পরিচ্ছেদঃ ২১. ভূমিধস প্রসঙ্গে
২১৮৩। হুযাইফা ইবনু উসাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, কোন একদিন কিয়ামত প্রসঙ্গে আমরা কথা-বার্তা বলছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরকম সময় তার ঘর হতে বেরিয়ে আমাদের সামনে এলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা দশটি নিদর্শন না দেখা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে নাঃ
(১) পশ্চিম প্রান্ত হতে সূর্য উঠবে, (২) ইয়াজুজ ও মাজুজের আত্মপ্রকাশ ঘটবে, (৩) দাব্বাতুল আরদ নামক প্রাণীর আত্মপ্রকাশ ঘটবে, তিনটি ভুমি ধস হবেঃ (৪) একটি প্রাচ্যে (৫) একটি পাশ্চাত্যে এবং (৬) একটি আরব উপদ্বীপে, (৭) ইয়ামানের অন্তর্গত আদন (এডেন)-এর একটি গভীর কূপ হতে অগ্লুৎপাত হবে, যা মানুষকে তাড়িয়ে নেবে বা একত্র করবে, তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুনও সেখানে রাত্রি কাটাবে এবং তারা যেখানে দিনের বেলায় বিশ্রাম করবে, আগুনও সেখানেই বিশ্রাম করবে।
সহীহ, মুসলিম (৮/১৭৮-১৭৯)।
উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস মাহমূদ ইবনু গাইলান-ওয়াকী হতে, তিনি সুফিয়ান (রাহঃ) হতে এই সনদসূত্রে বর্ণিত আছে। তাতে আছেঃ আদ-দুখান অর্থাৎ ধোয়া নির্গত হবে। এ বর্ণনাটিও সহীহ। হান্নাদ-আবূল আহওয়াস হতে, তিনি ফুরাত আল-কাযযায (রহঃ)-এর সূত্রেও সুফিয়ান হতে ওয়াকী (রাহঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের ন্যায় বর্ণিত আছে। মাহমূদ ইবনু গাইলান-আবূ দাউদ আত-তাইয়ালিসী হতে, তিনি শুবা ও মাসউদী-ফুরাত আল-কাযযায (রহঃ) হতে ফুরাতের সূত্রে সুফিয়ান বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসের মতো হাদীস বর্ণিত আছে।
এই বর্ণনায় দাজ্জাল ও ধোয়ার উল্লেখ আছে। এ বর্ণনাটিও সহীহ। আবূ মূসা মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না-আবূন নুমান আল-হাকাম ইবনু আবদুল্লাহ আল-ইজলী হতে, তিনি শুবা হতে, তিনি ফুরাত (রাহঃ)-এর সূত্রে আবূ দাউদ-শুবা (রাহঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সূত্রে আরো আছেঃ “কিয়ামতের দশম নিদর্শন হলো এমন প্রবল বাতাস যা তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে অথবা ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ)-এর অবতরণ"। সহীহ, প্রাগুক্ত।
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে আলী, আবূ হুরাইরা, উম্মু সালামা ও সাফিয়্যা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
باب مَا جَاءَ فِي الْخَسْفِ
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ فُرَاتٍ الْقَزَّازِ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ، عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ أَسِيدٍ، قَالَ أَشْرَفَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ غُرْفَةٍ وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ السَّاعَةَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَرَوْا عَشْرَ آيَاتٍ طُلُوعُ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا وَيَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَالدَّابَّةُ وَثَلاَثَةُ خُسُوفٍ خَسْفٍ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٍ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٍ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَنَارٌ تَخْرُجُ مِنْ قَعْرِ عَدَنَ تَسُوقُ النَّاسَ أَوْ تَحْشُرُ النَّاسَ فَتَبِيتُ مَعَهُمْ حَيْثُ بَاتُوا وَتَقِيلُ مَعَهُمْ حَيْثُ قَالُوا " .
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ فُرَاتٍ، نَحْوَهُ وَزَادَ فِيهِ " الدُّخَانَ " .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ فُرَاتٍ الْقَزَّازِ، نَحْوَ حَدِيثِ وَكِيعٍ عَنْ سُفْيَانَ، .
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، عَنْ شُعْبَةَ، وَالْمَسْعُودِيِّ، سَمِعَا مِنْ، فُرَاتٍ الْقَزَّازِ نَحْوَ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ فُرَاتٍ وَزَادَ فِيهِ " الدَّجَّالَ أَوِ الدُّخَانَ " .
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ الْحَكَمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْعِجْلِيُّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ فُرَاتٍ، نَحْوَ حَدِيثِ أَبِي دَاوُدَ عَنْ شُعْبَةَ، وَزَادَ، فِيهِ قَالَ " وَالْعَاشِرَةُ إِمَّا رِيحٌ تَطْرَحُهُمْ فِي الْبَحْرِ وَإِمَّا نُزُولُ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَصَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَىٍّ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Hudhaifah bin Asid said:
"The Messenger of Allah (s.a.w) stood over us on a balcony, and we were discussing the Hour. So the Messenger of Allah(s.a.w) said: 'The Hour shall not be established until you see ten signs. The sun rising from its setting place, Ya'juj and Ma'juj, the beast of the earth, and three collapses of the earth: A collapse in the east, a collapse in the west and a collapse in the 'Arabian peninsula. And a fire that comes out of a place within 'Adan, driving the people, or gathering the people, camping where they camp, and resting where they rest."'
পরিচ্ছেদঃ ২১. ভূমিধস প্রসঙ্গে
২১৮৪। সাফিয়্যা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার এই ঘরের (কাবা) বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করা হতে মানুষ বিরত থাকবে না। অবশেষে একটি বাহিনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে যখন বাইদা নামক উপত্যকা অথবা উন্মুক্ত প্রান্তরে হাযির হবে তখন তাদের সম্মুখ-পিছনের সবাইকে নিয়ে যমীন ধসে যাবে। তাদের মধ্যভাগের মানুষও মুক্তি পাবে না। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি জোর-জবরদস্তির ফলে বাধ্য হয়ে অংশগ্রহণ করবে তাদের কি হবে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে তাদের অন্তরের নিয়্যাত অনুসারে পুনরুত্থান করবেন।
সহীহ, তা’লীক আলা ইবনু মা-জাহ।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
باب مَا جَاءَ فِي الْخَسْفِ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْمَرْهَبِيِّ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ صَفْوَانَ، عَنْ صَفِيَّةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْتَهِي النَّاسُ عَنْ غَزْوِ هَذَا الْبَيْتِ حَتَّى يَغْزُوَ جَيْشٌ حَتَّى إِذَا كَانُوا بِالْبَيْدَاءِ أَوْ بِبَيْدَاءَ مِنَ الأَرْضِ خُسِفَ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ وَلَمْ يَنْجُ أَوْسَطُهُمْ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَنْ كَرِهَ مِنْهُمْ قَالَ " يَبْعَثُهُمُ اللَّهُ عَلَى مَا فِي أَنْفُسِهِمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Safiyyah narrated "The Messenger of Allah (s.a.w) said:
'The people will not finish attacking this House until it is attacked by an army which, when they are at Al-Baida', or a Baida' in the land, it will swallow from the first of them to the last of them, and the middle of them shall not be saved.' I said: 'O Messenger of Allah(s.a.w)! What about those among them who are averse to it?' He said: 'Allah will resurrect them upon what was in their souls(intentions)."'
পরিচ্ছেদঃ ২১. ভূমিধস প্রসঙ্গে
২১৮৫। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এই উম্মাতের শেষ পর্যায়ে ভূমিধস, শারীরিক অবয়ব বিকৃতি ও পাথর বর্ষণের শাস্তি নিপতিত হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল আমাদের মাঝে সৎলোক বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন ঘৃণ্য পাপাচারের প্রকাশ ও ব্যাপক প্রসার ঘটবে।
সহীহ, সহীহাহ (৯৮৭), রাওযুল নামীর (২/৩৯৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আইশা (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার আল-উমারীর স্মৃতিশক্তি দুর্বল বলে সমালোচনা করেছেন (অবশ্য তার ছোট ভাই উবাইদুল্লাহ একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী)।
باب مَا جَاءَ فِي الْخَسْفِ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا صَيْفِيُّ بْنُ رِبْعِيٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَكُونُ فِي آخِرِ هَذِهِ الأُمَّةِ خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَقَذْفٌ " . قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ قَالَ " نَعَمْ إِذَا ظَهَرَ الْخَبَثُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ تَكَلَّمَ فِيهِ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
'Aishah narrated "The Messenger of Allah(s.a.w) said:
'In the end of this Ummah there will be a collapse, transformation, and Qadhf."' She said :"I said: 'O Messenger of Allah! Will they be destroyed while they are righteous among them?' He said: 'Yes, when evil is dominant."'