পরিচ্ছেদঃ ৩১০- মেহমানের সমাদর এবং সশরীরে তাদের খেদমত করা।
৭৪৫। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলেন। তিনি (খাদ্যের জন্য) তার স্ত্রীগণের নিকট পাঠান। তারা বলেন, আমাদের কাছে পানি ছাড়া আর কিছু নাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কে তার মেহমানদারি করবে? আনসারদের একজন বলেন, আমি। তিনি তাকে নিয়ে তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মেহমানকে সম্মান করো। স্ত্রী বলেন, ছেলে-মেয়েদের রাতের খাবার ছাড়া আমাদের আর কিছু নাই। আনসারী বলেন, তুমি খাবার তৈরি করো, বাতি ঠিক করো এবং তোমার বাচ্চারা যখন রাতের খাবার চাইবে তখন প্রবোধ দিয়ে তাদের ঘুম পাড়িয়ে দিও। মহিলা তার খাবার তৈরি করলেন, বাতি ঠিকঠাক করলেন এবং তার বাচ্চাদের ঘুম পাড়ালেন। অতঃপর তিনি উঠে বাতি ঠিক করার ছুতোয় তা নিভিয়ে দিলেন। তারা এমন ভাব দেখালেন যে, তারা যেন মেহমানের সাথে আহার করছেন। অথচ রাতে তারা উপোসই থাকলেন। ভোর হলে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তোমাদের গত রাতের কার্যকলাপে হেসেছেন বা অবাক হয়েছেন এবং আয়াত নাযিল করেছেনঃ “তারা অভাবগ্রস্ত হলেও নিজেদের উপর অন্যদের অগ্রাধিকার দেয়। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত তারাই সফলকাম”। (সূরা হাশরঃ ৯)
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، " أَنَّ رَجُلا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَبَعَثَ إِلَى نِسَائِهِ ، فَقُلْنَ : مَا مَعَنَا إِلا الْمَاءُ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ يَضُمُّ ، أَوْ يُضِيفُ هَذَا ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ : أَنَا ، فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى امْرَأَتِهِ ، فَقَالَ : أَكْرِمِي ضَيْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَتْ : مَا عِنْدَنَا إِلا قُوتٌ لِلصِّبْيَانِ ، فَقَالَ : هَيِّئِي طَعَامَكِ ، وَأَصْلِحِي سِرَاجَكِ ، وَنَوِّمِي صِبْيَانَكِ إِذَا أَرَادُوا عَشَاءً ، فَهَيَّأَتْ طَعَامَهَا ، وَأَصْلَحَتْ سِرَاجَهَا ، وَنَوَّمَتْ صِبْيَانَهَا ، ثُمَّ قَامَتْ كَأَنَّهَا تُصْلِحُ سِرَاجَهَا فَأَطْفَأَتْهُ ، وَجَعَلا يُرِيَانِهِ أَنَّهُمَا يَأْكُلانِ ، وَبَاتَا طَاوِيَيْنِ ، فَلَمَّا أَصْبَحَ غَدَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لَقَدْ ضَحِكَ اللَّهُ ، أَوْ : عَجِبَ مِنْ فَعَالِكُمَا ، وَأَنْزَلَ اللَّهُ : وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
পরিচ্ছেদঃ ৩১১- মেহমানকে প্রদত্ত পাথেয়।
৭৪৬। আবু শুরাইহ আল-আদাবী (রাঃ) বলেন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তখন আমার দুই কান শুনেছে এবং দুই চোখ দেখেছে। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন পুরস্কারসহ মেহমানের আপ্যায়ন ও সমাদর করে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! তার পুরস্কার কি? তিনি বলেনঃ এক রাত ও এক দিনের জন্য উন্নত খাবার পরিবেশন করা। আর তিন দিন পর্যন্ত সাধারণ মেজবানীই যথেষ্ট। এর চেয়েও বেশী দিন অবস্থান করলে সেই মেহমানদারি হলে বদান্যতা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে, অন্যথায় চুপ থাকে। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا اللَّيْثُ ، قَالَ : حَدَّثَنِي سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْعَدَوِيِّ ، قَالَ : سَمِعَتْ أُذُنَايَ ، وَأَبْصَرَتْ عَيْنَايَ ، حِينَ تَكَلَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : " مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ جَائِزَتَهُ ، قَالَ : وَمَا جَائِزَتُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ؟ قَالَ : يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ ، وَالضِّيَافَةُ ثَلاثَةُ أَيَّامٍ ، فَمَا كَانَ وَرَاءَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ عَلَيْهِ ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
পরিচ্ছেদঃ ৩১২- মেহমানদারি তিন দিন।
৭৪৭। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মেহমানদারি করতে হবে তিন দিন। তার অধিক করা হলে তা দান হিসেবে গণ্য হবে। (আবু দাউদ)
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيل ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبَانُ بْنُ يَزِيدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " الضِّيَافَةُ ثَلاثَةُ أَيَّامٍ ، فَمَا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ
পরিচ্ছেদঃ ৩১৩- মেহমান আপ্যায়নকারীর অসুবিধা করে থাকবে না।
৭৪৮। আবু শুরায়হ আল-কাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ও আখেরাতের দিনের উপর ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অন্যথা নীরব থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর-ও আখেরাতের দিনের উপর ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সমাদর করে। তার বিশেষ মেহমানদারি হচ্ছে এক দিন এক রাত, আর স্বাভাবিক মেহমানদারি হচ্ছে তিন দিন। তার অতিরিক্ত যা করা হবে তা বদান্যতারূপে গণ্য হবে। আর মেহমানের পক্ষে মেজবানের বাড়িতে এতো অধিক দিন অবস্থান করা উচিৎ নয় যাতে সে অসুবিধা বোধ করে। (আহমাদ, তাহাবী)
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ، قَالَ : حَدَّثَنِي مَالِكٌ ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْكَعْبِيِّ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ جَائِزَتَهُ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ ، وَالضِّيَافَةُ ثَلاثَةُ أَيَّامٍ ، فَمَا بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ ، وَلا يَحِلُّ لَهُ أَنْ يَثْوِيَ عِنْدَهُ حَتَّى يُحْرِجَهُ
পরিচ্ছেদঃ ৩১৪- মেহমান ভোরবেলা আপ্যায়নকারীর আঙ্গিনায় উপস্থিত হলে।
৭৪৯। মিকদাম আবু কারীমা আস-সামী (রহঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রাতের বেলা আগত মেহমানের মেহমানদারি করা প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য। আর রাতের বেলা তার নিকট মেহমান অবস্থান করলে, সে তার জন্য ঋণস্বরূপ। এখন সে ইচ্ছা করলে এই ঋণ (মেহমানকে পানাহার করানো) পরিশোধ করুক অথবা চাইলে তা ত্যাগ করুক। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, দারিমী, হাকিম, তাহাবী, আহমাদ)
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنِ الْمِقْدَامِ أَبِي كَرِيمَةَ الشَّامِيّ ، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لَيْلَةُ الضَّيْفِ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ ، فَمَنْ أَصْبَحَ بِفِنَائِهِ فَهُوَ دَيْنٌ عَلَيْهِ إِنْ شَاءَ ، فَإِنْ شَاءَ اقْتَضَاهُ ، وَإِنْ شَاءَ تَرَكَهُ
পরিচ্ছেদঃ ৩১৫- বঞ্চিত অবস্থায় মেহমানের ভোর হলে।
৭৫০। উকবা ইবনে আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাদেরকে বাইরে পাঠিয়ে থাকেন। আমরা এমন সব গোত্রের এলাকায় অবতরণ করি যারা আমাদের মেহমানদারি করে না। এ ব্যাপারে আপনার সিদ্ধান্ত কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি তোমরা কোন গোত্রের এলাকায় অবতরণ করো এবং তারা সাধ্যমত তোমাদের জন্য মেহমানদারির ব্যবস্থা করে তবে তা সাদরে গ্রহণ করো। কিন্তু যদি তারা (অনুরূপ কোন ব্যবস্থা) না করে, তবে তাদের থেকে এতোটা হক আদায় করে নাও যা দেয়া তাদের উচিত ছিল। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ)
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي اللَّيْثُ ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ ، قَالَ : قُلْتُ : " يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّكَ تَبْعَثُنَا فَنَنْزِلُ بِقَوْمٍ فَلا يَقْرُونَا ، فَمَا تَرَى فِي ذَلِكَ ؟ فَقَالَ لَنَا : إِنْ نَزَلْتُمْ بِقَوْمٍ فَأُمِرَ لَكُمْ بِمَا يَنْبَغِي لِلضَّيْفِ فَاقْبَلُوا ، فَإِنْ لَمْ يَفْعَلُوا فَخُذُوا مِنْهُمْ حَقَّ الضَّيْفِ الَّذِي يَنْبَغِي لَهُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৩১৬- সশরীরে মেহমানের খেদমত করা।
৭৫১। সাহল ইবনে সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবু উসাইদ সাইদী (রাঃ) তার বাসর রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত দিলেন। তার নববধূ সেদিন তাদের আহার পরিবেশন করেন। স্ত্রী বলেন, আপনারা কি জানেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য সেদিন আমি ছিলে-চেঁছে কি পরিবেশন করেছিলাম? রাতের বেলা আমি তাঁর জন্য টাটকা খেজুর একটি মাটির পাত্রে ভিজিয়ে রেখেছিলাম (বুখারী, মুসলিম)।
بَابُ خِدْمَةِ الرَّجُلِ الضَّيْفَ بِنَفْسِهِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ قَالَ: سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ، أَنَّ أَبَا أُسَيْدٍ السَّاعِدِيَّ دَعَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي عُرْسِهِ، وَكَانَتِ امْرَأَتُهُ خَادِمَهُمْ يَوْمَئِذٍ، وَهِيَ الْعَرُوسُ، فَقَالَتْ، أَوْ قَالَ،: أَتَدْرُونَ مَا أَنْقَعْتُ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم؟ أَنْقَعْتُ لَهُ تَمَرَاتٍ مِنَ اللَّيْلِ فِي تَوْرٍ.
Abu Usayd as-Sa'idi invited the Prophet, may Allah bless him and grant him peace, to his wedding. His wife, who was the bride, served them that day. She said, "Do you know what I served the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace? I served him some dates which had been infused in a pot overnight."
পরিচ্ছেদঃ ৩১৭- কোন ব্যক্তি মেহমানের সামনে আহার পরিবেশন করে নিজে নামাযে দাঁড়িয়ে গেলে।
৭৫২। নুআইম ইবনে কানাব (রহঃ) বলেন, আমি আবু যার (রাঃ) এর নিকট এসে তাকে ঘরে পেলাম না। আমি তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, আবু যার (রাঃ) কোথায়? তিনি বলেন, কোন কাজে বাইরে গিয়েছেন, এখনই আপনার সাক্ষাতে এসে যাবেন। অতএব আমি তার অপেক্ষায় বসে থাকলাম। তিনি দু’টি উটসহ আসলেন, যার একটির পিছনে অপরটি বাধা এবং প্রতিটির ঘাড়ে ছিল একটি করে মশক। তিনি সেই দু’টি নামালেন, অতঃপর এলেন। আমি বললাম, হে আবু যার! যাদের সাথে আমি দেখা-সাক্ষাত করি তাদের মধ্যে আমার কাছে আপনার চেয়ে অধিক প্রিয় কেউ নাই। আবার তাদের মধ্যে আপনার চেয়ে অধিক অপ্রিয়ও আমার কাছে কেউ নাই।
তিনি বলেন, তোমার পিতা আল্লাহর জন্য কোরবান হোক। এই দু’টি বিপরীত জিনিস একত্র হলো কি করে। তিনি বলেন, আমি জাহিলী যুগে একটি কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়েছি। আমার আশংকা হয় যে, আমি আপনার সাথে সাক্ষাত করলেই আপনি বলবেন, তোমার তওবা করার বা নিস্কৃতি লাভের কোন সুযোগ নাই। কিন্তু আমি আকাঙ্খা করতাম যে, আপনি বলবেন, তোমার তওবা করার ও নিস্তার লাভের উপায় আছে।
তিনি বলেন, তুমি কি এটি জাহিলী যুগে করেছিলে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেন, অতীতের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেছেন। তিনি তার স্ত্রীকে বলেন, আমাদের জন্য খাবার নিয়ে এসো। মহিলা অসম্মত হলো। তিনি পুনরায় তাকে আদেশ করলে এবারও সে অস্বীকার করলো। শেষে দু’জনের কথা কাটাকাটির স্বর উচ্চ মাত্রায় পৌঁছলো। তিনি বলেন, এই যে! তোমরা তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্তব্য গণায় ধরো না।
আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সম্পর্কে কি বলেছেন? তিনি বলেছেনঃ “নিশ্চয় নারী হচ্ছে পাঁজরের বাঁকা হাড়। তুমি যদি তা সোজা করতে চাও তবে তাকে খানখান করে ফেলবে। আর তুমি যদি তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করে যাও, তবুও তাদের বাঁকা স্বভাব বিদ্যমান থাকবেই”।
মহিলাটি চলে গেলো এবং সারীদ (ঝোলে ভিজানো রুটি) নিয়ে বিড়ালের মত চুপিসারে ফিরে এলো। আবু যার (রাঃ) আমাকে বলেন, তুমি খাও, আমার কথা চিন্তা করো না। আমি রোযা আছি। অতঃপর তিনি নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং ধীরেসুস্থে নামায পড়লেন। নামায শেষে তিনি আহার করলেন। আমি বললাম, ইন্না লিল্লাহ! আমি কখনও আশংকা করিনি যে, আপনি আমাকে মিথ্যা কথা বলবেন! তিনি বলেন, তোমার পিতা আল্লাহর জন্য কোরবান হোক! তুমি সাক্ষাত করার সময় থেকে আমি তোমাকে কোন মিথ্যা কথা বলিনি।
আমি বললাম, আপনি কি আমাকে বলেননি যে, আপনি রোযাদার? তিনি বলেন, হাঁ, আমি এই মাসে তিন দিন রোযা রেখেছি। আমার জন্য তার সওয়াব লেখা হয়েছে এবং আমার জন্য খাদ্য গ্রহণ হালাল হয়ে গেছে। (নাসাঈ, দারিমী, আহমাদ হাঃ ২১৬৬৫)
بَابُ مَنْ قَدَّمَ إِلَى ضَيْفِهِ طَعَامًا فَقَامَ يُصَلِّي
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ قَالَ: حَدَّثَنِي الْجُرَيْرِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الْعَلاَءِ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ قَعْنَبٍ قَالَ: أَتَيْتُ أَبَا ذَرٍّ فَلَمْ أُوَافِقْهُ، فَقُلْتُ لِامْرَأَتِهِ: أَيْنَ أَبُو ذَرٍّ؟ قَالَتْ: يَمْتَهِنُ، سَيَأْتِيكَ الْآنَ، فَجَلَسْتُ لَهُ، فَجَاءَ وَمَعَهُ بَعِيرَانِ، قَدْ قَطَرَ أَحَدَهُمَا بِعَجُزِ الْآخَرِ، فِي عُنُقِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا قِرْبَةٌ، فَوَضَعَهُمَا ثُمَّ جَاءَ، فَقُلْتُ: يَا أَبَا ذَرٍّ، مَا مِنْ رَجُلٍ كُنْتُ أَلْقَاهُ كَانَ أَحَبَّ إِلَيَّ لُقْيًا مِنْكَ، وَلاَ أَبْغَضَ إِلَيَّ لُقْيًا مِنْكَ، قَالَ: لِلَّهِ أَبُوكَ، وَمَا جَمَعَ هَذَا؟ قَالَ: إِنِّي كُنْتُ وَأَدْتُ مَوْءُودَةً فِي الْجَاهِلِيَّةِ أَرْهَبُ إِنْ لَقِيتُكَ أَنْ تَقُولَ: لاَ تَوْبَةَ لَكَ، لاَ مَخْرَجَ لَكَ، وَكُنْتُ أَرْجُو أَنْ تَقُولَ: لَكَ تَوْبَةٌ وَمَخْرَجٌ، قَالَ: أَفِي الْجَاهِلِيَّةِ أَصَبْتَ؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: عَفَا اللَّهُ عَمَّا سَلَفَ. وَقَالَ لِامْرَأَتِهِ: آتِينَا بِطَعَامٍ، فَأَبَتَ، ثُمَّ أَمَرَهَا فَأَبَتَ، حَتَّى ارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا، قَالَ: إِيهِ، فَإِنَّكُنَّ لاَ تَعْدُونَ مَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قُلْتُ: وَمَا قَالَ رَسُولُ اللهِ فِيهِنَّ؟ قَالَ: إِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّكَ إِنْ تُرِدْ أَنْ تُقِيمَهَا تَكْسِرُهَا، وَإِنْ تُدَارِهَا فَإِنَّ فِيهَا أَوَدًا وَبُلْغَةً، فَوَلَّتْ فَجَاءَتْ بِثَرِيدَةٍ كَأَنَّهَا قَطَاةٌ، فَقَالَ: كُلْ وَلاَ أَهُولَنَّكَ فَإِنِّي صَائِمٌ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي، فَجَعَلَ يُهَذِّبُ الرُّكُوعَ، ثُمَّ انْفَتَلَ فَأَكَلَ، فَقُلْتُ: إِنَّا لِلَّهِ، مَا كُنْتُ أَخَافُ أَنْ تَكْذِبَنِي، قَالَ: لِلَّهِ أَبُوكَ، مَا كَذَبْتُ مُنْذُ لَقِيتَنِي، قُلْتُ: أَلَمْ تُخْبِرْنِي أَنَّكَ صَائِمٌ؟ قَالَ: بَلَى، إِنِّي صُمْتُ مِنْ هَذَا الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَكُتِبَ لِي أَجْرُهُ، وَحَلَّ لِيَ الطَّعَامُ.
Nu'aym ibn Qa'nab said, "I went to Abu Dharr and did not find him at home. I asked his wife, 'Where is Abu Dharr?' 'Fetching some things for the house. He will be back presently.' I sat down to wait for him and he came with two camels. One of them was lined up behind the other and each of the camels had a waterskin on its neck. Abu Dharr took them off. Then he came and I said, 'Abu Dharr! There was no man who I desired to meet more than you and there was none that I hated to meet more than you!' He said, 'Your father belongs to Allah! How can these two be joined together?' I replied, 'In the Jahiliyya, a buried a daughter alive and I feared that I would meet you and you would say, "There is no way for you to repent. There is no way out." On the other hand, I used to hope that you would say, 'There is a way for you to repent. There is a way out."'
পরিচ্ছেদঃ ৩১৮- কারো নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করা।
৭৫৩। সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “কোন ব্যক্তির ব্যয়কৃত সর্বোত্তম দীনার (মুদ্রা) হলো সেটি যা সে তার পরিবারের জন্য খরচ করে, যা সে আল্লাহর পথের (জিহাদকারী) তার সঙ্গী-সাথীদের জন্য খরচ করে এবং যা সে আল্লাহর পথে (জিহাদে) তার জন্তুযানের জন্য খরচ করে”। অধস্তন রাবী আবু কিলাবা (রহঃ) বলেন, (ঊর্ধতন রাবী) পরিবার-পরিজনের কথা প্রথমে উল্লেখ করেছেন। যে ব্যক্তি তার ছোট ছোট সন্তান-সন্ততির জন্য ব্যয় করে মহান আল্লাহ তাদেরকে আত্মনির্ভরশীল না করা পর্যন্ত, তার চেয়ে অধিক উত্তম পুরস্কার লাভের যোগ্য আর কে হতে পারে? (মুসলিম)
بَابُ نَفَقَةِ الرَّجُلِ عَلَى أَهْلِهِ
حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ، عَنْ أَيُّوبَ ، عَنْ أَبِي قِلابَةَ ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ ، عَنْ ثَوْبَانَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ دِينَارٍ أَنْفَقَهُ الرَّجُلُ عَلَى عِيَالِهِ ، وَدِينَارٌ أَنْفَقَهُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ، وَدِينَارٌ أَنْفَقَهُ عَلَى دَابَّتِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ " ، قَالَ أَبُو قِلابَةَ : وَبَدَأَ بِالْعِيَالِ ، وَأَيُّ رَجُلٍ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنْ رَجُلٍ يُنْفِقُ عَلَى عِيَالٍ صِغَارٍ حَتَّى يُغْنِيَهُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ
Thawban reported that the Prophet, may Allah bless him and grant him peace, said, "The best dinar a man spends is the dinar which he spends on his family, the dinar which he spends on his companions in the Way of Allah, and the dinar which he spends on his riding animal in the Way of Allah."
পরিচ্ছেদঃ ৩১৮- কারো নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করা।
৭৫৪। আবু মাসউদ আল-বদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় তার পরিবার-পরিজনের জন্য যে সম্পদ ব্যয় করে তা তার জন্য দান-খয়রাত হিসেবে গণ্য। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ)
بَابُ نَفَقَةِ الرَّجُلِ عَلَى أَهْلِهِ
حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ يَزِيدَ يُحَدِّثُ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْبَدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: مَنْ أَنْفَقَ نَفَقَةً عَلَى أَهْلِهِ، وَهُوَ يَحْتَسِبُهَا، كَانَتْ لَهُ صَدَقَةً.
Abu Mas'ud al-Badri reported that the Prophet, may Allah bless him and grant him peace, said, "When someone spends something on his family and reckons its reward to be with Allah, then it is sadaqa for him."
পরিচ্ছেদঃ ৩১৮- কারো নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করা।
৭৫৫। জাবের (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে একটি দীনার আছে। তিনি বলেনঃ তা তুমি নিজের জন্য খরচ করো। সে বললো, আমার কাছে আরো একটি দীনার আছে। তিনি বলেনঃ তা তোমার খাদেমের জন্য বা সন্তানের জন্য খরচ করো। সে বললো, আমার কাছে আরো একটি আছে। তিনি বলেনঃ তা আল্লাহর পথে রেখে দাও। আর তা হচ্ছে সর্বনিকৃষ্ট দীনার। (আবু দাউদ, নাসাঈ, আহমাদ; আবু হুরায়রা সূত্রে)
بَابُ نَفَقَةِ الرَّجُلِ عَلَى أَهْلِهِ
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو رَافِعٍ إِسْمَاعِيلُ بْنُ رَافِعٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ، عِنْدِي دِينَارٌ؟ قَالَ: أَنْفِقْهُ عَلَى نَفْسِكَ، قَالَ: عِنْدِي آخَرُ، فَقَالَ: أَنْفِقْهُ عَلَى خَادِمِكَ، أَوْ قَالَ: عَلَى وَلَدِكَ، قَالَ: عِنْدِي آخَرُ، قَالَ: ضَعْهُ فِي سَبِيلِ اللهِ، وَهُوَ أَخَسُّهَا.
Jabir said, "A man said, 'Messenger of Allah, I have a dinar.' He said, 'Spend it on yourself.' The man said, 'I have another.' He said, 'Spend it on your servant (or he said, 'on your child').' The man said, 'I have another.' He said, 'Use it in the Way of Allah, but that is the least form of sadaqa.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩১৮- কারো নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করা।
৭৫৬। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি চারটি দীনারের (স্বর্ণ মুদ্রা) মধ্য থেকে একটি দীনার দীন-দুঃখীকে দান করলে, একটি দীনার দ্বারা গোলামকে দাসত্বমুক্ত করলে, একটি দীনার আল্লাহর পথে খরচ করলে এবং একটি দীনার তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করলে। এগুলোর মধ্যে যে দীনারটি তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করেছে সেটিই সবোৰ্ত্তম। (মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, আহমাদ, হাকিম, মুসনাদ আবু আওয়ানা)
بَابُ نَفَقَةِ الرَّجُلِ عَلَى أَهْلِهِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُزَاحِمِ بْنِ زُفَرَ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: أَرْبَعَةُ دَنَانِيرَ: دِينَارًا أَعْطَيْتَهُ مِسْكِينًا، وَدِينَارًا أَعْطَيْتَهُ فِي رَقَبَةٍ، وَدِينَارًا أَنْفَقْتَهُ فِي سَبِيلِ اللهِ، وَدِينَارًا أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ، أَفْضَلُهَا الَّذِي أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ.
Abu Hurayra reported that the Prophet, may Allah bless him and grant him peace, said, "There are four dinars:
a dinar which you give to a poor person, a dinar you give to free a slave, a dinar you spend in the Way of Allah, and a dinar which you spend on your family. The best of them is the dinar which you spend on your family."
পরিচ্ছেদঃ ৩১৯- প্রত্যেক জিনিসের সওয়াব আছে, এমনকি কোন ব্যক্তির নিজ স্ত্রীর মুখে তুলে দেয়া গ্রাসেও।
৭৫৭। সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেনঃ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যা-ই খরচ করো, তোমাকে তার সওয়াব অবশ্যই দেয়া হবে, এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও তার জন্যও। (বুখারী, মুসলিম)
بَابُ يُؤْجَرُ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى اللُّقْمَةُ يَرْفَعُهَا إِلَى فِي امْرَأَتِهِ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ قَالَ: حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِسَعْدٍ: إِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ أُجِرْتَ بِهَا، حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فَمِ امْرَأَتِكَ.
Sa'd ibn Abi Waqqas transmitted that the Prophet, may Allah bless him and grant him peace, said to him, "You do not spend anything by which you desire the face of Allah Almighty but that you art rewarded for it, even what you place in your wife's mouth."
পরিচ্ছেদঃ ৩২০- রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া করা।
৭৫৮। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাদের বরকতময় মহামহিম প্রভু রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে প্রতি রাতে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো? (কে আছে এমন, যে আমার কাছে দোয়া করবে এবং আমি তার দোয়া কবুল করবো)? কে আছে এমন, যে আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করবে এবং আমি তা দান করবো? কে আছে এমন, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে এবং আমি তাকে ক্ষমা করবো। -(বুখারী, মুসলিম, দারিমী)
بَابُ الدُّعَاءِ إِذَا بَقِيَ ثُلُثُ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي كُلِّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا، حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخَرُ، فَيَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ؟ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ؟ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ؟.
Abu Hurayra reported that the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, said, "Our Lord, the Blessed and Exalted, descends to the lowest heaven every night when a third of the night remains. He says, 'Who is calling on Me so that I can answer him? Who is asking Me for something so that I can give to him? "Who is asking Me for forgiveness so that I can forgive him?'"
পরিচ্ছেদঃ ৩২১- গীবতের উদ্দেশ্যে নয়, বরং পরিচয় দানের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তির এরূপ বলাঃ অমুক কৃষ্ণকায়, খর্বাকৃতি বা দীর্ঘদেহী।
৭৫৯। আবু রুহম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ছিলেন বৃক্ষতলে (হুদাইবিয়ায়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাইআতকারী সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেন, আমি তাবুকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করি। এক রাতে আমি নৈশ প্রহরায় দাঁড়ালাম। আমি তাঁর নিকটেই পাহারা দিচ্ছিলাম। আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম এবং জেগে থাকতে চেষ্টা করলাম। আমার জন্তুযান তাঁর জন্তুযানের কাছাকাছি এসে পড়লে আমার আশংকা হলো, কখন জানি আমার জন্তুযান আরও কাছাকাছি চলে এলে পাদানিতে রাখা তাঁর পায়ে আমার জন্তুযানের ধাক্কায় ব্যাথা পান। তাই আমি আমার জন্তুযানকে হটাতে থাকলাম। শেষে রাতের কোন এক অংশে আমার চোখে তন্দ্রা এলো এবং আমার জন্তুযান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্তুযানকে ধাক্কা দিলো। তখনো তাঁর পা পদানিতে ছিল এবং তা আমার পায়ের সাথে লেগে গেলো। কিন্তু তবুও আমার ঘুম ভাংলো না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ’সজাগ হও’ কথায় আমার ঘুম ছুটলো। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সামনে চলো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে গিফার গোত্রের কে কে যুদ্ধে যোগদান থেকে পেছনে রয়ে গেছে সেই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেনঃ ঐ যে গৌর বর্ণ দীর্ঘদেহী যাদের চোয়ালে সামান্য দাড়ি আছে তারা কি করেছে? আমি তাদের পেছনে থেকে যাওয়ার কথা তাঁকে জানালাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ ঐ যে কৃষ্ণবর্ণ খর্বাকৃতির লোকগুলো কি করেছে, শাবকা শাদাখ নামক পানির উৎসে যাদের পশুপাল আছে?
আমি গিফার গোত্রের মধ্যে আমার স্মৃতিচারণ করলাম, কিন্তু সেই গোত্রে তেমন কাউকে স্মরণ করতে পারলাম না। আমার স্মরণ হলো যে, তারা তো আসলাম গোত্রের লোক। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ। তারা তো আসলাম গোত্রের লোক। তিনি বলেনঃ তাদের কোন সুচতুর কর্মঠ লোককে তার জন্তুযানে আরোহণ করিয়ে আল্লাহর রাস্তায় পাঠাতে তাদের কিসে বাধা দিলো? আমার একথা চিন্তা করতে কষ্ট হয় যে, কুরাইশ বংশীয় মুহাজিরগণ, আনসারগণ, গিফার গোত্রের লোক এবং আসলাম গোত্রের কেউ যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে পিছনে থেকে যাবে। (আহমাদ হাঃ ১৯২৮২)
بَابُ قَوْلِ الرَّجُلِ: فُلانٌ جَعْدٌ، أَسْوَدُ، أَوْ طَوِيلٌ، قَصِيرٌ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَخِي أَبِي رُهْمٍ كُلْثُومُ بْنُ الْحُصَيْنِ الْغِفَارِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا رُهْمٍ، وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِينَ بَايَعُوهُ تَحْتَ الشَّجَرَةِ، يَقُولُ: غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم غَزْوَةَ تَبُوكَ، فنُمْتُ لَيْلَةً بِالأَخْضَرِ، فَصِرْتُ قَرِيبًا مِنْهُ، فَأُلْقِيَ عَلَيْنَا النُّعَاسُ، فَطَفِقْتُ أَسْتَيْقِظُ وَقَدْ دَنَتْ رَاحِلَتِي مِنْ رَاحِلَتِهِ، فَيُفْزِعُنِي دُنُوُّهَا خَشْيَةَ أَنْ تُصِيبَ رِجْلَهُ فِي الْغَرْزِ، فَطَفِقْتُ أُؤَخِّرُ رَاحِلَتِي حَتَّى غَلَبَتْنِي عَيْنِي بَعْضَ اللَّيْلِ، فَزَاحَمَتْ رَاحِلَتِي رَاحِلَةَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَرِجْلُهُ فِي الْغَرْزِ، فَأَصَبْتُ رِجْلَهُ، فَلَمْ أَسْتَيْقِظْ إِلاَّ بِقَوْلِهِ: حَسِّ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، اسْتَغْفِرْ لِي، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: سِرْ. فَطَفِقَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُنِي عَنْ مَنْ تَخَلَّفَ مِنْ بَنِي غِفَارٍ فَأُخْبِرُهُ، فَقَالَ، وَهُوَ يَسْأَلُنِي: مَا فَعَلَ النَّفْرُ الْحُمُرُ الطِّوَالُ الثِّطَاطُ؟ قَالَ: فَحَدَّثْتُهُ بِتَخَلُّفِهِمْ، قَالَ: فَمَا فَعَلَ السُّودُ الْجِعَادُ الْقِصَارُ الَّذِينَ لَهُمْ نَعَمٌ بِشَبَكَةِ شَرَخٍ؟ فَتَذَكَّرْتُهُمْ فِي بَنِي غِفَارٍ، فَلَمْ أَذْكُرْهُمْ حَتَّى ذَكَرْتُ أَنَّهُمْ رَهْطٌ مِنْ أَسْلَمَ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أُولَئِكَ مِنْ أَسْلَمَ، قَالَ: فَمَا يَمْنَعُ أَحَدَ أُولَئِكَ، حِينَ يَتَخَلَّفُ، أَنْ يَحْمِلَ عَلَى بَعِيرٍ مِنْ إِبِلِهِ امْرَءًا نَشِيطًا فِي سَبِيلِ اللهِ؟ فَإِنَّ أَعَزَّ أَهْلِي عَلَيَّ أَنْ يَتَخَلَّفَ عَنِّي الْمُهَاجِرُونَ مِنْ قُرَيْشٍ وَالأَنْصَارُ، وَغِفَارٌ وَأَسْلَمُ.
Abu Ruhm, one of the Companions of the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, who had offered his allegiance to the Prophet under the Tree [i.e. at Hudaybiyya] was heard to say, "I went on the expedition to Tabuk with the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace. While we were travelling at night at al-Akhdar, I was near to the Prophet. A deep sleepiness overcame us, but I began to wake up when my camel wandered near to the Prophet's camel. I was worried that when it came close, it would his foot in the stirrup. I began to pull my camel back, but at a certain point in the night I feel asleep. Then my camel jostled against the camel of the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, while his foot was in stirrup, hitting his foot. I did not wake up until he exclaimed, 'Ow!' I said, 'Messenger of Allah, ask for forgiveness for me!' The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, said, 'Never mind.'
পরিচ্ছেদঃ ৩২১- গীবতের উদ্দেশ্যে নয়, বরং পরিচয় দানের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তির এরূপ বলাঃ অমুক কৃষ্ণকায়, খর্বাকৃতি বা দীর্ঘদেহী।
৭৬০। আয়েশা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাত প্রার্থনা করলো। তিনি বলেনঃ গোত্রের মন্দ লোক। অতঃপর সে ভেতরে প্রবেশ করলে তিনি তার সাথে প্রসন্ন বদনে সাক্ষাত করেন। (পরে) আমি তাঁকে বললে তিনি বলেনঃ আল্লাহ অশ্লীলভাষীকে এবং অশ্লীল আচরণকারীকে পছন্দ করেন না। (বুখারী, মুসলিম)
بَابُ قَوْلِ الرَّجُلِ: فُلانٌ جَعْدٌ، أَسْوَدُ، أَوْ طَوِيلٌ، قَصِيرٌ
حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتِ: اسْتَأْذَنَ رَجُلٌ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: بِئْسَ أَخُو الْعَشِيرَةِ، فَلَمَّا دَخَلَ انْبَسَطَ إِلَيْهِ، فَقُلْتُ لَهُ؟ فَقَالَ: إِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْفَاحِشَ الْمُتَفَحِّشَ.
'A'isha said, "A man asked for permission to come in to see the Prophet, may Allah bless him and grant him peace, and the Prophet remarked, 'He is a bad brother of his tribe.' When the man came in, the Prophet was cheerful towards him. I asked the Prophet about that and he said, 'Allah does not love anyone who is obscene and coarse.'"
পরিচ্ছেদঃ ৩২১- গীবতের উদ্দেশ্যে নয়, বরং পরিচয় দানের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তির এরূপ বলাঃ অমুক কৃষ্ণকায়, খর্বাকৃতি বা দীর্ঘদেহী।
৭৬১। আয়েশা (রাঃ) বলেন, সাওদা (রাঃ) মুযদালিফার রাতে যাত্রা করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। সাওদা (রাঃ) ছিলেন মন্থর গতিসম্পন্ন স্থূলদেহী মহিলা। সুতরাং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন। (বুখারী, মুসলিম, ইবনে মাজাহ)
بَابُ قَوْلِ الرَّجُلِ: فُلانٌ جَعْدٌ، أَسْوَدُ، أَوْ طَوِيلٌ، قَصِيرٌ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: اسْتَأْذَنَتْ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَوْدَةُ لَيْلَةَ جَمْعٍ، وَكَانَتِ امْرَأَةً ثَقِيلَةً ثَبِطَةً، فَأَذِنَ لَهَا.
'A'isha said, "Sawda, who was a heavy, sluggish woman, asked for permission to come in (to see the Prophet) on the night of Jam' (Muzdalifa) and he gave her permission."
পরিচ্ছেদঃ ৩২২- যিনি মনে করেন, ঘটনা বা উপমা বর্ণনা দোষের নয়।
৭৬২। ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জিরানা নামক স্থানে গনীমতের মাল বন্টন করেন তখন সেখানে লোকজনের প্রচণ্ড ভিড় হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তাঁর কোন এক বান্দাকে এক সম্প্রদায়ের নিকট পাঠান। তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং নির্যাতন করে আহত করে। তিনি তার কপাল থেকে রক্ত মুছছেন আর বলছেনঃ “হে আল্লাহ! আমার সম্প্রদায়কে তুমি ক্ষমা করো, কেননা তারা অজ্ঞ”।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি যেন দিব্যি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখতে পাচ্ছি, তিনি সেই কপাল মোছায় রত ব্যক্তির কাহিনী বর্ণনা করছেন। (বুখারী, মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আহমাদ, ইবনে হিব্বান, মুসনাদ আবু আওয়ানা)
بَابُ مَنْ لَمْ يَرَ بِحِكَايَةِ الْخَبَرِ بَأْسًا
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: لَمَّا قَسَّمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم غَنَائِمَ حُنَيْنٍ بِالْجِعْرَانَةِ ازْدَحَمُوا عَلَيْهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: إِنَّ عَبْدًا مِنْ عِبَادِ اللهِ بَعَثَهُ اللَّهُ إِلَى قَوْمٍ، فَكَذَّبُوهُ وَشَجُّوهُ، فَكَانَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ جَبْهَتِهِ وَيَقُولُ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِي، فَإِنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ. قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُودٍ: فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَحْكِي الرَّجُلَ يَمْسَحُ عَنْ جَبْهَتِهِ.
Ibn Mas'ud said, "When the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, divided the booty of Hunayn at Ji'rana, the people crowded up against him. Then the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, said, 'Allah sent on of His slaves to a people and they rejected him and wounded him in the head. He wiped the blood from his brow, saying, "O Allah, forgive my people for they do not know."
পরিচ্ছেদঃ ৩২৩- যে ব্যক্তি মুসলিমের দোষ গোপন রাখে।
৭৬৩। আবুল হাইসাম (রহঃ) বলেন, একদল লোক উকবা ইবনে আমের (রাঃ) এর নিকট এসে বললো, আমাদের কতক প্রতিবেশী আছে, যারা মদ্যপান করে এবং বদ কাজে লিপ্ত থাকে। আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে শাসকের নিকট অভিযোগ উত্থাপন করবো? তিনি বলেন, না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ দেখতে পেয়ে তা গোপন রাখলে সে যেন জীবন্ত প্রোথিত কন্যা সন্তানকে কবর থেকে তুলে জীবন দান করলো। (আবু দাউদ, তাবারানী)
بَابُ مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ نَشِيطٍ، عَنْ كَعْبِ بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ قَالَ: جَاءَ قَوْمٌ إِلَى عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ فَقَالُوا: إِنَّ لَنَا جِيرَانًا يَشْرَبُونَ وَيَفْعَلُونَ، أَفَنَرْفَعُهُمْ إِلَى الإِمَامِ؟ قَالَ: لاَ، سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: مَنْ رَأَى مِنْ مُسْلِمٍ عَوْرَةً فَسَتَرَهَا، كَانَ كَمَنْ أَحْيَا مَوْءُودَةً مِنْ قَبْرِهَا.
Abu'l-Haytham said, "Some people came to 'Uqba ibn 'Amir and said, 'We have some neighbours who drink (wine) and behave incorrectly. Shall we bring them before the ruler?' 'No,' he replied, 'I heard the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, say, "Whoever sees the fault of a Muslim and then veils it, it is as if he brought girl buried alive back to life from her grave.''"
পরিচ্ছেদঃ ৩২৪- কোন ব্যক্তির মন্তব্য লোক ধ্বংস হয়ে গেলো।
৭৬৪। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি যদি কোন ব্যক্তিকে বলতে শোন, লোকজন ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে (বুঝবে) সে সর্বাধিক ধ্বংসপ্রাপ্ত। (মুসলিম, আবু দাউদ, মালিক, ইবনে হিব্বান, মুসনাদ আবু আওয়ানা)
بَابُ قَوْلِ الرَّجُلِ: هَلَكَ النَّاسُ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: إِذَا سَمِعْتَ الرَّجُلَ يَقُولُ: هَلَكَ النَّاسُ، فَهُوَ أَهْلَكُهُمْ.
Abu Hurayra reported that the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, said, "When you hear a man saying, 'People are destroyed,' then he has destroyed them."