পরিচ্ছেদঃ ২২২৬. যুল খালাসার যুদ্ধ
৪০১৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... জারীর (ইবনু আবদুল্লাহ বাজালী) (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে একটি (নকল তীর্থ) ঘর ছিল, যাকে ’যুল খালাসা’, ইয়ামানী কা’বা এবং সিরীয় কা’বা বলা হতো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি কি যুল খালাসার পেরেশানী থেকে আমাকে স্বস্তি দিবেনা? এ কথা শুনে আমি একশত পঞ্চাশজন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে ছুটে চললাম। আর এ ঘরটি ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে দিলাম এবং সেখানে যাদেরকে পেলাম তাদের হত্যা করে ফেললাম। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এসে তাঁকে এই সংবাদ জানালে তিনি আমাদের জন্য এবং (আমাদের গোত্র) আহমাসের জন্য দোয়া করলেন।
باب غَزْوَةُ ذِي الْخَلَصَةِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، حَدَّثَنَا بَيَانٌ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ كَانَ بَيْتٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ يُقَالُ لَهُ ذُو الْخَلَصَةِ وَالْكَعْبَةُ الْيَمَانِيَةُ وَالْكَعْبَةُ الشَّأْمِيَّةُ، فَقَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَلاَ تُرِيحُنِي مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ ". فَنَفَرْتُ فِي مِائَةٍ وَخَمْسِينَ رَاكِبًا، فَكَسَرْنَاهُ وَقَتَلْنَا مَنْ وَجَدْنَا عِنْدَهُ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ، فَدَعَا لَنَا وَلأَحْمَسَ.
Narrated Jarir:
In the Pre-lslamic Period of Ignorance there was a house called Dhu-l-Khalasa or Al-Ka`ba Al- Yamaniya or Al-Ka`ba Ash-Shamiya. The Prophet (ﷺ) said to me, "Won't you relieve me from Dhu-l- Khalasa?" So I set out with one-hundred-and-fifty riders, and we dismantled it and killed whoever was present there. Then I came to the Prophet (ﷺ) and informed him, and he invoked good upon us and Al- Ahmas (tribe) .
পরিচ্ছেদঃ ২২২৬. যুল খালাসার যুদ্ধ
৪০১৭। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... কায়স (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, জারীর (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তুমি কি আমাকে যুল-খালাসা থেকে স্বস্থি দেবে না? যুল-খালাসা ছিল খাসআম গোত্রের একটি (বানোয়াট তীর্থ) ঘর, যাকে বলা হত ইয়ামনী কা’বা। এ কথা শুনে আমি আহমাস্ গোত্র থেকে একশত পঞ্চাশজন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে চললাম। তাঁদের সকলেই অশ্ব পরিচালনায় পারদর্শী ছিল। আর আমি তখন ঘোড়ার পিঠে শক্তভাবে বসতে পারছিলাম না। কাজেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বুকের উপর হাত দিয়ে আঘাত করলেন। এমনকি আমার বুকের উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র আঙ্গুলগুলোর ছাপ পর্যন্ত দেখতে পেলাম।
(এ অবস্থায়) তিনি দোয়া করলেন, হে আল্লাহ্! একে (ঘোড়ার পিঠে) শক্তভাবে বসে থাকতে দিন এবং তাকে হেদায়েত দানকারী ও হেদায়েত লাভকারী বানিয়ে দিন। এরপর জারীর (রাঃ) সেখানে গেলেন এবং ঘরটি ভেঙ্গে দিয়ে তা জ্বালিয়ে ফেললেন। এরপর তিনি [জারীর (রাঃ)] রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দূত পাঠালেন। তখন জারীর (রাঃ) এর দূত [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে] বলল, সেই মহান সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য বাণী সহকারে পাঠিয়েছেন, আমি ঘরটিকে খুজলি-পাঁচড়া আক্রান্ত কালো উঠের মত রেখে আপনার কাছে এসেছি। রাবী বলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহমাস গোত্রের অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈনিকদের জন্য পাঁচবার বরকতের দোয়া করলেন।
باب غَزْوَةُ ذِي الْخَلَصَةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا قَيْسٌ، قَالَ قَالَ لِي جَرِيرٌ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَلاَ تُرِيحُنِي مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ ". وَكَانَ بَيْتًا فِي خَثْعَمَ يُسَمَّى الْكَعْبَةَ الْيَمَانِيَةَ، فَانْطَلَقْتُ فِي خَمْسِينَ وَمِائَةِ فَارِسٍ مِنْ أَحْمَسَ، وَكَانُوا أَصْحَابَ خَيْلٍ، وَكُنْتُ لاَ أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ، فَضَرَبَ فِي صَدْرِي حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ أَصَابِعِهِ فِي صَدْرِي، وَقَالَ " اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ، وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا ". فَانْطَلَقَ إِلَيْهَا فَكَسَرَهَا وَحَرَّقَهَا، ثُمَّ بَعَثَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ جَرِيرٍ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ، مَا جِئْتُكَ حَتَّى تَرَكْتُهَا كَأَنَّهَا جَمَلٌ أَجْرَبُ. قَالَ فَبَارَكَ فِي خَيْلِ أَحْمَسَ وَرِجَالِهَا خَمْسَ مَرَّاتٍ.
Narrated Qais:
Jarir said to me, The Prophet (ﷺ) said to me, "Won't you relieve me from Dhu-l-Khalasa?" And that was a house (in Yemem belonging to the tribe of) Khatham called Al-Ka`ba Al Yamaniya. I proceeded with one-hundred and-fifty cavalry from Ahmas (tribe) who were horse riders. I used not to sit firm on horses, so the Prophet (ﷺ) stroke me over my chest till I saw the mark of his fingers over my chest, and then he said, 'O Allah! Make him (i.e. Jarir) firm and one who guides others and is guided on the right path." So Jarir proceeded to it dismantled and burnt it, and then sent a messenger to Allah's Messenger (ﷺ). The messenger of Jarir said (to the Prophet), "By Him Who sent you with the Truth, I did not leave that place till it was like a scabby camel." The Prophet (ﷺ) blessed the horses of Ahmas and their men five times.
পরিচ্ছেদঃ ২২২৬. যুল খালাসার যুদ্ধ
৪০১৮। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) ... জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি আমাকে যুল-খালাসার পেরেশানী থেকে স্বস্থি দেবেনা? আমি বললাম: অবশ্যই। এরপর আমি (আমাদের) আহমাস গোত্র থেকে একশত পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে চললাম। তাদের সবাই ছিলো অশ্ব পরিচালনায় অভিজ্ঞ। কিন্তু আমি তখনো ঘোড়ার উপর স্থির হয়ে বসতে পারতাম না। তাই ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালাম। তিনি তাঁর হাত দিয়ে আমার বুকের উপর আঘাত করলেন।
এমনকি আমি আমার বুকে তাঁর হাতের চিহ্ন পর্যন্ত দেখতে পেলাম। তিনি দোয়া করলেন, ’হে আল্লাহ্! একে স্থির হয়ে বসে থাকতে দিন এবং তাকে হেদায়েত দানকারী ও হেদায়েত লাভকারী বানিয়ে দিন’। জারীর (রাঃ) বলেন, এরপরে আর কখনো আমি আমার ঘোড়া থেকে পড়ে যাইনি। তিনি আরো বলেছেন যে, যুল-খালাসা ছিলো ইয়ামানের অন্তর্গত খাসআম ও বাজীলা গোত্রের একটি (তীর্থ) ঘর। সেখানে কতগুলো মূর্তি স্থাপিত ছিলো। লোকেরা এগুলোর পূজা করত এবং এ ঘরটিকে বলা হতো কা’বা।
রাবী বলেন, এরপর তিনি সেখানে গেলেন এবং ঘরটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন আর এর ভিটামাটিও চুরমার করে দিলেন। রাবী আরো বলেন, আর যখন জারীর (রাঃ) ইয়ামানে গিয়ে উঠলেন তখন সেখানে এক লোক থাকত, সে তীরের সাহায্যে ভাগ্য নির্নয় করত, তাকে বলা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিনিধি এখানে আছেন, তিনি যদি তোমাকে পাকড়াও করার সুযোগ পান তাহলে তোমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন।
রাবী বলেন, এরপর একদা সে ভাগ্য নির্নয়ের কাজে লিপ্ত ছিল, সেই মূহুর্তে জারীর (রাঃ) সেখানে পৌঁছে গেলেন। তিনি বললেন, তীরগুলো ভেঙ্গে ফেল এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই- এ কথার সাক্ষ্য দাও, অন্যথায় তোমার গর্দান উড়িয়ে দেব। লোকটি তখন তীরগুলো ভেঙ্গে ফেলল এবং (আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এ কথার) সাক্ষ্য দিল। এরপর জারীর (রাঃ) আবূ আরতাত নামক আহমাস গোত্রের এক ব্যাক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে পাঠালেন খোশখবরী শোনানোর জন্য। লোকটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ’’ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে সত্তার (আল্লাহর) কসম করে বলছি, যিনি আপনাকে সত্য বাণী দিয়ে পাঠিয়েছেন, ঘরটিকে ঠিক খুজলি-পাঁচড়া আক্রান্ত উটের মতো কালো করে রেখে আমি এসেছি। বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহমাস গোত্রের অশ্বারোহী এবং পদাতিক সৈনিকদের সার্বিক কল্যাণ ও বরকতের জন্য পাঁচবার দোয়া করলেন।
باب غَزْوَةُ ذِي الْخَلَصَةِ
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَلاَ تُرِيحُنِي مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ ". فَقُلْتُ بَلَى. فَانْطَلَقْتُ فِي خَمْسِينَ وَمِائَةِ فَارِسٍ مِنْ أَحْمَسَ وَكَانُوا أَصْحَابَ خَيْلٍ وَكُنْتُ لاَ أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ، فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَضَرَبَ يَدَهُ عَلَى صَدْرِي حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ يَدِهِ فِي صَدْرِي وَقَالَ " اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا ". قَالَ فَمَا وَقَعْتُ عَنْ فَرَسٍ بَعْدُ. قَالَ وَكَانَ ذُو الْخَلَصَةِ بَيْتًا بِالْيَمَنِ لِخَثْعَمَ وَبَجِيلَةَ، فِيهِ نُصُبٌ تُعْبَدُ، يُقَالُ لَهُ الْكَعْبَةُ. قَالَ فَأَتَاهَا فَحَرَّقَهَا بِالنَّارِ وَكَسَرَهَا. قَالَ وَلَمَّا قَدِمَ جَرِيرٌ الْيَمَنَ كَانَ بِهَا رَجُلٌ يَسْتَقْسِمُ بِالأَزْلاَمِ فَقِيلَ لَهُ إِنَّ رَسُولَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَا هُنَا فَإِنْ قَدَرَ عَلَيْكَ ضَرَبَ عُنُقَكَ. قَالَ فَبَيْنَمَا هُوَ يَضْرِبُ بِهَا إِذْ وَقَفَ عَلَيْهِ جَرِيرٌ فَقَالَ لَتَكْسِرَنَّهَا وَلَتَشْهَدَنَّ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَوْ لأَضْرِبَنَّ عُنُقَكَ. قَالَ فَكَسَرَهَا وَشَهِدَ، ثُمَّ بَعَثَ جَرِيرٌ رَجُلاً مِنْ أَحْمَسَ يُكْنَى أَبَا أَرْطَاةَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُبَشِّرُهُ بِذَلِكَ، فَلَمَّا أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا جِئْتُ حَتَّى تَرَكْتُهَا كَأَنَّهَا جَمَلٌ أَجْرَبُ. قَالَ فَبَرَّكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى خَيْلِ أَحْمَسَ وَرِجَالِهَا خَمْسَ مَرَّاتٍ.
Narrated Qais:
Jarir said "Allah's Messenger (ﷺ) said to me, "Won't you relieve me from Dhul-Khalasa?" I replied, "Yes, (I will relieve you)." So I proceeded along with one-hundred and fifty cavalry from Ahmas tribe who were skillful in riding horses. I used not to sit firm over horses, so I informed the Prophet (ﷺ) of that, and he stroke my chest with his hand till I saw the marks of his hand over my chest and he said, O Allah! Make him firm and one who guides others and is guided (on the right path).' Since then I have never fallen from a horse. Dhul-l--Khulasa was a house in Yemen belonging to the tribe of Khatham and Bajaila, and in it there were idols which were worshipped, and it was called Al-Ka`ba." Jarir went there, burnt it with fire and dismantled it. When Jarir reached Yemen, there was a man who used to foretell and give good omens by casting arrows of divination. Someone said to him. "The messenger of Allah's Messenger (ﷺ) is present here and if he should get hold of you, he would chop off your neck." One day while he was using them (i.e. arrows of divination), Jarir stopped there and said to him, "Break them (i.e. the arrows) and testify that None has the right to be worshipped except Allah, or else I will chop off your neck." So the man broke those arrows and testified that none has the right to be worshipped except Allah. Then Jarir sent a man called Abu Artata from the tribe of Ahmas to the Prophet to convey the good news (of destroying Dhu-l-Khalasa). So when the messenger reached the Prophet, he said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! By Him Who sent you with the Truth, I did not leave it till it was like a scabby camel." Then the Prophet (ﷺ) blessed the horses of Ahmas and their men five times.