পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৩. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বনী ইসরাঈলকে আদেশ দেয়া হয়েছিল, তোমরা দরজা দিয়ে অবনত মস্তকে প্রবেশ কর আর মুখে বল, ’হিত্তাতুন। (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দাও।) কিন্তু তারা এ শব্দটি পরিবর্তন করে ফেলল এবং প্রবেশ দ্বারে যেন নতজানু হতে না হয় সে জন্য তারা নিজ নিজ নিতম্বের ওপর ভর দিয়ে শহরে প্রবেশ করল আর মুখে বলল, ’হাব্বাতুন ফী শা’আরাতিন (অর্থাৎ হে আল্লাহ্! আমাদেরকে যবের দানা দাও)।
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قِيلَ لِبَنِي إِسْرَائِيلَ: ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا، وَقُولُوا حِطَّةٌ، فَبَدَّلُوا فَدَخَلُوا يَزْحَفُونَ عَلَى أَسْتَاهِهِمْ، وَقَالُوا: حَبَّةٌ فِي شَعْرَةٍ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৪. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ক্রমাগত ওয়াহী অবতীর্ণ করতে থাকেন এবং তাঁর ইন্তিকালের নিকটবর্তী সময়ে আল্লাহ্ তাআলা তাঁর প্রতি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ওয়াহী অবতীর্ণ করেন। এরপর তাঁর ওফাত হয়।
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، أَنَّ اللهَ تَعَالَى تَابَعَ عَلَى رَسُولِهِ، قَبْلَ وَفَاتِهِ حَتَّى تَوَفَّاهُ أَكْثَرَ مَا كَانَ الْوَحْيُ ثُمَّ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَعْدُ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৫. উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। এক ইয়াহুদী তাঁকে বললঃ হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনাদের কিতাবে একটি আয়াত আছে, যা আপনারা পাঠ করে থাকেন, তা যদি আমাদের ইয়াহুদী জাতির উপর অবতীর্ণ হত, তবে অবশ্যই আমরা সে দিনকে খুশীর দিন হিসেবে পালন করতাম। তিনি বললেন, কোন্ আয়াত? সে বললঃ “আজ আমাদের জন্য আমাদের দীন পরিপূর্ণ করলাম ও আমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে আমাদের দীন মনোনীত করলাম” (সূরা মায়িদাহ ৫/৩)। ’উমার (রাঃ) বললেন, এটি যে দিনে এবং যে স্থানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল তা আমরা জানি; তিনি সেদিন আরাফায় দাঁড়িয়েছিলেন এবং তা ছিল জুমুআর দিন।
حديث عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّ رَجُلاً مِنَ الْيَهُودِ قَالَ لَهُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ آيَةٌ فِي كِتَابِكُمْ تَقْرَءُونَهَا، لَوْ عَلَيْنَا، مَعْشَرَ الْيَهُودِ نَزَلَتْ، لاَتَّخَذْنَا ذلِكَ الْيَوْمَ عِيدًا قَالَ: أَيُّ آيَةٍ قَالَ (الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا) قَالَ عُمَرُ: قَدْ عَرَفْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ، وَالْمَكَانَ الَّذِي نَزَلَتْ فِيهِ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ قَائِمٌ بِعَرَفَةَ، يَوْمَ جُمُعَةٍ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৬. ’উরওয়াহ ইবনু যুবাইর (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না তাহলে অন্য মহিলাদের মধ্য হতে তোমাদের পছন্দমতো দু’জন বা তিনজন কিংবা চারজনকে বিয়ে করতে পার”- (আন-নিসাঃ ৩)। এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ’আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, আমার ভাগিনা! এ হচ্ছে সেই ইয়াতীম মেয়ের কথা, যে অভিভাবকের আশ্রয়ে থাকে এবং তার সম্পদে অংশীদার হয়। এদিকে মেয়ের ধন-রূপে মুগ্ধ হয়ে তার অভিভাবক মোহরানার ব্যাপারে সুবিচার না করে অর্থাৎ, অন্য কেউ যে পরিমাণ মোহরানা দিতে রাজী হত, তা না দিয়েই তাকে বিয়ে করতে চাইত। তাই প্রাপ্য মোহরানা আদায়ের মাধ্যমে সুবিচার না করা পর্যন্ত তাদেরকে আশ্ৰিতা ইয়াতীম বালিকাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং পছন্দমত অন্য মহিলাদেরকে বিয়ে করতে বলা হয়েছে।
উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, পরে সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর নিকট (মহিলাদের সম্পর্কে) ফাতওয়া জিজ্ঞেস করলেন তখন আল্লাহ তা’আলা আয়াত নাযিল করেন- তারা আপনার নিকট মহিলাদের সম্পর্কে ফাতওয়া জিজ্ঞেস করে, আপনি বলুন, আল্লাহই তাদের সম্পর্কে তোমাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আর ইয়াতীম মেয়েদের সম্পর্কে কিতাব হতে তোমাদেরকে পাঠ করে শোনানো হয়, তাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ রয়েছে, তা তোমরা তাদের দাও না অথচ তাদের তোমরা বিয়ে করতে চাও- (আন-নিসাঃ ১২৭)।
“আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে অন্য নারীদের মধ্যে হতে আমাদের পছন্দ মতো দু’জন বা তিনজন কিংবা চারজন বিয়ে করতে পারবে। ’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আর অপর আয়াতে আল্লাহ তা’আলার ইরশাদ এর মর্ম হল, “ধন ও রূপের স্বল্পতা হেতু তোমাদের আশ্রিতা ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি আমাদের অনাগ্রহ”। তাই ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি অনাগ্রহ সত্ত্বেও শুধু ধন-রূপের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে। অবশ্য ন্যায়সঙ্গত মোহরানা আদায় করে বিয়ে করতে পারে।
حديث عَائِشَةَ، عَنْ عُرْوَةَ ابْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّه سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ قَوْلِ اللهِ تَعَالَى (وَإِنْ خِفْتُمْ) إِلَى (وَرُبَاعَ) فَقَالَتْ: يَا ابْنَ أُخْتِي هِيَ الْيَتِيمَةُ تَكُونُ فِي حَجْرِ وَلِيِّهَا، تُشَارِكهُ فِي مَالِهِ، فَيُعْجِبُهُ مَالُهَا وَجَمَالُهَا فَيُرِيدُ وَلِيُّهَا أَنْ يَتَزَوَّجَهَا بِغَيْرِ أَنْ يُقْسِطَ فِي صَدَاقِهَا، فَيُعْطِيَهَا مِثْلَ مَا يُعْطِيهَا غَيْرُهُ فَنُهُوا أَنْ يَنْكِحُوهُنَّ إِلاَّ أَنْ يُقْسِطُوا لَهُنَّ، وَيَبْلُغُوا بِهِنَّ أَعْلَى سُنَّتِهِنَّ مِنَ الصَّدَاقِ، وَأُمِرُوا أَنْ يَنْكِحُوا مَا طَابَ لَهُمْ مِنَ النِّسَاءِ سِوَاهُنَّقَالَتْ عَائِشَةُ: ثُمَّ إِنَّ النَّاسَ اسْتَفْتَوْا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَعْدَ هذِهِ الآيَةِ فَأَنْزَلَ اللهُ (وَيَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ) إِلَى قَوْلِهِ (وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ) وَالَّذِي ذَكَرَ اللهُ أَنَّهُ يُتْلَى عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ، الآيَةُ الأُولَى الَّتِي قَالَ فِيهَا (وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا في الْيَتَامَى فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ)
قَالَتْ عَائِشَةُ: وَقَوْلُ اللهِ فِي الآيَةِ الأُخْرَى (وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ) يَعْنِي هِيَ رَغْبَةُ أَحَدِكُمْ لِيَتِيمَتِهِ الَّتِي تكُونُ فِي حَجْرِهِ، حِينَ تَكُونُ قَلِيلَةَ الْمَالِ وَالْجَمَالِ فَنُهُوا أَنْ يَنْكِحُوا مَا رَغِبُوا فِي مَالِهَا وَجَمَالِهَا مِنْ يَتَامَى النِّسَاءِ، إِلاَّ بِالْقِسْطِ، مِنْ أَجْلِ رَغْبَتِهِمْ عَنْهُنَّ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৭. আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরআনের আয়াতঃ “যে অভাবমুক্ত সে যেন নিবৃত্ত থাকে এবং যে অভাগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভােগ করে” (সূরা আন-নিসা ৪/৬)। ইয়াতীমের ঐ অভিভাবক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়, যে তার তত্ত্বাবধান করে ও তার সম্পত্তির পরিচর্যা করে, সে যদি অভাবগ্রস্ত হয়, তবে তা হতে নিয়মমাফিক খেতে পারবে।
حديث عَائِشَةَ قَالَتْ: (وَمَنْ كَانَ غَنِيًّا فَلْيَسْتَعْفِفْ، وَمَنْ كَانَ فَقِيرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوفِ) أُنْزِلَتْ فِي وَالِي الْيَتِيمِ الَّذِي يُقِيمُ عَلَيْهِ، وَيُصْلِحُ فِي مَالِهِ، إِنْ كَانَ فَقِيرًا أَكَلَ مِنْهُ بِالْمَعْرُوفِ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৮. আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। “কোন স্ত্রী যদি স্বামীর অবজ্ঞা ও উপেক্ষার ভয় করে”- (সূরা আন-নিসা ৪/১২৮) আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি (আয়িশাহ) বলেন, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর কাছে বেশী যাওয়া-আসা করত না বরং তাকে পরিত্যাগ অর্থাৎ তালাক দেয়ার ইচ্ছে পপাষণ করত। এ অবস্থায় স্ত্রী বলল, আমি তোমাকে আমার ব্যাপারে দায়মুক্ত করে দিলাম। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
حديث عَائِشَةَ (وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا) قَالَتْ: الرَّجُلُ تَكُونُ عِنْدَهُ الْمَرْأَةُ لَيْسَ بِمُسْتَكْثِرٍ مِنْهَا، يُرِيدُ أَنْ يُفَارِقَهَا فَتَقُولُ: أَجْعَلُكَ مِنْ شَأْنِي فِي حِلٍّ فَنَزَلَتْ هذِهِ الآيَةُ فِي ذَلِكَ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৮৯৯. সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, এ আয়াত সম্পর্কে কৃফাবাসীগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করল। (কেউ বলেন মানসূখ, কেউ বলেন মানসূখ নয়)। এ ব্যাপারে আমি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বললেন,(وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ) আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে এবং এটি শেষের দিকে অবতীর্ণ আয়াত; এটাকে কোন কিছু রহিত করেনি।
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ: آيَةٌ اخْتَلَفَ فِيهَا أَهْلُ الْكُوفَةِ فَرَحَلْتُ فِيهَا إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، فَسَأَلْتُهُ عَنْهَا فَقَالَ: نَزَلَتْ هذِهِ الآيَةُ (وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ) هِيَ آخِرُ مَا نَزَلَ، وَمَا نَسَخَهَا شَيْءٌ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৯০০. সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আবযা বলেন, ইবনু ’আব্বাসকে জিজ্ঞেস করা হল, আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম” এবং আল্লাহর এ বাণীঃ “এবং আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতীত, তারা তাকে হত্যা করে না” এবং “কিন্তু যারা তওবা করে” পর্যন্ত, সম্পর্কে আমিও তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি জবাবে বললেন, যখন এ আয়াত নাযিল হল তখন মক্কাহবাসী বলল, আমরা আল্লাহর সাথে শারীক করেছি, আল্লাহ্ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করেছি এবং আমরা অশ্লীল কার্যে লিপ্ত হয়েছি। তারপর তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, “যারা তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে .... আল্লাহ্ ক্ষমামীল, পরম দয়ালু ...... পর্যন্ত।
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ ابْنُ أَبْزَى: سُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى (وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ) ، وَقَوْلِهِ (وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ) حَتَّى بَلَغَ (إِلاَّ مَنْ تَابَ) فَسَأَلْتُهُ، فَقَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ قَالَ أَهْلُ مَكَّةَ: فَقَدْ عَدَلْنَا بِاللهِ وَقَتَلْنَا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ، وَأَتَيْنَا الْفَوَاحِشَ فَأَنْزَلَ اللهُ (إِلاَّ مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلاً صَالِحًا) إلى قَوْلِهِ (غَفُورًا رَحِيمًا)
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৯০১. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, (وَلاَ تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقى إِلَيْكُمُ السَّلاَمَ لَسْتَ مُؤْمِنًا)আয়াতের ঘটনা হচ্ছে এই যে, এক ব্যক্তির কিছু ছাগল ছিল, মুসলিমদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হলে সে তাদেরকে বলল আসসালামু আলাইকুম, মুসলিমরা তাকে হত্যা করল এবং তার ছাগলগুলো নিয়ে নিল, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ (عَرَضَ الْحَياةِ الدُّنْيَا) পার্থিব সম্পদের লোভে-আর সে সম্পদ হচ্ছে এ ছাগল পাল।
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنه (وَلاَ تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقى إِلَيْكُمُ السَّلاَمَ لَسْتَ مُؤْمِنًا) قَالَ: كَانَ رَجُلٌ فِي غُنَيْمَةٍ لَهُ، فَلَحِقَهُ الْمُسْلِمُونَ، فَقَالَ: السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ فَقَتَلُوهُ وَأَخَذُوا غُنَيْمَتَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ فِي ذَلِكَ، إِلَى قَوْلِهِ (عَرَضَ الْحَياةِ الدُّنْيَا) تِلْكَ الْغُنَيْمَةُ
পরিচ্ছেদঃ তাফসীর
১৯০২. বারা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এ আয়াতটি আমাদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছিল। হাজ্জ করে এসে আনসারগণ তাদের বাড়িতে সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ না করে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেন। এক আনসার ফিরে এসে তার বাড়ির সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করলে তাকে এ জন্য লজ্জা দেয়া হয়। তখনই নাযিল হয়ঃ “পশ্চাৎ দিক দিয়ে আমাদের গৃহ-প্রবেশ করাতে কোন কল্যাণ নেই। বরং কল্যাণ আছে যে তাকওয়া অবলম্বন করে। সুতরাং তোমরা (সামনের) দরজা দিয়ে গৃহে প্রবেশ কর” (সূরা আল-বাকারাহ ২/১৮৯)।
حديث الْبَرَاءِ رضي الله عنه، قَالَ: نَزَلَتْ هذِهِ الآيَةُ فِينَا كَانَتِ الأَنْصَارُ، إِذَا حَجُّوا فَجَاءُوا، لَمْ يَدْخُلُوا مِنْ قِبَلِ أَبْوَابِ بُيُوتِهِمْ، وَلكِنْ مِنْ ظُهُورِهَا فَجَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَدَخَلَ مِنْ قِبَلِ بَابِهِ، فَكَأَنَّهُ عُيِّرَ بِذلِكَ، فَنَزَلَتْ (وَلَيْسَ الْبِرُّ بِأَنْ تَأْتُوا الْبُيُوتَ مِنْ ظُهُورِهَا وَلكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقى وَأْتُوا الْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَابِهَا)
পরিচ্ছেদঃ ৫৪/৪. আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ তারা যাদেরকে ডাকে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে। (সূরাহ বানী ইসরাঈল ১৭/৫৭)।
১৯০৩. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। (إِلَى رَبِّهِمُ الْوَسِيلَةَ) তিনি আয়াতটি সম্পর্কে বলেন, কিছু মানুষ কিছু জিনের ইবাদাত করত। সেই জিনেরা তো ইসলাম গ্রহণ করে ফেলল। আর ঐ লোকজন তাদের (পুরাতন) ধর্ম আঁকড়ে রইল।
في قوله تعالى أولئك الذين يدعون يبتغون إِلى ربهم الوسيلة
حديث ابْنِ مَسْعُودٍ (إِلَى رَبِّهِمُ الْوَسِيلَةَ) قَالَ: كَانَ نَاسٌ مِنَ الإِنْسِ يَعْبُدُونَ نَاسًا مِنَ الْجِنِّ، فَأَسْلَمَ الْجِنُّ، وَتَمَسَّكَ هؤُلاَءِ بِدِينِهِمْ
পরিচ্ছেদঃ ৫৪/৫. সূরা বারা'আ (আত-তাওবা) (৯), সূরা আল-আনফাল (৮) ও সূরা আল-হাশার (৫৯)
১৯০৪. সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে সূরাহ তওবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ তো লাঞ্ছনাকারী সূরা। অর্থাৎ তাদের একদল এই করেছে, আরেক দল ওই করেছে, এ বলে একাধারে এ সূরাহ অবতীর্ণ হতে থাকলে লোকরা ধারণা করতে লাগলো যে, এ সূরায় উল্লেখ করা হবে না, এমন কেউ আর তাদের মধ্যে বাকী থাকবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাকে সূরা আনফাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ সূরাটি বদর যুদ্ধের সময় অবতীর্ণ হয়েছে। আমি তাকে সূরাহ হাশর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এটি বানী নযীর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।
في سورة براءة والأنفال والحشر
حديث ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ سَعِيدٍ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ: قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ، سُورَةُ التَّوْبَةِ قَالَ: التَّوْبَةُ هِيَ الْفَاضِحَةُ مَا زَالَتْ تَنْزِلُ (وَمِنْهُمْ، وَمِنْهُمْ) ، حَتَّى ظَنُّوا أَنَّها لَمْ تُبْقِ أَحَدًا مِنْهُمْ إِلاَّ ذُكِرَ فِيهَا قَالَ: قُلْتُ: سُورَةُ الأَنْفَالِ قَالَ: نَزَلَتْ فِي بَدْر قَالَ: قُلْتُ، سُورَةُ الْحَشْرِ قَالَ: نَزَلَتْ فِي بَنِي النَّضِيرِ
পরিচ্ছেদঃ ৫৪/৬. মাদকদ্রব্যের নিষিদ্ধতা সম্পৰ্কীয় বিধান অবতরণ।
১৯০৫. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমার (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে গিয়ে বললেন, নিশ্চয় মদ হারাম সম্পৰ্কীয় আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচটি বস্তু থেকেঃ আঙ্গুর, খেজুর, গম, যব ও মধু। আর খামর (মদ) হল তা, যা বিবেক বিলোপ করে দেয়। আর তিনটি এমন বিষয় আছে যে, আমি চাইছিলাম যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে সেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা পর্যন্ত তিনি যেন আমাদের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান। বিষয়গুলো হল, দাদা এর মীরাস, কালালা-এর ব্যাখ্যা এবং সুদের প্রকারসমূহ।
في نزول تحريم الخمر
حديث عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: خَطَبَ عُمَرُ عَلَى مِنْبَرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّهُ قَدْ نَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ وَهِيَ مِنْ خَمْسَةِ أَشْيَاءَ: الْعِنَبِ وَالتَّمْرِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالْعَسَلِ وَالْخَمْرُ مَا خَامَرَ الْعَقْلَ وَثَلاَثٌ، وَدِدْتُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يُفَارِقْنَا حَتَّى يَعْهَدَ إِلَيْنَا عَهْدًا: الْجَدُّ وَالْكَلاَلَةُ وَأَبْوَابٌ مِنْ أَبْوَابِ الرِّبَا
পরিচ্ছেদঃ ৫৪/৭. আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ এ দু’টি প্রতিদ্বন্দ্বী দল (বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীরা) তাদের প্রভুর ব্যাপারে পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হয়। (সূরাহ হজ্জ ২২/১৯)
১৯০৬. কায়স (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি আবু যার (রাঃ)-কে কসম করে বলতে শুনেছি যে, “এরা দু’টি বিবাদমান পক্ষ তারা তাদের প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্ক করে” আয়াতটি বদরের দিন পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হামযাহ, ’আলী, উবাইদা ইবনুল হারিস, রাবী’আর দুই পুত্র উতবাহ ও শায়বাহ এবং ওয়ালীদ ইবনু ’উতবার সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে।
في قوله تعالى هذان خصمان اختصموا في ربهم
حديث أَبِي ذَرٍّ عَنْ قَيْسٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ يُقْسِمُ قَسَمًا، إِنَّ هذِهِ الآيَةَ (هذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوا فِي رَبِّهِمْ) نَزَلَتْ فِي الَّذِينَ بَرَزُوا يَوْمَ بَدْرٍ: حَمْزَةَ، وَعَلِيٍّ، وَعُبَيْدَةَ بْنِ الْحَارِث، وَعُتْبَةَ وَشَيْبَةَ ابْنَيْ رَبِيعَةَ، وَالْوَلِيدِ بْنِ عُتْبَةَ