নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় রাকাআত শেষে তাশহহুদের উদ্দেশ্যে বসতেন। ফজরের ন্যায় দুই রাকাআত বিশিষ্ট ছালাত হলে দুই সাজদার মাঝখানে বসার ন্যায় পা বিছিয়ে[1] বসতেন। অনুরূপভাবে বসতেন তিন ও চার রাকআত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকেও[2] তিনি এবিষয়ে ছালাতে ক্ৰটিকারীকে নির্দেশ দিয়ে বলেনঃ
فإذا جلست في وسط الصلاة، فاطمئن، وافترش فخذك اليسرى، ثم تشهد
তুমি যখন ছালাতের মাঝামাঝিতে বসবে তখন প্রশান্তি সহকারে বসবে, বাম উরু বিছিয়ে দিবে। অতঃপর তাশাহুদ পড়বে।[3]
আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ
ونهاني خليلي عنه عن إقعاء كإقعاء الكلب
আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কুকুরের মত বসতে নিষেধ করেছেন[4] অপর হাদীছে আছে- کان ینهی عن عقبة الشیطان তিনি শয়তানের মত বসতে নিষেধ করতেন।[5]
وكان إذا قعد في التشهد وضع کفه الیمنی علی فخذه (وفي روایة : رکبته) الیمنی و وضع کفه الیسری علی فخذه ( وفي روایة : رکبته) الیسری، باسطها علیها
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহহুদের জন্য বসলে উরুর উপর ডান হাতের তালু রাখতেন, অন্য এক বর্ণনায় আছে ডান হাঁটুর উপর রাখতেন এবং বাম হাতের তালু স্বীয় উরুর উপর রাখতেন, অপর বর্ণনায় আছে বাম হাঁটুর উপর বিছিয়ে রাখতেন।[6]
کان صلى الله عليه وسلم یضع حد مرفقه الأيمن علی فخذه الیمنی
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান কনুই এর শেষাংশ[7] ডান উরুর উপর রাখতেন।[8]
نهى رجلاً وهو جالس معتمد على يده اليسرى في الصلاة فقال: (إنها صلاة اليهود) وفي لفظ : لاتجلس هكذا، إنما هذه جلسة الذين يعذبون، وفی حدیث آخر : هى قعدة المغضوب علیهم
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে ছালাতাবস্থায় বাম হাতের উপর ভর করা দেখে এই বলে নিষেধ করেন যে, এটি হচ্ছে ইয়াহুদদের ছালাত।[9] অপর শব্দে রয়েছে- এইভাবে বসবে না কেননা এটি হচ্ছে শাস্তিযোগ্য লোকেদের বসার নিয়ম[10] অপর হাদীছে রয়েছে- “এটি হচ্ছে গজবে নিপতিত লোকেদের বসার নিয়ম।”[11]
[2] নাসাঈ (১/১৭৩) ছহীহ সনদে।
[3] আবু দাউদ ও বায়হাকী উত্তম সনদে।
[4] ত্বায়ালুসী, আহমাদ, ইবনু আবী শাইবাহ, দেখুন ৫নং টীকা (পৃষ্ঠা- ১৪৩) ‘ইকুআ সম্পর্কে আবু উবাইদা ও অন্যান্যগণ বলেনঃ কোন ব্যক্তির স্বীয় নিতম্বদ্বয়কে মাটির সাথে লাগিয়ে দিয়ে গোছাদ্বয়কে দাড় করে রাখা এবং হস্তদ্বয়কে মাটিতে স্থাপন করা যেমনভাবে কুকুর বসে থাকে।
আমি বলতে চাইঃ এটি দুই সাজদার মাঝখানে ইকআ যা শরীয়ত সম্মত বলা হয়েছে তার বিপরীত যেমনটি পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে।
[5] মুসলিম, আবু উওয়ানাহ্ ও অন্যান্যগণ, এটি ইরাওয়াউল গালীল’ গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে (৩১৬)।
[6] মুসলিম ও আবু উওয়ানাহ।
[7] এখানে حد শব্দের অর্থ হচ্ছে- প্ৰান্ত, এ থেকে উদ্দেশ্য যেন এই যে, তিনি স্বীয় কনুই পার্শ্বদেশ থেকে দূরে রাখতেন না। একথা ইবনুল কাইয়িম ‘যাদুল মা’আদ’ গ্রন্থে সুস্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেছেন।
[8] ছহীহ্ ছনদে আবু দাউদ ও নাসাঈ।
[9] বাইহাকী হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। এটি, পরবর্তী হাদীছসহ আল ইরওয়া গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে। (৩৮০)
[10] উত্তম সনদে আহমাদ ও আবু দাউদ।
[11] আব্দুর রাযযাক, আব্দুল হক্ একে ছহীহ বলেছেন স্বীয় ‘আহকাম’ গ্রন্থে (১২৮৪ আমার গবেষণা সম্বলিত)