পরিচ্ছেদঃ ১/৯২. মুসলিমগণের কিছু সংখ্যকের বিনা হিসাবে এবং বিনা শাস্তিতে জান্নাতে প্রবেশের প্রমাণ।

১২৯. আবূ হুরায়রাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাত থেকে কিছু লোক দল বেঁধে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তারা হবে সত্তর হাজার। তাদের চেহারাগুলো পূর্ণিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জ্বল থাকবে। আবূ হুরায়রাহ (রাযি.) বলেন, এতদশ্রবণে উক্কাশা ইবনু মিহসান আসাদী তাঁর গায়ে চাদর উঠাতে উঠাতে দাঁড়ালেন, এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার জন্য দু’আ করুন, আল্লাহ্ তা’আলা যেন আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করলেনঃ হে আল্লাহ্! আপনি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। এরপর আনসার সম্প্রদায়ের এক লোক দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর নিকট দু’আ করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ’উক্কাশাহ তো উক্ত দু’আর ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গেছে।

حَدِيْثُ أَبِيْ هُرَيْرَةَ حَدَّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي زُمْرَةٌ هُمْ سَبْعُونَ أَلْفًا تُضِيءُ وُجُوهُهُمْ إِضَاءَةَ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَامَ عُكَّاشَةُ بْنُ مِحْصَنٍ الْأَسَدِيُّ يَرْفَعُ نَمِرَةً عَلَيْهِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ ادْعُ اللهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ قَالَ اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ مِنْهُمْ
ثُمَّ قَامَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ ادْعُ اللهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ فَقَالَ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ

حديث ابي هريرة حدثه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول يدخل الجنة من امتي زمرة هم سبعون الفا تضيء وجوههم اضاءة القمر ليلة البدر قال ابو هريرة فقام عكاشة بن محصن الاسدي يرفع نمرة عليه فقال يا رسول الله ادع الله ان يجعلني منهم قال اللهم اجعله منهم ثم قام رجل من الانصار فقال يا رسول الله ادع الله ان يجعلني منهم فقال سبقك بها عكاشة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
১/ ঈমান (كتاب الإيمان )

পরিচ্ছেদঃ ১/৯২. মুসলিমগণের কিছু সংখ্যকের বিনা হিসাবে এবং বিনা শাস্তিতে জান্নাতে প্রবেশের প্রমাণ।

১৩০. আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন; যখন তাঁর কাছে তাঁর চাচা আবূ ত্বলিব সম্বন্ধে আলোচনা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ সম্ভবত কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত তাঁকে উপকার প্রদান করবে। আর তখন তাকে জাহান্নামের অগ্নিতেযা টাখনু পর্যন্ত পৌঁছে রাখা হবে।

حَدِيْثُ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَيَدْخُلَنَّ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا أَوْ سَبْعُ مِائَةِ أَلْفٍ لاَ يَدْرِي أَبُو حَازِمٍ أَيُّهُمَا قَالَ مُتَمَاسِكُونَ آخِذٌ بَعْضُهُمْ بَعْضًا لاَ يَدْخُلُ أَوَّلُهُمْ حَتَّى يَدْخُلَ آخِرُهُمْ وُجُوهُهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ

حديث سهل بن سعد ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ليدخلن الجنة من امتي سبعون الفا او سبع ماىة الف لا يدري ابو حازم ايهما قال متماسكون اخذ بعضهم بعضا لا يدخل اولهم حتى يدخل اخرهم وجوههم على صورة القمر ليلة البدر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
১/ ঈমান (كتاب الإيمان )

পরিচ্ছেদঃ ১/৯২. মুসলিমগণের কিছু সংখ্যকের বিনা হিসাবে এবং বিনা শাস্তিতে জান্নাতে প্রবেশের প্রমাণ।

১৩১. ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করেন এবং বলেনঃ আমার সামনে (পূর্ববর্তী নবীগণের) উম্মাতদের পেশ করা হল। (আমি দেখলাম) একজন নবী যাচ্ছেন, তাঁর সাথে রয়েছে মাত্র একজন লোক এবং আর একজন নবী যাঁর সঙ্গে রয়েছে দু’জন লোক। অন্য এক নবীকে দেখলাম, তাঁর সঙ্গে আছে একটি দল, আর একজন নবী, তাঁর সাথে কেউ নেই। আবার দেখলাম, একটি বিরাট দল যা দিগন্ত জুড়ে আছে। আমি আকাঙ্ক্ষা করলাম যে, এ বিরাট দলটি যদি আমার উম্মাত হত। বলা হলঃ এটা মূসা (’আঃ) ও তাঁর কওম। এরপর আমাকে বল হয়ঃ দেখুন। দেখলাম, একটি বিশাল জামাআত দিগন্ত জুড়ে আছে। আবার বলা হলঃ এ দিকে দেখুন। ও দিকে দেখুন। দেখলাম বিরাট বিরাট দল দিগন্ত জুড়ে ছেয়ে আছে। বলা হলঃ ঐ সবই আপনার উম্মাত এবং ওদের সাথে সত্তর হাজার লোক এমন আছে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

এরপর লোকজন এদিক ওদিক চলে গেল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর তাদের (সত্তর হাজারের) ব্যাখ্যা করে বলেননি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা আরম্ভ করে দিলেন। তাঁরা বলাবলি করলেনঃ আমরা তো শির্কের মধ্যে জন্মলাভ করেছি, পরে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের উপর ঈমান এনেছি। বরং এরা আমাদের সন্তানরাই হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ কথা পৌঁছলে তিনি বলেনঃ তাঁরা (হবে) ঐ সব লোক যাঁরা অবৈধভাবে মঙ্গল অমঙ্গল নির্ণয় করে না, ঝাড়-ফুঁক করে না এবং আগুনে পোড়ানো লোহার দাগ লাগায় না, আর তাঁরা তাঁদের রবের উপর একমাত্র ভরসা রাখে। তখন ’উক্কাশাহ ইবনু মিহসান (রাযি.) দাঁড়িয়ে বললঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তাদের মধ্যে আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আর একজন দাঁড়িয়ে বললঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তাদের মধ্যে আছি? তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে ’উক্কাশাহ তোমাকে অতিক্রম করে গেছে।

حَدِيْثُ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا فَقَالَ عُرِضَتْ عَلَيَّ الْأُمَمُ فَجَعَلَ يَمُرُّ النَّبِيُّ مَعَهُ الرَّجُلُ وَالنَّبِيُّ مَعَهُ الرَّجُلَانِ وَالنَّبِيُّ مَعَهُ الرَّهْطُ وَالنَّبِيُّ لَيْسَ مَعَهُ أَحَدٌ وَرَأَيْتُ سَوَادًا كَثِيرًا سَدَّ الْأُفُقَ فَرَجَوْتُ أَنْ تَكُونَ أُمَّتِي فَقِيلَ هَذَا مُوسَى وَقَوْمُهُ ثُمَّ قِيلَ لِي انْظُرْ فَرَأَيْتُ سَوَادًا كَثِيرًا سَدَّ الْأُفُقَ فَقِيلَ لِي انْظُرْ هَكَذَا وَهَكَذَا فَرَأَيْتُ سَوَادًا كَثِيرًا سَدَّ الْأُفُقَ فَقِيلَ هَؤُلَاءِ أُمَّتُكَ وَمَعَ هَؤُلَاءِ سَبْعُونَ أَلْفًا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ فَتَفَرَّقَ النَّاسُ وَلَمْ يُبَيَّنْ لَهُمْ فَتَذَاكَرَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا أَمَّا نَحْنُ فَوُلِدْنَا فِي الشِّرْكِ وَلَكِنَّا آمَنَّا بِاللهِ وَرَسُولِهِ وَلَكِنْ هَؤُلَاءِ هُمْ أَبْنَاؤُنَا فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هُمْ الَّذِينَ لاَ يَتَطَيَّرُونَ وَلاَ يَسْتَرْقُونَ وَلاَ يَكْتَوُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ فَقَامَ عُكَّاشَةُ بْنُ مِحْصَنٍ فَقَالَ أَمِنْهُمْ أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ نَعَمْ فَقَامَ آخَرُ فَقَالَ أَمِنْهُمْ أَنَا فَقَالَ سَبَقَكَ بِهَا عُكَاشَةُ

حديث ابن عباس رضي الله عنهما قال خرج علينا النبي صلى الله عليه وسلم يوما فقال عرضت علي الامم فجعل يمر النبي معه الرجل والنبي معه الرجلان والنبي معه الرهط والنبي ليس معه احد ورايت سوادا كثيرا سد الافق فرجوت ان تكون امتي فقيل هذا موسى وقومه ثم قيل لي انظر فرايت سوادا كثيرا سد الافق فقيل لي انظر هكذا وهكذا فرايت سوادا كثيرا سد الافق فقيل هولاء امتك ومع هولاء سبعون الفا يدخلون الجنة بغير حساب فتفرق الناس ولم يبين لهم فتذاكر اصحاب النبي صلى الله عليه وسلم فقالوا اما نحن فولدنا في الشرك ولكنا امنا بالله ورسوله ولكن هولاء هم ابناونا فبلغ النبي صلى الله عليه وسلم فقال هم الذين لا يتطيرون ولا يسترقون ولا يكتوون وعلى ربهم يتوكلون فقام عكاشة بن محصن فقال امنهم انا يا رسول الله قال نعم فقام اخر فقال امنهم انا فقال سبقك بها عكاشة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
১/ ঈমান (كتاب الإيمان )

পরিচ্ছেদঃ ১/৯২. মুসলিমগণের কিছু সংখ্যকের বিনা হিসাবে এবং বিনা শাস্তিতে জান্নাতে প্রবেশের প্রমাণ।

১৩২. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা কোন এক তাঁবুতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা জান্নাতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা জান্নাতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যাঁর হাতে মুহাম্মাদ-এর জান। আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে, তোমরা জান্নাতীদের অর্ধেক হবে। আর এটা চিরন্তন সত্য যে জান্নাতে কেবলমাত্র মুসলিমগণই প্রবেশ করতে পারবে। আর মুশরিকদের মুকাবিলায় তোমরা হচ্ছ এমন, যেমন কালো ষাঁড়ের চামড়ার উপর শুভ্র পশম। অথবা লাল ষাড়ের চামড়ার উপর কালো পশম।

حَدِيْثُ عَبْدِ اللهِ بن مسعود قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ فِي قُبَّةٍ فَقَالَ أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ قُلْنَا نَعَمْ قَالَ أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ قُلْنَا نَعَمْ قَالَ أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ قُلْنَا نَعَمْ قَالَ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنِّي لَأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا نِصْفَ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَذَلِكَ أَنَّ الْجَنَّةَ لاَ يَدْخُلُهَا إِلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ وَمَا أَنْتُمْ فِي أَهْلِ الشِّرْكِ إِلاَّ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الْأَسْوَدِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الْأَحْمَرِ

حديث عبد الله بن مسعود قال كنا مع النبي في قبة فقال اترضون ان تكونوا ربع اهل الجنة قلنا نعم قال اترضون ان تكونوا ثلث اهل الجنة قلنا نعم قال اترضون ان تكونوا شطر اهل الجنة قلنا نعم قال والذي نفس محمد بيده اني لارجو ان تكونوا نصف اهل الجنة وذلك ان الجنة لا يدخلها الا نفس مسلمة وما انتم في اهل الشرك الا كالشعرة البيضاء في جلد الثور الاسود او كالشعرة السوداء في جلد الثور الاحمر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
১/ ঈমান (كتاب الإيمان )
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে