ما كان يقرؤه صلى الله عليه وسلم في الصلوات রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছালাতে যা পাঠ করতেন।

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছালাতে যে সব আয়াত ও সূরাসমূহ পাঠ করতেন তা পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ও অন্যান্য ছালাত ভেদে বিভিন্ন রকমের হত। এখানে পাঁচ ওয়াক্তের প্রথম ছালাত থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে বিশদ আলোচনা করা হলো।

১। ফজরের ছালাত (صلاة الفجر)

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) طوال المفصل দীর্ঘ বিস্তীৰ্ণ[1] সূরাগুলো পাঠ করতেন[2] কখনো সূরা ওয়াকি'আহ (৫৬ : ৯৬) ও এ ধরনের অন্য সূরা উভয় রাকাআতে পাঠ করতেন।[3] তিনি বিদায় হাজের সময় সূরা তূর থেকে (৫২ : ৪৯) পাঠ করেছিলেন।[4]

“তিনি কখনো “ক্বা-ফ’ ওয়াল কুরআ-নিল মাজীদ।” (৫০ : ৪৫) এবং এ ধরনের অন্য সূরা প্রথম রাকাআতে পাঠ করতেন।[5]

আবার কখনো قصارالمفصل নাতিদীর্ঘ সূরা যেমন إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ (৮১ : ১৫) পাঠ করতেন।[6]

একদা তিনি উভয় রাক’আতেই إِذَا زُلْزِلَ (৯৯ : ৮) পাঠ করেন। এমনকি বৰ্ণনাকারী বলেনঃ আমি বুঝতে পারলাম না যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমনটি কি ভুলক্ৰমে করলেন নাকি স্বেচ্ছায় করলেন।[7] একবার সফরাবস্থায় তিনি قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ (১১৩ : ৫) এবং قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ পাঠ করেন[8] এবং উকবা বিন আ-মির (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলেনঃ তুমি ছালাতে সূরা নাস ও সূরা ফালাক পাঠ করবে। [কেননা এ দু'টির মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনাকারীর তুলনা নাই][9]

কোন সময় তিনি এতদাপেক্ষা বেশী পাঠ করতেন, ষাট কিংবা তার উর্ধে আয়াত পাঠ করতেন।[10]

এর কোন বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি জানি না (ষাট আয়াত) এক রাকাআতে পড়তেন না দুই রাকআতে।

তিনি সূরা রুম’ (৩০ : ৬০) পাঠ করতেন।[11] আবার কখনো সূরা ‘‘ইয়াসীন” (৩৬ : ৮৩) পাঠ করতেন।[12]

এক সময় তিনি মক্কায় থাকাকালীন অবস্থায় ফজরের ছালাতে সূরা “আল মু’মিনুন' পাঠ করতে শুরু করেন, পরিশেষে যখন মূসা ও হারুন অথবা ঈসা[13] (কোন বর্ণনাকারীর সন্দেহ হয়েছে) এর উল্লেখ আসল তখন তাঁকে কাশি পেয়ে বসল। ফলে তিনি রুকূতে চলে গেলেন।[14]

কখনো তিনি “আছ-ছাফফাত” (৭৭ : ১৮২) দ্বারা ছাহাবাদেরকে ছালাত পড়াতেন।[15] তিনি জুমুআর দিনের ফজর ছালাতে প্রথম রাকাআতে আলিফ লা-ম মীম তানযিলুস সাজদাহ (৩২ : ৩০) ও দ্বিতীয় রাক‘আতে “হাল আত-আলাল ইনসান” (৭৬ : ৩১) পাঠ করতেন।[16] তিনি প্রথম রাকাআত দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাকাআত সংক্ষিপ্ত করতেন।[17]


[1] বিশুদ্ধ উক্তি অনুযায়ী সেগুলো হচ্ছে- সূরা 'কা-ফ’ থেকে নিয়ে সাতটি সূরার নাম যেমন পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।

[2] ছহীহ সনদে নাসাঈ ও আহমাদ।

[3] আহমাদ, ইবনু খুযাইমা (১/৬৯/১) হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী এতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

[4] বুখারী ও মুসলিম।

[5] মুসলিম ও তিরমিযী, এটি ও তার সাথে পরবর্তী হাদীছটি “আল ইরওয়া” গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে। (৩৪৫)

[6] মুসলিম ও আবু দাউদ।

[7] ছহীহ সনদে আবু দাউদ ও বাইহাকী, স্পষ্টতঃ যা বুঝা যায় তা এই যে, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ কাজটি ইচ্ছাকৃতই ছিল-বিধান প্রবর্তনের লক্ষ্যে।

[8] আবু দাউদ, ইবনু খুযাইমাহ (১/৬৯/২) ইবনু বিশারান “আল-আমালী” তে ও ইবনু আবী শাইবাহ (১২/১৭৬/১), হাকিম একে ছহীহ বলেছেন এবং যাহাবী এতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

[9] ছহীহ সনদে আবু দাউদ ও আহমাদ।

[10] বুখারী ও মুসলিম।

[11] উত্তম সনদে নাসাঈ, আহমাদ ও বাযযার। এটা হচ্ছে পরবর্তীকালের শেষ সিদ্ধান্ত যা “তামামুল মিন্নাহ” ও অন্যান্য কিতাবে উল্লেখিত বক্তব্যের বিপরীত। বিষয়টি যেন উপলব্ধি করা হয়।

[12] ছহীহ সনদে আহমাদ।

[13] মূসা (আলাইহিসসালাম)-এর উল্লেখ আল্লাহর এই আয়াতে রয়েছেঃ (ثُمَّ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ وَأَخَاهُ هَارُونَ بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُبِينٍ) আর ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর উল্লেখ এ থেকে চার আয়াত পরের আয়াতে রয়েছে যা হচ্ছে (وَجَعَلْنَا ابْنَ مَرْيَمَ وَأُمَّهُ آيَةً وَآوَيْنَاهُمَا إِلَىٰ رَبْوَةٍ ذَاتِ قَرَارٍ وَمَعِينٍ)

[14] বুখারী মুআল্লাকভাবে (সনদছিন্নভাবে) ও মুসলিম, এটি “ইরওয়া” তে উদ্ধৃত হয়েছে। (৩৯৭)

[15] আহমাদ, আবু ইয়ালা- উভয়েই স্বীয় মুসনদদ্বয়ে এবং মাকদিসী “আল-মুখতারা” তে।

[16] বুখারী ও মুসলিম।

[17] বুখারী ও মুসলিম।