পরিচ্ছেদঃ ১/৭৯. প্ৰতিপালককে দেখার পদ্ধতি সম্পর্কিত জ্ঞান।
১১৪. আবূ হুরায়রাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত পূর্ণিমা রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ কর? তাঁরা বললেন, না, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে? সবাই বললেন, না। তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমরাও আল্লাহকে অনুরূপভাবে দেখতে পাবে।
কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে সমবেত করা হবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, যে যার উপাসনা করতে সে যেন তার অনুসরণ করে। তাই তাদের কেউ সূর্যের অনুসরণ করবে, কেউ চন্দ্রের অনুসরণ করবে, কেউ তাগুতের অনুসরণ করবে। আর অবশিষ্ট থাকবে শুধুমাত্র উম্মাহ্, তবে তাদের সাথে মুনাফিকরাও থাকবে। তাঁদের মাঝে এ সময় আল্লাহ তা’আলা শুভাগমন করবেন এবং বলবেনঃ ’’আমি তোমাদের রব।’’ তখন তারা বলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের রবের শুভাগমন না হবে, ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব। আর তাঁর যখন শুভাগমন হবে তখন আমরা অবশ্যই তাঁকে চিনতে পারব।
তখন তাদের মাঝে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলা শুভাগমন করবেন এবং বলবেন, ’’আমি তোমাদের রব।’’ তারা বলবে, হ্যাঁ, আপনিই আমাদের রব। আল্লাহ্ তা’আলা তাদের ডাকবেন। আর জাহান্নামের উপর একটি সেতুপথ (পুলসিরাত) স্থাপন করা হবে। রসূলগণের মধ্যে আমিই সবার পূর্বে আমার উম্মাত নিয়ে এ পথ অতিক্রম করব। সেদিন রাসূলগণ ব্যতীত আর কেউ কথা বলবে না। আর রসূলগণের কথা হবেঃ (আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম) ইয়া আল্লাহ্, রক্ষা করুন, রক্ষা করুন। আর জাহান্নামে বাঁকা লোহার বহু শলাকা থাকবে; সেগুলো হবে সা’দান কাঁটার মতো। তোমরা কি সা’দান কাঁটা দেখেছ? তারা বলবে, হ্যাঁ, দেখেছি। তিনি বলবেন, সেগুলো দেখতে সা’দান কাঁটার মতোই। তবে সেগুলো কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউ জানে না।
সে কাঁটা লোকের ’আমল অনুযায়ী তাদের তড়িৎ গতিতে ধরবে। তাদের কিছু লোক ধ্বংস হবে আমলের কারণে। আর কারোর পায়ে যখম হবে, কিছু লোক কাঁটায় আক্রান্ত হবে, অতঃপর নাজাত পেয়ে যাবে। জাহান্নামীদের হতে যাদের প্রতি আল্লাহ্ তা’আলা রাহমত করতে ইচ্ছে করবেন, তাদের ব্যাপারে মালাইকাকে নির্দেশ দেবেন যে, যারা আল্লাহর ’ইবাদাত করতো, তাদের যেন জাহান্নাম হতে বের করে আনা হয়। ফিরিশতাগণ তাদের বের করে আনবেন এবং সিজদার চিহ্ন দেখে তাঁরা তাদের চিনতে পারবেন। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা জাহান্নামের জন্য সিজদার চিহ্নগুলো মিটিয়ে দেয়া হারাম করে দিয়েছেন। ফলে তাদের জাহান্নাম হতে বের করে আনা হবে। কাজেই সিজদার চিহ্ন ছাড়া আগুন বনী আদমের সব কিছুই গ্রাস করে ফেলবে।
অবশেষে, তাদেরকে অঙ্গারে পরিণত অবস্থায় জাহান্নাম হতে বের করা হবে। তাদের উপর ’আবে-হায়াত’ ঢেলে দেয়া হবে ফলে তারা স্রোতে বাহিত ফেনার উপর গজিয়ে উঠা উদ্ভিদের মত সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাদের বিচার কাজ সমাপ্ত করবেন কিন্তু একজন লোক জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে থেকে যাবে। তার মুখমণ্ডল তখনও জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যক্তি। সে তখন নিবেদন করবে, হে আমার রব! জাহান্নাম হতে আমার চেহারা ফিরিয়ে দিন। এর দূষিত হাওয়া আমায় বিষিয়ে তুলছে, এর লেলিহান শিখা আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, তোমার নিবেদন গ্রহণ করা হলে, তুমি এছাড়া আর কিছু চাইবে না ত? সে বলবে, না, আপনার ইযযতের শপথ! সে তার ইচ্ছামত আল্লাহ্ তা’আলাকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিবে। কাজেই আল্লাহ তা’আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের দিক হতে ফিরিয়ে দিবেন।
অতঃপর সে যখন জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে, তখন সে জান্নাতের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছে সে চুপ করে থাকবে। অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আপনি আমাকে জান্নাতের দরজার নিকট পৌঁছে দিন। তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে বলবেন, তুমি পূর্বে যা চেয়েছিলে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না বলে তুমি কি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দাওনি? তখন সে বলবে, হে আমার রব! তোমার সৃষ্টির সবচাইতে হতভাগ্য আমি হতে চাই না। আল্লাহ্ তাৎক্ষণিক বলবেন, তোমার এটি পূরণ করা হলে তুমি এ ছাড়া কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, না, আপনার ইযযতের কসম! এছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। এ ব্যাপারে সে তার ইচ্ছানুযায়ী অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দেবে।
সে যখন জান্নাতের দরজায় পৌঁছবে তখন জান্নাতের অনাবিল সৌন্দর্য ও তার অভ্যন্তরীণ সুখ শান্তি ও আনন্দঘন পরিবেশ দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্ তা’আলা ইচ্ছে করবেন, সে চুপ করে থাকবে। অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও! তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আদম সন্তান, কী আশ্চর্য! তুমি কত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী! তুমি কি আমার সঙ্গে অঙ্গীকার করনি এবং প্রতিশ্রুতি দাওনি যে, তোমাকে যা দেয়া হয়েছে, তাছাড়া আর কিছু চাইবে না? তখন সে বলবে, হে আমার রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আমাকে সবচাইতে হতভাগ্য করবেন না। এতে আল্লাহ্ হেসে দেবেন। অতঃপর তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন এবং বলবেন, চাও। সে তখন চাইবে, এমন কি তার চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ফুরিয়ে যাবে।
তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ এটা চাও, ওটা চাও। এভাবে তার রব তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকবেন। অবশেষে যখন তার আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ এ সবই তোমার, এ সাথে আরো সমপরিমাণ (তোমাকে দেয়া হল)। আবূ সাঈদ খুদরী (রাযি.) আবূ হুরায়রাহ্ (রাযি.)-কে বললেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন যে, আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ এ সবই তোমার, তার সাথে আরও দশগুণ (তোমাকে দেয়া হল)। আবূ হুরায়রা (রাযি.) বললেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুধু এ কথাটি স্মরণ রেখেছি যে, এ সবই তোমার এবং এর সাথে সমপরিমাণ। আবূ সাঈদ (রাযি.) বললেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, এসব তোমার এবং এর সাথে আরও দশগুণ।
حَدِيْثُ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّاسَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ هَلْ تُمَارُونَ فِي الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ دُونَهُ سَحَابٌ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَهَلْ تُمَارُونَ فِي الشَّمْسِ لَيْسَ دُونَهَا سَحَابٌ قَالُوا لاَ قَالَ فَإِنَّكُمْ تَرَوْنَهُ كَذَلِكَ يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ شَيْئًا فَلْيَتَّبِعْ فَمِنْهُمْ مَنْ يَتَّبِعُ الشَّمْسَ وَمِنْهُمْ مَنْ يَتَّبِعُ الْقَمَرَ وَمِنْهُمْ مَنْ يَتَّبِعُ الطَّوَاغِيتَ وَتَبْقَى هَذِهِ الْأُمَّةُ فِيهَا مُنَافِقُوهَا فَيَأْتِيهِمْ اللهُ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ هَذَا مَكَانُنَا حَتَّى يَأْتِيَنَا رَبُّنَا فَإِذَا جَاءَ رَبُّنَا عَرَفْنَاهُ فَيَأْتِيهِمْ اللهُ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا فَيَدْعُوهُمْ فَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَانَيْ جَهَنَّمَ فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يَجُوزُ مِنْ الرُّسُلِ بِأُمَّتِهِ وَلاَ يَتَكَلَّمُ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ إِلاَّ الرُّسُلُ وَكَلَامُ الرُّسُلِ يَوْمَئِذٍ اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ وَفِي جَهَنَّمَ كَلَالِيبُ مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ هَلْ رَأَيْتُمْ شَوْكَ السَّعْدَانِ قَالُوا نَعَمْ قَالَ فَإِنَّهَا مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَعْلَمُ قَدْرَ عِظَمِهَا إِلاَّ اللهُ تَخْطَفُ النَّاسَ بِأَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمْ مَنْ يُوبَقُ بِعَمَلِهِ وَمِنْهُمْ مَنْ يُخَرْدَلُ ثُمَّ يَنْجُو حَتَّى إِذَا أَرَادَ اللهُ رَحْمَةَ مَنْ أَرَادَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ أَمَرَ اللهُ الْمَلَائِكَةَ أَنْ يُخْرِجُوا مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ فَيُخْرِجُونَهُمْ وَيَعْرِفُونَهُمْ بِآثَارِ السُّجُودِ وَحَرَّمَ اللهُ عَلَى النَّارِ أَنْ تَأْكُلَ أَثَرَ السُّجُودِ فَيَخْرُجُونَ مِنْ النَّارِ فَكُلُّ ابْنِ آدَمَ تَأْكُلُهُ النَّارُ إِلاَّ أَثَرَ السُّجُودِ فَيَخْرُجُونَ مِنْ النَّارِ قَدْ امْتَحَشُوا فَيُصَبُّ عَلَيْهِمْ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ثُمَّ يَفْرُغُ اللهُ مِنَ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَيَبْقَى رَجُلٌ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ وَهُوَ آخِرُ أَهْلِ النَّارِ دُخُولًا الْجَنَّةَ مُقْبِلٌ بِوَجْهِهِ قِبَلَ النَّارِ فَيَقُولُ يَا رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي عَنْ النَّارِ قَدْ قَشَبَنِي رِيحُهَا وَأَحْرَقَنِي ذَكَاؤُهَا فَيَقُولُ هَلْ عَسَيْتَ إِنْ فُعِلَ ذَلِكَ بِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَ ذَلِكَ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ فَيُعْطِي اللهَ مَا يَشَاءُ مِنْ عَهْدٍ وَمِيثَاقٍ فَيَصْرِفُ اللهُ وَجْهَهُ عَنْ النَّارِ فَإِذَا أَقْبَلَ بِهِ عَلَى الْجَنَّةِ رَأَى بَهْجَتَهَا سَكَتَ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ قَالَ يَا رَبِّ قَدِّمْنِي عِنْدَ بَابِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ اللهُ لَهُ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ الْعُهُودَ وَالْمِيثَاقَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَ الَّذِي كُنْتَ سَأَلْتَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ لاَ أَكُونُ أَشْقَى خَلْقِكَ فَيَقُولُ فَمَا عَسَيْتَ إِنْ أُعْطِيتَ ذَلِكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَهُ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ لاَ أَسْأَلُ غَيْرَ ذَلِكَ فَيُعْطِي رَبَّهُ مَا شَاءَ مِنْ عَهْدٍ وَمِيثَاقٍ فَيُقَدِّمُهُ إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَإِذَا بَلَغَ بَابَهَا فَرَأَى زَهْرَتَهَا وَمَا فِيهَا مِنْ النَّضْرَةِ وَالسُّرُورِ فَيَسْكُتُ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَسْكُتَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ أَدْخِلْنِي الْجَنَّةَ فَيَقُولُ اللهُ وَيْحَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ الْعُهُودَ وَالْمِيثَاقَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَ الَّذِي أُعْطِيتَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ لاَ تَجْعَلْنِي أَشْقَى خَلْقِكَ فَيَضْحَكُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ مِنْهُ ثُمَّ يَأْذَنُ لَهُ فِي دُخُولِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ تَمَنَّ فَيَتَمَنَّى حَتَّى إِذَا انْقَطَعَ أُمْنِيَّتُهُ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ كَذَا وَكَذَا أَقْبَلَ يُذَكِّرُهُ رَبُّهُ حَتَّى إِذَا انْتَهَتْ بِهِ الْأَمَانِيُّ قَالَ اللهُ تَعَالَى لَكَ ذَلِكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ
পরিচ্ছেদঃ ১/৭৯. প্ৰতিপালককে দেখার পদ্ধতি সম্পর্কিত জ্ঞান।
১১৫. আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিয়ামতের দিন আমাদের রবেবর দর্শন লাভ করব কি? তিনি বললেনঃ মেঘহীন আকাশে সূর্যকে দেখতে তোমাদের অসুবিধা হয় কি? আমরা বললাম, না। তিনি বললেনঃ সেদিন তোমাদের রবকে দেখতে তোমাদের কোন অসুবিধা হবে না। এতটুকু ব্যতীত যতটুকু সূর্য দেখার সময় পেয়ে থাক। সেদিন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেন, যারা যে জিনিসের ’ইবাদাত করতে, তারা সে জিনিসের কাছে গমন কর। এরপর যারা ক্রুশপূজারী ছিল, তারা যাবে তাদের ক্রুশের কাছে। মূর্তিপূজারীরা যাবে তাদের মূর্তির সঙ্গে। সকলেই তাদের উপাস্যের সঙ্গে যাবে। বাকী থাকবে একমাত্র আল্লাহর ’ইবাদাতকারীরা। নেক্কার ও বদকার সকলেই এবং আহলে কিতাবের কতক লোকও থাকবে। অতঃপর জাহান্নামকে আনা হবে। সেটি তখন থাকবে মরীচিকার মত। ইয়াহূদীদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমরা কিসের ’ইবাদাত করতে? তারা উত্তর করবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযায়র (আঃ)-এর ’ইবাদাত করতাম।
তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। কারণ আল্লাহর কোন স্ত্রীও নেই এবং নেই তাঁর কোন সন্তান। এখন তোমরা কী চাও? তারা বলবে, আমরা চাই, আমাদেরকে পানি পান করান। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা পানি পান কর। এরপর তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে। তারপর নাসারাদেরকে বলা হবে, তোমরা কিসের ’ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র মসীহের ’ইবাদাত করতাম। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কোন স্ত্রীও ছিল না, সন্তানও ছিল না। এখন তোমরা কী চাও? তারা বলবে, আমাদের ইচ্ছা আপনি আমাদেরকে পানি পান করতে দিন। তাদেরকে উত্তর দেয়া হবে, তোমরা পান কর। তারপর তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে। অবশেষে বাকী থাকবে একমাত্র আল্লাহর ’ইবাদাতকারীগণ। তাদের নেক্কার ও বদকার সকলেই। তাদেরকে লক্ষ্য করে বলা হবে, কোন্ জিনিস তোমাদেরকে আটকে রেখেছে? অথচ অন্যরা তো চলে গেছে। তারা বলবে, আমরা তো সেদিন তাদের থেকে আলাদা রয়েছি, যেদিন আজকের চেয়ে তাদের অধিক প্রয়োজন ছিল।
আমরা একজন ঘোষণাকারীর এ ঘোষণাটি দিতে শুনেছি যে, যারা যাদের ’ইবাদাত করত তারা যেন ওদের সঙ্গে যায়। আমরা অপেক্ষা করছি আমাদের রবের। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর মহাক্ষমতাশালী আল্লাহ্ তাদের কাছে আসবেন। এবার তিনি সে সুরতে আসবেন না, যেভাবে তাঁকে প্রথমে ঈমানদারগণ দেখেছিলেন। এসে তিনি ঘোষণা দেবেন- আমি তোমাদের রবব, সবাই তখন বলে উঠবে আপনিই আমাদের প্রতিপালক। আর সেদিন নবীগণ ছাড়া তাঁর সঙ্গে কেউ কথা বলতে পারবে না। আল্লাহ্ তাদেরকে বলবেন, তোমাদের এবং তাঁর মাঝখানে পরিচয়ের জন্য কোন আলামত আছে কি? তারা বলবেন, পায়ের নলা। তখন পায়ের নলা খুলে দেয়া হবে।
এই দেখে ঈমানদারগণ সবাই সিজদা্য় পড়ে যাবে। বাকি থাকবে তারা, যারা লোক-দেখানো এবং লোক-শোনানো সিজদা্ করেছিল। তবে তারা সিজদার মনোভাব নিয়ে সিজদা্ করার জন্য যাবে, কিন্তু তাদের মেরুদন্ড একটি তক্তার মত শক্ত হয়ে যাবে। এমন সময় জাহান্নামের উপর পুল স্থাপন করা হবে। সাহাবীগণ বললেন, সে পুলটি কেমন হবে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেনঃ দুর্গম পিচ্ছিল স্থান। এর ওপর আংটা ও হুক থাকবে, শক্ত চওড়া উল্টো কাঁটা বিশিষ্ট হবে, যা নাজ্দ দেশের সাদান বৃক্ষের কাঁটার মত হবে। সে পুলের উপর দিয়ে ঈমানদারগণের কেউ পার হয়ে যাবে চোখের পলকের মতো, কেউ বিদ্যুতের মতো, কেউ বাতাসের মতো আবার কেউ দ্রুতগামী ঘোড়া ও সাওয়ারের মতো।
তবে মুক্তিপ্রাপ্তরা কেউ নিরাপদে চলে আসবেন, আবার কেউ জাহান্নামের আগুনে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাবে। এ কবারে শেষে অতিক্রম করবে যে লোকটি, সে হেঁচড়িয়ে কোন ভাবে পার হয়ে আসবে। এখন তোমরা হকের বিষয়ে আমার চেয়ে অধিক কঠোর নও, যতটুকু সেদিন ঈমানদারগণ আল্লাহর সম্মুখে হয়ে থাকবে, যা তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। যখন ঈমানদারগণ এ দৃশ্যটি দেখবে যে, তাদের ভাইদেরকে রেখে একমাত্র তারাই মুক্তি পেয়েছে, তখন তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের সেসব ভাই কোথায়, যারা আমাদের সঙ্গে সালাত আদায় করত, সওম পালন কত, নেক কাজ করত? তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে এক দ্বীনার পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আন। আল্লাহ্ তাদের মুখমণ্ডল জাহান্নামের ওপর হারাম করে দিয়েছেন। এদের কেউ কেউ দু’পা ও দু’পায়ের নলার বেশি পর্যন্ত জাহান্নামের মধ্যে থাকবে।
তারা যাদেরকে চিনতে পারে, তাদেরকে বের করবে। তারপর এরা আবার ফিরে আসবে। আল্লাহ্ আবার তাদেরকে বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে অর্ধ দ্বীনার পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। তারা গিয়ে তাদেরকেই বের করে নিয়ে আসবে, যাদেরকে তারা চিনতে পারবে। তারপর আবার ফিরে আসবে। আল্লাহ্ তাদেরকে আবার বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে অণু পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। তারা যাদেরকে চিনতে পারবে তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। বর্ণনাকারী আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তোমরা যদি আমাকে বিশ্বাস না কর, তাহলে আল্লাহর এ বাণীটি পড়ঃ ’’আল্লাহ অণু পরিমাণও যুল্ম করেন না, আর কোন পুণ্য কাজ হলে তাকে তিনি দ্বিগুণ করেন’’- (সূরাহ আন্-নিসা ৪/৪০)। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ফেরেশ্তা ও মু’মিনগণ সুপারিশ করবে। তখন মহা পরাক্রান্ত আল্লাহ্ বলবেন, এখন শুধু আমার শাফাআতই বাকী রয়েছে।
তিনি জাহান্নাম থেকে একমুষ্টি ভরে এমন কতগুলো কওমকে বের করবেন, যারা জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর তাদেরকে জান্নাতের সম্মুখে অবস্থিত ’হায়াত’ নামের নহরে ঢালা হবে। তারা সে নহরের দু’পার্শ্বে এমনভাবে উদগত হবে, যেমন পাথর এবং গাছের কিনারে বয়ে আনা আবর্জনায় বীজ থেকে তৃণ উদগত হয়। দেখতে পাও তার মধ্যে সূর্যের আলোর অংশের গাছগুলো সাধারণত সবুজ হয়, ছায়ার অংশেরগুলো সাদা হয়। তারা সেখান থেকে মুক্তার দানার মত বের হবে। তাদের গর্দানে মোহর লাগানো হবে। জান্নাতে তারা যখন প্রবেশ করবে, তখন অন্যান্য জান্নাতবাসীরা বলবেন, এরা হলেন রাহমান কর্তৃক আযাদকৃত যাদেরকে আল্লাহ্ কোন নেক ’আমল কিংবা কল্যাণকর কাজ ব্যতীতই জান্নাতে দাখিল করেছেন। তখন তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরা যা দেখেছ, সবই তো তোমাদের, এর সঙ্গে আরো সমপরিমাণ তোমাদেরকে দেয়া হলো।
حَدِيْثُ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ هَلْ تُضَارُونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ وَالْقَمَرِ إِذَا كَانَتْ صَحْوًا قُلْنَا لاَ قَالَ فَإِنَّكُمْ لاَ تُضَارُونَ فِي رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ كَمَا تُضَارُونَ فِي رُؤْيَتِهِمَا ثُمَّ قَالَ يُنَادِي مُنَادٍ لِيَذْهَبْ كُلُّ قَوْمٍ إِلَى مَا كَانُوا يَعْبُدُونَ فَيَذْهَبُ أَصْحَابُ الصَّلِيبِ مَعَ صَلِيبِهِمْ وَأَصْحَابُ الْأَوْثَانِ مَعَ أَوْثَانِهِمْ وَأَصْحَابُ كُلِّ آلِهَةٍ مَعَ آلِهَتِهِمْ حَتَّى يَبْقَى مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ مِنْ بَرٍّ أَوْ فَاجِرٍ وَغُبَّرَاتٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ ثُمَّ يُؤْتَى بِجَهَنَّمَ تُعْرَضُ كَأَنَّهَا سَرَابٌ فَيُقَالُ لِلْيَهُودِ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ قَالُوا كُنَّا نَعْبُدُ عُزَيْرَ ابْنَ اللهِ فَيُقَالُ كَذَبْتُمْ لَمْ يَكُنْ لِلَّهِ صَاحِبَةٌ وَلاَ وَلَدٌ فَمَا تُرِيدُونَ قَالُوا نُرِيدُ أَنْ تَسْقِيَنَا فَيُقَالُ اشْرَبُوا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي جَهَنَّمَ ثُمَّ يُقَالُ لِلنَّصَارَى مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ فَيَقُولُونَ كُنَّا نَعْبُدُ الْمَسِيحَ ابْنَ اللهِ فَيُقَالُ كَذَبْتُمْ لَمْ يَكُنْ لِلَّهِ صَاحِبَةٌ وَلاَ وَلَدٌ فَمَا تُرِيدُونَ فَيَقُولُونَ نُرِيدُ أَنْ تَسْقِيَنَا فَيُقَالُ اشْرَبُوا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي جَهَنَّمَ حَتَّى يَبْقَى مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ مِنْ بَرٍّ أَوْ فَاجِرٍ فَيُقَالُ لَهُمْ مَا يَحْبِسُكُمْ وَقَدْ ذَهَبَ النَّاسُ فَيَقُولُونَ فَارَقْنَاهُمْ وَنَحْنُ أَحْوَجُ مِنَّا إِلَيْهِ الْيَوْمَ وَإِنَّا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِيَلْحَقْ كُلُّ قَوْمٍ بِمَا كَانُوا يَعْبُدُونَ وَإِنَّمَا نَنْتَظِرُ رَبَّنَا قَالَ فَيَأْتِيهِمْ الْجَبَّارُ فِي صُورَةٍ غَيْرِ صُورَتِهِ الَّتِي رَأَوْهُ فِيهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا فَلاَ يُكَلِّمُهُ إِلاَّ الْأَنْبِيَاءُ فَيَقُولُ هَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ آيَةٌ تَعْرِفُونَهُ فَيَقُولُونَ السَّاقُ فَيَكْشِفُ عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَيَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ لِلَّهِ رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ كَيْمَا يَسْجُدَ فَيَعُودُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا ثُمَّ يُؤْتَى بِالْجَسْرِ فَيُجْعَلُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا الْجَسْرُ قَالَ مَدْحَضَةٌ مَزِلَّةٌ عَلَيْهِ خَطَاطِيفُ وَكَلَالِيبُ وَحَسَكَةٌ مُفَلْطَحَةٌ لَهَا شَوْكَةٌ عُقَيْفَاءُ تَكُونُ بِنَجْدٍ يُقَالُ لَهَا السَّعْدَانُ الْمُؤْمِنُ عَلَيْهَا كَالطَّرْفِ وَكَالْبَرْقِ وَكَالرِّيحِ وَكَأَجَاوِيدِ الْخَيْلِ وَالرِّكَابِ فَنَاجٍ مُسَلَّمٌ وَنَاجٍ مَخْدُوشٌ وَمَكْدُوسٌ فِي نَارِ جَهَنَّمَ حَتَّى يَمُرَّ آخِرُهُمْ يُسْحَبُ سَحْبًا فَمَا أَنْتُمْ بِأَشَدَّ لِي مُنَاشَدَةً فِي الْحَقِّ قَدْ تَبَيَّنَ لَكُمْ مِنَ الْمُؤْمِنِ يَوْمَئِذٍ لِلْجَبَّارِ وَإِذَا رَأَوْا أَنَّهُمْ قَدْ نَجَوْا فِي إِخْوَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا إِخْوَانُنَا كَانُوا يُصَلُّونَ مَعَنَا وَيَصُومُونَ مَعَنَا وَيَعْمَلُونَ مَعَنَا فَيَقُولُ اللهُ تَعَالَى اذْهَبُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ دِينَارٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجُوهُ وَيُحَرِّمُ اللهُ صُوَرَهُمْ عَلَى النَّارِ فَيَأْتُونَهُمْ وَبَعْضُهُمْ قَدْ غَابَ فِي النَّارِ إِلَى قَدَمِهِ وَإِلَى أَنْصَافِ سَاقَيْهِ فَيُخْرِجُونَ مَنْ عَرَفُوا ثُمَّ يَعُودُونَ فَيَقُولُ اذْهَبُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ نِصْفِ دِينَارٍ فَأَخْرِجُوهُ فَيُخْرِجُونَ مَنْ عَرَفُوا ثُمَّ يَعُودُونَ فَيَقُولُ اذْهَبُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجُوهُ فَيُخْرِجُونَ مَنْ عَرَفُوا
قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَإِنْ لَمْ تُصَدِّقُونِي فَاقْرَءُوا (إِنَّ اللهَ لاَ يَظْلِمُ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ وَإِنْ تَكُ حَسَنَةً يُضَاعِفْهَا) فَيَشْفَعُ النَّبِيُّونَ وَالْمَلَائِكَةُ وَالْمُؤْمِنُونَ فَيَقُولُ الْجَبَّارُ بَقِيَتْ شَفَاعَتِي فَيَقْبِضُ قَبْضَةً مِنْ النَّارِ فَيُخْرِجُ أَقْوَامًا قَدْ امْتُحِشُوا فَيُلْقَوْنَ فِي نَهَرٍ بِأَفْوَاهِ الْجَنَّةِ يُقَالُ لَهُ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ فِي حَافَتَيْهِ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ قَدْ رَأَيْتُمُوهَا إِلَى جَانِبِ الصَّخْرَةِ وَإِلَى جَانِبِ الشَّجَرَةِ فَمَا كَانَ إِلَى الشَّمْسِ مِنْهَا كَانَ أَخْضَرَ وَمَا كَانَ مِنْهَا إِلَى الظِّلِّ كَانَ أَبْيَضَ فَيَخْرُجُونَ كَأَنَّهُمْ اللُّؤْلُؤُ فَيُجْعَلُ فِي رِقَابِهِمْ الْخَوَاتِيمُ فَيَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ فَيَقُولُ أَهْلُ الْجَنَّةِ هَؤُلَاءِ عُتَقَاءُ الرَّحْمَنِ أَدْخَلَهُمْ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ خَيْرٍ قَدَّمُوهُ فَيُقَالُ لَهُمْ لَكُمْ مَا رَأَيْتُمْ وَمِثْلَهُ مَعَهُ