পরিচ্ছেদঃ ২৯/১. চুরির হাদ ও তার নিসাব (শাস্তি দানের জন্য অপরাধের সর্বনিম্ন পরিণাম)
১০৯৭. ’আয়িশাহ (রাঃ)নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ সিকি দীনার চুরি করায় হাত কাটা হবে।
حد السرقة ونصابها
حديث عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: تُقْطَعُ يَدُ السَّارِقِ فِي رُبُعِ دِينَارٍ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/১. চুরির হাদ ও তার নিসাব (শাস্তি দানের জন্য অপরাধের সর্বনিম্ন পরিণাম)
১০৯৮. আবদুল্লাহ্ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিরহাম মূল্যমানের ঢাল চুরি করার অপরাধে চোরের হাত কৰ্তন করেছেন।
حد السرقة ونصابها
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَطَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَ سارِقٍ فِي مِجَنٍّ ثَمَنُهُ ثَلاَثَةُ دَرَاهِمَ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/১. চুরির হাদ ও তার নিসাব (শাস্তি দানের জন্য অপরাধের সর্বনিম্ন পরিণাম)
১০৯৯. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চোরের উপর আল্লাহর লা’নত নিপতিত হয়, যখন সে একটি ডিম চুরি করে এবং এর জন্য তার হাত কাটা যায় এবং সে একটি রশি চুরি করে। এর জন্য তার হাত কাটা যায়।
حد السرقة ونصابها
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لَعَنَ اللهُ السَّارِقَ، يَسْرِقُ الْبَيْضَةَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ؛ وَيَسْرِقُ الْحَبْلَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/২. সম্ভ্ৰান্ত বা যে কোন বংশের চোরের হাত কাটা এবং হুদুদের ব্যাপারে সুপারিশ করার নিষিদ্ধ।
১১০০. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। মাখযূম গোত্রের এক চোর নারীর ঘটনা কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুললো। এ অবস্থায় তারা বলাবলি করতে লাগল এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কে আলাপ করতে পারে? তারা বলল, একমাত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয়তম ওসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) এ ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। উসামা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বললেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘনকারিণীর সাজা মওকুফের সুপারিশ করছ? অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবায় বললেন, আমাদের পূর্বের জাতিসমূহকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোন বিশিষ্ট লোক চুরি করত, তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অন্যদিকে যখন কোন অসহায় গরীব সাধারণ লোক চুরি করত, তখন তার উপর হদ্ জারি করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা ফাতিমাহ চুরি করত তাহলে আমি তার অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম।।
قطع السارق الشريف وغيره والنهي عن الشفاعة في الحدود
حديث عَائِشَةَ، أَنَّ قُرَيْشًا أَهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَرْأَةِ الْمَخْزُومِيَّةِ الَّتِي سَرَقَتْ، فَقَالَ: وَمَنْ يُكَلِّمُ فِيهَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: وَمَنْ يَجْتَرِى عَلَيْهِ إِلاَّ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، حِبُّ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ ثُمَّ قَامَ فَاخْتَطَبَ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا، إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ، وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ؛ وَايْمُ اللهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ ابْنَةَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ، لَقَطَعْتُ يَدَهَا
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৪. বিবাহিত যিনাকারকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা।
১১০১. ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। আর আল্লাহর অবতীর্ণ বিষয়াদির একটি ছিল রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, বুঝেছি, আয়ত্ত করেছি।* আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর মেরে হত্যা করেছেন। আমরাও তার পরে পাথর মেরে হত্যা করেছি। আমি আশংকা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর কোন লোক এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে পাথর মেরে হত্যার আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফারয ত্যাগের কারণে পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির উপর পাথর মেরে হত্যা অবধারিত, যে বিবাহিত হবার পর যিনা করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী। যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে।
رجم الثيب في الزنى
حديث عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ إِنَّ اللهَ بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْحَقِّ، وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ فَكَانَ مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ آيَةُ الرَّجْمِ، فَقَرَأْنَاهَا وَعَقَلْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا رَجَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ فَأَخْشى، إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ، أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ: وَاللهِ مَا نَجِدُ آيَةَ الرَّجْمِ فِي كِتَابِ اللهِ؛ فَيَضِلُّوا بِتَرْكِ فَرِيضَةٍ أَنْزَلَهَا اللهُ وَالرَّجْمُ فِي كِتَابِ اللهِ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى، إِذَا أُحْصِنَ، مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ، إِذَا قَامَتِ الْبَيِّنَةُ، أَوْ كَانَ الْحَبَلُ أَوِ الاعْتِرَافُ
-
* খারেজী এবং কিছু মু'তাযিলা সম্প্রদায় কোরআনে উল্লেখিত রজমের আয়াতকে অস্বীকার করে, যার তেলাওয়াত মানসুখ হলেও হুকুম অবশিষ্ট আছে। আয়াতটি হলঃ (الشيخ والشيخة إذا زنيا فارجموها ألبتة) অথচ আয়াতটি কোরআনের অংশ এবং হুকুমটি অবশিষ্ট আছে এর অনেক প্রমাণ রয়েছে।
১. আব্দুর রাজ্জাক ও ইমাম ত্ববারী ইবনে আব্বাসের সূত্রে বর্ণনা করেন: উমর (রাঃ) বলেনঃ (سَيَجِيءُ قَوْمٌ يُكَذِّبُونَ بِالرَّجْمِ)
২. সুনানে নাসায়ীতে ওবায়দুল্লাহ ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু উতবার সূত্রে উমর (রাঃ) এর হাদীসঃ (وَأَنَّ نَاسًا يَقُولُونَ : مَا بَالُ الرَّجْمِ ؟ وَإِنَّمَا فِي كِتَابِ اللَّهِ الْجَلْدُ . أَلَا قَدْ رَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ)
৩. মুয়াত্তা মালেক সায়ীদ বিন মুসায়্যিব এর সূত্রে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসঃ (إِيَّاكُمْ أَنْ تَهْلِكُوا عَنْ آيَةِ الرَّجْمِ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ لَا نَجِدُ حَدَّيْنِ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَقَدْ رَجَمَ)
৪. সহীহ বুখারীতে বর্ণিত ৬৮১৯ নং হাদীসে ইয়াহুদী পুরুষ ও একজন মহিলার রজমের ঘটনা। মায়েয বিন মালিকের রজমের ঘটনা, হাঃ ৬৮১৪, ৬৮২৪।
.
বিবাহিত এবং অবিবাহিত পুরুষ-মহিলার যেনার হুকুমঃ
* যিনাকার পুরুষ-মহিলা যদি বিবাহিত হয় তবে তাদের হুকুম হল শুধু রজম।
* পক্ষান্তরে যেনাকার পুরুষ-মহিলা যদি অবিবাহিত হয় তবে তাদের হুকুম হল একশত বেত্ৰাঘাত ও এক বছর নির্বাসন। (ফাতহুল বারী)
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৫. যে নিজেই যিনা করার কথা স্বীকার করলো।
১১০২. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এল। তিনি তখন মসজিদে ছিলেন। সে তাঁকে ডেকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যিনা করেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে কথাটি সে চারবার পুনরাবৃত্তি করল। যখন সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মধ্যে কি পাগলামীর দোষ আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও আর রজম করো।
জাবির (রাঃ) বলেন, আমি তার রজমকারীদের মধ্যে একজন ছিলাম। আমরা তাকে জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করি। পাথরের আঘাত যখন তার অসহ্য হচ্ছিল তখন সে পালাতে লাগল। আমরা হাররা নামক স্থানে তার নাগাল পেলাম। আর সেখানে তাকে রজম করলাম।
من اعترف على نفسه بالزنى
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: أَتَى رَجُلٌ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ، فَنَادَاهُ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي زَنَيْتُ فَأَعْرَضَ عَنْهُ، حتَّى رَدَّدَ عَلَيْهِ أَرْبَعَ مَرَّاتٍ؛ فَلَمَّا شَهِدَ عَلَى نَفْسِهِ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ دَعَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَبِكَ جُنُونٌ قَالَ: لاَ قَالَ: فَهَلْ أَحْصَنْتَ قَالَ: نَعَمْ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اذْهَبُوا بِهِ فَارْجُمُوهُ قَالَ جَابِرٌ: فَكُنْتُ فِيمَنْ رَجَمَهُ، فَرَجَمْنَاهُ بِالْمُصَلَّى؛ فَلَمَّا أَذْلَقَتْهُ الْحِجَارَةُ هَرَبَ، فَأَدْرَكْنَاهُ بِالْحَرَّةِ، فَرَجَمْنَاهُ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৫. যে নিজেই যিনা করার কথা স্বীকার করলো।
১১০৩. আবু হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তারা বলল, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহর রাসূল! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলল, আমার ছেলে এই ব্যক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ’ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপপাস করে নেই।
তারপর ক’জন আলিমকে জিজ্ঞেস করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার ছেলের ওপর একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ’ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ’ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যুষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করবে। সে স্বীকার করলে তাকে সে রজম করল।
من اعترف على نفسه بالزنى
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ قَالاَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَنْشُدُكَ اللهَ إِلاَّ قَضَيْتَ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ؛ فَقَامَ خَصْمُهُ، وَكَانَ أَفْقَهَ مِنْهُ، فَقَالَ: صَدَقَ، اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ، وَأْذَنْ لِيَ يَا رَسُولَ اللهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قُلْ فَقَالَ: إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا فِي أَهْلِ هذَا، فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ، فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَخَادِمٍ؛ وَإِنِّي سَأَلْتُ رِجَالاً مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي جَلْدَ مِائَةٍ وَتَغْرِيبَ عَامٍ، وَأَنَّ عَلَى امْرَأَةِ هذَا الرَجْمَ؛ فَقَالَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ: الْمِائَةَ وَالْخَادِمُ رَدٌّ عَلَيْكَ، وَعَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ؛ وَيَا أُنَيْسُ اغْدُ عَلَى امْرَأَةِ هذَا فَسَلْهَا، فَإِنِ اعْتَرَفَتْ فَارْجُمْهَا فَاعْتَرَفَتْ، فَرَجَمَهَا
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৬. ইয়াহুদী বা অন্য জিম্মিকে যিনার অপরাধে রজম করা।
১১০৪. আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। ইয়াহুদীরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে এসে বলল, তাদের একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ব্যভিচার করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পর্কে তাওরাতে কী বিধান পেয়েছ? তারা বলল, আমরা এদেরকে অপমানিত করব এবং তাদের বেত্ৰাঘাত করা হবে। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তোমরা মিথ্যা বলছ। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যার বিধান রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এসে বাহির করল এবং পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পৰ্কীয় আয়াতের উপর হাত রেখে তার আগের ও পরের আয়াতগুলো পাঠ করল। ’আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তোমার হাত সরাও। সে হাত সরাল। তখন দেখা গেল পাথর নিক্ষেপে হত্যা করার আয়াত আছে। তখন ইয়াহুদীরা বলল, হে মুহাম্মাদ! তিনি সত্যই বলছেন। তাওরাতে পাথর নিক্ষেপে হত্যার আয়াতই আছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর নিক্ষেপে দু’জনকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি ঐ পুরষটিকে মেয়েটির দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখেছি। সে মেয়েটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিল।
رجم اليهود أهل الذمة في الزنى
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ الْيَهُودَ جَاءُوا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرُوا لَهُ أَنَّ رَجُلاً مِنْهُمْ وَامْرَأَةً زَنَيَا فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا تَجِدُونَ فِي التَّوْرَاةِ فِي شَأْنِ الرَّجْمِ فَقَالُوا: نَفْضَحُهُمْ وَيُجْلَدُونَ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلاَمٍ: كَذَبْتُمْ إِنَّ فِيهَا الرَّجْمَ فَأَتَوْا بِالتَّوْرَاةِ فَنَشَرُوهَا، فَوَضَعَ أَحَدُهُمْ يَدَهُ عَلَى آيَةِ الرَّجْمِ، فَقَرَأَ مَا قَبْلَهَا وَمَا بَعْدَهَا؛ فَقَالَ لَه عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلاَمٍ: ارْفَعْ يَدكَ فَرَفَعَ يَدَهُ، فَإِذَا فِيهَا آيَةُ الرَّجْمِ فَقَالُوا: صَدَقَ يَا مُحَمَّدُ فِيهَا آيَةُ الرَّجْمِ فَأَمَرَ بِهِمَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَرُجِمَا
قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ: فَرَأَيْتُ الرَّجُلَ يَجْنَأُ عَلَى الْمَرْأَةِ، يَقِيهَا الْحِجَارَةَ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৬. ইয়াহুদী বা অন্য জিম্মিকে যিনার অপরাধে রজম করা।
১১০৫. শায়বানী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’আবদুল্লাহ ইবনু আবু আওফা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন কি? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, সূরায়ে নূর-এর আগে না পরে? তিনি বললেন, আমি অবগত নই।
رجم اليهود أهل الذمة في الزنى
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، قَالَ: سَأَلْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِي أَوْفَى، هَلْ رَجَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: نَعَمْ قُلْتُ: قَبْلَ سُورَةِ النُّورِ أَمْ بَعْدُ قَالَ: لاَ أَدْرِي
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৬. ইয়াহুদী বা অন্য জিম্মিকে যিনার অপরাধে রজম করা।
১১০৬. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি বাঁদী ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার প্রমাণিত হয়, তবে তাকে বেত্ৰাঘাত করবে। আর তিরস্কার করবে না। তারপর যদি আবার ব্যভিচার করে তবে তাকে বিক্রি করে দিবে; যদিও পশমের রশির (ন্যায় সামান্য বস্তুর) বিনিময়েও হয়।
رجم اليهود أهل الذمة في الزنى
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا، فَلْيَجْلِدْهَا وَلاَ يُثَرِّبْ، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَلْيَجْلِدْهَا وَلاَ يُثَرِّبْ، ثُمَّ إِنْ زَنَتِ الثَّالِثَةَ فَلْيبِعْهَا وَلَوْ بِحَبْلٍ مِنْ شَعَرٍ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৬. ইয়াহুদী বা অন্য জিম্মিকে যিনার অপরাধে রজম করা।
১১০৭. আবু হুরাইরাহ্ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবিবাহিতা দাসী যদি ব্যভিচার করে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যদি সে ব্যভিচার করে, তবে তাকে বেত্ৰাঘাত কর। আবার যদি সে ব্যভিচার করে আবার বেত্ৰাঘাত কর। এরপর যদি ব্যভিচার করে তবে তাকে রশির বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে দাও।
رجم اليهود أهل الذمة في الزنى
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنِ الأَمَةِ، إِذَا زَنَتْ وَلَمْ تُحْصِنْ، قَالَ: إِنْ زَنَتْ فَاجْلِدُوهَا، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَاجْلِدُوهَا، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَبِيعُوهَا وَلَوْ بِضَفِيرٍ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৮. মদখোরের শাস্তি।
১১০৮. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্ৰাঘাত করেছেন এবং জুতা মেরেছেন। আবু বাকর (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্ৰাঘাত করেছেন।
حد الخمر
حديث أَنَسٍ، قَالَ: جَلَدَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِي الْخَمْرِ، بِالْجَرِيدِ وَالنِّعَالِ؛ وَجَلَدَ أَبُو بَكْرٍ أَرْبَعِينَ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৮. মদখোরের শাস্তি।
১১০৯. আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যদি কোন অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করি আর সে তাতে মরে যায় তবে কোন দুঃখ আসে না। কিন্তু শরাব পানকারী ব্যতীত। সে যদি মারা যায় তবে তার জন্য আমি দিয়াত দিয়ে থাকি। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ শাস্তির ব্যাপারে কোন সীমা নির্ধারণ করেননি।
حد الخمر
حديث عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رضي الله عنه، قَالَ: مَا كُنْتُ لاِقِيمَ حَدًّا عَلَى أَحَدٍ فَيمُوتَ، فَأَجِدَ فِي نَفْسِي، إِلاَّ صَاحِبَ الْخَمْرِ، فَإِنَّهُ لَوْ مَاتَ وَدَيْتُهُ؛ وَذلِكَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَسُنَّهُ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/৯. সতর্ক করে দেয়ার জন্য বেত্ৰাঘাতের পরিমাণ।
১১১০. আবু বুরদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দণ্ড প্রয়োগ করা যাবে না।
قدر أسواط التعزير
حديث أَبِي بُرْدَةَ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: لاَ يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ، إِلاَّ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ الله
পরিচ্ছেদঃ ২৯/১০. হাদ জারি করাই হচ্ছে অপরাধীর জন্য কাফফারাহ।
১১১১. বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও লায়লাতুল ’আকাবার একজন নকীব ’উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাশে একজন সাহাবীর উপস্থিতিতে তিনি বলেন তোমরা আমার নিকট এ মর্মে বায়’আত গ্রহণ কর যে, আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে না এবং সৎকাজে নাফরমানী করবে না। আমাদের মধ্যে যে তা পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হলো এবং দুনিয়াতে তার শাস্তি পেয়ে গেলে, তবে তা হবে তার জন্য কাফ্ফারা। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং আল্লাহ তা অপ্রকাশিত রাখলে, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মার্জনা করবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি প্রদান করবেন। আমরা এর উপর বায়’আত গ্রহণ করলাম।
الحدود كفارات لأهلها
حديث عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ رضي الله عنه، وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا، وَهُوَ أَحَدُ النُّقَبَاءِ لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ، وَحَوْلَهُ عِصَابَةٌ مِنْ أَصْحَابِهِ: بَايِعُونِي عَلَى أَنْ لاَ تُشْرِكُوا بِاللهِ شَيْئًا وَلاَ تَسْرِقُوا وَلاَ تَزْنُوا وَلاَ تَقْتُلُوا أَوْلاَدَكُمْ وَلاَ تَأْتَوا بِبُهْتَانٍ تَفْتَرُونَهُ بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَأَرْجُلِكُمْ، وَلاَ تَعْصُوا فِي مَعْرُوفٍ، فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللهِ، وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعُوقِبَ فِي الدُّنْيَا فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَهُ، وَمَنْ أَصَابَ مِن ذَلِكَ شَيْئًا ثُمَّ سَتَرَه اللهُ، فَهُوَ إِلَى اللهِ، إِنْ شَاءَ عَفَا عَنْهُ، وَإِنْ شَاءَ عَاقَبَهُ فَبَايَعْنَاهُ عَلَى ذَلِكَ
পরিচ্ছেদঃ ২৯/১১. চতুষ্পদ জন্তুর আঘাতে, খণিজ সম্পদ উদ্ধার করতে ও কূপ খনন করতে মারা গেলে রক্তপণ নেই।
১১১২. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ চতুষ্পদ জন্তুর আঘাত দায়মুক্ত, কূপ (খননে শ্রমিকের মৃত্যুতে মালিক) দায়মুক্ত, খণি (খননে কেউ মারা গেলে মালিক) দায়মুক্ত। রিকাযে এক-পঞ্চমাংশ ওয়াজিব।
جرح العجماء والمعدن والبئر جبار
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: الْعَجْمَاءُ جُبَارٌ، وَالبِئْرُ جُبَارٌ، وَالْمَعْدِنُ جُبَارٌ، وَفِي الرِّكَازِ الْخُمُسُ