পরিচ্ছেদঃ ১৬/১৪. যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) শাদী ও পর্দার আয়াত অবতীর্ণ এবং বিবাহের ওয়ালীমার প্রমাণ।
৯০২. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন শাদী করেন, তখন ওয়ালীমা করেন, কিন্তু যাইনাব (রাঃ)-এর শাদীর সময় যে পরিমাণ ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেছিলেন, তা অন্য কারো বেলায় করেননি। সেই ওয়ালীমাহ ছিল একটি ছাগল দিয়ে।
زواج زينب بنت جحش ونزول الحجاب وإِثبات وليمة العرس
حديث أَنَسٍ، قَالَ: ما أَوْلَمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَلَى شَيْءٍ مِنْ نِسَائِهِ مَا أَوْلَمَ عَلَى زَيْنَبَ، أَوْلَمَ بِشَاةٍ
পরিচ্ছেদঃ ১৬/১৪. যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) শাদী ও পর্দার আয়াত অবতীর্ণ এবং বিবাহের ওয়ালীমার প্রমাণ।
৯০৩. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যয়নাব বিন্ত জাহশকে যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিয়ে করেন, তখন তিনি লোকদের দাওয়াত দিলেন। লোকরা আহারের পর বসে কথাবার্তা বলতে লাগল। তিনি উঠে যেতে উদ্যত হচ্ছিলেন, কিন্তু লোকরা উঠছিল না। এ অবস্থা দেখে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। তিনি উঠে যাওয়ার পর যারা উঠবার তারা উঠে গেল। কিন্তু তিন ব্যক্তি বসেই রইল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশের জন্য ফিরে এসে দেখেন, তারা তখনও বসে রয়েছে (তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে গেলেন)। এরপর তারাও উঠে গেল। আমি গিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাদের চলে যাওয়ার সংবাদ দিলাম। অতঃপর তিনি এসে প্রবেশ করলেন। এরপর আমি প্রবেশ করতে চাইলে তিনি আমার ও তার মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। তখন আল্লাহ্ তা’আলা নাযিল করেনঃ (يأَيُّهَا الَّذِينَءَامَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ) হে মু’মিনগণ! তোমরা নবীর গৃহে প্রবেশ করো না ... শেষ পর্যন্ত।
زواج زينب بنت جحش ونزول الحجاب وإِثبات وليمة العرس
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، قَالَ: لَمَّا تَزَوَّجَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَيْنَبَ ابْنَةَ جَحْشٍ، دَعَا الْقَوْمَ فَطَعِمُوا، ثُمَّ جَلَسُوا يَتَحَدَّثُونَ، وَإِذَا هُوَ كَأَنَّهُ يَتَهَيَّأُ لِلْقِيَامِ، فَلَمْ يَقُومُوا، فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ قَامَ؛ فَلَمَّا قَامَ، قَامَ مَنْ قَامَ، وَقَعَدَ ثَلاَثَةُ نَفَرٍ، فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، لِيَدْخُلَ، فَإِذَا الْقَوْمُ جُلُوسٌ؛ ثُمَّ إِنَّهُمْ قَامُوا، فَانْطَلَقْتُ فَجِئْتُ فَأَخْبَرْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُمْ قَدِ انْطَلَقُوا؛ فَجَاءَ حَتَّى دَخَلَ، فَذَهَبْتُ أَدْخُلُ، فَأَلْقَى الْحِجَابَ بَيْنِى وَبَيْنَهُ؛ فَأَنْزَلَ اللهُ (يأَيُّهَا الَّذِينَءَامَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ) الآية
পরিচ্ছেদঃ ১৬/১৪. যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) শাদী ও পর্দার আয়াত অবতীর্ণ এবং বিবাহের ওয়ালীমার প্রমাণ।
৯০৪. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি পর্দা (’র আয়াত নাযিল হওয়া) সম্পর্কে সর্বাধিক অবহিত। এ ব্যাপারে ’উবাই ইবনু কাব (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করতেন। যাইব বিন্ত জাহশের সঙ্গে নববিবাহিত হিসেবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভোর হল। তিনি মদীনায় তাঁকে বিবাহ করেছিলেন। বেলা ওঠার পর তিনি লোকজনকে খাওয়ার পরও কিছু লোক তাঁর সাথে বসে থাকল। অবশেষে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে গেলেন আমিও তার সাথে সাথে গেলাম। তিনি ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর হুজরার দরজায় পৌছলেন। অতঃপর ভাবলেন, লোকরা হয়ত চলে গেছে। আমিও তাঁর সাথে ফিরে আসলাম। (এসে দেখলাম) তাঁরা স্বস্থানে বসেই রয়েছে। তিনি পুনরায় ফিরে গেলেন। আমিও তাঁর সঙ্গে দ্বিতীয়বার ফিরে গেলাম। এমনকি তিনি ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর গৃহের দরজা পর্যন্ত পৌছে আবার ফিরে আসলেন। আমিও তার সঙ্গে ফিরে আসলাম। এবার (দেখলাম) তাঁরা উঠে গেছে। অতঃপর তিনি আমার ও তার মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। তখন পর্দার আয়াত নাযিল হল।
زواج زينب بنت جحش ونزول الحجاب وإِثبات وليمة العرس
حديث أَنَسٍ قَالَ: أَنَا أَعْلَمُ النَّاسِ بِالْحِجَابِ؛ كَانَ أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ يَسْأَلُنِي عَنْهُ؛ أَصْبَحَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَرُوسًا بِزَيْنَبَ ابْنَةِ جَحْشٍ، وَكَانَ تَزَوَّجَهَا بِالمَدِينَةِ، فَدَعَا النَّاسَ لِلطَّعَامِ بَعْدَ ارْتِفَاعِ النَّهَارِ، فَجَلَسَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَجَلَسَ مَعَهُ رِجَالٌ، بَعْدَ مَا قَامَ الْقَوْمُ، حَتَّى قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَمَشى وَمَشَيْتُ مَعَهُ، حَتَّى بَلَغَ بَابَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ، ثُمَّ ظَنَّ أَنَّهُمْ خَرَجُوا، فَرَجَعْتُ مَعَهُ فَإِذَا هُمْ جُلُوسٌ مَكَانَهُمْ؛ فَرَجَعَ وَرَجَعْتُ مَعَهُ الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ بَابَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ؛ فَرَجَعَ وَرَجَعْتُ مَعَهُ، فَإِذَا هُمْ قَدْ قَامُوا؛ فَضَرَبَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ سِتْرًا، وَأُنْزِلَ الْحِجَابُ
পরিচ্ছেদঃ ১৬/১৪. যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) শাদী ও পর্দার আয়াত অবতীর্ণ এবং বিবাহের ওয়ালীমার প্রমাণ।
৯০৫. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যখন যাইনাব (রাঃ)-এর সাথে শাদী হয়, তখন উম্মু সুলায়ম আমাকে বললেন, চল, আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যে কিছু হাদীয়া পাঠাই। আমি তাকে বললাম, হ্যাঁ, এ ব্যবস্থা করুন। তখন তিনি খেজুর, মাখন ও পনির এক সাথে মিশিয়ে হালুয়া বানিয়ে একটি ডেকচিতে করে আমার মারফত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পাঠালেন। আমি সেসব নিয়ে তাঁর খিদমতে উপস্থিত হলে তিনি এগুলো রেখে দিতে বলেন এবং আমাকে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে ডেকে আনার আদেশ করলেন। আরো বললেন, যার সাথে দেখা হয় তাকেও দাওয়াত দিবে। তিনি যেভাবে আমাকে হুকুম করলেন, আমি সেইভাবে কাজ করলাম।
যখন আমি ফিরে এলাম, তখন ঘরে অনেক লোক দেখতে পেলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন হালুয়া (হাইশা) পাত্রের মধ্যে হাত রাখা অবস্থায় ছিলেন এবং আল্লাহ্ তা’আলার মর্জি মোতাবেক কিছু কথা বললেন। অতঃপর তিনি দশ দশ জন করে লোক খাবারের জন্য ডাকলেন এবং বললেন, তোমরা ’বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু কর এবং প্রত্যেকে পাত্রের নিজ নিজ দিক হতে খাও। যখন তাদের খাওয়া-দাওয়া শেষ হল তাদের মধ্য থেকে অনেকেই চলে গেল এবং কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তা বলতে থাকল। যা দেখে আমি বিরক্তি বোধ করলাম।
অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে বের হয়ে অন্য ঘরে গেলেন। আমিও সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি বললাম, তারাও চলে গেছে। তখন তিনি নিজের কক্ষে ফিরে এলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তিনি তার কক্ষে থাকলেন এবং এ আয়াত পাঠ করলেনঃ মু’মিনগণ, তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া হলে তোমরা খাবার তৈরির অপেক্ষা না করে নবীগৃহে খাবারের জন্য প্রবেশ করোনা। তবে যদি তোমাদেরকে ডাকা হয় তাহলে প্রবেশ কর এবং খাওয়া শেষ করে চলে যাবে। তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়োনা এবং তোমাদের এরূপ আচরণে নবীর মনে কষ্ট হয়। তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করেন, কিন্তু আল্লাহ্ তাআলা সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না।
زواج زينب بنت جحش ونزول الحجاب وإِثبات وليمة العرس
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا مَرَّ بِجَنَبَاتِ أُمِّ سُلَيْمٍ، دَخَلَ عَلَيْهَا فَسَلَّمَ عَلَيْهَا ثُمَّ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَرُوسًا بِزَيْنَبَ، فَقَالَتْ لِي أُمُّ سُلَيْمٍ: لَوْ أَهْدَيْنَا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، هَدِيَّةً فَقُلْتُ لَهَا: افْعَلِي فَعَمَدَتْ إِلَى تَمْرٍ وَسَمْنٍ وَأَقِطٍ، فَاتَّخَذَتْ حَيْسَةً فِي بُرْمَةٍ، فَأَرْسَلَتْ بِهَا مَعِي إِلَيْهِ؛ فَانْطَلَقْتُ بِهَا إِلَيْهِ فَقَالَ لِي: ضَعْهَا ثُمَّ أَمَرَنِي، فَقَالَ: ادْعُ لِي رِجَالاً سَمَّاهُمْ وَادْعُ لِي مَنْ لَقِيتَ قَالَ: فَفَعَلْتُ الَّذِي أَمَرَنِي، فَرَجَعْتُ فَإِذَا الْبَيْتُ غَاصٌّ بِأَهْلِهِ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى تِلْكَ الْحَيْسَةِ، وَتَكَلَّمَ بِهَا مَا شَاءَ اللهُ، ثُمَّ جَعَلَ يَدْعُو عَشَرَةً عَشَرَةً يَأْكُلُونَ مِنْهُ، وَيَقُولُ لَهُمُ: اذْكُرُوا اسْمَ اللهِ، وَلْيَأْكُلْ كُلُّ رَجُلٍ مِمَّا يَلِيهِ قَالَ: حَتَّى تَصَدَّعُوا كُلُّهُمْ عَنْهَا فَخَرَجَ مِنْهُمْ مَنْ خَرَجَ، وَبَقِيَ نَفَرٌ يَتَحَدَّثُونَ قَالَ: وَجَعَلْتُ أَغْتَمُّ ثُمَّ خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَ الْحُجُرَاتِ، وَخَرَجْتُ فِي إِثْرِهِ، فَقُلْت: إِنَّهُمْ قَدْ ذَهَبُوا؛ فَرَجَعَ فَدَخَلَ الْبَيْتَ، وَأَرْخَى السِّتْرَ، وَإِنِّي لَفِي الْحُجْرَةِ وَهُوَ يَقُولُ: (يأَيُّهَا الَّذِينَءَامَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلاَّ أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلكِنْ إِذَا دُعِيتمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانْتَشِرُوا وَلاَ مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِ مِنْكُمْ وَاللهُ لاَ يَسْتَحْيِ مِنَ الْحَقِّ)