পরিচ্ছেদঃ ১. মদ সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
২১২৭. আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মি’রাজের রাতে ’ঈলইয়া’[1] নামক শহরে তাঁর সম্মুখে দুধ ও শরাবের দু’টি পেয়ালা পেশ করা হল। তখন তিনি এ দু’টির দিকে তাকালেন এবং তিনি দুধের পেয়ালাটি নিলেন। তখন জিব্রাঈল (আঃ) বললেন, আলহামদু লিল্লাহ! সেই আল্লাহর জন্যই সমস্ত প্রশংসা যিনি আপনাকে ’ফিতরাত’ (তথা স্বভাব ধর্ম ইসলাম) এর দিকে পথ প্রদর্শন করেছেন। আপনি যদি শরাব নিয়ে নিতেন, তাহলে আপনার উম্মাতগণ পথভ্রষ্ট হয়ে যেত।[2]
بَاب مَا جَاءَ فِي الْخَمْرِ
أَخْبَرَنَا الْحَكَمُ بْنُ نَافِعٍ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ بِإِيلِيَاءَ بِقَدَحَيْنِ مِنْ خَمْرٍ وَلَبَنٍ فَنَظَرَ إِلَيْهِمَا ثُمَّ أَخَذَ اللَّبَنَ فَقَالَ جِبْرِيلُ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي هَدَاكَ لِلْفِطْرَةِ لَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ
[2] তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ। হাদীসটি বুখারী মুসলিম কর্তৃক সম্মিলিত ভাবে বর্ণিত।
তাখরীজ: বুখারী, আম্বিয়া ৩৩৯৪; মুসলিম, ঈমান ১৬৮।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫১, ৫২ তে।
পরিচ্ছেদঃ ২. মদ কিভাবে হারাম হয়েছিলো
২১২৮. আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি আবূ তালহার বাড়িতে লোকজনকে শরাব পান করাচ্ছিলাম। এমন সময় মদ হারামের আয়াত নাযিল হলো। তখন তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ব্যক্তিকে ঘোষণা দিতে আদেশ করলেন। তখন আবূ তালহা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেন, বাইরে যাও এবং দেখ তো বিষয়টি কী। তখন আমি বাইরে গেলাম এবং বললাম, বিষয়টি হলো, একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা দিচ্ছে যে, সাবধান! শরাব এখন হতে হারাম করে দেয়া হয়েছে। তখন আবূ তালহা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেন, বাইরে যাও এবং সমস্ত শরাব ঢেলে দাও। তিনি (আনাস রাঃ) বলেন, সে দিন মাদ্বীনার অলিগলিতে শরাবের প্লাবন বয়ে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সে সময় লোকেরা ফাযীখ শরাব ব্যবহার করতেন। তখন কেউ কেউ বলল, একদল লোক নিহত হয়েছে, অথচ তাদের পেটে শরাব ছিল। তখন এ আয়াত নাযিল হলঃ ’’যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারা পূর্বে যা কিছু পানাহার করেছে তার জন্য তাদের কোন গুনাহ হবে না’’- (আল-মা-য়িদাহ: ৯৩)।”[1]
بَاب فِي تَحْرِيمِ الْخَمْرِ كَيْفَ كَانَ
أَخْبَرَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كُنْتُ سَاقِيَ الْقَوْمِ فِي مَنْزِلِ أَبِي طَلْحَةَ قَالَ فَنَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ قَالَ فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ اخْرُجْ فَانْظُرْ مَا هَذَا فَخَرَجْتُ فَقُلْتُ هَذَا مُنَادٍ يُنَادِي أَلَا إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ فَقَالَ لِيَ اذْهَبْ فَأَهْرِقْهَا قَالَ فَجَرَتْ فِي سِكَكِ الْمَدِينَةِ قَالَ وَكَانَتْ خَمْرُهُمْ يَوْمَئِذٍ الْفَضِيخَ فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ قُتِلَ قَوْمٌ وَهِيَ فِي بُطُونِهِمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا إِذَا مَا اتَّقَوْا وَآمَنُوا الْآيَةَ
তাখরীজ: বুখারী, মাযালিম ২৪৬৪; মুসলিম, আশরিবাহ ১৯৮০।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৩০০৮, ৩০৪২, ৩৩৬১; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯৪৫, ৫৩৫২, ৫৩৬১, ৫৩৬২ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ১২৪৪ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৩. মদপানকারীদের উপর কঠোর হুঁশিয়ারী
২১২৯. ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মদ পান করবে, অত:পর তা হতে তাওবা করবে না, আখিরাতে তার জন্য তা হারাম করা হবে, ফলে সে তা থেকে পান করতে পারবে না।”[1]
بَاب فِي التَّشْدِيدِ عَلَى شَارِبِ الْخَمْرِ
أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ لَمْ يَتُبْ مِنْهَا حُرِمَهَا فِي الْآخِرَةِ فَلَمْ يُسْقَهَا
তাখরীজ: মালিক, আশরিবাহ ১১ সহীহ সনদে; বুখারী, আশরিবাহ ৫৫৭৫; মুসলিম, আশরিবাহ ২০০৩।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৬৬ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৩. মদপানকারীদের উপর কঠোর হুঁশিয়ারী
২১৩০. আবদুল্লাহ্ ইবন দায়লামী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ্ ইবনু আমর ইবনুল আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর নিকট উপস্থিত হলাম, তখন তিনি তাঁর তায়েফস্থিত ওহাত নামক বাগানে ছিলেন। তিনি কুরায়শের এক যুবকের মাজা ধরে ছিলেন। লোকদের ধারনা ছিল যে, ঐ যুবক মদ পান করতো। আমি বললাম, আমার নিকট আপনার বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে যে, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে হাদীস বর্ণনা করে থাকেন, তিনি বলেছেন: “যে ব্যক্তি এক ঢোক শরাব পান করবে, চল্লিশ দিন তার সালাত কবুল হবে না।” সে যুবকটি মদের আলোচনা শোনামাত্র আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর হাত থেকে তার হাত এক ঝটকায় সরিয়ে নিয়ে চলে গেল।
তখন আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহ! আমি যা বলিনি, আমার উপর তা আরোপ করা কারো জন্য হালাল করি না। নিশ্চয়ই আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “যে ব্যক্তি এক ঢোক শরাব পান করবে, চল্লিশ দিন তার সালাত কবুল হবে না। অত:পর যদি সে তাওবা করে, তবে মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া-তায়ালা তার তাওবা কবুল করবেন।” আমার মনে নাই, তিনি এভাবে তৃতীয় বারে নাকি চতুর্থবারে বলেছেন, “তাহলে মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া-তায়ালা নিশ্চিতরুপে তাকে কিয়ামতের দিন ’রদগতিল খাবাল’ (দোযখীদের পুঁজ) পান করাবেন।”[1]
بَاب فِي التَّشْدِيدِ عَلَى شَارِبِ الْخَمْرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ الْأَوْزَاعِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ يَزِيدَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الدَّيْلَمِيِّ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ فِي حَائِطٍ لَهُ بِالطَّائِفِ يُقَالُ لَهُ الْوَهْطُ فَإِذَا هُوَ مُخَاصِرٌ فَتًى مِنْ قُرَيْشٍ يُزَنُّ ذَلِكَ الْفَتَى بِشُرْبِ الْخَمْرِ فَقُلْتُ خِصَالٌ بَلَغَتْنِي عَنْكَ أَنَّكَ تُحَدِّثُ بِهَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ شَرْبَةً لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا فَلَمَّا أَنْ سَمِعَهُ الْفَتَى يَذْكُرُ الْخَمْرَ اخْتَلَجَ يَدَهُ مِنْ يَدِ عَبْدِ اللَّهِ ثُمَّ وَلَّى فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ اللَّهُمَّ إِنِّي لَا أُحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَقُولَ عَلَيَّ مَا لَمْ أَقُلْ وَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ شَرْبَةً لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا فَإِنْ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ فَلَا أَدْرِي فِي الثَّالِثَةِ أَمْ فِي الرَّابِعَةِ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يَسْقِيَهُ مِنْ رَدْغَةِ الْخَبَالِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৫৭ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৩৭৮ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৪. মদ পরিবেশন করা হয় এমন খানায় বসার নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে
২১৩১. জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন এমন দস্তরখানে না বসে, যেখানে মদ পান করা হয়।”[1]
بَاب فِي النَّهْيِ عَنْ الْقُعُودِ عَلَى مَائِدَةٍ يُدَارُ عَلَيْهَا الْخَمْرُ
أَخْبَرَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَبِي جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يَقْعُدْ عَلَى مَائِدَةٍ يُشْرَبُ عَلَيْهَا الْخَمْرُ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১৯২৫ তে।
এছাড়া, তাবারাণী, আল আওসাত নং ৬৯২, ১৭১৫, ২৫৩১; খতীব, তারিখ বাগদাদ ১/৪৪৪ নং ৩২০; সাহমী, তারিখ জুরজান পৃ: ১৯১-১৯২।
আর এ হাদীসের শাহিদ রয়েছে কয়েকটি: উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর হাদীস দেখুন, মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৫১ তে। সেখানে আমরা এর শাহিদ সমূহ উল্লেখ করেছি। ফাতহুল বারী ৯/২৫০ তে হাফিজ (ইবনু হাজার) একে নাসাঈ’র দিকে সম্বন্ধিত করেছেন এবং বলেছেন, এর সনদ জাইয়্যেদ’ বা উত্তম। এটি রয়েছে (নাসাঈ’র) কুবরা নং ৬৭৪১; আরও দেখুন, তালখীসুল হাবীর ৩/১৯৬।
পরিচ্ছেদঃ ৫. মাদকাসক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে
২১৩২. আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ব্যভিচারিনীর সন্তান, উপকার করে খোঁটাদানকারী, (পিতা-মাতার) অবাধ্য সন্তান এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।”[1]
بَاب فِي مُدْمِنِ الْخَمْرِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ جَابَانَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ وَلَدُ زِنْيَةٍ وَلَا مَنَّانٌ وَلَا عَاقٌّ وَلَا مُدْمِنُ خَمْرٍ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৩৩৮৩ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৩৮২ তে। পরবর্তী টীকাটিও দেখুন।
পরিচ্ছেদঃ ৫. মাদকাসক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে
২১৩৩. আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “(পিতা-মাতার) অবাধ্য সন্তান, উপকার করে খোঁটাদানকারী এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।”[1]
بَاب فِي مُدْمِنِ الْخَمْرِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحَجَّاجِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ عَنْ نُبَيْطِ بْنِ شَرِيطٍ عَنْ جَابَانَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَاقٌّ وَلَا مَنَّانٌ وَلَا مُدْمِنُ خَمْرٍ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৩৩৮৪ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৩৮৩ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৬. মাদকদ্রব্যে কোনো আরোগ্য নেই
২১৩৪. ওয়াইল (ইবনু হুজর) রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, সুওয়াইদ ইবনু তারিক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মদ (দ্বারা চিকিৎসা করা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি তাকে তা করতে নিষেধ করলেন। তখন তিনি বললেন, এটি তো রোগ থেকে আরোগ্যদানকারী। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “এটি তো আরোগ্যদানকারী নয়-ই, বরং তা নিজেই একটি রোগ।”[1]
بَاب لَيْسَ فِي الْخَمْرِ شِفَاءٌ
أَخْبَرَنَا سُهَيْلُ بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا سِمَاكٌ قَالَ سَمِعْتُ عَلْقَمَةَ بْنَ وَائِلٍ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ وَائِلٍ أَنَّ سُوَيْدَ بْنَ طَارِقٍ سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ الْخَمْرِ فَنَهَاهُ عَنْهَا أَنْ يَصْنَعَهَا فَقَالَ إِنَّهَا دَوَاءٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهَا لَيْسَتْ دَوَاءً وَلَكِنَّهَا دَاءٌ
তাখরীজ: মুসলিম, আশরিবাহ ১৯৮৪। আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ১৩৮৯, ১৩৯০ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৩৭৭ তে। দেখুন, মানহাতুল মা’বূদ নং ১৭২২।
পরিচ্ছেদঃ ৭. যে সকল দ্রব্য থেকে মদ তৈরী হয়
২১৩৫. আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “মদ এ দু’টি গাছ হতে তৈরী হয়: খেজুর ও আঙ্গুর।”[1]
بَاب مِمَّا يَكُونُ الْخَمْرُ
أَخْبَرَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ عَنْ الْأَوْزَاعِيِّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا كَثِيرٍ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ الْخَمْرُ فِي هَاتَيْنِ الشَّجَرَتَيْنِ النَّخْلَةِ وَالْعِنَبَةِ
তাখরীজ: মুসলিম, আশরিবাহ ১৯৮৫।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৬০০২; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৪৪ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৮. নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
২১৩৬. ’আয়িশাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ’বিত’আ’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি বললেনঃ সর্বপ্রকার নেশা জাতীয় পানীয় হারাম।”[1]
بَاب مَا قِيلَ فِي الْمُسْكِرِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنْ الْبِتْعِ قَالَ كُلُّ شَرَابٍ أَسْكَرَ حَرَامٌ
তাখরীজ: মালিক, আশরিবাহ ৯; বুখারী, আশরিবাহ ৫৫৮৫; মুসলিম, আশরিবাহ ২০০১।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪৩৬০, ৪৫২৩; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৪৫, ৫৩৭১, ৫৩৭২, ৫৩৯৩ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ২৮৩ তে। আরও দেখুন, মানহাতুল মা’বূদ নং ১৭২৯।
পরিচ্ছেদঃ ৮. নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
২১৩৭. বুরদাহ ইবনু আবী মূসা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ও মুয়ায ইবনু জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে ইয়ামানে পাঠালেন। তখন বললেন: “তোমরা পান করবে, তবে কোনো নেশা উদ্রেককারী দ্রব্য পান করবে না। কেননা, প্রত্যেক নেশা উদ্রেককারী দ্রব্যই হারাম।”[1]
بَاب مَا قِيلَ فِي الْمُسْكِرِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى عَنْ أَبِيهِ قَالَ بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا وَمُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ اشْرَبُوا وَلَا تَشْرَبُوا مُسْكِرًا فَإِنَّ كُلَّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ
তাখরীজ: বুখারী, জিহাদ ৩০৩৮, মাগাযী ৪৩৪৩; মুসলিম, আশরিবাহ ১৭৩৩, জিহাদ ১৩৭৭।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৭২৩৯; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৭৩, ৫৩৭৬, ৫৩৭৭ তে। আরও দেখুন, মানহাতুল মা’বূদ নং ১৭২৪, ১৭২৮।
পরিচ্ছেদঃ ৮. নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
২১৩৮. সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যার অধিক পরিমাণ (ব্যবহারে) নেশা সৃষ্টি করে, তার সামান্য পরিমাণ (ব্যবহার) থেকেও আমি আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি।”[1]
بَاب مَا قِيلَ فِي الْمُسْكِرِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ كَثِيرِ بْنِ سِنَانٍ حَدَّثَنِي الضَّحَّاكُ بْنُ عُثْمَانَ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْأَشَجِّ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ سَعْدٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَنْهَاكُمْ عَنْ قَلِيلِ مَا أَسْكَرَ كَثِيرُهُ
তাখরীজ: ইবনু আবী শাইবা, নং ৩৮১৫; আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৬৯৪, ৬৯৫; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৭০ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৩৮৬ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৮. নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
২১৩৯. আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “সর্বপ্রথম যা উল্টে দেয়া হবে,- যাইদ বলেন, অর্থাৎ ইসলামের মধ্যে (যে বিষয়টি উল্টে দেয়া হবে)- যেভাবে পাত্র কে উল্টে দেয়া হয়- তা হলো মদ। তাঁকে বলা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সেটি কিভাবে হবে, যেখানে আল্লাহ তা’আলা তা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করে দিয়েছেন? তিনি বললেন: “তার নামকে অন্য নামে পরিবর্তন করে একে হালাল মনে করা হবে।”[1]
بَاب مَا قِيلَ فِي الْمُسْكِرِ
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ أَبِي وَهْبٍ الْكَلَاعِيِّ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِنَّ أَوَّلَ مَا يُكْفَأُ قَالَ زَيْدٌ يَعْنِي الْإِسْلَامَ كَمَا يُكْفَأُ الْإِنَاءُ كَفْيَ الْخَمْرِ فَقِيلَ فَكَيْفَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَقَدْ بَيَّنَ اللَّهُ فِيهَا مَا بَيَّنَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَمُّونَهَا بِغَيْرِ اسْمِهَا فَيَسْتَحِلُّونَهَا
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৪৭৩১ তে। আরও দেখুন, হাকিম, মুসতাদরাক ৪/১৪৭; বাইহাকী, শারবু ৮/১৯৪-২৯৫; ইবনু আবী শাইবা, নং ৩৮২৮ এ সনদে জাহালত (অজ্ঞাত পরিচয় রাবী) রয়েছে। আরও দেখুন, ফাতহুল বারী ১০/৫২; ইবনু আদী, আল কামিল ৬/২০৫১।
পরিচ্ছেদঃ ৮. নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
২১৪০. উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “সর্বপ্রথম তোমাদের বিচার-শাসন ব্যবস্থা হবে নবুয়তী এবং (তা) রহমত স্বরূপ; এরপর আসবে রাজতন্ত্র এবং (তাও) রহমত স্বরূপ; এরপর আবার রাজতন্ত্র আর তা অত্যধিক ধুলিযুক্ত (মলিন); এরপর আবার রাজতন্ত্র এবং (তাতে) জবরদস্তি থাকবে-সে সময় মদ ও রেশমকে হালাল মনে করা হবে।”আবূ মুহাম্মদ বলেন, ’অত্যধিক ধুলি’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তা সেই মাটি বা ধুলির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ- যাতে কোনো কল্যাণ নেই।”[1]
بَاب مَا قِيلَ فِي الْمُسْكِرِ
أَخْبَرَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنِي أَبُو وَهْبٍ عَنْ مَكْحُولٍ عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيِّ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوَّلُ دِينِكُمْ نُبُوَّةٌ وَرَحْمَةٌ ثُمَّ مُلْكٌ وَرَحْمَةٌ ثُمَّ مُلْكٌ أَعْفَرُ ثُمَّ مُلْكٌ وَجَبَرُوتٌ يُسْتَحَلُّ فِيهَا الْخَمْرُ وَالْحَرِيرُ قَالَ أَبُو مُحَمَّد الْأَعْفَرُ شِبْهُ التُّرَابِ لَيْسَ فِيهِ طَمَعٌ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৮৭৩ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৯. মদ ক্রয়-বিক্রয়ের নিষেধাজ্ঞা
২১৪১. উরওয়াহ ইবনু মুগীরাহ ইবনু শু’বা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি মদ বিক্রি করল, সে যেন শুকুর যবেহ করে অংশীদারদের মধ্যে ভাগ করে দিল।”[1]
আবূ মুহাম্মদ বলেন, সে (রাবী ’আমর ইবনু বায়ান মূলত:) ছিলো উমার ইবনু বায়ান।
بَاب النَّهْيِ عَنْ بَيْعِ الْخَمْرِ وَشِرَائِهَا
أَخْبَرَنَا سَهْلُ بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا طُعْمَةُ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ بَيَانٍ التَّغْلِبِيُّ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ مَنْ بَاعَ الْخَمْرَ فَلْيُشَقِّصْ الْخَنَازِيرَ قَالَ أَبُو مُحَمَّد إِنَّمَا هُوَ عُمَرُ بْنُ بَيَانٍ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল হুমাইদী নং ৭৭৮ তে।
এটি বর্ণনা করেছেন তায়ালিসী ১/৩৩৮ নং ১৭১৯ তে।
فَلْيُشَقِّصِ الْخَنَازِير অর্থ: ইবনুল আছীর বলেন, ‘ছাগলের গোশতে যেভাবে টুকরা টুকরা করে বন্টন করা হয়, তদ্রুপ সে যেন শুকরের গোশ কেটে বন্টন করলো।’
অর্থ: যে ব্যক্তি মদ ব্যবসাকে হালাল মনে করে, সে যেন শুকর ব্যবসাকে হালাল মনে করলো। কেননা, এ দু’টিই হারাম হওয়ার দিক থেকে অনুরূপ। এটি নির্দেশ অর্থে। আর নিষেধ অর্থে: যে ব্যক্তি মদ বিক্রি করলো, শুকরের গোশত বন্টনকারী হলো।’
পরিচ্ছেদঃ ৯. মদ ক্রয়-বিক্রয়ের নিষেধাজ্ঞা
২১৪২. আব্দুর রহমান ইবনু ওয়া’লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর নিকট মদ বিক্রয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তখন ইবন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সাকীফ কিংবা দাওস গোত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এক বন্ধু ছিল। মক্কা বিজয়ের বছরে তিনি তাঁর সাথে সাক্ষাত করে তাঁর নিকট এক মশক মদ হাদিয়া স্বরুপ নিয়ে আসে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ “হে অমুক! তুমি কি জাননা যে, আল্লাহ তা’আলা উহা হারাম করে দিয়েছেন?” অতঃপর লোকটি তার গোলামের কাছে গিয়ে তাকে বলল, যাও, এটি বিক্রয় কর। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে অমুক! তুমি তাকে কী আদেশ দিলে?” সে বলল, আমি তাকে ইহা বিক্রি করার নির্দেশ দিয়েছি। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “যিনি ইহা পান করা হারাম করেছেন, তিনি ইহার বিক্রিও হারাম করে দিয়েছেন।” রাবী বলেন, এরপর সে একে মাটিতে ঢেলে দেওয়ার নির্দেশ দিলো।[1]
بَاب النَّهْيِ عَنْ بَيْعِ الْخَمْرِ وَشِرَائِهَا
حَدَّثَنَا يَعْلَى عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَقَ عَنْ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ وَعْلَةَ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ بَيْعِ الْخَمْرِ فَقَالَ كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدِيقٌ مِنْ ثَقِيفٍ أَوْ مِنْ دَوْسٍ فَلَقِيَهُ بِمَكَّةَ عَامَ الْفَتْحِ بِرَاوِيَةٍ مِنْ خَمْرٍ يُهْدِيهَا لَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا فُلَانُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَدْ حَرَّمَهَا قَالَ فَأَقْبَلَ الرَّجُلُ عَلَى غُلَامِهِ فَقَالَ اذْهَبْ فَبِعْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَاذَا أَمَرْتَهُ يَا فُلَانُ قَالَ أَمَرْتُهُ بِبَيْعِهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الَّذِي حَرَّمَ شُرْبَهَا حَرَّمَ بَيْعَهَا فَأَمَرَ بِهَا فَأُكْفِئَتْ فِي الْبَطْحَاءِ
তাখরীজ: মুসলিম, মুসাক্বাহ ১৫৭৯।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২৪৬৮, ২৫৯০; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯৪২, ৪৯৪৪ তে।
পরিচ্ছেদঃ ৯. মদ ক্রয়-বিক্রয়ের নিষেধাজ্ঞা
২১৪৩. ইবন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর নিকট এই সংবাদ পৌছল যে, সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মদ বিক্রি করেছেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ সামুরার সর্বনাশ করুক। সে কি জানে না যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদী জাতির উপর অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের উপর চর্বি হারাম করা হয়েছিল। এরপর তারা তা গলিয়ে বিক্রি করে।[1]
সুফিয়ান বলেন, جَمَلُوهَا তথা ’তা গলাতো’ অর্থ: ’তরলে রুপান্তরিত করত’।
بَاب النَّهْيِ عَنْ بَيْعِ الْخَمْرِ وَشِرَائِهَا
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو يَعْنِي ابْنَ دِينَارٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ بَلَغَ عُمَرَ أَنَّ سَمُرَةَ بَاعَ خَمْرًا فَقَالَ قَاتَلَ اللَّهُ سَمُرَةَ أَمَا عَلِمَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَعَنَ اللَّهُ الْيَهُودَ حُرِّمَتْ عَلَيْهِمْ الشُّحُومُ فَجَمَلُوهَا فَبَاعُوهَا قَالَ سُفْيَانُ جَمَلُوهَا أَذَابُوهَا
তাখরীজ: বুখারী, বুয়ূ ২২২৩; মুসলিম, মুসাক্বাহ ১৫৮২।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ২০০; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৯৩৮, ৬২৫৩ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ১৩ তে।
পরিচ্ছেদঃ ১০. মদ পানের শাস্তি
২১৪৪. আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যখন কোনো ব্যক্তি নেশা করে, তোমরা তাকে চাবুক মারবে। অতঃপর পুণরায় নেশা করলে তাকে চাবুক মারবে। অতঃপর পুণরায় নেশা করলে তাকে চাবুক মারবে। অতঃপর পুণরায় নেশা করলে তার গর্দান মেরে দাও। অর্থাৎ চতুর্থবারে।”[1]
بَاب الْعُقُوبَةِ فِي شُرْبِ الْخَمْرِ
حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَكِرَ فَاجْلِدُوهُ ثُمَّ إِذَا سَكِرَ فَاجْلِدُوهُ ثُمَّ إِذَا سَكِرَ فَاجْلِدُوهُ ثُمَّ إِذَا سَكِرَ فَاضْرِبُوا عُنُقَهُ يَعْنِي فِي الرَّابِعَةِ
তাখরীজ: আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৪৪৭ ও ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৫১৭ তে।
আর এর শাহিদ হাদীস রয়েছে মুয়াবিয়া হতে, আমরা যার পূর্ণাঙ্গ টীকা সহ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী ১৩/৩৪৯-৩৫৩; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৪৪৪৬ ও মাওয়ারিদুয যাম’আন নং ১৫১৯ তে। আরও দেখুন, নিসবুর রায়াহ ৩/৩৪৬-৩৪৭।
পরিচ্ছেদঃ ১১. মদপানকারীর ব্যাপারে কঠোর সতর্কবাণী
২১৪৫. আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কোন ব্যভিচারী মু’মিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন চোর মু’মিন অবস্থায় চুরি করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মু’মিন অবস্থায় মদ পান করে না।”[1]
بَاب فِي التَّغْلِيظِ لِمَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ الْأَوْزَاعِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَا يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَا يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ
তাখরীজ: বুখারী, মাযালিম ২৪৭৫; মুসলিম, ঈমান ৫৭।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ৬২৯৯, ৬৩০০, ৬৩৬৪; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ১৮৬, ৫১৭২ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ১১৬২ তে।
পরিচ্ছেদঃ ১২. যে সকল পাত্রে নাবী (ﷺ) এর জন্য নাবীয প্রস্তুত করা হয়েছে
২১৪৬. জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য মশকে নবীয প্রস্তুত করা হতো। মশক না পাওয়া গেলে (পাথর নির্মিত) গামলা জাতীয় বড় পাত্রে নবীয প্রস্তুত করা হতো।[1]
بَاب فِيمَا يُنْبَذُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ قَالَ كَانَ يُنْبَذُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي السِّقَاءِ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ سِقَاءٌ نُبِذَ لَهُ فِي تَوْرٍ مِنْ بِرَامٍ
তাখরীজ: মুসলিম, আশরিবাহ ১৯৯৯।
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মাউসিলী নং ১৭৬৯ ; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫৩৮৭, ৫৩৯৬, ৫৪১২ ও মুসনাদুল হুমাইদী নং ১৩২০ তে।