পরিচ্ছেদঃ ৪৪/১. আবু বকর আস্সিদ্দীক (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪০. আবু বাকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন গুহায় আত্মগোপন করেছিলাম তখন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললাম, যদি কাফিররা তাদের পায়ের নীচের দিকে দৃষ্টিপাত করে তবে আমাদেরকে দেখে ফেলবে। তিনি বললেন, হে আবু বাকর! ঐ দুই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার কী ধারণা আল্লাহ্ যাদের তৃতীয় জন।
من فضائل أبي بكر الصديق رضي الله عنه
حديث أَبِي بَكْرٍ رضي الله عنه، قَالَ: قُلْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَنَا فِي الْغَارِ، لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ نَظَرَ تَحْتَ قَدَمَيْهِ لأَبْصَرَنَا فَقَالَ: مَا ظَنُّكَ، يَا أَبَا بَكْرٍ بِاثْنَيْنِ اللهُ ثَالِثُهُمَا
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/১. আবু বকর আস্সিদ্দীক (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪১, আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে বসলেন এবং বললেন, আল্লাহ্ তার এক বান্দাকে দুটি বিষয়ের একটি বেছে নেয়ার অধিকার দিয়েছেন। তার একটি হল দুনিয়ার ভােগ-বিলাস আর একটি হল আল্লাহর নিকট যা রক্ষিত রয়েছে। তখন সে বান্দা আল্লাহর কাছে যা রয়েছে তাই পছন্দ করলেন। একথা শুনে, আবূ বকর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন, এবং বললেন, আমাদের পিতা-মাতাকে আপনার জন্য কুরবানী করলাম। তাঁর অবস্থা দেখে আমরা বিস্মিত হলাম। লোকরা বলতে লাগল, এ বৃদ্ধের অবস্থা দেখ, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বান্দা সম্বন্ধে খবর দিলেন যে, তাকে আল্লাহ ভােগ-সম্পদ দেওয়ার এবং তার কাছে যা রয়েছে, এ দুয়ের মধ্যে বেছে নিতে বললেন।
আর এ বৃদ্ধ বলছে, আপনার জন্য আমাদের মাতাপিতা উৎসর্গ করলাম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই হলেন সেই ইখতিয়ার প্রাপ্ত বান্দা। আর আবু বাকর (রাঃ)-ই হলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি তার সঙ্গ ও সম্পদ দিয়ে আমার প্রতি সবচেয়ে ইহসান করেছেন তিনি হলেন আবু বাকর (রঃ)। যদি আমি আমার উম্মতের কোন ব্যক্তিকে অন্তরঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করতাম তাহলে আবু বকরকেই করতাম। তবে তার সঙ্গে আমার ইসলামী ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক রয়েছে। মসজিদের দিকে আবূ বকর (রাঃ) এর দরজা ছাড়া অন্য কারো দরজা খোলা থাকবে না।
من فضائل أبي بكر الصديق رضي الله عنه
حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ، فَقَالَ: إِنَّ عَبْدًا خَيَّرَهُ اللهُ بَيْنَ أَنْ يُؤْتِيَهُ مِنْ زَهْرَهِ الدُّنْيَا مَا شَاءَ، وَبَيْنَ مَا عِنْدَهُ، فَاخْتَارَ مَا عِنْدَهُ فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ، وَقَالَ: فَدَيْنَاكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا فَعَجِبْنَا لَهُ وَقَالَ النَّاسُ: انْظُرُوا إِلَى هذَا الشَّيْخِ، يُخْبِرُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنْ عَبْدٍ خَيَّرَهُ اللهُ بَيْنَ أَنْ يُؤْتِيَهُ مِنْ زَهْرَةِ الدُّنْيَا وَبَيْنَ مَا عِنْدَهُ، وَهُوَ يَقُولُ: فَدَيْنَاكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ الْمُخَيّرَ، وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ هُوَ أَعْلَمَنَا بِه
وَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ أَمَنِّ النَّاسِ عَلَيَّ فِي صُحْبَتِهِ وَمَالِهِ أَبَا بَكْرٍ، وَلَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلاً مِنْ أُمَّتِي لاَتَّخَذْتُ أَبَا بَكْرٍ، إِلاَّ خُلَّةَ الإِسْلاَمِ لا يَبْقَيَنَّ فِي الْمَسْجِد خَوْخَةٌ إِلاَّ خَوْخَةُ أَبِي بَكْرٍ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/১. আবু বকর আস্সিদ্দীক (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪২. ’আমর ইবনু ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যাতুস সালাসিল যুদ্ধের সেনাপতি করে পাঠিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মানুষের মধ্যে কে আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয়? তিনি বললেন, ’আয়িশাহ্। আমি বললাম, পুরুষদের মধ্যে কে? তিনি বললেন, তাঁর পিতা (আবূ বকর)। আমি জিজ্ঞেস করলাম, অতঃপর কোন্ লোকটি? তিনি বললেন, উমর ইবনু খাত্তাব অতঃপর আরো কয়েকজনের নাম করলেন।
من فضائل أبي بكر الصديق رضي الله عنه
حديث عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رضي الله عنه، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَعَثَهُ عَلَى جَيْشِ ذَاتِ السَّلاَسِلِ فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ: أَيُّ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ: عَائِشَةُ فَقُلْتُ: مِنَ الرِّجَالِ قَالَ: أَبُوهَا، قُلْتُ: ثُمَّ مَنْ قَالَ: ثُمَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَعَدَّ رِجَالاً
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/১. আবু বকর আস্সিদ্দীক (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৩. যুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক স্ত্রীলোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ নিকট এল। তিনি তাকে আবার আসার জন্য বললেন। স্ত্রীলোকটি বলল, আমি এসে যদি আপনাকে না পাই তবে কী করব? এ কথা দ্বারা স্ত্রীলোকটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর প্রতি ইশারা করেছিল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি আমাকে না পাও তাহলে আবু বাকরের নিকট আসবে।
من فضائل أبي بكر الصديق رضي الله عنه
حديث جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمِ، قَالَ: أَتَتِ امْرَأَةٌ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَهَا أَنْ تَرْجِع إِلَيْهِ قَالَتْ: أَرَأَيْتَ إِنْ جِئْتُ وَلَمْ أَجِدْكَ كَأَنَّهَا تَقولُ: الْمَوْتَ قَالَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ: إِنْ لَمْ تَجِدِيني فَأْتِي أَبَا بَكْرٍ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/১. আবু বকর আস্সিদ্দীক (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৪. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত শেষে লোকজনের দিকে ঘুরে বসলেন এবং বললেন, একদা এক লোক একটি গরু হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ সেটির পিঠে চড়ে বসলো এবং ওকে প্রহার করতে লাগল। তখন গরুটি বলল, আমাদেরকে এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি, আমাদেরকে চাষাবাদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এতদশ্রবণে লোকজন বলে উঠল, সুবহানাল্লাহু! গরুও কথা বলে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এবং আবু বাকর ও উমার তা বিশ্বাস করি। অথচ তখন তাঁরা উভয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
আর এক রাখাল একদিন তার ছাগল পালের মাঝে অবস্থান করছিল, এমন সময় একটি চিতা বাঘ পালে ঢুকে একটি ছাগল নিয়ে গেল। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি উদ্ধার করে নিল। তখন বাঘটি বলল, তুমি ছাগলটি আমার থেকে কেড়ে নিলে বটে, তবে ঐদিন কে ছাগলকে রক্ষা করবে যেদিন হিংস্ৰ জন্তু ওদের আক্রমণ করবে এবং আমি ব্যতীত তাদের অন্য কোন রাখাল থাকবে না। লোকরা বলল, সুবহানাল্লাহ। চিতা বাঘ কথা বলে! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এবং আবু বকর ও ’উমার তা বিশ্বাস করি অথচ তারা উভয়েই সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
من فضائل أبي بكر الصديق رضي الله عنه
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: صَلَّى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، صَلاَةَ الصُّبْحِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: بَيْنَا رَجُلٌ يَسُوقُ بَقَرَةً إِذْ رَكِبهَا فَضَرَبَهَا فَقَالَتْ: إِنَّا لَمْ نُخْلَقْ لِهذَا؛ إِنَّمَا خُلِقْنَا لِلْحَرْثِ فَقَالَ النَّاسُ: سُبْحَانَ اللهِ بَقَرَةٌ تَكَلَّمُ فَقَالَ: فَإِنِّي أُومِنُ بِهذَا، أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَمَا هُمَا ثَمَّ وَبَيْنَمَا رَجُلٌ فِي غَنَمِهِ إِذْ عَدَا الذِّئْبُ فَذَهَبَ مِنْهَا بَشَاةٍ، فَطَلَبَ حَتَّى كَأَنَّهُ اسْتَنْقَذَهَا مِنْهُ، فَقَالَ لَهُ الذِّئْبُ: هذَا، اسْتَنْقَذْتَهَا مِنِّي، فَمَنْ لَهَا يَوْمَ السَّبُعِ، يَوْمَ لاَ رَاعِيَ لَهَا غَيْرِي فَقَالَ النَّاسُ: سُبْحَانَ اللهِ ذِئْبٌ يَتَكَلَّمُ قَالَ: فَإِنِّي أُومِنُ بِهذَا أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَمَا هُمَا ثَمَّ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৫. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমার (রাঃ)-এর লাশ খাটের উপর রাখা হল। খাটটি কাঁধে তোলে নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত লোকজন তা ঘিরে দু’আ পাঠ করছিল। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। হঠাৎ একজন আমার স্কন্ধে হাত রাখায় আমি চমকে উঠলাম। চেয়ে দেখলাম, তিনি ’আলী (রাঃ)। তিনি ’উমার (রাঃ)-এর জন্য আল্লাহর অশেষ রহমতের দুআ করছিলেন। তিনি বলছিলেন, হে ’উমার! আমার জন্য আপনার চেয়ে বেশি প্রিয় এমন কোন ব্যক্তি আপনি রেখে যাননি, যার কালের অনুসরণ করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করব। আল্লাহর কসম! আমার এ বিশ্বাস যে আল্লাহ্ আপনাকে আপনার সঙ্গীদ্বয়ের সঙ্গে রাখবেন। আমার মনে আছে, আমি অনেকবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আমি, আবু বাকর ও ’উমার গেলাম। আমি, আবু বকর ও ’উমার প্রবেশ করলাম এবং আমি, আবু বাকর ও ’উমার বাহির হলাম ইত্যাদি।
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث عَلِيٍّ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: وُضِعَ عُمَرُ عَلَى سَرِيرِهِ، فَتَكَنَّفَهُ النَّاسُ، يَدْعُونَ وَيُصَلُّونَ، قَبْلَ أَنْ يُرْفَعَ، وَأَنَا فِيهِمْ فَلَمْ يَرُعْنِي إِلاَّ رَجُلٌ آخِذٌ مِنْكِبِي؛ فَإِذَا عَلِيٌّ، فَتَرَحَّمَ عَلَى عُمَرَ وَقَالَ: مَا خَلَّفْتَ أَحَدًا أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أَلْقَى اللهَ بِمِثْلِ عَمَلِهِ مِنْكَ وَايْمُ اللهِ إِنْ كُنْتُ لأَظُنَّ أَنْ يَجْعَلَكَ اللهُ مَعَ صَاحِبَيْكَ، وَحَسِبْتُ أَنِّي كُنْتُ كَثِيرًا أَسْمَع النَّبِيَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: ذَهَبْتُ أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ، وَدَخَلْتُ أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ، وَخَرَجْتُ أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৬. আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একবার আমি নিদ্রাবস্থায় (স্বপ্নে) দেখলাম যে, লোকদেরকে আমার সামনে আনা হচ্ছে। আর তাদের পরণে রয়েছে জামা। কারো জামা বুক পর্যন্ত আর কারো জামা এর নীচ পর্যন্ত। আর ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে আমার সামনে আনা হল এমন অবস্থায় যে, তিনি তাঁর জামা (অধিক লম্বা হওয়ায়) টেনে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এর কী তা’বীর করেছেন? তিনি বললেনঃ (এ জামা অর্থ) দীন।
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ النَّاسَ يُعْرَضُونَ عَلَيَّ، وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ، مِنْهَا مَا يَبْلُغُ الثُدِيَّ، وَمِنْهَا مَا دُونَ ذَلِكَ وَعُرِضَ عَلَيَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ يَجُرُّهُ قَالُوا: فَمَا أَوَّلْتَ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: الدِّينَ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৭. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, একদা আমি নিদ্রাবস্থায় ছিলাম। তখন (স্বপ্নে) আমার নিকট এক পিয়ালা দুধ নিয়ে আসা হল। আমি তা পান করলাম। এমনকি আমার মনে হতে লাগল যে, সে পরিতৃপ্তি আমার নখ দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। অতঃপর অবশিষ্টাংশ আমি ’উমার ইবনুল-খাত্তাবকে দিলাম। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এ স্বপ্নের কী ব্যাখ্যা করেন। তিনি জবাবে বললেন, তা হল ’আল-ইলম।
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث ابْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ، أُتِيتُ بِقَدَحِ لَبَنٍ، فَشَرِبْتُ حَتَّى إِنِّي لأَرَى الرِّيَّ يَخْرُجُ فِي أَظْفَارِي ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالُوا: فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: الْعِلْمَ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৮. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে আমি আমাকে এমন একটি কূপের কিনারায় দেখতে পেলাম যেখানে বালতিও রয়েছে, আমি কূপ হতে পানি উঠালাম যে পরিমাণ আল্লাহ্ ইচ্ছে করলেন। অতঃপর বালতিটি ইবনু আবু কুহাফা নিলেন এবং এক বা দু’বালতি পানি উঠালেন। তার উঠানোতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ্ তার দুর্বলতাকে ক্ষমা করে দিবেন। অতঃপর ’উমার ইবনু খাত্তাব বালতিটি তার হাতে নিলেন। তার হাতে বালতিটির আয়তন বেড়ে গেল। পানি উঠানোতে আমি ’উমারের মত শক্তিশালী বাহাদুর ব্যক্তি কাউকে দেখিনি। শেষে মানুষ নিজ নিজ আবাসে অবস্থান নিল।
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي عَلَى قَلِيبٍ، عَلَيْهَا دَلْوٌ فَنَزَعْتُ مِنْهَا مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ أَخَذَهَا ابْنُ أَبِي قُحَافَةَ فَنَزَعَ بِهَا ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ وَفِي نَزعِهِ ضَعْفٌ، وَاللهُ يَغْفرُ لَهُ ضَعْفَهُ ثُمَّ اسْتَحَالَتْ غَرْبًا، فَأَخَذَهَا ابْنُ الْخَطَابِ، فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا مِنَ النَّاسِ يَنْزِعُ نَزْعَ عُمَرَ، حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بَعَطَنٍ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৪৯. আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম, একটি কূপের পাড়ে বড় বালতি দিয়ে পানি তুলছি। তখন আবু বকর (রাঃ) এসে এক বালতি বা দু’বালতি পানি তুললেন। তবে পানি তোলার মধ্যে তাঁর দুর্বলতা ছিল, আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন। অতঃপর ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এলেন। বালতিটি তাঁর হাতে গিয়ে বড় আকার ধারণ করল। তার মত এমন দৃঢ়ভাবে পানি উঠাতে আমি কোন তাকৎওয়ালাকেও দেখেনি। এমনকি লোকরা তৃপ্তির সাথে পানি পান করে গৃহে বিশ্রাম নিল।
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رضي الله عنهما، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أُرِيتُ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَنْزِعُ بِدَلْوٍ بَكْرَةٍ عَلَى قَلِيبِ فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ، فَنَزَعَ ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ نَزْعًا ضَعِيفًا، واللهُ يَغْفِرُ لَهُ، ثُمَّ جَاءَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ فَاسْتَحَالَتْ غَرْبًا، فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا يَفْرِي فَرِيَّهُ، حَتَّى رَوِيَ النَّاسُ وَضَرَبُوا بِعَطَنٍ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫০. জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করে একটি প্রাসাদ দেখতে পেলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, এটি কার প্রাসাদ? তাঁরা (ফেরেশতাগণ) বললেন, এ প্রাসাদটি ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর। আমি তার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলাম; কিন্তু (তিনি সেখানে উপস্থিত ’উমার (রাঃ) এর উদ্দেশে বললেন) তোমার আত্মমর্যাদাবোধ আমাকে সেখানে প্রবেশে বাধা দিল। এ কথা শুনে ’উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আপনার ক্ষেত্রেও আমি (উমার) আত্মমর্যাদাবোধ প্রকাশ করব?
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: دَخَلْت الْجَنَّةَ أَوْ أَتَيْتُ الْجَنَّةَ فَأَبْصَرْتُ قَصْرًا فَقُلْتُ: لِمَنْ هذَا قَالُوا: لِعُمَرَ ابْنِ الْخَطَّابِ فَأَرَدْتُ أَنْ أَدْخُلَهُ، فَلَمْ يَمْنَعْنِي إِلاَّ عِلْمِي بِغَيْرَتِكَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ: يَا رَسُولَ اللهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا نَبِيَّ اللهِ أَوَ عَلَيْكَ أَغَارُ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫১. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সময় আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি বললেন, আমি নিদ্রিত ছিলাম। দেখলাম আমি জান্নাতে অবস্থিত। হঠাৎ দেখলাম এক নারী একটি দালানের পাশে উযু করছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ দালানটি কার? তারা উত্তরে বললেন, ’উমারের। তখন তাঁর আত্মমর্যাদার কথা আমার স্মরণ হল। আমি পেছনের দিকে ফিরে চলে আসলাম। একথা শুনে ’উমার (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সম্মুখে কি আমার কোন মর্যাদাবোধ থাকতে পারে?
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذْ قَالَ: بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ، رَأَيْتُنِي فِي الْجَنَّةِ فَإِذَا امْرَأَةٌ تَتَوَضَّأُ إِلَى جَانِبِ قَصْرٍ، فَقُلْتُ: لِمَنْ هذَا الْقَصْرُ فَقَالُوا: لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَذَكَرْتُ غَيْرَتَهُ فَوَلَّيْتُ مُدْبرًا فَبَكَى عُمَرُ، وَقَالَ: أَعَلَيْكَ أَغَارُ يَا رَسُولَ اللهِ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫২. সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, একদা ’উমার (রাঃ) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসার অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁর সঙ্গে কয়েকজন কুরায়শ নারী কথাবার্তা বলছিল। তারা খুব উচ্চস্বরে কথা বলছিল। অতঃপর যখন উমার (রাঃ) অনুমতি চাইলেন, তারা উঠে শীঘ্র পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে অনুমতি প্রদান করলেন। তখন তিনি মুচকি হাসছিলেন। তখন ’উমার (রাঃ) বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ আপনাকে সর্বদা সহাস্য রাখুন।’ তিনি বললেন, আমার নিকট যে সব মহিলা ছিল তাদের ব্যাপারে আমি আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। তারা যখনই তোমার আওয়াজ শুনল তখনই দ্রুত পর্দার আড়ালে চলে গেল।
’উমার (রাঃ) বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকেই তাদের বেশি ভয় করা উচিত ছিল। অতঃপর তিনি মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, হে আত্মশত্ৰু মহিলাগণ! তোমরা আমাকে ভয় করছ অথচ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভয় করছ না? তারা জবাব দিল, হ্যাঁ, কারণ তুমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেয়ে অধিক কর্কশ ভাষী ও কঠোর হৃদয়ের লোক। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শপথ ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ, তুমি যে পথে চল শয়তান কখনও সে পথে চলে না বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে।”
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، قَالَ: اسْتَأْذَنَ عُمَرُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعِنْدَهُ نِسَاءٌ مِنْ قُرَيْشٍ يُكَلِّمْنَهُ، وَيَسْكَثِرْنَهُ، عَالِيَةً أَصْوَاتُهُنَّ فَلَمَّا اسْتَأْذَنَ عُمَرُ قُمْنَ يَبْتَدِرْنَ الْحِجَابَ فَأَذِنَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضْحَكُ فَقَالَ عُمَرُ: أَضْحَكَ اللهُ سِنَّكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: عَجِبْتُ مِنْ هؤُلاَءِ اللاَّتِي كُنَّ عِنْدِي فَلَمَّا سَمِعْنَ صَوْتَكَ ابْتَدَرْنَ الْحِجَابَ قَالَ عُمَرُ: فَأَنْتَ يَا رَسُولَ اللهِ كُنْتَ أَحَقَّ أَنْ يَهَبْنَ ثُمَّ قَالَ: أَيْ عَدُوَّاتٍ أَنْفُسِهِنَّ أَتَهَبْنَنِي وَلاَ تَهَبْنَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قلْنَ: نَعَمْ أَنْتَ أَفَظُّ وَأَغْلَظُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَالَّذِي نَفْسِي بَيَدِهِ مَا لَقِيَكَ الشَّيْطَانُ قَطُّ سَالِكًا فَجًّا إِلاَّ سَلَكَ فَجًّا غَيْرَ فَجِّكَ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৩. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেল, তখন তার ছেলে ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে আসলেন এবং তার পিতাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জামাটি দিয়ে কাফন দেবার আবেদন করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামা প্রদান করলেন, এরপর তিনি জানাযার সালাত আদায়ের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আবেদন জানালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযার সালাত পড়ানোর জন্য (বসা থেকে) উঠে দাঁড়ালেন, ইত্যবসরে ’উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাপড় টেনে ধরে আবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি তার জানাযার সালাত আদায় করতে যাচ্ছেন? অথচ আপনার রব আপনাকে তার জন্য দুআ করতে নিষেধ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা’আলা এ ব্যাপারে আমাকে (দু’আ) করা বা না করার সুযোগ দিয়েছেন। আর আল্লাহ তে ইরশাদ করেছেন, “তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর; যদি সত্তরবারও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর তবু আমি তাদের ক্ষমা করব না। সুতরাং আমি তার জন্য সত্তরবারের চেয়েও বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করব। উমার (রাঃ) বললেন, সে তো মুনাফিক, শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করলেন, এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি কক্ষনো তাদের জানাযার সালাত আদায় করবেন না এবং তাদের কবরের কাছেও দাঁড়াবেন না।
من فضائل عمر رضي الله تعالى عنه
حديث ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ عَبْدُ اللهِ، جَاءَ ابْنُهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلَهُ أَنْ يُعْطِيَهُ قَمِيصَهُ يُكَفِّنُ فِيهِ أَبَاهُ، فَأَعْطَاهُ ثُمَّ سَأَلَهُ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَيْهِ فَقَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، لِيُصَلِّيَ، فَقَامَ عُمَرُ فَأَخَذَ بِثَوْبِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ تُصَلِّي عَلَيْهِ وَقَدْ نَهَاكَ رَبُّكَ أَنْ تُصلِّي عَلَيْهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا خَيَّرَنِي اللهُ فَقَالَ (اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لاَ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً) وَسَأَزِيدُهُ عَلَى السَّبْعِينَ قَالَ: إِنَّهُ مُنَافِقٌ قَالَ: فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَنْزَلَ اللهُ (وَلاَ تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلاَ تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ)
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/৩. উসমান বিন আফফান (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৪. আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদীনাহর এক বাগানের ভিতর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি এসে বাগানের দরজা খুলে দেয়ার জন্য বলল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য দরজ খুলে দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি তার জন্য দরজা খুলে দিয়ে দেখলাম যে, তিনি আবু বকর (রাঃ)। তাঁকে আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেয়া সুসংবাদ দিলাম। তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন। অতঃপর আরেক ব্যক্তি এসে দরজা খোলার জন্য বললেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য দরজা খুলে দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি তার জন্য দরজা খুলে দিয়ে দেখলাম, তিনি ’উমার (রাঃ)। তাঁকে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুসংবাদ জানিয়ে দিলাম। তখন তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন। অতঃপর আর একজন দরজা খুলে দেয়ার জন্য বললেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দরজা খুলে দাও এবং তাঁকে জান্নাতের সু-সংবাদ জানিয়ে দাও। কিন্তু তার উপর ভয়ানক বিপদ আসবে। দেখলাম যে, তিনি উসমান (রাঃ)। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, আমি তাকে বললাম। তখন তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন আর বললেন, ’আল্লাহই সাহায্যকারী।
من فضائل عثمان بن عفان رضي الله عنه
حديث أَبِي مُوسى رضي الله عنه، قَالَ: كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي حَائِطٍ مِنْ حِيطَانِ الْمَدِينَةِ، فَجَاءَ رَجُلٌ فَاسْتَفْتَحَ، فَقَالَ النَبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: افْتَحْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَفَتَحْتُ لَهُ، فَإِذَا أَبُو بَكْرٍ، فَبَشَّرْتُهُ بِمَا قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَحَمِدَ اللهَ ثُمَّ جَاءَ رَجُلٌ فَاسْتَفْتَحَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: افْتَحْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بَالْجَنَّةِ فَفَتَحْتُ لَهُ، فَإِذَا هُوَ عُمَرُ فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَحَمدَ اللهَ ثُمَّ اسْتَفْتَحَ رَجُلٌ فَقَالَ لِي: افْتَحْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ عَلَى بَلْوَى تُصِيبُهُ فَإِذَا عُثْمَانُ فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَحَمِدَ اللهَ، ثُمَّ قَالَ: اللهُ الْمُسْتَعَانُ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/৩. উসমান বিন আফফান (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৫. আবু মূসা আশ’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একদা ঘরে উযূ করে বের হলেন এবং মনে মনে বললেন আমি আজ সারাদিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কাটাব, তাঁর হতে পৃথক হব না। তিনি মসজিদে গিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খবর নিলেন, সাহাবীগণ বললেন, তিনি এদিকে বেরিয়ে গেছেন, আমিও ঐ পথ ধরে তাঁর অনুসরণ করলাম। তাঁর খোঁজ জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলাম। তিনি শেষ পর্যন্ত আরীস কূপের নিকট গিয়ে পৌছলেন। আমি দরজার নিকট বসে পড়লাম। দরজাটি খেজুরের শাখা দিয়ে তৈরি ছিল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর প্রয়োজন সেরে উযূ করলেন তখন আমি তাঁর নিকটে দাঁড়ালাম এবং দেখতে পেলাম তিনি আরীস কূপের কিনারার বাঁধের মাঝখানে বসে হাঁটু পর্যন্ত পা দু’টি খুলে কূপের ভিতরে ঝুলিয়ে রেখেছেন, আমি তাঁকে সালাম করলাম এবং ফিরে এসে দরজায় বসে রইলাম এবং মনে মনে স্থির করে নিলাম যে আজ আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করব।
এ সময় আবূ বকর (রাঃ) এসে দরজায় ধাক্কা দিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আবু বাকর! আমি বললাম, অপেক্ষা করুন, আমি গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আবু বাকর (রাঃ) ভিতরে আসার অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন, ভিতরে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি ফিরে এসে আবূ বকর (রাঃ)-কে বললাম, ভিতরে আসুন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন। আবু বাকর (রাঃ) ভিতরে আসলেন এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ডানপাশে কূপের ধারে বসে দু’পায়ের কাপড় হাঁটু পর্যন্ত উঠিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মত কূপের ভিতর ভাগে পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসে পড়েন। আমি ফিরে এসে বসে পড়লাম। আমি আমার ভাইকে উযূ রত অবস্থায় রেখে এসেছিলাম। তারও আমার সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথা ছিল। তাই আমি বলতে লাগলাম, আল্লাহ যদি তার কল্যাণ চান তবে তাকে নিয়ে আসুন।
এমন সময় এক ব্যক্তি দরজা নাড়তে লাগল। আমি বললাম, কে? তিনি বললেন, আমি ’উমার ইবনু খাত্তাব। আমি বললাম, অপেক্ষা করুন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সালাম পেশ করে আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! ’উমার ইবনু খাত্তাব অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন, তাকে ভিতরে আসার অনুমতি এবং জান্নাতের সুসংবাদ জানিয়ে দাও। আমি এসে তাকে বললাম, ভিতরে আসুন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন এবং আল্লাহর রাসল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বামপাশে হাঁটু পর্যন্ত কাপড় উঠিয়ে কূপের ভিতর দিকে পা ঝুলিয়ে বসে গেলেন।
আমি আবার ফিরে আসলাম এবং বলতে থাকলাম আল্লাহ্ যদি আমার ভাইয়ের কল্যাণ চান, তবে যেন তাকে নিয়ে আসেন। অতঃপর আর এক ব্যক্তি এসে দরজা নাড়তে লাগল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে? তিনি বললেন, আমি উসমান ইবনু আফ্ফান। আমি বললাম, থামুন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে গিয়ে জানালাম। তিনি বললেন, তাকে ভিতরে আসতে বল এবং তাঁকেও জান্নাতের সু-সংবাদ দিয়ে দাও। তবে কঠিন পরীক্ষা হবে। আমি এসে বললাম, ভিতরে আসুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সু-সংবাদ দিচ্ছেন; তবে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে। তিনি ভিতরে এসে দেখলেন, কূপের ধারে খালি জায়গা নেই। তাই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে অপর এক স্থানে বসে পড়লেন।
সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) বলেছেন, আমি এর দ্বারা তাদের কবর এরূপ হবে এই অর্থ করেছি।
من فضائل عثمان بن عفان رضي الله عنه
حديث أَبِي موسى الأَشْعَرِيِّ، أَنَّهُ تَوَضَّأَ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ خَرَجَ فَقلْتُ لأَلْزَمَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلأَكُونَنَّ مَعَهُ يَوْمِي هذَا، قَالَ: فَجَاءَ الْمَسْجِدَ فَسَأَلَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا: خَرَجَ وَوَجَّهَ ههُنَا فَخَرَجْتُ عَلَى إِثْرِهِ أَسْأَلُ عَنْهُ حَتَّى دَخَلَ بِئْرَ أَرِيسٍ فَجَلَسْتُ عِنْدَ الْبَابِ، وَبَابهَا مِنْ جَرِيدٍ، حَتَّى قَضى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حَاجَتَهُ فَتَوَضَّأَ، فَقُمْتُ إِلَيْهِ، فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ عَلَى بِئْرِ أَرِيسٍ، وَتَوَسَّطَ قُفَّهَا، وَكَشَف عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلاَّهُمَا فِي الْبِئْرِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، ثُمَّ انْصَرَفْتُ فَجَلَسْتُ عِنْدَ الْبَابِ فَقُلْتُ لأَكُونَنَّ بَوَّابَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، الْيَوْمَ فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَدَفَعَ الْبَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هذَا فَقَالَ: أَبُو بَكْرٍ فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ هذَا أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأذِنُ فَقَالَ: ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَأَقْبَلْتُ حَتَّى قُلْتُ لأَبِي بَكْر: ادْخُلْ، وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَشِّرُكَ بِالْجَنَّةِ فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ، فَجَلَسَ عَنْ يِمِينِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهُ فِي الْقُفِّ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي الْبِئْرِ، كَمَا صنَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ، وَقَدْ تَركْتُ أَخِي يَتَوَضَّأُ وَيَلْحَقُنِي فَقُلْتُ: إِنْ يُرِدِ اللهُ بفُلاَنٍ خيْرًا (يُرِيدُ أَخَاهُ) يَأْتِ بِهِ فَإِذَا إِنْسَانٌ يُحَرّكُ الْبَابَ فَقُلْتُ: مَنْ هذَا فَقَالَ: عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ ثُمَّ جِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَقُلْتُ: هذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَسْتأْذِن فَقَالَ: ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَجِئْتُ، فَقُلْتُ: ادْخُلْ، وَبَشَّرَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ فَدَخَلَ فَجَلَسَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي الْقُفِّ، عَنْ يَسَارِهِ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي الْبِئْرِ ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ فَقُلْتُ: إِنْ يُرِدِ اللهُ بِفُلاَنٍ خَيْرًا يَأْتِ بِهِ فَجَاءَ إِنْسَانٌ يُحَرِّك الْبَابَ فَقُلْتُ: مَنْ هذَا فَقَالَ: عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ فَجِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ: ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ، عَلَى بَلْوَى تُصِيبهُ فَجِئْتُهُ، فَقُلْتُ لَهُ: ادْخُلْ، وَبَشَّركَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ عَلَى بَلْوَى تُصِيبُكَ فَدَخَلَ، فَوَجَدَ الْقُفَّ قَدْ مُلِى َ، فَجَلَسَ وُجَاهَهُ مِنَ الشِّقِّ الآخَر
قَالَ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ (رَاوِي الْحَدِيثِ عَنْ أَبِي مُوسى) : فَأَوَّلْتهَا قُبُورَهُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/৪. আলী বিন আবু ত্বলিব (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৬. সা’দ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুক যুদ্ধাভিযানে রওয়ানা হন। আর ’আলী (রাঃ)-কে স্বীয় স্থলাভিষিক্ত করেন। আলী (রাঃ) বলেন, আপনি কি আমাকে শিশু ও নারীদের মধ্যে ছেড়ে যাচ্ছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি এ কথায় রাযী নও যে, তুমি আমার কাছে সে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত মূসা (আঃ)’র নিকট যে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন হারূন (আঃ)। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, [হারূন (আঃ) নবী ছিলেন আর] আমার পরে কোন নবী নেই।
من فضائل عليّ بن أبي طالب رضي الله عنه
حديث سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، أَن رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرجَ إِلَى تَبُوكَ، وَاسْتَخْلَفَ عَلِيًّا فَقَالَ: أَتخَلفُنِي فِي الصِّبْيَانِ وَالنِّسَاءِ قَالَ: أَلاَ تَرْضى أَنْ تَكُونَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هارونَ مِنْ موسى إِلاَّ أَنَّهُ لَيْسَ نَبِيٌّ بَعْدِي
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/৪. আলী বিন আবু ত্বলিব (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৭. সাহ্ল ইবনু সা’আদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি খায়বারের যুদ্ধের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব যার হাতে বিজয় আসবে। অতঃপর কাকে পতাকা দেয়া হবে, সেজন্য সকলেই আশা করতে লাগলেন। পরদিন সকালে প্রত্যেকেই এ আশায় অপেক্ষা করতে লাগলেন যে, হয়ত তাকে পতাকা দেয়া হবে। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’আলী কোথায়? তাকে জানানো হলো যে, তিনি চক্ষুরোগে আক্রান্ত। তখন তিনি আলীকে ডেকে আনতে বললেন। তাকে ডেকে আনা হল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মুখের লালা তাঁর উভয় চোখে লাগিয়ে দিলেন। তৎক্ষণাৎ তিনি এমনভাবে সুস্থ হয়ে গেলেন যে, তাঁর কোন অসুখই ছিল না। তখন ’আলী (রাঃ) বললেন, আমি তাদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ লড়াই চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না তারা আমাদের মত হয়ে যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সোজা এগিয়ে যাও। তুমি তাদের প্রান্তরে উপস্থিত হলে প্রথমে তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানাও এবং তাদের কর্তব্য সম্পর্কে তাদের অবহিত কর। আল্লাহর কসম, যদি একটি ব্যক্তিও তোমার দ্বারা হিদায়াত লাভ করে, তবে তা তোমার জন্য লাল রংয়ের উটের চেয়েও উত্তম।
من فضائل عليّ بن أبي طالب رضي الله عنه
حديث سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رضي الله عنه، سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ، يَوْمَ خَيْبَرَ: لأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ رَجُلاً يَفتَحُ اللهُ عَلَى يَديْهِ فَقَامُوا يَرْجُونَ لِذلِكَ، أَيُّهُمْ يُعْطَى فَغَدَوْا وَكُلُّهُمْ يَرْجُو أَنْ يُعْطِي فَقَالَ: أَيْنَ عَلِيٌّ فَقِيلَ: يَشْتَكِي عَيْنَيْهِ فَأَمَرَ، فَدُعِي لَهُ، فَبَصَقَ فِي عَيْنَيْهِ، فَبَرَأَ مَكَانَهُ حَتَّى كَأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ بِهِ شَيْءٌ فَقَالَ: نقَاتِلُهُمْ حَتَّى يَكُونُوا مِثْلَنَا فَقَالَ: عَلَى رِسْلِكَ، حَتَّى تَنْزِلَ بِسَاحَتِهِمْ، ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الإِسْلاَمِ، وَأَخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ، فَوَاللهِ لأَنْ يُهْدَى بِكَ رَجُلٌ وَاحِدٌ خَيْرٌ لَكَ مِنْ حُمْرِ النَّعَمِ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/৪. আলী বিন আবু ত্বলিব (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৮. সালামাহ ইবনু আকওয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধে ’আলী (রাঃ) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পেছনে থেকে যান, (কারণ) তাঁর চোখে অসুখ হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, আমি কি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পিছিয়ে থাকব? অতঃপর ’আলী (রাঃ) বেরিয়ে পড়লেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে এসে মিলিত হলেন। যখন সে রাত এল, যে রাত শেষে সকালে ’আলী (রাঃ) খায়বার জয় করেছিলেন, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আগামীকাল আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব, কিংবা (বলেন) আগামীকাল এমন এক ব্যক্তি পতাকা গ্রহণ করবে যাকে আল্লাহ্ ও তার রাসূল ভালবাসেন। অথবা তিনি বলেছিলেন, যে আল্লাহ্ তাআলা ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসে। আল্লাহ্ তাআলা তারই হাতে খায়বার বিজয় দান করবেন। হঠাৎ আমরা দেখতে পেলাম যে, ’আলী (রাঃ) এসে হাজির, অথচ আমরা তাঁর আগমন আশা করিনি। তারা বললেন, এই যে ’আলী (রাঃ) চলে এসেছেন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পতাকা প্রদান করলেন। আর আল্লাহ্ তাআলা তাঁরই হাতে বিজয় দিলেন।
من فضائل عليّ بن أبي طالب رضي الله عنه
حديث سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ عَلِيٌّ رضي الله عنه تَخَلَّفَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي خَيْبَرَ، وَكَانَ بِهِ رَمَدٌ فَقَالَ: أَنَا أَتَخَلَّفُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَرَجَ عَلِيٌّ، فَلَحِقَ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا كَانَ مَسَاءُ اللَّيْلَةِ الَّتِي فَتَحَهَا فِي صَبَاحِهَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ أَوْ قَالَ: لَيَأْخُذَنَّ غَدًا رَجُلٌ يُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُولُهُ، أَوْ قَالَ: يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهُ يَفْتَحُ اللهُ عَلَيْهِ فَإِذَا نَحْنُ بِعَلِيٍّ، وَمَا نَرْجُوهُ فَقَالُوا: هذَا عَلِيٌّ فَأَعْطَاهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَفَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ ৪৪/৪. আলী বিন আবু ত্বলিব (রাঃ)-এর মর্যাদা।
১৫৫৯. সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমাহ (রাঃ)-এর গৃহে এলেন, কিন্তু ’আলী (রাঃ)-কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার চাচাত ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তাঁর মধ্যে বাদানুবাদ হওয়ায় তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার নিকট দুপুরের বিশ্রামও করেননি। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেনঃ দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বললো হে আল্লাহর রাসূল, তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন, তখন ’আলী (রাঃ) কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁর শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গেছে এবং তাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবু তুরাব’!
من فضائل عليّ بن أبي طالب رضي الله عنه
حديث سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: جَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَيْتَ فَاطِمَةَ، فَلَمْ يَجِدْ علِيًّا فِي الْبَيْتِ فَقَالَ: أَيْنَ ابْنُ عَمِّكِ قَالَتْ: كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ شَيْءٌ، فَغَاضَبَنِي، فَخَرَجَ، فَلَمْ يَقِلْ عِنْدِي فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لإِنْسَانٍ: انْظُرْ أَيْنَ هُوَ فَجَاءَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ هُوَ فِي الْمَسْجِدِ رَاقِدٌ فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ مُضْطَجِعٌ، قَدْ سَقَطَ رِدَاؤُهُ عَنْ شِقِّهِ، وَأَصَابَهُ تُرَابٌ فَجَعَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْسَحُهُ عَنْهُ، وَيَقُولُ: قُمْ أَبا تُرَابٍ قُمْ أَبَا تُرَابٍ