পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর নামের তা’যীম
(৩৬০৮) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ আল্লাহর নাম নিয়ে আশ্রয় চাইলে তাকে আশ্রয় দাও। কেউ আল্লাহর নাম নিয়ে চাইলে তাকে দাও।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنِ اسْتَعَاذَ بِاللهِ فَأَعِيذُوهُ وَمَنْ سَأَلَ بِاللهِ فَأَعْطُوهُ
পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর নামের তা’যীম
(৩৬০৯) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অভিশপ্ত সে, যে আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু চায় এবং অভিশপ্ত সেও, যার কাছে আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু চাওয়া এবং (জিনিস) অবৈধ না হওয়া সত্ত্বেও সে তাকে তা দেয় না।
عَنْ أَبِي مُوسَى أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَلْعُونٌ مَنْ سَأَلَ بِوَجْهِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَمَلْعُونٌ مَنْ سُئِلَ بِوَجْهِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ مَنَعَ سَائِلَهُ مَا لَمْ يُسْأَلْ هُجْرًا
পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর নামের তা’যীম
(৩৬১০) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে, যার কাছে আল্লাহর দোহাই দিয়ে চাওয়া হয়, অথচ দেয় না।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺشَرُّ النَّاسِ الَّذِيْ يُسْأَلُ بِاللهِ ثُمَّ لَا يُعْطِيْ
পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর নামের তা’যীম
(৩৬১১) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনলেন, এক ব্যক্তি তার বাপের নামে কসম করছে। তিনি বললেন, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদাদের নামে কসম করো না। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে কসম করবে, সে যেন সত্য বলে। যার জন্য আল্লাহর নামে কসম খাওয়া হবে, সে যেন তাতে রাজি হয়ে যায়। আর যে রাজি হয় না, সে আল্লাহর নিকটবর্তী নয়।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلاً يَحْلِفُ بِأَبِيهِ فَقَالَ لاَ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ مَنْ حَلَفَ بِاللهِ فَلْيَصْدُقْ وَمَنْ حُلِفَ لَهُ بِاللهِ فَلْيَرْضَ وَمَنْ لَمْ يَرْضَ بِاللهِ فَلَيْسَ مِنَ اللهِ
পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর নামের তা’যীম
(৩৬১২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা ঈসা বিন মারয়্যাম একটি লোককে চুরি করতে দেখে বললেন, ’তুমি কি (অমুক জিনিস) চুরি করেছ?’ সে বলল, ’সেই আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, আমি চুরি করিইনি।’ ঈসা বললেন, ’আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখছি এবং আমার চক্ষুকে মিথ্যা জানছি।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ رَأَى عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ رَجُلًا يَسْرِقُ فَقَالَ لَهُ أَسَرَقْتَ قَالَ كَلَّا وَاللهِ الَّذِي لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ فَقَالَ عِيسَى آمَنْتُ بِاللهِ وَكَذَّبْتُ عَيْنِي
পরিচ্ছেদঃ নযর ও মানতের বিধান
(৩৬১৩) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করার নযর মানে, সে যেন (তা পুরা করে) তার আনুগত্য করে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যতা করার নযর মানে, সে যেন (তা পুরণ না করে এবং) তাঁর অবাধ্যতা না করে।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيعَ اللهَ فَلْيُطِعْهُ وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَهُ فَلَا يَعْصِهِ
পরিচ্ছেদঃ নযর ও মানতের বিধান
(৩৬১৪) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আল্লাহর) অবাধ্যতায় কোন নযর নেই। আর তার কাফফারা হল কসমের কাফফারা।
عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ قَالَ لاَ نَذْرَ فِى مَعْصِيَةٍ وَكَفَّارَتُهُ كَفَّارَةُ يَمِينٍ
পরিচ্ছেদঃ নযর ও মানতের বিধান
(৩৬১৫) সাবেত বিন যাহহাক (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় এক ব্যক্তি নযর মানল যে, সে বুয়ানাহ নামক জায়গায় একটি উট কুরবানী (নহর) করবে। সুতরাং লোকটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে সে কথা উল্লেখ করল (এবং সে নযর পালন করতে কোন বাধা আছে কি না, তা জানতে চাইল)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন? সেখানে কি জাহেলী যুগের কোন পূজ্যমান প্রতিমা ছিল?’’ লোকেরা বলল, ’জী না।’ তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, ’’সেখানে কি সে যুগের কোন ঈদ (মেলা) হত? লোকেরা বলল, ’জী না।’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তুমি তোমার নযর পালন কর। যেহেতু আল্লাহর নাফরমানী করে কোন নযর পালন করা যাবে না এবং আদম সন্তানের সাধ্যের বাইরে মানা কোন নযর পালন করতে হয় না।
قال ثَابِتُ بْنُ الضَّحَّاكِ : نَذَرَ رَجُلٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ ﷺ أَنْ يَنْحَرَ إِبِلاً بِبُوَانَةَ فَأَتَى النَّبِىَّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّى نَذَرْتُ أَنْ أَنْحَرَ إِبِلاً بِبُوَانَةَ فَقَالَ النَّبِىُّ ﷺ هَلْ كَانَ فِيهَا وَثَنٌ مِنْ أَوْثَانِ الْجَاهِلِيَّةِ يُعْبَدُ قَالُوا : لاَ قَالَ هَلْ كَانَ فِيهَا عِيدٌ مِنْ أَعْيَادِهِمْ قَالُوا : لاَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَوْفِ بِنَذْرِكَ فَإِنَّهُ لاَ وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِى مَعْصِيَةِ اللهِ وَلاَ فِيمَا لاَ يَمْلِكُ ابْنُ آدَمَ
পরিচ্ছেদঃ নযর ও মানতের বিধান
(৩৬১৬) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ’এক মহিলা সমুদ্র-সফরে বের হলে সে নযর মানল যে, যদি আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা তাকে সমুদ্র থেকে পরিত্রাণ দান করেন, তাহলে সে একমাস রোযা রাখবে। অতঃপর সে সমুদ্র থেকে পরিত্রাণ পেয়ে ফিরে এল। কিন্তু রোযা না রেখেই সে মারা গেল। তার এক কন্যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে সে ঘটনার উল্লেখ করলে তিনি বললেন, মনে কর, তার যদি কোন ঋণ বাকী থাকত, তাহলে তা তুমি পরিশোধ করতে কি না? বলল, ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহর ঋণ অধিকরূপে পরিশোধযোগ্য। সুতরাং তুমি তোমার মায়ের পক্ষ থেকে রোযা কাযা করে দাও।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : أَنَّ امْرَأَةً رَكِبَتِ الْبَحْرَ فَنَذَرَتْ إِنْ نَجَّاهَا اللهُ أَنْ تَصُومَ شَهْرًا فَنَجَّاهَا اللهُ فَلَمْ تَصُمْ حَتّٰـى مَاتَتْ فَجَاءَتِ ابْنَتُهَا أَوْ أُخْتُهَا إِلٰـى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَأَمَرَهَا أَنْ تَصُومَ عَنْهَا
وفي رواية: قَالَ: أَتَتِ النَّبِيَّ ﷺ امْرَأَةٌ فَقالتْ: يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَصُومَ شَهْرًا وَإِنَّهَا تُوُفِّيَتْ قَبْلَ أَنْ تَصُومَ قَالَ:أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً؟قالتْ: نَعَمْ قَالَ:دَيْنُ اللهِ أَحَقُّ أَنْ يُقْضَى
পরিচ্ছেদঃ নযর ও মানতের বিধান
(৩৬১৭) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ’আমার বোন হজ্জ করার নযর মেনে মারা গেছে। (এখন কি করা যায়?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার ঋণ বাকী থাকলে কি তুমি পরিশোধ করতে? লোকটি বলল, ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ’’তাহলে আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করে দাও। কারণ, তা অধিক পরিশোধযোগ্য।
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَتَى رَجُلٌ النَّبِيَّ ﷺ فَقَالَ لَهُ إِنَّ أُخْتِي قَدْ نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ وَإِنَّهَا مَاتَتْ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ لَوْ كَانَ عَلَيْهَا دَيْنٌ أَكُنْتَ قَاضِيَهُ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَاقْضِ اللهَ فَهُوَ أَحَقُّ بِالْقَضَاءِ
পরিচ্ছেদঃ নযর ও মানতের বিধান
(৩৬১৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ’কোন ব্যক্তি রমযান মাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং তারপর রোযা না রাখা অবস্থায় মারা গেলে তার পক্ষ থেকে মিসকীন খাওয়াতে হবে; তার কাযা নেই। পক্ষান্তরে নযরের রোযা বাকী রেখে মারা গেলে তার পক্ষ থেকে তার অভিভাবক (বা ওয়ারেস) রোযা রাখবে।’
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ إِذَا مَرِضَ الرَّجُلُ فِى رَمَضَانَ ثُمَّ مَاتَ وَلَمْ يَصُمْ أُطْعِمَ عَنْهُ وَلَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ قَضَاءٌ وَإِنْ كَانَ عَلَيْهِ نَذْرٌ قَضَى عَنْهُ وَلِيُّهُ
পরিচ্ছেদঃ নির্দিষ্ট বিষয়ে কসম খাওয়ার পর যদি তার বিপরীতে ভালাই প্রকাশ পায়, তাহলে কসমের কাফফারা দিয়ে ভালো কাজটাই করা উত্তম
(৩৬১৯) আব্দুর রহমান ইবনে সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, যখন তুমি কোন কিছুর ব্যাপারে কসম খাবে এবং তা ব্যতীত অন্য কিছুর মধ্যে কল্যাণ দেখতে পাবে, তবে নিজ কসমের কাফফারা দিয়ে (যাতে কল্যাণ নিহিত আছে) সেই উত্তমটি গ্রহণ করো।
عَنْ عَبدِ الرَّحْمَنِ بنِ سَمُرَةَ قَالَ : قَالَ لِي رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَإِذَا حَلَفْتَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَيْتَ غَيْرَهَا خَيْراً مِنْهَا فَأْتِ الَّذِي هُوَ خَيرٌ وَكَفِّرْ عَنْ يَمِينِكَ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নির্দিষ্ট বিষয়ে কসম খাওয়ার পর যদি তার বিপরীতে ভালাই প্রকাশ পায়, তাহলে কসমের কাফফারা দিয়ে ভালো কাজটাই করা উত্তম
(৩৬২০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন কিছুর ব্যাপারে কসম খায় এবং তা ব্যতীত অন্য কিছুর মধ্যে কল্যাণ দেখতে পায়, তাহলে সে যেন তার কসমের কাফ্ফারা দিয়ে যেটি উত্তম সেটি গ্রহণ করে।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْراً مِنْهَا فَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ وَلْيَفْعَلِ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নির্দিষ্ট বিষয়ে কসম খাওয়ার পর যদি তার বিপরীতে ভালাই প্রকাশ পায়, তাহলে কসমের কাফফারা দিয়ে ভালো কাজটাই করা উত্তম
(৩৬২১) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর শপথ! ইন শাআল্লাহ, আমি যখনই কিছুর ব্যাপারে হলফ করব, তারপর তার চেয়ে উত্তম কিছু দেখতে পাব, তখন আমার কসম ভঙ্গের কাফ্ফারা দিয়ে যেটি উত্তম সেটিই করব।
وَعَنْ أَبي مُوسَى أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنِّي وَاللهِ إِنْ شاءَ اللهُ لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ ثُمَّ أَرَى خَيراً مِنْهَا إِلاَّ كَفَّرْتُ عَنْ يَمِينِي وَأَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নির্দিষ্ট বিষয়ে কসম খাওয়ার পর যদি তার বিপরীতে ভালাই প্রকাশ পায়, তাহলে কসমের কাফফারা দিয়ে ভালো কাজটাই করা উত্তম
(৩৬২২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আপন পরিবার পরিজনের ব্যাপারে কসম খায় ও (তার চেয়ে উত্তম অন্য কিছুতে জেনেও) তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে, সে ব্যক্তির জন্য আল্লাহর নিকট এই কর্মটি বেশি গোনাহর কারণ হবে এই কর্ম থেকে যে, সে (কসম ভেঙ্গে) সেই কাফ্ফারা আদায় করবে, যা আল্লাহ তার উপর ফরয করেছেন।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لأَنْ يَلَجَّ أَحَدُكُمْ فِي يَمِينِهِ فِي أَهْلِهِ آثَمُ لَهُ عِنْدَ اللهِ تَعَالٰـى مِنْ أَنْ يُعْطِي كَفَّارَتَهُ الَّتي فَرَضَ اللهُ عَلَيْهِ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নিরর্থক কসম
অহেতুক কথায় কথায় নিরর্থক কসম খাওয়ার ব্যাপারে কোন পাকড়াও হবে না এবং তাতে কাফ্ফারাও দিতে হবে না। যেমন অকারণে অনিচ্ছাপূর্বক অভ্যাসগতভাবে ’আল্লাহর কসম! এটা বটে। আল্লাহর কসম! এটা নয়।’ ইত্যাদি শব্দাবলী মুখ থেকে বের হয়।
মহান আল্লাহ বলেছেন,
لاَ يُؤاخِذُكُمُ اللهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَكِنْ يُؤَاخِذُكُمْ بِمَا عَقَّدْتُمُ الأَيمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذٰلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ
অর্থাৎ, আল্লাহ তোমাদেরকে অর্থহীন কসমের জন্য পাকড়াও করবেন না; কিন্তু তিনি তোমাদেরকে সেই কসমের জন্য পাকড়াও করবেন, যাতে তোমরা দৃঢ়তা অবলম্বন করেছ। সুতরাং তার কাফ্ফারা হচ্ছে দশটি মিসকিনকে অন্নদান করা মধ্যম শ্রেণীর খাদ্য হতে, যা তোমরা নিজেদের স্ত্রী-পুত্র, পরিজনকে খেতে দাও অথবা তাদেরকে বস্ত্রদান করা অথবা একজন দাসমুক্ত করা। যদি কেউ (এ ৩টির মধ্যে একটি আদায় করতে) অসমর্থ হয়, তাহলে সে তিনদিন রোযা রাখবে। তোমরা যখন কসম করবে, তখন এটাই তোমাদের কাফ্ফারা (প্রায়শ্চিত্ত)। আর তোমরা তোমাদের কসমসমূহকে রক্ষা কর। (মায়েদাহ ৮৯)
(৩৬২৩) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ’এই আয়াত (যার অর্থ) ’আল্লাহ তোমাদের অর্থহীন কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন না।’ (সূরা মায়েদা ৮৯) এমন লোকের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, যে (অজ্ঞাতসারে অভ্যাসগতভাবে কথায় কথায় কসম করে) বলে, আল্লাহর কসম! এটা নয়। আল্লাহর কসম! এটা বটে।’
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَة : لاَ يُؤاخِذُكُمُ اللهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ فِي قَوْلِ الرَّجُلِ : لاَ وَاللهِ وَبَلَى وَاللهِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ স্বেচ্ছায় মিথ্যা কসম খাওয়া কঠোর নিষিদ্ধ
(৩৬২৪) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ব্যক্তির মাল নাহক আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা কসম খাবে, সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে, যখন তিনি তার উপর ক্রোধাম্বিত থাকবেন। অতঃপর এর সমর্থনে আল্লাহ আযযা অজাল্লার কিতাব থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াত পড়ে শুনালেন, যার অর্থ, ’যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও নিজেদের শপথ স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) চেয়ে দেখবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (আলে ইমরান ৭৭)
عَنِ ابنِ مَسعُودٍ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ مَنْ حَلَفَ عَلَى مَالِ امْرِئٍ مُسْلِمٍ بِغَيرِ حَقِّهِ لَقِيَ اللهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ قَالَ : ثُمَّ قَرَأَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ الله عَزَّ وَجَلَّ: إنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَناً قَلِيلاً إِلَى آخِرِ الآيَةِ آل عمران : متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ স্বেচ্ছায় মিথ্যা কসম খাওয়া কঠোর নিষিদ্ধ
(৩৬২৫) আবূ উমামাহ ইয়াস বিন সা’লাবাহ হারেসী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ব্যক্তির অধিকার নিজ কসম দ্বারা আত্মসাৎ করবে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের আগুন ওয়াজেব ক’রে দেবেন এবং তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন। এ কথা শুনে তাঁকে এক ব্যক্তি বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! যদি তা সামান্য জিনিস হয় তবুও?’ তিনি বললেন, ’’যদিও পিলস্নু গাছের একটি ডালও হয়।
وَعَنْ أَبي أُمَامَة إِيَاسِ بنِ ثَعلَبَةَ الحَارِثِي أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنِ اقْتَطَعَ حَقَّ امْرِىءٍ مُسْلِمٍ بِيَمِينِهِ فَقَدْ أَوْجَبَ اللهُ لَهُ النَّارَ وَحَرَّمَ عَلَيْهِ الجَنَّةَ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ : وَإِنْ كَانَ شَيْئاً يَسِيراً يَا رَسُوْلَ اللهِ ؟ قَالَ وَإِنْ كَانَ قَضِيباً مِنْ أَرَاكٍ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ স্বেচ্ছায় মিথ্যা কসম খাওয়া কঠোর নিষিদ্ধ
(৩৬২৬) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কাবীরাহ গোনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা। মাতা-পিতার অবাধ্যাচরণ করা, (অন্যায় ভাবে) কোন প্রাণ হত্যা করা, মিথ্যা কসম খাওয়া। (বুখারী ৬৬৭৫, ৬৮৭০)
এর অন্য বর্ণনায় আছে, জনৈক মরুবাসী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করল, ’মহাপাপ কী কী? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শিরক (অংশীদার স্থাপন) করা। সে বলল, ’তারপর কী?’ তিনি বললেন, মিথ্যা কসম। (সে বলল,) আমি বললাম, ’মিথ্যা কসম কী?’ তিনি বললেন, যার দ্বারা মুসলিমের মাল আত্মসাৎ করা হয়। অর্থাৎ এমন কসম দ্বারা, যাতে সে মিথ্যাবাদী থাকে। (৬৯২০)
وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الكَبَائِرُ : الإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَاليَمِينُ الغَمُوسُ رواه البخاري
وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ : أَنَّ أَعْرَابِيّاً جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الكَبَائِرُ ؟ قَالَ الإِشْرَاكُ بِاللهِ قَالَ : ثُمَّ مَاذَا ؟ قَالَ اليَمِينُ الغَمُوسُ قُلْتُ : وَمَا اليَمِينُ الغَمُوسُ ؟ قَالَ الَّذِي يَقْتَطِعُ مَالَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَعنِي: بِيَمِينٍ هُوَ فِيهَا كَاذِبٌ
পরিচ্ছেদঃ স্বেচ্ছায় মিথ্যা কসম খাওয়া কঠোর নিষিদ্ধ
(৩৬২৭) ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন এমন বিষয়ে (জেনে-শুনে) মিথ্যা কসম খেল; যে বিষয়ে কাফ্ফারা অথবা গোনাহ অনিবার্য, সে যেন নিজের ঠিকানা দোযখে বানিয়ে নিল।
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ ﷺ مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ مَصْبُورَةٍ كَاذِبًا فَلْيَتَبَوَّأْ بِوَجْهِهِ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ