পরিচ্ছেদঃ ১২/৪৬. ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রদান এবং যাদের ঈমান শক্ত তাদের ধৈর্য ধারণ করা।
৬৩২. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। যখন আল্লাহ্ তা’আলা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাওয়াযিন গোত্রের মাল থেকে যা দান করার তা দান করলেন। আর তিনি কুরাইশ গোত্রের লোকদের একশ’ করে উট দিতে লাগলেন। তখন আনসারদের হতে কিছু সংখ্যক লোক বলতে লাগল, আল্লাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ক্ষমা করুন। তিনি কুরাইশদেরকে দিচ্ছেন, আমাদেরকে দিচ্ছেন না। অথচ আমাদের তলোয়ার থেকে এখনও তাদের রক্ত ঝরছে।
আনাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাদের কথা পৌছান, হল। তখন তিনি আনসারদের ডেকে পাঠালেন এবং চর্ম নির্মিত একটি তাঁবুতে তাদের একত্রিত করলেন আর তাঁদের সঙ্গে তাঁদের ব্যতীত আর কাউকে ডাকলেন না। যখন তারা সকলে একত্রিত হলেন, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, ’আমার নিকট আমাদের ব্যাপারে যে কথা পৌছেছে তা কী?’ তাঁদের মধ্যে বয়স্ক লোকরা তাকে বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! আবাদের মধ্য থেকে বয়স্করা কিছুই বলেননি। আমাদের কতিপয় তরুণরা বলেছেঃ আল্লাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ক্ষমা করুন। তিনি আনসারদের না দিয়ে কুরায়শদের দিচ্ছেন; অথচ আমাদের তরবারি হতে এখনও তাদের রক্ত ঝরছে।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’আমি এমন লোকদের দিচ্ছি, যাদের কুফরীর যুগ মাত্ৰ শেষ হয়েছে। তোমরা কি এতে খুশী নও যে, লোকরা দুনিয়াবী সম্পদ নিয়ে ফিরবে, আর তোমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নিয়ে মনযিলে ফিরবে, আর আল্লাহর কসম, তোমরা যা নিয়ে মনযিলে ফিরবে, তা তারা যা নিয়ে ফিরবে, তার চেয়ে উত্তম। তখন আনসারগণ বললেন, ’হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা এতেই সন্তুষ্ট। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’আমার পরে তোমরা আমাদের উপর অন্যদের খুব প্রাধান্য দেখতে পাবে। তখন তোমরা ধৈর্য অবলম্বন করবে, যে পর্যন্ত না তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে হাউযে কাওসারে মিলিত হবে।’ আনাস (রাঃ) বলেন, কিন্তু আমরা ধৈর্যধারণ করতে পারিনি।
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ نَاسًا مِنَ الأَنْصَارِ قَالُوا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حِينَ أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَمْوَالِ هَوَازِنَ مَا أَفَاءَ فَطَفِقَ يُعْطِي رِجَالاً مِنْ قُرَيْشٍ الْمَائَةَ مِنَ الإبِلِ؛ فَقَالوا: يَغْفِرُ اللهُ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَدَعُنَا، وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ قَالَ أَنَسٌ: فَحُدِّثَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَقَالتِهِمْ، فَأَرْسَلَ إِلَى الأَنْصَارِ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ، وَلَمْ يَدْعُ مَعَهُمْ أَحَدًا غَيْرَهُمْ، فَلَمَّا اجْتَمَعُوا جَاءَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: مَا كَانَ حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكُمْ قَالَ لَهُ فُقَهَاؤُهُمْ: أَمَّا ذَوو آرَائِنَا يَا رَسُولَ اللهِ فَلَمْ يَقُولوا شَيْئًا، وَأَمَّا أُنَاسٌ مِنَّا حَدِيثَةٌ أَسْنَانُهُمْ، فَقَالُوا: يَغْفِرُ اللهُ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي قرَيْشًا وَيَتْرُكُ الأَنْصَارَ، وَسُيُوفُنا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لأُعْطِي رِجَالاً حَدِيثٌ عَهْدُهُمْ بِكُفْرٍ، أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالأَمْوَالِ، وَتَرْجِعُونَ إِلَى رِحالِكُمْ بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَاللهِ مَا تَنْقَلِبُونَ بِهِ، خَيْرٌ مِمَّا يَنْقَلِبُونَ بِهِ قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَدْ رَضِينَا فَقَالَ لَهُمْ: إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً شَدِيدَةً، فَاصْبرُوا حَتَّى تَلْقَوُا اللهَ وَرَسُولَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْحَوْضِ قَالَ أَنَسٌ: فَلَمْ نَصْبِرْ
পরিচ্ছেদঃ ১২/৪৬. ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রদান এবং যাদের ঈমান শক্ত তাদের ধৈর্য ধারণ করা।
৬৩৩. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের বললেন, আমাদের মধ্যে অপর গোত্রের কেউ আছে কি? তারা বললেন না, অন্য কেউ নেই। তবে আমাদের এক ভাগিনা আছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন কোন গোত্রের ভাগ্নে সে গোত্রেরই অন্তর্ভুক্ত।
حديث أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الأَنْصَارَ، فَقَالَ: هَلْ فِيكُمْ أَحَدٌ مِنْ غَيْرِكُمْ قَالوا: لاَ، إِلاَّ ابْنُ أُخْتٍ لَنَا؛ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ابْنُ أُخْتِ الْقَوْمِ مِنْهُمْ
পরিচ্ছেদঃ ১২/৪৬. ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রদান এবং যাদের ঈমান শক্ত তাদের ধৈর্য ধারণ করা।
৬৩৪. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কাহ বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদেরকে মালে গনীমত দিলে কিছু সংখ্যক আনসার বলেছিলেন যে, এ বড় আশ্চর্যের বিষয় যে, তিনি কুরাইশদের মাল দিলেন অথচ আমাদের তলোয়ার হতে তাদের রক্ত এখনও ঝরছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ কথা পৌছলে তিনি আনসারদেরকে ডেকে বললেন, আমি তোমাদের হতে যে কথাটি শুনতে পেলাম, সে কথাটি কী? যেহেতু তারা মিথ্যা কথা বলতেন না, সেহেতু তাঁরা বললেন, আপনার নিকট যা পৌছেছে তা সত্যই। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, লোকজন গনীমতের মাল নিয়ে তাদের ঘরে ফিরে যাবে আর তোমরা আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে নিজ ঘরে ফিরবে। যদি আনসারগণ উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে চলে তবে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়েই চলব।
حديث أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَتِ الأَنْصَارُ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ، وأَعْطَى قُرَيْشًا: [ص: 228] وَاللهِ إِنَّ هذَا لَهُوَ الْعَجَبُ، إِنَّ سُيُوفَنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَاءِ قُرَيْشٍ، وَغَنَائِمُنَا تَرَدُّ عَلَيْهِمْ فَبَلَغَ ذلِكَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَدَعَا الأَنْصَارَ قَالَ، فَقَالَ: مَا الَّذِي بَلَغَنِي عَنْكُمْ وَكَانُوا لاَ يَكْذِبُونَ فَقَالُوا: هُوَ الَّذِي بَلَغَكَ قَالَ: أَوَ لاَ تَرْضَوْنَ أَنْ يَرْجِعَ النَّاسُ بِالْغَنَائِمِ إِلَى بيُوتِهِمْ، وَتَرْجِعُونَ بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى بُيُوتِكُمْ لَوْ سَلَكَتِ الأَنْصَارُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ أَوْ شِعْبَهمْ
পরিচ্ছেদঃ ১২/৪৬. ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রদান এবং যাদের ঈমান শক্ত তাদের ধৈর্য ধারণ করা।
৬৩৫. আনাস (ইবনু মালিক) (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাওয়াযিন গোত্রের মুখােমুখী হলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল দশ হাজার (মুহাজির ও আনসার সৈনিক) এবং (মক্কাহর) নও-মুসলিম। যুদ্ধে এরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করল। এ মুহূর্তে তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, ওহে আনসার সকল! তাঁরা জওয়াব দিলেন, আমরা হাযির, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত এবং আপনার সামনেই আমরা উপস্থিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন। তিনি বললেন, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। মুশরিকরা পরাজিত হল। তিনি নওমুসলিম এবং মুহাজিরদেরকে (গনীমত) বণ্টন করে দিলেন। আর আনসারদেরকে কিছুই দিলেন না। (এতে তারা নিজেদের মধ্যে সে কথা বলাবলি করছিল।) তখন তিনি তাদেরকে ডেকে এনে একটি তাবুর ভিতর জমায়েত করলেন এবং বললেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট থাকবে না যে, লোকজন বকরী ও উট নিয়ে যাবে আর তোমরা যাবে আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বললেন, যদি লোকজন উপত্যকা দিয়ে চলে আর আনসাররা গিরিপথ দিয়ে চলে তা হলে আমি আনসারদের গিরিপথকেই বেছে নেব।
حديث أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ الْتَقَى هَوَازِنُ، وَمَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشَرَةُ آلاَفٍ وَالطُّلَقَاءُ فَأَدْبَرُوا قَالَ: يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ قَالُوا: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ لَبَّيْكَ، نَحْنُ بَيْنَ يَدَيْكَ فَنَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَنَا عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ فَانْهَزَمَ الْمُشْرِكُونَ، فَأَعْطَى الطُّلَقَاءَ وَالْمُهَاجِرِينَ وَلَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ شَيْئًا فَقَالُوا؛ فَدَعَاهُمْ فَأَدْخَلَهُمْ فِي قُبَّةٍ، فَقَالَ: أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاةِ وَالْبَعِيرِ وَتَذْهَبُونَ بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَتِ الأَنْصَارُ شِعْبًا لاَخْتَرْتُ شِعْبَ الأَنْصَارِ
পরিচ্ছেদঃ ১২/৪৬. ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রদান এবং যাদের ঈমান শক্ত তাদের ধৈর্য ধারণ করা।
৬৩৬. আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ ইবনু আসিম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের দিবসে আল্লাহ যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গনীমতের সম্পদ দান করলেন তখন তিনি ঐগুলো সেসব মানুষের মধ্যে বন্টন করে দিলেন যাদের হৃদয়কে ঈমানের উপর সুদৃঢ় করার প্রয়োজন তিনি অনুভব করেছিলেন। আর আনসারগণকে কিছুই দিলেন না। ফলে তারা যেন নাখােশ হয়ে গেলেন। কেননা অন্যেরা যা পেয়েছে তারা তা পাননি। অথবা তিনি বলেছেনঃ তারা যেন দুঃখিত হয়ে গেলেন। কেননা অন্যেরা যা পেয়েছে তারা তা পাননি। কাজেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে সম্বােধন করে বললেন, হে আনসারগণ! আমি কি আমাদেরকে পথভ্রষ্ট পাইনি, অতঃপর আল্লাহ আমার দ্বারা আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন? তোমরা ছিলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন, অতঃপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে আমাদের পরস্পরকে জুড়ে দিয়েছেন। তোমরা ছিলে দরিদ্র, অতঃপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে আমাদেরকে অভাবমুক্ত করেছেন। এভাবে যখনই তিনি কোন কথা বলেছেন তখন আনসারগণ জবাবে বলেছেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই আমাদের উপর অধিক ইহসানকারী।
তিনি বললেনঃ আল্লাহর রসূলের জবাব দিতে আমাদেরকে বাধা দিচ্ছে কিসে? তারা তখনও তিনি যা কিছু বলছেন তার উত্তরে বলে যাচ্ছেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই আমাদের উপর অধিক ইহসানকারী। তিনি বললেন, তোমরা ইচ্ছে করলে বলতে পার যে, আপনি আমাদের কাছে এমন এমন (সংকটময়) সময়ে এসেছিলেন কিন্তু তোমরা কি এ কথায় সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক বকরী ও উট নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা আমাদের বাড়ি ফিরে যাবে আল্লাহর নবীকে সাথে নিয়ে। যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে হিজরত করানাের সিদ্ধান্ত গৃহীত না থাকত তা হলে আমি আনসারদের মধ্যকারই একজন থাকতাম। যদি লোকজন কোন উপত্যকা ও গিরিপথ দিয়ে চলে তা হলে আমি আনসারদের উপত্যকা ও গিরিপথ দিয়েই চলব। আনসারগণ হচ্ছে (নববী) ভিতরের পোশাক আর অন্যান্য লোক হচ্ছে উপরের পোশাক। আমার বিদায়ের পর অচিরেই তোমরা দেখতে পাবে অন্যদের অগ্রাধিকার। তখন ধৈর্য ধারণ করবে (দীনের উপর টিকে থাকবে) যে পর্যন্ত না তোমরা হাউজে কাউসারে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ কর।
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ، قَالَ: لَمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ قَسَمَ فِي النَّاسِ فِي الْمُؤَلَّفَةِ قَلُوبُهُمْ وَلَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ شَيْئًا؛ فَكَأَنَّهُمْ وَجَدُوا، إِذْ لَمْ يُصِبْهُمْ مَا أَصَابَ النَّاسَ، فَخَطَبَهُمْ فَقَالَ: يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ أَلَمْ أَجِدْكُمْ ضُلاَّلاً فَهَدَاكُمُ اللهُ بِي، وَكُنْتُمْ مُتَفَرِّقِينَ فَأَلَّفَكُمُ اللهُ بِي، وَعَالَةً فَأَغْنَاكُمُ الله بِي كلَّمَا قَالَ شَيْئًا، قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَمَنُّ؛ قَالَ: مَا يَمْنَعُكُمْ أَنْ تُجِيبُوا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ، كُلَّمَا قَالَ شَيْئًا، قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَمَنُّ قَالَ: لَوْ شِئتُمْ قُلْتُمْ: جِئْتَنَا كَذَا وَكَذَا، أَتَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاةِ وَالْبَعِيرِ وَتَذْهَبُونَ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى رِحَالِكُمْ لَوْلاَ الْهِجْرَةُ لَكُنْتُ امْرءًا مِنَ الأَنْصَارِ، وَلَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَشِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ وَشِعْبَهَا، الأَنْصَارُ شِعَارٌ وَالنَّاسُ دِثَارٌ، إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْنِي عَلَى الْحَوْضِ
পরিচ্ছেদঃ ১২/৪৬. ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রদান এবং যাদের ঈমান শক্ত তাদের ধৈর্য ধারণ করা।
৬৩৭. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের দিনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন লোককে বন্টনে অন্যদের উপর অগ্রাধিকার দেন। তিনি আকরা ইবনু হাবিছকে একশ’ উট দিলেন। উয়াইনাকেও এ পরিমাণ দেন। উচ্চবংশীয় আরব ব্যক্তিদের দিলেন এবং বন্টনে তাদের অতিরিক্ত দিলেন। এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! এতে সুবিচার করা হয়নি। অথবা সে বলল, এতে আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রাখা হয়নি। (রাবী বলেন) তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবশ্যই এ কথা জানিয়ে দিব। তখন আমি তাঁর নিকট এলাম এবং তাঁকে একথা জানিয়ে দিলাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূল যদি সুবিচার না করেন, তবে কে সুবিচার করবে? আল্লাহ তা’আলা মূসা (আঃ)-এর প্রতি রহম করুন, তাঁকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি সবর করেছেন।
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ آثَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُنَاسًا فِي الْقِسْمَةِ فَأَعْطَى الأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ، وَأَعْطَى عُيَيْنَةَ مِثْلَ ذلِكَ، وَأَعْطَى أُنَاسًا مِنْ أَشْرَافِ الْعَرَبِ، فَآثَرَهُمْ يَوْمَئِذٍ فِي الْقِسْمَةِ؛ قَالَ رَجُلٌ: وَاللهِ إِنَّ هذِهِ الْقِسْمَةَ مَا عُدِلَ فِيهَا، وَمَا أُرِيدَ بِهَا وَجْهُ اللهِ فَقُلْتُ: وَاللهِ لأُخْبِرَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَتَيْتهُ فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ: فَمَنْ يَعْدِلُ إِذَا لَمْ يَعْدِلِ اللهُ وَرَسُولُهُ رَحِمَ اللهُ مُوسَى، قَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هذَا فَصَبَرَ