পরিচ্ছেদঃ ৩২/১৩. যুদ্ধে নিহত ব্যক্তির মালামালের অধিকতর হকদার হচ্ছে হত্যাকারী।

১১৪৪. আবু কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের বছর আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বের হলাম। আমরা যখন শত্ৰুর সম্মুখীন হলাম, তখন মুসলিম দলের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি শুরু হল। এমন সময় আমি মুশরিকদের এক ব্যক্তিকে দেখলাম, সে একজন মুসলিমের উপর চেপে বসেছে। আমি ঘুরে তার পেছনের দিক দিয়ে এসে তরবারী দ্বারা তার ঘাড়ের রগে আঘাত করলাম। তখন সে আমার দিকে এগিয়ে এল এবং আমাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরল যে, আমি তাতে মৃত্যুর আশংকা করলাম। মৃত্যু তাকেই ধরল এবং আমাকে ছেড়ে দিল। অতঃপর আমি উমার (রাঃ) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, লোকদের কী হয়েছে? উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর হুকুম।

অতঃপর লোকজন ফিরে এলো এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসলেন, তখন তিনি বললেন, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করেছে এবং তার নিকট এর সাক্ষ্য রয়েছে, তার নিকট হতে প্রাপ্ত মাল-সামান তারই প্রাপ্য। তখন আমি দাঁড়িয়ে বললাম, কে আছ যে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে? অতঃপর আমি বসে পড়লাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার বললেন, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করেছে এবং তার নিকট এর সাক্ষ্য রয়েছে, তার নিকট হতে প্রাপ্ত মাল-সামান তারই প্রাপ্য। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, কে আছ যে, আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে? অতঃপর আমি বসে পড়লাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৃতীয়বার ঐরূপ বললেন, আমি আবার দাঁড়ালাম, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবূ কাতাদাহ! তোমার কী হয়েছে? আমি তখন পুরো ঘটনা বললাম।

তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আবু কাতাদাহ ঠিক বলেছে। সে ব্যক্তির নিকট হতে প্রাপ্ত মাল-সামান আমার নিকট আছে। আপনি আমার পক্ষ হতে একে সম্মত করিয়ে দিন। তখন আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেন, কক্ষনো না, আল্লাহর কসম! আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো এমন করবেন না যে, আল্লাহর সিংহদের মধ্যে হতে কোন সিংহ আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষে যুদ্ধ করবে আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিহত ব্যক্তির মাল-সামান তোমাকে দিবেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু বাকর ঠিকই বলেছে। ফলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা আমাকে দিলেন। আমি তা হতে একটি বর্ম বিক্রি করে বানূ সালমায় একটি বাগান কিনি। এটাই ইসলামে প্রবিষ্ঠ হওয়ার পর আমার প্রথম সম্পত্তি, যা আমি পেয়েছিলাম।

استحقاق القاتل سلب القتيل

حديث أَبِي قَتَادَةَ رضي الله عنه، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ حُنَيْنٍ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا كَانَتْ لِلْمُسْلِمِينَ جَوْلَةٌ، فَرَأَيْتُ رَجُلاً مِنَ الْمُشْرِكِينَ عَلاَ رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَاسْتَدَرْتُ حَتَّى أَتَيْتُهُ مِنْ وَرَائِهِ حَتَّى ضَرَبْتُهُ بِالسَّيْفِ عَلَى حَبْلِ عَاتِقِهِ، فَأَقْبَلَ عَلَيَّ فَضَمَّنِي ضَمَّةً وَجَدْتُ مِنْهَا رِيحَ الْمَوْتِ ثُمَّ أَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَأَرْسَلَنِي فَلَحِقْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، فَقُلْتُ: مَا بَالُ النَّاسِ قَالَ: أَمْرُ الله

ثُمَّ إِنَّ النَّاسَ رَجَعُوا، وَجَلَسَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: مَنْ قَتَلَ قَتِيلاً لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ، فَلَهُ سَلَبُهُ فَقُمْتُ فَقُلْتُ: مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ: مَنْ قَتَلَ قَتِيلاً لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ، فَلَهُ سَلَبُهُ فَقُمْتُ فَقُلْتُ: مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ الثَالِثَةَ مِثْلَهُ فَقَالَ رَجُلٌ: صَدَقَ يَا رَسُولَ اللهِ وَسَلَبُهُ عِنْدِي، فَأَرْضِهِ عَنِّي فَقَالَ أَبُو بَكْر الصِّدِّيق رضي الله عنه: لاَهَا اللهِ، إِذَا يَعْمِدُ إِلَى أَسَدٍ مِنْ أُسْدِ اللهِ، يُقَاتِلُ عَنِ اللهِ وَرَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يُعْطِيكَ سَلَبَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صَدَقَ فَأَعْطَاهُ، فَبِعْتُ الدِّرْعَ فَابْتَعْتُ بِهِ مَخْرِفًا فِي بَنِي سَلِمَةَ، فَإِنَّهُ لأَوَّلُ مَالٍ تَأْثَّلْتهُ فِي الإِسْلاَمِ

حديث ابي قتادة رضي الله عنه، قال: خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم عام حنين فلما التقينا كانت للمسلمين جولة، فرايت رجلا من المشركين علا رجلا من المسلمين فاستدرت حتى اتيته من وراىه حتى ضربته بالسيف على حبل عاتقه، فاقبل علي فضمني ضمة وجدت منها ريح الموت ثم ادركه الموت فارسلني فلحقت عمر بن الخطاب، فقلت: ما بال الناس قال: امر الله ثم ان الناس رجعوا، وجلس النبي صلى الله عليه وسلم، فقال: من قتل قتيلا له عليه بينة، فله سلبه فقمت فقلت: من يشهد لي ثم جلست ثم قال: من قتل قتيلا له عليه بينة، فله سلبه فقمت فقلت: من يشهد لي ثم جلست ثم قال الثالثة مثله فقال رجل: صدق يا رسول الله وسلبه عندي، فارضه عني فقال ابو بكر الصديق رضي الله عنه: لاها الله، اذا يعمد الى اسد من اسد الله، يقاتل عن الله ورسوله صلى الله عليه وسلم، يعطيك سلبه فقال النبي صلى الله عليه وسلم: صدق فاعطاه، فبعت الدرع فابتعت به مخرفا في بني سلمة، فانه لاول مال تاثلته في الاسلام

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৩২/ জিহাদ (كتاب الجهاد)

পরিচ্ছেদঃ ৩২/১৩. যুদ্ধে নিহত ব্যক্তির মালামালের অধিকতর হকদার হচ্ছে হত্যাকারী।

১১৪৫. আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমি বদর যুদ্ধে সারিতে দাঁড়িয়ে আছি, আমি আমার ডানে বামে তাকিয়ে দেখলাম, অল্প বয়স্ক দু’জন আনসার যুবকের মাঝখানে আছি। আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল, তাদের চেয়ে শক্তিশালীদের মধ্যে থাকি। তখন তাদের একজন আমাকে খোঁচা দিয়ে জিজ্ঞেস করল, চাচা! আপনি কি আবু জাহলকে চিনেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তবে ভাতিজা; তাতে তোমার দরকার কী? সে বলল, আমাকে জানানো হয়েছে যে, সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালাগালি করে। সে মহান সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ। আমি যদি তাকে দেখতে পাই, তবে আমার দেহ তার দেহ হতে বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না আমাদের মধ্যে যার মৃত্যু আগে নির্ধারিত, সে মারা যায়। আমি তার কথায় আশ্চর্য হলাম। তা শুনে দ্বিতীয়জন আমাকে খোঁচা দিয়ে ঐ রকমই বলল। তৎক্ষণাৎ আমি আবূ জাহলকে দেখলাম, সে লোকজনের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তখন আমি বললাম, এই যে আমাদের সেই ব্যক্তি যার সম্পর্কে তোমরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলে। তারা তৎক্ষণাৎ নিজের তরবারী নিয়ে তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং তাকে আঘাত করে হত্যা করল। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে ফিরে এসে তাকে জানালো। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে কে তাকে হত্যা করেছে? তারা উভয়ে দাবী করল, আমি তাকে হত্যা করেছি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের তরবারি তোমরা মুছে ফেলনি তো? তারা উভয়ে বলল, না। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়ের তরবারী দেখলেন এবং বললেন, তোমরা উভয়ে তাকে হত্যা করেছে। অবশ্য তার নিকট হতে প্রাপ্ত মালামাল মুআয ইবনু আমর ইবনু জামূহের জন্য। তারা দু’জন হলো, মুআয ইবনু আফরা ও মুআয ইবনু আমর ইবনু জামূই। মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেছেন, তিনি ইউসুফ ও তাঁর পিতা ইবরাহীম (রহঃ)-কে সৎ ব্যক্তি হিসেবে শুনেছেন।

استحقاق القاتل سلب القتيل

حديث عَبْدِ الرَّحْمنِ بْنِ عَوْفٍ، قَالَ: بَيْنَا أَنَا وَاقِفٌ فِي الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ، فَنظَرْتُ عَنْ يَمِينِي وَشِمَالِي، فَإِذَا أَنَا بِغُلاَمَيْنِ مِنَ الأَنْصَارِ حَدِيثَةٍ أَسْنَانُهُمَا، تَمَنَّيْتُ أَنْ أَكُونَ بَيْنَ أَضْلَعَ مِنْهُمَا، فَغَمَزَنِي أَحَدُهُمَا، فَقَالَ: يَا عَمِّ هَلْ تَعْرِفُ أَبا جَهْلٍ قُلْتُ: نَعَمْ، مَا حَاجَتُكَ إِلَيْهِ يَا ابْنَ أَخِي قَالَ: أُخْبِرْتُ أَنَّهُ يَسُبُّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَئِنْ رَأَيْتُهُ لاَ يُفَارِقُ سَوَادِي سَوَادَهُ حَتَّى يَمُوتَ الأَعْجَلُ مِنَّا فَتَعَجَّبْتُ لِذلِكَ فَغَمَزَنِي الآخَرُ، فَقَالَ لِي مِثْلَهَا فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ نَظَرْتُ إِلَى أَبِي جَهْلٍ يَجُولُ فِي النَّاس، قلْتُ: أَلاَ إِنَّ هذَا صَاحِبُكُمَا الَّذِي سَأَلْتُمَانِي فَابْتَدَرَاهُ بِسَيْفِيْهِمَا، فَضَرَبَاهُ حَتَّى قَتَلاَهُ، ثُمَّ انْصَرَفَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخْبَرَاهُ، فَقَالَ: أَيُّكُمَا قَتَلَهُ قَالَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا: أَنَا قَتَلْتُهُ؛ فَقَالَ: هَلْ مَسَحْتُمَا سَيْفَيْكُمَا قَالاَ: لاَ فَنَظَرَ فِي السَّيْفَيْنِ، فَقَالَ: كِلاَكُمَا قَتَلَهُ، سَلَبُهُ لِمُعَاذٍ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ وَكَانَا مُعَاذَ بْنَ عَفْرَاءَ، وَمُعَاذَ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ

حديث عبد الرحمن بن عوف، قال: بينا انا واقف في الصف يوم بدر، فنظرت عن يميني وشمالي، فاذا انا بغلامين من الانصار حديثة اسنانهما، تمنيت ان اكون بين اضلع منهما، فغمزني احدهما، فقال: يا عم هل تعرف ابا جهل قلت: نعم، ما حاجتك اليه يا ابن اخي قال: اخبرت انه يسب رسول الله صلى الله عليه وسلم، والذي نفسي بيده لىن رايته لا يفارق سوادي سواده حتى يموت الاعجل منا فتعجبت لذلك فغمزني الاخر، فقال لي مثلها فلم انشب ان نظرت الى ابي جهل يجول في الناس، قلت: الا ان هذا صاحبكما الذي سالتماني فابتدراه بسيفيهما، فضرباه حتى قتلاه، ثم انصرفا الى رسول الله صلى الله عليه وسلم، فاخبراه، فقال: ايكما قتله قال كل واحد منهما: انا قتلته؛ فقال: هل مسحتما سيفيكما قالا: لا فنظر في السيفين، فقال: كلاكما قتله، سلبه لمعاذ بن عمرو بن الجموح وكانا معاذ بن عفراء، ومعاذ بن عمرو بن الجموح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৩২/ জিহাদ (كتاب الجهاد)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে