পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেছেন,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَىٰ وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ
অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর ও কোন কিছুকে তাঁর অংশীদার করো না এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, আত্মীয় ও অনাত্মীয় প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার কর। (সূরা নিসা-০৪:৩৬)
(২০১৪) মা’রূর ইবনে সুওয়াইদ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি আবূ যার্র (রাঃ) কে দেখলাম যে, তাঁর পরনে জোড়া পোশাক রয়েছে এবং তাঁর গোলামের পরনেও অনুরূপ জোড়া পোশাক বিদ্যমান! আমি তাঁকে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি ঘটনা উল্লেখ ক’রে বললেন যে, ’তিনি আল্লাহর রসূলের যুগে তাঁর এক গোলামকে গালি দিয়েছিলেন এবং তাকে তার মায়ের সম্বন্ধ ধরে হেয় প্রতিপন্ন করেছিলেন। এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেছিলেন, ’’(হে আবূ যার্র!) নিশ্চয় তুমি এমন লোক; যার মধ্যে জাহেলিয়াত (ইসলামের পূর্ব যুগের অভ্যাস) রয়েছে! ওরা তোমাদের ভাই স্বরূপ এবং তোমাদের সেবক। আল্লাহ ওদেরকে তোমাদের মালিকানাধীন করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তির ভাইকে আল্লাহ তার মালিকানাধীন করেছেন, সে ব্যক্তি যেন তাকে (দোসকে) তাই খাওয়ায়; যা সে নিজে খায় এবং তাই পরায় যা সে নিজে পরে। আর তোমরা ওদেরকে এমন কাজের ভার দিয়ো না, যা করতে ওরা সক্ষম নয়। পরন্তু যদি তোমরা এমন দুঃসাধ্য কাজের ভার দিয়েই ফেল, তাহলে তোমরা ওদের সহযোগিতা কর।’’ (বুখারী ৩০, ২৫৪৫, মুসলিম ৪৪০৩-৪৪০৫)
অন্য বর্ণনায় আছে, মা’রূর বিন সুয়াইদ বলেন, একদা আবূ যার্র (রাঃ) কে (মদীনার নিকটবর্তী একটি জায়গা) রাবাযায় দেখলাম, তাঁর গায়ে ছিল মোটা চাদর। আর তাঁর গোলামের গায়েও ছিল অনুরূপ চাদর। তা দেখে সকলে বলল, ’হে আবূ যার্র! আপনি যদি গোলামের গায়ের ঐ চাদরটাও নিতেন এবং দু’টিকে একত্রে করতেন তাহলে একটি জোড়া হয়ে যেত। আর গোলামকে অন্য একটি কাপড় দিয়ে দিতেন।’ আবূ যার্র (রাঃ) বললেন, ’আমি একজন (গোলাম) কে গালি দিয়েছিলাম। তার মা ছিল অনারবীয়। ঐ মা ধরে তাকে বিদ্রম্নপ করেছিলাম। সে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আমার বিরুদ্ধে নালিশ করল। এর ফলে তিনি আমাকে বললেন, ’’হে আবূ যার্র! নিশ্চয় তুমি এমন লোক; যার মধ্যে জাহেলিয়াত আছে!’’ অতঃপর তিনি বললেন, ’’ওরা (দাসগণ) তো তোমাদের ভাই। (তোমাদের মতই মানুষ।) আল্লাহ ওদের উপর তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। অতএব যে দাস তোমাদের মনোমতো হবে না তাকে বিক্রয় করে দাও। আর আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিও না।’’ (আবূ দাউদ ৫১৫৭ সহীহুল জামি আস-স্বাগীর-৭৮২২)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ সময় আবূ যার্র (রাঃ) কে বলেছিলেন, ’’নিশ্চয় তুমি এমন লোক; যার মধ্যে জাহেলিয়াত আছে।’’ আবূ যার্র বললেন, ’আমার বৃদ্ধ বয়সের এই সময়েও?’ তিনি বললেন, ’’হ্যাঁ, ওরা তোমাদের ভাই স্বরূপ। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের মালিকানাধীন করে দিয়েছেন। সুতরাং যে ব্যক্তির ভাইকে আল্লাহ তার মালিকানাধীন করেছেন, সে ব্যক্তি যেন তাকে (দাসকে) তাই খাওয়ায়; যা সে নিজে খায়, তাই পরায় যা সে নিজে পরে এবং এমন কাজের যেন ভার না দেয়, যা করতে সে সক্ষম নয়। পরন্তু যদি সে এমন দুঃসাধ্য কাজের ভার দিয়েই ফেলে, তবে তাতে যেন তাকে সহযোগিতা করে।’’ (বুখারী ৬০৫০, মুসলিম ৪৪০৪)
وَعَنِ الْمَعْرُوْرِ بنِ سُوَيْدٍ قَالَ: رَأيْتُ أَبَا ذَرٍّ وَعَلَيهِ حُلَّةٌ وَعَلٰى غُلاَمِهِ مِثْلُهَا، فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذٰلِكَ، فَذَكَرَ أنَّهُ قَدْ سَابَّ رَجُلاً عَلٰى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَعَيَّرَهُ بِأُمِّهِ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ إنَّكَ امْرُؤٌ فِيكَ جَاهِليَّةٌ هُمْ إِخْوَانُكُمْ وَخَوَلُكُمْ جَعَلَهُمُ الله تَحْتَ أَيدِيْكُمْ فَمَنْ كَانَ أَخُوهُ تَحْتَ يَدِهِ فَلْيُطْعِمْهُ مِمَّا يَأكُلُ وَلْيُلْبِسْهُ مِمَّا يَلْبَسُ وَلاَ تُكَلِّفُوهُمْ مَا يَغْلِبُهُمْ فَإنْ كَلَّفْتُمُوهُمْ فَأَعِينُوهُمْ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
(২০১৫) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কোন ব্যক্তির খাদেম (দাস-দাসী) তার নিকট খাবার নিয়ে আসে, তখন যদি তাকে নিজ সঙ্গে (খেতে) না বসায়, তাহলে সে যেন তাকে (কমপক্ষে তার হাতে) এক খাবল বা দু’ খাবল অথবা এক গ্রাস বা দু’ গ্রাস (ঐ খাবার থেকে) তুলে দেয়। কেননা, সে (খাদেম) তা প্রস্তুত (করার যাবতীয় কষ্ট বরণ) করেছে।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِذَا أَتٰى أَحَدَكُمْ خَادِمُهُ بِطَعَامِهِ فَإِنْ لَمْ يُجْلِسْهُ مَعَهُ فَلْيُنَاوِلْهُ لُقْمَةً أَوْ لُقْمَتَيْنِ أَوْ أُكْلَةً أَوْ أُكْلَتَيْنِ ؛ فَإِنَّهُ وَلِيَ عِلاَجَهُ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
(২০১৬) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর করতল অপেক্ষা অধিকতর কোমল কোন পুরু বা পাতলা রেশম আমি স্পর্শ করিনি। আর তাঁর শরীরের সুগন্ধ অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধ কোন বস্তু আমি কখনো শুঁকিনি। আর আমি দশ বছর পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমত করেছি। তিনি কখনোও আমাকে ’উঃ’ শব্দ বলেননি। কোন কাজ ক’রে বসলে তিনি এ কথা জিজ্ঞেস করেননি যে, ’তুমি এ কাজ কেন করলে?’ এবং কোন কাজ না করলে তিনি বলেননি যে, ’তা কেন করলে না?’
وَعَن أَنَسٍ قَالَ : مَـا مَسِسْتُ دِيبَاجًا وَلَا حَرِيْرًا ألْيَنَ مِنْ كَفِّ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَلاَ شَمَمْتُ رَائِحَةً قَطُّ أطْيَبَ مِنْ رَائِحَةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَلَقَدْ خَدَمتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ عَشْرَ سِنِينَ فَمَا قَالَ لِي قَطُّ : أُفٍّ، وَلاَ قَالَ لِشَيءٍ فَعَلْتُهُ : لِمَ فَعَلْتَه ؟ وَلاَ لشَيءٍ لَمْ أفعَلهُ : ألاَ فَعَلْتَ كَذَا ؟ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
(২০১৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’যে ব্যক্তি নিজ মালিকানাধীন দাসের উপর ব্যভিচারের অপবাদ দেবে, কিয়ামতের দিন তার উপর হদ্ (দণ্ডবিধি) প্রয়োগ করা হবে। তবে সে যা বলেছে, দাস যদি তাই হয় (তাহলে ভিন্ন কথা।)’’ (বুখারী ৬৮৫৮, মুসলিম ৪৪০১)
وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ قَذَفَ مَمْلُوْكَهُ بِالزِّنَى يُقَامُ عَلَيْهِ الحَدُّ يَومَ القِيَامَةِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ كَمَا قَالَ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
(২০১৮) খাইসামা বলেন, একদা আমরা আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) এর নিকট বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর নিকট তাঁর খাজাঞ্চী এলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, গোলামদেরকে তাদের আহার দিয়েছে কি?’ খাজাঞ্চী বলল, ’না।’ তিনি বললেন, ’যাও, তাদেরকে তা দিয়ে দাও। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যার আহারের দায়িত্বশীল তাকে (তা না দিয়ে) আটকে রাখে।
عَنْ خَيْثَمَةَ قَالَ كُنَّا جُلُوسًا مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو إِذْ جَاءَهُ قَهْرَمَانٌ لَهُ فَدَخَلَ فَقَالَ أَعْطَيْتَ الرَّقِيقَ قُوتَهُمْ قَالَ لاَ. قَالَ فَانْطَلِقْ فَأَعْطِهِمْ. قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يَحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَهُ.
পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
(২০১৯) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির ক্রীতদাসী ছিল, সে তাকে আদব দান করেছিল এবং সুন্দর আদব শিখিয়েছিল, (তাকে শিক্ষা দান করেছিল এবং উত্তম শিক্ষা দিয়েছিল)। অতঃপর তাকে স্বাধীন করে বিবাহ করেছিল তার জন্য রয়েছে দুটি প্রতিদান। আর যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক এবং তার মালিকের হক আদায় করে, তার জন্যও রয়েছে দ্বিগুণ প্রতিদান।
عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ أَيُّمَا رَجُلٍ كَانَتْ لَهُ جَارِيَةٌ فَأَدَّبَهَا فَأَحْسَنَ تَأْدِيبَهَا وَأَعْتَقَهَا وَتَزَوَّجَهَا فَلَهُ أَجْرَانِ وَأَيُّمَا عَبْدٍ أَدَّى حَقَّ اللهِ وَحَقَّ مَوَالِيهِ فَلَهُ أَجْرَانِ
পরিচ্ছেদঃ গোলামের সাথে সদ্ব্যবহার করার ফযীলত
(২০২০) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমরা আমাদের চাকরকে কতবার ক্ষমা করব?’ তিনি চুপ থাকলেন। সে পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেও তিনি চুপ থাকলেন। অতঃপর তৃতীয়বারে উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা প্রত্যহ ৭০ বার তাকে ক্ষমা করবে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قال: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ كَمْ نَعْفُو عَنِ الْخَادِمِ فَصَمَتَ ثُمَّ أَعَادَ عَلَيْهِ الْكَلاَمَ فَصَمَتَ فَلَمَّا كَانَ فِى الثَّالِثَةِ قَالَ اعْفُوا عَنْهُ فِى كُلِّ يَوْمٍ سَبْعِينَ مَرَّةً
পরিচ্ছেদঃ ক্রীতদাস মুক্ত করার মাহাত্ম্য
মহান আল্লাহ বলেছেন,
فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ وَمَ اَدْرٰىكَ مَا الْعَقَبَةُ فَكُّ رَقَبَةٍ
অর্থাৎ, কিন্তু সে গিরি সংকটে প্রবেশ করল না। তুমি কি জান যে, গিরি সংকট কী? তা হচ্ছে দাসকে মুক্তি প্রদান। (সূরা বালাদ ৯০:১১-১৩)
(২০২১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ক্রীতদাস মুক্ত করবে, আল্লাহ ঐ ক্রীতদাসের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে তার একেকটি অঙ্গকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে মুক্ত করবেন। এমনকি তার গুপ্তাঙ্গের বিনিময়ে তার গুপ্তাঙ্গও (মুক্ত ক’রে দেবেন)।
وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ قَالَ : قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُسْلِمَةً أَعْتَقَ اللهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْواً مِنْهُ في النَّارِ حَتّٰـى فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ ক্রীতদাস মুক্ত করার মাহাত্ম্য
(২০২২) আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! কোন্ আমল সবার চেয়ে উত্তম?’ তিনি বললেন, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।’’ আমি বললাম, ’কী ধরনের ক্রীতদাস মুক্ত করা উত্তম?’ তিনি বললেন, ’’যে ক্রীতদাস তার মালিকের কাছে সর্বাধিক আকর্ষণীয় এবং সবার চেয়ে বেশি মূল্যবান।
وَعَن أَبي ذرٍ قَالَ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ أَيُّ الأَعمَالِ أَفْضَلُ ؟ قَالَ الإِيمَانُ بِاللهِ وَالجِهَادُ فِي سَبيلِ اللهِ قَالَ : قُلْتُ : أَيُّ الرِّقَابِ أَفْضَلُ؟ قَالَ أَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا وَأَكْثَرُهَا ثَمَناً مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর হক এবং নিজ মনিবের হক আদায়কারী গোলামের মাহাত্ম্য
(২০২৩)ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিঃসন্দেহে কোন গোলাম যখন তার মনিবের হিতাকাঙ্ক্ষী হয় ও আল্লাহর বন্দেগী (যথারীতি) করে, তখন তার দ্বিগুণ সওয়াব অর্জিত হয়।
عَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ العَبْدَ إِذَا نَصَحَ لِسَيِّدِهِ وَأَحْسَنَ عِبَادَةَ اللهِ فَلَهُ أَجْرُهُ مَرَّتَيْنِ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর হক এবং নিজ মনিবের হক আদায়কারী গোলামের মাহাত্ম্য
(২০২৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’(আল্লাহ ও নিজ মনিবের) হক আদায়কারী অধীনস্থ দাসের দ্বিগুণ নেকী অর্জিত হয়।’’ (আবূ হুরাইরা বলেন,) ’সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আবূ হুরাইরার জীবন আছে! যদি আল্লাহর পথে জিহাদ, হজ্জ ও আমার মায়ের সেবা না থাকত, তাহলে আমি পরাধীন গোলাম রূপে মৃত্যুবরণ করা পছন্দ করতাম।’
وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لِلْعَبْدِ المَمْلُوكِ المُصْلِحِ أَجْرَانِ وَالَّذِي نَفْسُ أَبِي هُرَيرَةَ بِيَدِهِ لَوْلاَ الجِهَادُ فِي سَبيلِ اللهِ وَالحَجُّ وَبِرُّ أُمِّي لأَحْبَبْتُ أَنْ أَمُوتَ وَأنَا مَمْلُوكٌ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর হক এবং নিজ মনিবের হক আদায়কারী গোলামের মাহাত্ম্য
(২০২৫) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে অধীনস্থ গোলাম তার প্রতিপালক (আল্লাহর) ইবাদত সুন্দরভাবে করে এবং তার মালিকের অবশ্যপালনীয় হক যথরীতি আদায় করে, তার মঙ্গল কামনা করে ও আনুগত্য করে, তার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব রয়েছে।
وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِي قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ المَمْلُوكُ الَّذِي يُحْسِنُ عِبَادَةَ رَبِّهِ وَيُؤَدِّي إِلَى سَيِّدِهِ الَّذِي عَلَيْهِ مِنَ الحَقِّ وَالنَّصِيحَةِ وَالطَّاعَةِ لهُ أَجْرَانِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর হক এবং নিজ মনিবের হক আদায়কারী গোলামের মাহাত্ম্য
(২০২৬) উক্ত রাবী (রাঃ) হতেই বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন প্রকার লোকের জন্য দ্বিগুণ সওয়াব হয়। (১) কিতাবধারী (ইয়াহুদী-খ্রিষ্টানদের) কোন ব্যক্তি তার নিজের নবীর প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং পরে মুহাম্মাদের উপর ঈমান আনে। (২) সেই অধীনস্থ গোলাম, যে আল্লাহর হক ও তার মনিবের হক যথারীতি আদায় করে। (৩) সেই ব্যক্তি যার একটি দাসী আছে। তাকে সে আদব-কায়দা শিখায় এবং উৎকৃষ্টরূপে তাকে আদব শিক্ষা দেয়, তাকে বিদ্যা শিখায় এবং সুন্দররূপে তার শিক্ষা সুসম্পন্ন করে, অতঃপর তাকে স্বাধীন ক’রে দিয়ে বিবাহ ক’রে নেয়, এর জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ثَلاثَةٌ لَهُمْ أَجْرَانِ : رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ آمَنَ بِنَبِيِّهِ وَآمَنَ بِمُحَمَّدٍ وَالعَبْدُ المَمْلُوكُ إِذَا أدَّى حَقَّ الله وَحَقَّ مَوَالِيهِ وَرَجُلٌ كَانَتْ لَهُ أَمَةٌ فَأدَّبَهَا فَأَحْسَنَ تَأدِيبَهَا وَعَلَّمَهَا فَأَحْسَنَ تَعْلِيمَهَا ثُمَّ أَعْتَقَهَا فَتَزَوَّجَهَا فَلَهُ أَجْرَانِ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ মনিবের ঘর ছেড়ে ক্রীতদাসের পলায়ন নিষিদ্ধ
(২০২৭) জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে গোলামই মনিবের ঘর ছেড়ে পলায়ন করে, তার ব্যাপারে সব রকম ইসলামী দায়-দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়।
عَنْ جَرِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَيُّمَا عَبْدٍ أَبَقَ فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ মনিবের ঘর ছেড়ে ক্রীতদাসের পলায়ন নিষিদ্ধ
(২০২৮) উক্ত রাবী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন গোলাম পলায়ন করবে, তখন তার নামায কবুল হবে না।
وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ إِذَا أَبَقَ العَبْدُ، لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ رواه مسلم، وفي روايةٍ فَقَدْ كَفَرَ