আমার জীবন ভর আমি দেখেছি যে, যখনই আমি আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছি তখনই এর প্রধান ফল হয়েছে ক্ষতি ও অনুশোচনা। প্রথমে আমি মনে করতাম যে, যখন কেউ আমার সমালোচনা করল তখন আমার উচিত সব কিছু ঠিক ঠাক করা; হোক সে সমালোচনা মৌখিক বা লিখিত। যাহোক, অবশেষে আমি দেখতে পেলাম যে, বিপরীতটাই সত্য। নিজেকে বাঁচাতে যাওয়ার ফলে আরো শক্রতা সৃষ্টি হয়েছে এবং আমার সমালোচক ও আমার মাঝে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করার পরিবর্তে তিনি বরং আমাকে আরো বেশি দোষী করার চেষ্টা করেছেন। অবশেষে আমি এই কামনা করতাম যে, আমি যদি প্রথমে কখনও তার বিরোধিতা না করতাম (তবে কতইনা ভালো হতো) ক্ষমা করা, সহ্য করা, ধৈর্য দেখানো এবং তার মানহানিকর মন্তব্যকে অগ্রাহ্য করাই ভালো হতো। সর্বোপরি কুরআন আমাদেরকে এটাই শিক্ষা দেয়।
“ক্ষমা প্রদর্শন করো, সৎ কাজের আদেশ দাও এবং মূর্খদের (ভুলক্রটি) থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও।” (৭-সূরা আন’আমঃ আয়াত-১৯৯)
(মূর্খদেরর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার অর্থ হলো তাদের ভুল-ক্রটিকে উপক্ষো করা, ওসবের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করা এবং এসবের জন্য তাদেরকে শাস্তি না দেয়া।)
“তারা যেন (ওদেরকে) ক্ষমা করে এবং (ওদের ভুল-ক্রটিকে) উপেক্ষা করে।” (২৪-সূরা আন নূরঃ আয়াত-২২)
“তারাই (মুত্তাকী) যারা ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৩৪)
“আর যখন তারা রাগান্বিত হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়।” (৪২-সূরা আশ শুরাঃ আয়াত-৩৭)
“মূর্খরা যখন তাদেরকে মন্দ ভাষায় ডাকে বা মন্দ ভাষায় তাদের সাথে কথা বলে তখন তারা তাদের সাথে শান্তিদায়কভাবে (তথা বিনয়-নম্রতা ও ভদ্রতার সাথে) কথা বলে বা তাদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়।” (২৫-সূরা আল ফুরকানঃ আয়াত-৬৩)
“উত্তম জিনিসের মাধ্যমে মন্দকে দূর কর; তখন দেখবে যে, তোমার মাঝে ও তোমার সাথে যার শক্রতা আছে তার মাঝে অর্থাৎ তোমার মাঝে ও তোমার শক্রর মাঝে এমন মধুর সম্পর্ক হয়ে যাবে যে, যেন সে (তোমার) অন্তরঙ্গ বন্ধু।” (৪১-সূরা হা-মীম-আস সাজদাহঃ আয়াত-৩৪)
(অর্থাৎ আল্লাহ মু’মিনদেরকে আদেশ দিয়েছেন রাগের সময়ে ধৈর্য ধরতে এবং তাদের সাথে যারা খারাপ আচরণ করে তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে।) তাই, যদি আপনি কারো কাছ থেকে বিদ্বেষমূলক কথা শুনেন তবে প্রত্যুত্তর করবেন না; যদি জবাব দেন তবে এক কথায় বিপরীতে দশ কথা শুনতে হবে।