هُوَ وَكَانُوا لاَ يَجْتَرِئُونَ عَلَى مَسْأَلَتِهِ يُوَقِّرُونَهُ وَيَهَابُونَهُ فَسَأَلَهُ الأَعْرَابِيُّ فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ سَأَلَهُ فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ سَأَلَهُ فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ إِنِّي اطَّلَعْتُ مِنْ بَابِ الْمَسْجِدِ وَعَلَىَّ ثِيَابٌ خُضْرٌ فَلَمَّا رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَيْنَ السَّائِلُ عَمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ " . قَالَ الأَعْرَابِيُّ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَذَا مِمَّنْ قَضَى نَحْبَهُ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ يُونُسَ بْنِ بُكَيْرٍ .
Narrated Musa and 'Eisa, the sons of Talhah:
from their father: "The Companions of the Prophet (ﷺ) said, to an unknowing Bedouin man: 'Ask him who it is that has fulfilled his vow.' They were not in the habit of asking questions out of their respect and reverence for him. So the Bedouin asked him, but he turned away from him. Then he asked him again, but he turned away from him. Then again he asked him, but he turned away from him. Then I stood looking from the door of the Masjid, while I was wearing a green garment, and I saw the Prophet (ﷺ), he said: 'Where is the one who was asking about the one who fulfilled his vow?' The Bedouin said: 'Here I am O Messenger of Allah!' The Messenger of Allah (ﷺ) said: 'This is one who has fulfilled his vow.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৪ আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার সহধর্মিণীগণকে (তার স্ত্রীত্বে থাকার বা পার্থিব ভোগবিলাস গ্রহণ করার) এখতিয়ার দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলে তিনি প্রথমে আমাকেই প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, হে ’আয়িশাহ! তোমাকে একটি কথা বলতে চাচ্ছি। তুমি ধীরস্থিরভাবে উত্তর দিবে, তাড়াহুড়া করবে না এবং প্রয়োজনে তোমার বাবা-মার সাথেও শলা-পরামর্শ করবে।
আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, তিনি ভাল করেই জানতেন যে, আমার পিতামাতা কখনো আমাকে তার হতে পৃথক হওয়ার অনুমতি দিবেন না। আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, তারপর তিনি বললেন যে, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “হে নবী! তোমার স্ত্রীদের বল, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা কর তবে এসো, আমি তোমাদের কিছু ভোগসামগ্ৰী দিয়ে ভদ্রভাবে বিদায় করে দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তার রাসূল ও আখিরাতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভ করতে চাও, তবে তোমাদের ভিতর যারা সৎকর্মশীল তাদের জন্য আল্লাহ তা’আলা মহান পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন"- (সূরা আহযাব ২৮-২৯)।
আমি বললাম, আমি কি বিষয়ে আমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ করব! আমি তো আল্লাহ, তার রাসূল ও আখিরাতের জীবনই কামনা করি। আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, আমি যে উত্তর দিয়েছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অপর স্ত্রীগণও একই রকম উত্তর দেন।
সহীহঃ বুখারী (৪৭৮৬), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইমাম যুহরী (রহঃ) উরওয়াহ (রাহঃ) হতে এবং তিনি আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে এই সূত্রেও এ হাদীস বর্ণিত আছে।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ يُونُسَ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ لَمَّا أُمِرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِتَخْيِيرِ أَزْوَاجِهِ بَدَأَ بِي فَقَالَ " يَا عَائِشَةُ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلاَ عَلَيْكِ أَنْ لاَ تَسْتَعْجِلِي حَتَّى تَسْتَأْمِرِي أَبَوَيْكِ " . قَالَتْ وَقَدْ عَلِمَ أَنَّ أَبَوَاىَ لَمْ يَكُونَا لِيَأْمُرَانِي بِفِرَاقِهِ قَالَتْ ثُمَّ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَقُولُ: ( يا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ ) حَتَّى بَلَغَ : ( للْمُحْسِنَاتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيمًا ) فَقُلْتُ فِي أَىِّ هَذَا أَسْتَأْمِرُ أَبَوَىَّ فَإِنِّي أُرِيدُ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالدَّارَ الآخِرَةَ وَفَعَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ مَا فَعَلْتُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا أَيْضًا عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها .
Narrated 'Aishah [may Allah be pleased with her]:
"When the Messenger of Allah (ﷺ) was ordered to tell his wives to make a choice, he started with me. He said: 'O 'Aishah! I am going to mention something to you, but you should not hasten (to reply) until you have consulted your parents.'" She said: "And he knew that my parents would not have ordered me to part from him.'" She said: "Then Allah [Most High] revealed: 'O Prophet! Say to your wives: If you desire the life of this world and its glitter then come...' until reaching: '...for the good doers among you an enormous reward (33:28 & 29).' I said: 'For what should I consult my parents? Indeed I want Allah, His Messenger, and the abode of the Hereafter.' The (remaining) wives of the Prophet (ﷺ) did the same as I did."
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৫। উমার ইবনু আবী সালামাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, যিনিরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আশ্রয়ে লালিত পালিত হন। তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ (রাযিঃ)-এর ঘরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) “আল্লাহ তা’আলা তো চান আহলে বাইত হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”– (সূরা আহযাবঃ ৩৩), তখন তিনি ফাতিমাহ, হাসান ও হুসাইন (রাযিঃ)-কে ডাকলেন এবং তাদেরকে একটি কম্বলের ভিতর ঢেকে নিলেন।
আলী (রাযিঃ) তার পিছনে ছিলেন। তিনি তাকেও কম্বলের ভিতর নিয়ে নিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বাইত’ (পরিবারের সদস্য)। তুমি তাদের ভিতর হতে অপরিচ্ছন্নতা দূর করে দাও এবং সম্পূর্ণরূপে পরিচ্ছন্ন করে দাও।” উম্মু সালামাহ (রাযিঃ) বলেন, হে আল্লাহর নবী! আমিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেনঃ তুমি স্ব-স্থানে থাক এবং তুমি কল্যাণের মধ্যেই আছ।
সহীহঃ রাওয়ূন নায়ীর (৯৭৬, ১১৯০), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আমর ইবনু আবূ সালামাহ হতে আতার রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীসটি গারীব।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ الأَصْبَهَانِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، رَبِيبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَّ : ( إنمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ) فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ فَدَعَا فَاطِمَةَ وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ وَعَلِيٌّ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ هَؤُلاَءِ أَهْلُ بَيْتِي فَأَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا " . قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَأَنَا مَعَهُمْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَالَ " أَنْتِ عَلَى مَكَانِكِ وَأَنْتِ عَلَى خَيْرٍ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ .
Narrated 'Umar bin Abi Salamah - the step-son of the Prophet (ﷺ):
"When these Ayat were revealed to the Prophet (ﷺ): 'Allah only wishes to remove the Rijs from you, O members of the family, and to purify you with a thorough purification (33:33)' in the home of Umm Salamah, he called for Fatimah, Hasan, Husain, and wrapped him in the cloak, and 'Ali was behind him, so he wrapped him in the cloak, then he said: 'O Allah! These are the people of my house, so remove the Rijs from them, and purify them with a thorough purification.' So Umm Salamah said: 'And I, Prophet of Allah?' He said: 'You are in your place (meaning you are already a member of my household), and you are goodness.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৬। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছয় মাস পর্যন্ত এই চর্চা ছিল যে, তিনি ফজরের নামাযের জন্য ফাতিমা (রাঃ)-এর ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বলতেনঃ “হে আহলে বাইত! তোমরা নামায কায়িম কর। আল্লাহ তা’আলা ইচ্ছা করেন, তোমাদের নবীর ঘরের লোকদের মধ্য হতে ময়লা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”।
যঈফ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেনঃ উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র হাম্মাদ ইবনু সালামার সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে আবূল হামরাআ, মাকিল ইবনু ইয়াসার ও উম্মু সালামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَمُرُّ بِبَابِ فَاطِمَةَ سِتَّةَ أَشْهُرٍ إِذَا خَرَجَ إِلَى صَلاَةِ الْفَجْرِ يَقُولُ " الصَّلاَةَ يَا أَهْلَ الْبَيْتِ : ( إنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ) " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي الْحَمْرَاءِ وَمَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ .
Narrated Anas bin Malik:
"For six months, the Messenger of Allah (ﷺ) would pass by the door of Fatimah when going to the Fajr prayer saying: 'As-Salat O People of the house! Allah only wishes to remove the Rijs from you, O members of the family, and to purify you with thorough purification (33:33).'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৭। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি ওয়াহীর কোন অংশ গোপন করতেন তাহলে এই অংশ গোপন করতেনঃ “স্মরণ কর, যার প্রতি আল্লাহ তা’আলা (ইসলাম গ্রহণ করার) অনুগ্রহ করেছেন এবং আপনিও যার উপর (দাসত্বমুক্ত করে) অনুগ্রহ করেছেন আপনি তাকে বলেছেন, তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখ এবং আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর। আপনি আপনার মনের মধ্যে যে কথা লুকিয়েছেন, তা আল্লাহ তা’আলা প্রকাশ করে দিচ্ছেন। আপনি লোকভয় করছিলেন, অথচ আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করা আপনার পক্ষে অধিকতর সংগত। পরে যাইদ যখন তার (যাইনাবের) সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে (যাইনাবকে) আপনার নিকট বিয়ে দিলাম, যেন মুমিনদের পালিত ছেলেরা নিজ স্ত্রীর সাথে বিবাহ সূত্র ছিন্ন করলে সেই সব নারীদের বিবাহ করায় মু’মিন লোকদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহ্ তা’আলার নির্দেশ কার্যকারী হয়েই থাকে" (সূরাঃ আল-আহযাব-৩৭)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকে (যাইনাবকে) বিয়ে করলেন তখন লোকেরা বলতে লাগল, তিনি নিজের ছেলের বিবিকে বিয়ে করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “মুহাম্মাদ তোমাদের পুরুষ লোকদের মধ্যে কারো পিতা নন, বরং আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী" (সূরাঃ আল-আহ্যাব- ৪০)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পালিত পুত্র বানিয়েছিলেন। তিনি (যাইদ) তখন বালক ছিলেন। তিনি তার কাছে থাকলেন এবং ধীরে ধীরে বেড়ে উঠলেন। তাকে যাইদ ইবনু মুহাম্মাদ বলে ডাকা হত।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “পালিত ছেলেদেরকে তোমরা তাদের পিতার সাথে সম্পর্ক সূত্রে ডাকো, এটা আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে বেশি ন্যায়সংগত। আর তোমরা যদি তাদের পিতার পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের দীনী ভাই এবং সাখী" (সূরাঃ আল-আহযাব- ৫) অর্থাৎ অমুক অমুকের বন্ধু এবং অমুক অমুকের ভাই। এটাই আল্লাহ্ তা’আলার নিকট বেশি ন্যায়সংগত কথা অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে বেশি ন্যায়ানুগ কথা।
সনদ অত্যন্ত দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। অন্য এক সূত্রে এ হাদীস আইশা (রাঃ) হতে সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করেছেন। আইশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি ওয়াহীর কোন অংশ গোপন করতেন, তবে এই আয়াত গোপন করতেনঃ যখন তুমি সেই ব্যক্তিকে বলেছিলে, যার প্রতি আল্লাহ তা’আলা এবং তুমি অনুগ্রহ করেছিলে..." আয়াতের শেষ পর্যন্ত। এ সূত্রে হাদীসটি বিস্তারিত আকারে বর্ণিত হয়নি। এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবনু ওয়াযযাহ হতে।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا دَاوُدُ بْنُ الزِّبْرِقَانِ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَاتِمًا شَيْئًا مِنَ الْوَحْىِ لَكَتَمَ هَذِهِ الآيَةَ : ( إِذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ ) يَعْنِي بِالإِسْلاَمِ : ( وأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ ) بِالْعِتْقِ فَأَعْتَقْتَهُ : ( أمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللَّهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَاهُ ) إِلَى قَوْلِهِ : (وكَانَ أَمْرُ اللَّهِ مَفْعُولاً ) وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا تَزَوَّجَهَا قَالُوا تَزَوَّجَ حَلِيلَةَ ابْنِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : ( ما كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ ) وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَبَنَّاهُ وَهُوَ صَغِيرٌ فَلَبِثَ حَتَّى صَارَ رَجُلاً يُقَالُ لَهُ زَيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( ادعُوهُمْ لآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللَّهِ فَإِنْ لَمْ تَعْلَمُوا آبَاءَهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَمَوَالِيكُمْ ) فُلاَنٌ مَوْلَى فُلاَنٍ وَفُلاَنٌ أَخُو فُلاَنٍ (هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللَّهِ ) يَعْنِي أَعْدَلُ عِنْدَ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
قَدْ رُوِيَ عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَوْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَاتِمًا شَيْئًا مِنَ الْوَحْىِ لَكَتَمَ هَذِهِ الآيَةَ : ( إِذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ ) الآيَةَ هَذَا الْحَرْفُ لَمْ يُرْوَ بِطُولِهِ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَضَّاحٍ الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ .
Narrated 'Aishah [may Allah be pleased with her]:
"If the Messenger of Allah (ﷺ) was to have concealed anything that was revealed to him, then he would have concealed these Ayat: 'When you said to him on whom Allah has bestowed grace (meaning by Islam); and you have done a favor (meaning that he was a slave and you freed him) "Keep your wife to yourself, and have Taqwa of Allah." But you did hide in yourself that which Allah will make manifest, you did fear the people whereas Allah had better right that you should fear Him' up to His saying: 'And Allah's command must be fulfilled (33:37).' They said: 'He married his wife's son, so Allah revealed: 'Muhammad is not the father of any of your men, but he is the Messenger of Allah and the Last of the Prophets (33:40).' The Messenger of Allah (ﷺ) had taken (adopted) him as a son when he was small, and he remained being called 'Zaid bin Muhammad' until he grew up to adulthood, then Allah revealed: 'Call them by their fathers, then your brothers in religion and your Mawali (33:5). (Say) So-and-so, the Mawla of so-and-so, and; So-and-so, the brother of so-and-so. 'That is more just with Allah' meaning that doing that is more just to Allah."
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৮। আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি ওয়াহীর কোন অংশ গোপনকারী হতেন, তাহলে অবশ্যই তিনি এ আয়াত গোপন করতেন (অনুবাদ): “যখন তুমি সে লোককে বলেছিলে যার প্রতি আল্লাহ তা’আলা এবং তুমি দয়া করেছিলে....."— (সূরা আহযাব ৩৭) শেষ পর্যন্ত।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَاتِمًا شَيْئًا مِنَ الْوَحْىِ لَكَتَمَ هَذِهِ الآيَةَِ : ( إذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ ) الآيَةَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated 'Aishah [may Allah be pleased with her]:
"If the Prophet (ﷺ) was to have hidden anything from the Revelation, then he would have hidden this Ayah: 'When you said to him on whom Allah has bestowed grace and you have done a favor (33:37).'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২০৯। ইবনু উমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমরা যাইদ ইবনু হারিসাহ না ডেকে বরং যাইদ ইবনু মুহাম্মাদ ডাকতাম। অবশেষে নাযিল হলঃ “তোমরা তাদেরকে তাদের পিতার পরিচয়ে ডাকো। এটাই আল্লাহ তা’আলার নিকট বেশি ন্যায়সঙ্গত”– (সূরা আহযাব ৫)।
সহীহঃ বুখারী (৪৭৮২), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ مَا كُنَّا نَدْعُو زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ إِلاَّ زَيْدَ بْنَ مُحَمَّدٍ حَتَّى نَزَلَ الْقُرْآنُ : ( ادعُوهُمْ لآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللَّهِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated Ibn 'Umar:
"We called Zaid bin Harithah nothing but 'Zaid bin Muhammad' until the Qur'an was revealed (saying): 'Call them by their fathers, that is more just according to Allah (33:5).'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১০। আমির আশ-শাবী (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি আল্লাহর বাণীঃ “মুহাম্মাদ তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন" (সূরাঃ আল-আহযাব- ৪০) প্রসঙ্গে বলেনঃ এ আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছেঃ তোমাদের মাঝে তার কোন ছেলে সন্তান জীবিত থাকবে না।
যঈফ, সনদ বিচ্ছিন্ন
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ قَزَعَةَ، - بَصْرِيٌّ - حَدَّثَنَا مَسْلَمَةُ بْنُ عَلْقَمَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ عَامِرٍ الشَّعْبِيِّ، فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : ( ما كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ ) قَالَ مَا كَانَ لِيَعِيشَ لَهُ فِيكُمْ وَلَدٌ ذَكَرٌ .
Narrated Dawud bin Abi Hind:
from Ash-Sha'bi regarding the saying of Allah [the Mighty and Sublime]: 'Muhammad is not the father of any one of your men (33:40)' he said: "No male children of his would live among them."
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১১। উম্মু উমারাহ আল-আনসারিয়্যাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেনঃ আমি (কুরআনে) প্রতিটি প্রসঙ্গ পুরুষদের জন্যই উল্লেখিত দেখতে পাচ্ছি। অথচ মহিলাদের প্রসঙ্গে কোন বিষয়ে আলোচনা দেখছি না। তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) “নিশ্চয় যেসব পুরুষ ও স্ত্রীলোক মুসলিম, মু’মিন, আল্লাহ তা’আলার অনুগত, সত্য পথের পথিক, ধৈর্যশীল, আল্লাহ তা’আলাকে ভয়কারী, এবং বেশি পরিমাণে আল্লাহ তা’আলাকে মনে করে, আল্লাহ তা’আলা তাদের জন্য ক্ষমা ও মহাপুরস্কার রেখেছেন"- (সূরা আহযাব ৩৫)।
সনদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। উল্লেখিত সনদেই শুধু আমরা এ হাদীস জেনেছি।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنْ حُسَيْنٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ أُمِّ عُمَارَةَ الأَنْصَارِيَّةِ، أَنَّهَا أَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ مَا أَرَى كُلَّ شَيْءٍ إِلاَّ لِلرِّجَالِ وَمَا أَرَى النِّسَاءَ يُذْكَرْنَ بِشَيْءٍ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (إن الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَإِنَّمَا يُعْرَفُ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
Narrated Umm 'Umarah Al-Ansariyyah:
that she came to the Prophet (ﷺ) and said: "I do not see bu that everything is for the men, and I do not see anything being mentioned for the women." So this Ayah was revealed: 'Indeed the Muslim men and the Muslim women, the believing men and the believing women... (33:35)'
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১২। আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, (অনুবাদ) “তুমি (নবী) নিজের মনে সে কথা লুকিয়ে রেখেছিলে, যা আল্লাহ তা’আলা প্রকাশ করবেন”— (সূরা আহযাব ৩৭), এ আয়াত তখন অবতীর্ণ হয় যাইদ (রাযিঃ) যখন যাইনাব বিনতু জাহশ (রাযিঃ) প্রসঙ্গে অভিযোগ করতে এলেন। তিনি যাইনাবকে ত্বালাক দেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “তোমার স্ত্রীকে স্বীয় বিবাহধীনে রাখ এবং আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর”— (সূরা আহ্যাব ৩৭)।
সহীহঃ বুখারী (৭৪২০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ।
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (وتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ ) فِي شَأْنِ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ جَاءَ زَيْدٌ يَشْكُو فَهَمَّ بِطَلاَقِهَا فَاسْتَأْمَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated Anas:
"When this Ayah was revealed: 'But you did hide in yourself that which Allah will make manifest... (33:37)' about Zainab bint Jahsh, Zaid had come to the Prophet (ﷺ) complaining, and he wanted to divorce her, so he consulted with the Prophet (ﷺ). The Prophet (ﷺ) said: 'Keep your wife to yourself, and have Taqwa of Allah (33:37).'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১৩। আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, যাইনাব বিনতু জাহশ সম্পর্কে যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ (অনুবাদ) “তারপর যাইদ যখন তার (যাইনাবের) সাথে বিয়ের সম্পর্ক শেষ করল তখন আমরা তাকে (যাইনাবকে) তোমার কাছে বিয়ে দিলাম,” তখন যাইনাব বিনতু জাহশ (রাযিঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রীদের সামনে গর্ব ভরে বলতেন, তোমাদেরকে তোমাদের পরিবারের লোকেরা বিয়ে দিয়েছেন, আর আমাকে বিয়ে দিয়েছেন সাত আসমানের উপর হতে আল্লাহ তা’আলা।
সহীহঃ মুখাতাসার আল-উলুয়ি (৮৪/৬), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِي زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ : (فلَمَّا قَضَى زَيْدٌ مِنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا ) قَالَ فَكَانَتْ تَفْتَخِرُ عَلَى أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَقُولُ زَوَّجَكُنَّ أَهْلُكُنَّ وَزَوَّجَنِي اللَّهُ مِنْ فَوْقِ سَبْعِ سَمَوَاتٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated Anas:
"When this Ayah was revealed about Zainab bint Jahsh: 'So when Zaid had completed his aim with her, We gave her to you in marriage (33:37)' - he said: "She used to boast to the wives of the Prophet (ﷺ): 'Your families married you (to him) while Allah married me (to him) from above the Seven Heavens.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১৪। আবূ তালিব-কন্যা উম্মু হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিয়ে করার পয়গাম পাঠান। আমি তাকে নিজের অক্ষমতা জানালাম। তিনি আমার আপত্তি গ্রহণ করলেন। তারপর আল্লাহ তা’আলা আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “হে নবী! আমরা তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার সেই স্ত্রীদের, যাদের মোহরানা তুমি আদায় করেছ এবং সেই মহিলাদেরকেও (বৈধ করেছি), যারা আল্লাহ্ তা’আলার দেয়া দাসীদের মধ্য হতে তোমার মালিকানাভুক্ত হয়েছে, তোমার সেই চাচাতো, ফুফাতো ও মামাতো বোনদেরকেও (বৈধ করেছি), যারা তোমার সাথে হিযরাত করে এসেছে, সেই মু’মিন মহিলাকেও, যে নিজেকে নবীর জন্য হেবা করে, যদি নবী তাকে বিয়ে করতে চায়। এই সুবিধাদান বিশেষভাবে তোমার জন্য, অন্যান্য ঈমানদার লোকদের জন্য নয়" (সূরাঃ আল-আহযাব- ৫০)।
রাবী (উম্মু হানী) বলেনঃ এ কারণেই আমি তার জন্য বৈধ ছিলাম না। কেননা আমি তার সাথে হিযরাত করিনি, আমি ছিলাম তুলাকাভুক্ত।
সনদ অত্যন্ত দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আমরা শুধু উল্লেখিত সূত্রেই সুদ্দীর হাদীস হিসেবে জেনেছি।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَتْ خَطَبَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاعْتَذَرْتُ إِلَيْهِ فَعَذَرَنِي ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : (إنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللاَّتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّاتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَالاَتِكَ اللاَّتِي هَاجَرْنَ مَعَكَ وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ ) الآيَةَ قَالَتْ فَلَمْ أَكُنْ أَحِلُّ لَهُ لأَنِّي لَمْ أُهَاجِرْ كُنْتُ مِنَ الطُّلَقَاءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ السُّدِّيِّ .
Narrated Umm Hani bint Abu Talib:
"The Messenger of Allah (ﷺ) proposed to me, but I asked him to excuse me. Then Allah [Most High] revealed: 'Verily We have made lawful to you your wives, to whom you have paid their due, and those whom your right hand possess - whom Allah has given to you, and the daughters of your paternal uncles, and the daughters of your paternal aunts, and the daughters of your maternal uncles, and the daughters of your maternal aunts, who migrated with you, and a believing woman if she offers herself to the Prophet... (33:50)' She said: "So I was not lawful for him because I did not perform Hijrah; I was one of the Tulaqa (those that accepted Islam after the conquest of Makkah).'"
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১৫। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হিযরাতকারিনী মু’মিন স্ত্রীলোকদের ছাড়া অন্য স্ত্রীলোকদেরকে বিয়ে করতে মানা করা হয়েছে। অতএব আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “এরপর তোমার জন্য কোন নারী হালাল নয় এবং তোমার স্ত্রীদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করারও অনুমতি নেই, যদিও তাদের রূপ সৌন্দর্য তোমাকে মুগ্ধ করে। তবে তোমার অধিকারভুক্ত দাসীদের ব্যাপার স্বতন্ত্র" (সূরাঃ আল-আহযাব- ৫২)।
আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মু’মিন দাসীদের বৈধ করেছেন। "এবং সেই মু’মিন নারীকেও (বৈধ করা হয়েছে) যে নিজেকে নবীর জন্য হেবা করে” (সূরা আল-আহযাব- ৫০)। মুসলিম স্ত্রীলোক ব্যাতিত অন্যান্য ধর্মের স্ত্রীলোকদের বিয়ে করা তার জন্য অবৈধ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ "কেউ ঈমান অস্বীকার করলে তার সকল কর্মফল নিস্ফল হবে এবং আখিরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে" (সূরাঃ আল-মায়িদাহ – ৫)।
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেছেনঃ “হে নবী! আমরা তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার সেই স্ত্রীদের যাদের মোহরানা তুমি পরিশোধ করেছ, সেই মহিলাদেরকেও যারা আল্লাহ তা’আলার দেয়া দাসীদের মধ্য হতে তোমার মালিকানাভুক্ত হয.... এই বিশেষ সুবিধা শুধু তোমাকেই দেয়া হয়েছে, মুমিনদেরকে নয়" (সূরাঃ আল আহযাব- ৫০)। এ ছাড়া অন্য সব ধরনের মহিলাদের অবৈধ করা হয়েছে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আমরা শুধু আব্দুল হামীদ ইবনু বাহরামির রিওয়ায়াত হিসেবেই এ হাদীস জেনেছি। আমি আহমাদ ইবনুল হাসানকে বলতে শুনেছি, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহঃ) বলেন, শাহর ইবনু হাওশাবের সূত্রে আবদুল হামীদ ইবনু বাহরামের বর্ণিত হাদীসে আপত্তির কিছু নেই।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ بَهْرَامَ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رضى الله عنهما نُهِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَصْنَافِ النِّسَاءِ إِلاَّ مَا كَانَ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ الْمُهَاجِرَاتِ قَالَ : ( لا يَحِلُّ لَكَ النِّسَاءُ مِنْ بَعْدُ وَلاَ أَنْ تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِنْ أَزْوَاجٍ وَلَوْ أَعْجَبَكَ حُسْنُهُنَّ إِلاَّ مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ ) فَأَحَلَّ اللَّهُ فَتَيَاتِكُمُ الْمُؤْمِنَاتِ وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ وَحَرَّمَ كُلَّ ذَاتِ دِينٍ غَيْرَ الإِسْلاَمِ ثُمَّ قَالَ : (ومَنْ يَكْفُرْ بِالإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ ) وَقَالَ : ( يا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللاَّتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْكَ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( خالِصَةً لَكَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ ) وَحَرَّمَ مَا سِوَى ذَلِكَ مِنْ أَصْنَافِ النِّسَاءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ بَهْرَامَ . قَالَ سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ الْحَسَنِ يَقُولُ قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلِ لاَ بَأْسَ بِحَدِيثِ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ بَهْرَامَ عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ .
Narrated Ibn 'Abbas:
"All types of women were prohibited for the Messenger of ALlah (ﷺ) except for the believing women among those who emigrated. (Allah) said: 'It is not lawful for you (to marry other) women after this, nor to change them for other wives even though their beauty attracts you, except those whom your right hand possesses (33:52). - And Allah made your believing girls lawful 'And a believing woman if she offers herself to the Prophet (33:50)' and He made every woman of a religion other than Islam unlawful." Then He said: "And whoever disbelieves in faith then fruitless is his work; and in the Hereafter he will be among the losers (5:5)." And he said: "Verily We have made lawful to you your wives, to whom you have paid their due, and those whom your right hands possess - whom Allah has given you" up to His saying: "A privilege to only you, not for the (rest of) the believers (33:50)." He made the other types of women unlawful."
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১৬। আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পূর্বেই এ সব স্ত্রীলোক তার জন্য হালাল করা হয়।
সনদ সহিহ।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান।
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عَطَاءٍ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ مَا مَاتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أُحِلَّ لَهُ النِّسَاءُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Narrated 'Aishah:
"The Messenger of Allah (ﷺ) did not die until the women had been made lawful for him."
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১৭। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তার সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীর ঘরের দরজায় এসে দেখেন যে, তার ঘরে কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তায় ব্যস্ত। তিনি ফিরে গেলেন এবং নিজের কিছু কাজ করলেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর তিনি আবার ফিরে এলেন। তখনো তার ঘরে লোকেরা আলাপে লিপ্ত ছিল। তিনি এবারও ফিরে গেলেন এবং নিজের কিছু কাজ করলেন। তিনি আবার তার ঘরের দিকে রাওয়ানা হলেন। এ সময়ের মধ্যে তারা সেখান হতে চলে গেছে। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি ঘরের মধ্যে ঢুকে আমার ও তার মধ্যে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এ ঘটনা আবূ ত্বালহা (রাযিঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, তুমি যা বলছ তা যদি ঠিক হয়, তবে এ বিষয়ে নিশ্চয়ই কোন আয়াত অবতীর্ণ হবে। বর্ণনাকারী বলেন, এই প্রেক্ষিতেই পর্দা সম্পর্কিত আয়াত (সূরা আহযাব ৫৩-৫৫) অবতীর্ণ হয়।
সহীহঃ বুখারী (৫১৬৬, ৫৪৬৬, ৬২৩৮) অনুরূপ।
আবূ ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান গারীব।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَشْهَلُ بْنُ حَاتِمٍ، قَالَ ابْنُ عَوْنٍ حُدِّثْنَاهُ عَنْ عَمْرِو بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَى بَابَ امْرَأَةٍ عَرَّسَ بِهَا فَإِذَا عِنْدَهَا قَوْمٌ فَانْطَلَقَ فَقَضَى حَاجَتَهُ فَاحْتَبَسَ ثُمَّ رَجَعَ وَعِنْدَهَا قَوْمٌ فَانْطَلَقَ فَقَضَى حَاجَتَهُ فَرَجَعَ وَقَدْ خَرَجُوا قَالَ فَدَخَلَ وَأَرْخَى بَيْنِي وَبَيْنَهُ سِتْرًا قَالَ فَذَكَرْتُهُ لأَبِي طَلْحَةَ قَالَ فَقَالَ لَئِنْ كَانَ كَمَا تَقُولُ لَيَنْزِلَنَّ فِي هَذَا شَيْءٌ . فَنَزَلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
Narrated Anas bin Malik:
"I was with the Prophet (ﷺ), and he came to the door of a woman with whom he had consummated marriage, and some people were with her. So, he left to fulfill his need, and was prevented (from her). Then he came back, and some people were still with her. Then he left to fulfill his need and came back and they had gone." He said: "So, I mentioned that to Abu Talhah and he said: 'If it is as you say, something shall surely be revealed concerning this,' and the Verse of Hijab was revealed.
পরিচ্ছেদঃ ৩৪. সূরা আল-আহযাব
৩২১৮। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিয়ে করলেন এবং নিজের ঘরে গেলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মা উম্মু সুলাইম (রাযিঃ) হাইস (খেজুর, ঘি ও ছাতু সহযোগে এক প্রকার মিষ্টান্ন) বানালেন। তিনি একটি ছোট পাত্রে তা রেখে বললেন, হে আনাস! এটা নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাও। তাকে বল, এটা আমার মা আপনার জন্য পাঠিয়েছেন, আর তিনি আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এবং বলেছেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটা আমাদের দিক হতে আপনার জন্য একটি নগণ্য উপহার।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি এই হাইস’ নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট গেলাম এবং বললাম, আমার মা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন, এটা আমাদের দিক হতে আপনার জন্য খুব সামান্য উপহার। তিনি বললেনঃ এটা রাখ। তারপর তিনি বললেনঃ তুমি গিয়ে অমুক, অমুক ও অমুক লোককে এবং পথিমধ্যে যাদের সঙ্গে তোমার কথা হবে তাদেরকেও দা’ওয়াত দিয়ে নিয়ে আস। তিনি কয়েক লোকের নামও বলে দিলেন।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, তিনি যাদের নাম উল্লেখ করে বলে দিয়েছেন এবং পথিমধ্যে আমার সঙ্গে যাদের দেখা হয়েছে আমি তাদের সবাইকে দাওয়াত করে নিয়ে এলাম। অধঃস্তন বর্ণনাকারী (জা’দ আবূ উসমান) বলেন, আমি আনাস (রাযিঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, তাদের মোট সংখ্যা কত ছিল? তিনি বললেন, প্রায় তিন শত।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে আনাস! ছোট পাত্রটি নিয়ে এসো। আনাস (রাযিঃ) বলেন, দাওয়াতকৃত ব্যক্তিরা এলে তাদের ভীড়ে চত্বর ও হুজরাহ ভরে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দশ দশজন করে গোলাকারে বসে যাও এবং প্রতিটি লোক যেন নিজের নিকটের দিকে থেকে খায়।
বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা পরিতৃপ্তি সহকারে খেল। একদল খেয়ে চলে গেলে অপর দল খেতে বসত। এভাবে সবাই আহার করল। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে বললেনঃ হে আনাস! পাত্রটি তুলে নিয়ে যাও। আনাস (রাযিঃ) বলেন, আমি তা উঠিয়ে নিলাম, কিন্তু বলতে পারব না, যখন আমি হাইসের পাত্র রেখে ছিলাম তখন কি তাতে অনেক হাইস ছিল না যখন তুলে নিলাম তখন বেশী ছিল!
আনাস (রাযিঃ) বলেন, দাওয়াতকৃতদের গল্পে রত কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘরে বসে আলাপে রত রইল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বিদায় হওয়ার অপেক্ষায় বসে রইলেন। তার স্ত্রী দেয়ালের দিকে মুখ করে বসে রইলেন। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য একটি বিরক্তিকর বোঝা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে গিয়ে তার স্ত্রীদের সালাম করলেন, তারপর আবার ফিরে এলেন।
তারা যখন দেখল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসছেন, তখন তারা অনুভব করল যে, তারা তার জন্য বিরক্তির বিষয় হয়ে পড়েছে। অতএব তারা সকলে উঠে দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে পর্দা ছেড়ে দিয়ে হুজরায় প্রবেশ করলেন। আমি হুজরার মধ্যে (পর্দার এ পাশে) বসে থাকলাম। কিছু সময় পর তিনি বের হয়ে আমার নিকট এলেন। তখন নিম্নের আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে বের হয়ে গিয়ে লোকদের সামনে তা পড়লেনঃ
(অনুবাদ) “হে ঈমানদারগণ! তোমরা বিনা অনুমতিতে নবীর ঘরের মধ্যে প্রবেশ করো না এবং আহারের জন্য এসে অপেক্ষায় বসে থেকো না। যদি তোমাদের আহারের জন্য দাওয়াত দেয়া হয় তবে অবশ্যই আসবে, কিন্তু খাওয়া-দাওয়া শেষ করার সাথে সাথে সরে পড়বে এবং কথাবার্তায় মাশগুল হবে না। তোমাদের এ ধরনের আচরণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দুঃখ দেয় কিন্তু সে লজ্জায় কিছুই বলে না। আর আল্লাহ তা’আলা সত্য কথা বলতে লজ্জা বোধ করেন না।
নবীর স্ত্রীদের নিকট তোমাদের কিছু চাওয়ার প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল হতেই তাদের নিকট তা চাও। তোমাদের এবং তাদের অন্তরের পবিত্রতা রক্ষার জন্য এটাই ভাল কাজ। আল্লাহ তা’আলার রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তার ইন্তিকালের পর তার স্ত্রীদের বিয়ে করা তোমাদের জন্য কখনো জায়িয নয়। এটা আল্লাহ তা’আলার নিকট অতি বড় গুনাহ।” (সূরা আহযাব ৫৩)
জা’দ (রহঃ) বলেন, আনাস (রাযিঃ) বলেছেন, আমিই সকলের আগে এ আয়াত প্রসঙ্গে অবগত হই এবং সেদিন হতেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ পর্দা করেন।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। জা’দ হলেন উসমানের পুত্র। তাকে দীনারের ছেলেও বলা হয়। তার উপনাম আবূ উসমান আল-বসরী। হাদীস বিশারদদের মতে তিনি সিকাহ বর্ণনাকারী। ইউনুস ইবনু উবাইদ, শুবাহ ও হাম্মাদ ইবনু যাইদ (রাহঃ) তার সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ، عَنِ الْجَعْدِ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رضى الله عنه قَالَ تَزَوَّجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَدَخَلَ بِأَهْلِهِ - قَالَ - فَصَنَعَتْ أُمِّي أُمُّ سُلَيْمٍ حَيْسًا فَجَعَلَتْهُ فِي تَوْرٍ فَقَالَتْ يَا أَنَسُ اذْهَبْ بِهَذَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْ لَهُ بَعَثَتْ إِلَيْكَ بِهَا أُمِّي وَهِيَ تُقْرِئُكَ السَّلاَمَ وَتَقُولُ إِنَّ هَذَا لَكَ مِنَّا قَلِيلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ فَذَهَبْتُ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنَّ أُمِّي تُقْرِئُكَ السَّلاَمَ وَتَقُولُ إِنَّ هَذَا مِنَّا لَكَ قَلِيلٌ . فَقَالَ " ضَعْهُ " . ثُمَّ قَالَ " اذْهَبْ فَادْعُ لِي فُلاَنًا وَفُلاَنًا وَفُلاَنًا وَمَنْ لَقِيتَ " . فَسَمَّى رِجَالاً قَالَ فَدَعَوْتُ مَنْ سَمَّى وَمَنْ لَقِيتُ قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ عَدَدُكُمْ كَمْ كَانُوا قَالَ زُهَاءَ ثَلاَثِمِائَةٍ . قَالَ وَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا أَنَسُ هَاتِ التَّوْرَ " . قَالَ فَدَخَلُوا حَتَّى امْتَلأَتِ الصُّفَّةُ وَالْحُجْرَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لِيَتَحَلَّقْ عَشَرَةٌ عَشَرَةٌ وَلْيَأْكُلْ كُلُّ إِنْسَانٍ مِمَّا يَلِيهِ " . قَالَ فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا قَالَ فَخَرَجَتْ طَائِفَةٌ وَدَخَلَتْ طَائِفَةٌ حَتَّى أَكَلُوا كُلُّهُمْ . قَالَ فَقَالَ لِي " يَا أَنَسُ ارْفَعْ " . قَالَ فَرَفَعْتُ فَمَا أَدْرِي حِينَ وَضَعْتُ كَانَ أَكْثَرَ أَمْ حِينَ رَفَعْتُ قَالَ وَجَلَسَ مِنْهُمْ طَوَائِفُ يَتَحَدَّثُونَ فِي بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ وَزَوْجَتُهُ مُوَلِّيَةٌ وَجْهَهَا إِلَى الْحَائِطِ فَثَقُلُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَى نِسَائِهِ ثُمَّ رَجَعَ فَلَمَّا رَأَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ رَجَعَ ظَنُّوا أَنَّهُمْ قَدْ ثَقُلُوا عَلَيْهِ قَالَ فَابْتَدَرُوا الْبَابَ فَخَرَجُوا كُلُّهُمْ وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَرْخَى السِّتْرَ وَدَخَلَ وَأَنَا جَالِسٌ فِي الْحُجْرَةِ فَلَمْ يَلْبَثْ إِلاَّ يَسِيرًا حَتَّى خَرَجَ عَلَىَّ وَأُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَاتُ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُنَّ عَلَى النَّاسِ : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلاَّ أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ . قَالَ الْجَعْدُ قَالَ أَنَسٌ أَنَا أَحْدَثُ النَّاسِ عَهْدًا بِهَذِهِ الآيَاتِ وَحُجِبْنَ نِسَاءُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْجَعْدُ هُوَ ابْنُ عُثْمَانَ وَيُقَالُ هُوَ ابْنُ دِينَارٍ وَيُكْنَى أَبَا عُثْمَانَ بَصْرِيٌّ وَهُوَ ثِقَةٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ رَوَى عَنْهُ يُونُسُ بْنُ عُبَيْدٍ وَشُعْبَةُ وَحَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ .
Narrated Al-Ja'd bin Abi 'Uthman:
from Anas bin Malik: "The Messenger of Allah (ﷺ) got married, and he went in with his wife." He said: "So my mother, Umm Sulaim prepared some Hais in a Tawr (a vessel made of brass and stone) and said: 'O Anas! Take this to the Prophet (ﷺ).' I said to him: 'My mother sent this to you, and she conveys her Salam, and says: 'This is a little something from us for you.'" He said: 'Put it down.' Then he said: 'Go and invite so-and-so, so-and-so, and so-and-so for me, and whomever you meet.'" He named some people, and said: "I invited those he named, and whomever I met." - He (Al-Ja'd) said: "I said to Anas: 'How many of you were there?' He said: 'Roughly about three-hundred.'" - He (Anas) said: "The Messenger of Allah (ﷺ) said to me: 'O Anas! Bring me the Tawr.'" He said: "They entered until the Suffah (a shaded part of the Masjid in Al-Madinah) and the apartment were full. The Messenger of Allah (ﷺ) said: 'Let groups of ten in, and let each person eat what is near him.'" He said: "They ate until they were full." He said: "A group exited, and another group entered, until all of them ate.'" He said: "He said to me: 'O Anas! Remove it.'" He said: "So I took it. I could not tell if there was more when I first put it down, or when I picked it up." He said: "Groups of them sat talking in the house of the Messenger of Allah (ﷺ), while the Messenger of Allah (ﷺ) and his wife sat facing the wall. They began to be burdensome on the Messenger of Allah (ﷺ), so the Messenger of Allah (ﷺ) went out to greet his women folk, then he returned, they realized that they had overburdened him, so they hastened for the gate and all of them exited. The Messenger of Allah (ﷺ) came until he lowered the curtain, and entered while I was sitting in the apartment. He did not remain there long before he left me, and these Ayat were revealed. So the Messenger of Allah (ﷺ) went out to recite them to the people: 'O you who believe! Do not enter the Prophet's house unless permission is given to you for a meal, not to wait for its preparation. But when you are invited, enter, and when you have taken your meals, dispense without sitting for a talk. Verily, such annoys the Prophet...' till the end of the Ayah (33:53)' Al-Ja'd said: "Anas said: 'I am the earliest of the people to encounter these Ayat, and to be screened from the wives of the Prophet (ﷺ)."