দুঃখিত হবেন না, কেননা আপনার প্রতিপালক বলেন-
أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ
“(হে মুহাম্মদ!), আমি কি আপনার বক্ষ আপনার কল্যাণে প্রশস্ত করে দেইনি?” (৯৪-সূরা আল ইনশিরাহ: আয়াত-১)
এ আয়াতের সংবাদ যারা হকপন্থী, যারা নূরের পথে চলে এবং যারা হিদায়াতের পথে চলে তাদের সবার জন্য প্রযোজ্য।
“যার অন্তর আল্লাহ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছেন, ফলে সে তার প্রভুর নূরের পথে চলে তবে কি সে ব্যক্তি (কাফেরের মতো)? অতএব, সে সব কঠোর আত্মার লোকেরা অভিশপ্ত-যারা আল্লাহর জিকিরে বিমুখ।” (৩৯-সূরা আয যুমার: আয়াত-২২)
সুতরাং, এমন সত্য বিষয় আছে, যা অন্তরকে প্রশস্ত করে এবং এমন অসত্য বিষয় আছে, যা অন্তরকে কঠোর করে।
“আর আল্লাহ্ যাকে হিদায়াত করতে চান, তার অন্তরকে তিনি ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন।” (৬-সূরা আল আন’আম: আয়াত-১২৫)
অতএব, এ ধর্ম গ্রহণ করা ও এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা এক কাজিত ও বাঞ্ছিত বিষয়, যা অনুগ্রহপ্রাপ্ত ও ধন্য লোক ছাড়া অন্য কেউ লাভ করতে পারে না।
“দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা ও ভয় করো না, নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।” (৯-সূরা তাওবা: আয়াত-৪০)
“যে সব (ঈমানদার) লোকদেরকে (কাফের) লোকেরা বলেছিল, অবশ্যই (কাফের) লোকেরা তোমাদের (বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার) জন্য জমায়েত হয়েছে, অতএব, (তোমরা মু’মিনগণ) সেই (কাফের) লোকদেরকে ভয় কর। এতে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পেল এবং তারা বলল, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি কতইনা উত্তম কর্মবিধায়ক!” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৭৩)
আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণ, অভিভাবকত্ব ও করুণাতে যাদের ঈমান বা বিশ্বাস আছে তারা (উপরোক্ত) এই আয়াতের এই কথা (আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি কতইনা উত্তম কর্মবিধায়ক!) বলে।
আমাদের পক্ষে তার যথেষ্ট হওয়া আমাদেরকে অন্যদের উপর নির্ভর করা থেকে মুক্তি দেয় এবং তার অভিভাবকত্ব আমাদেরকে রক্ষা করে।
"হে নবী (মুহাম্মদ), আপনার জন্য এবং যেসব মু’মিন আপনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করে ও আপনাদের আনুগত্য করে তাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।” (৮-সূরা আনফাল : আয়াত-৬৪)
“এবং সেই চিরঞ্জীবের উপর নির্ভর (তাওাক্কুল) কর, যিনি মৃত্যুবরণ করবেন না।” (২৫-সূরা আল ফুরকান: আয়াত-৫৮)
“এবং (হে মুহাম্মদ!) ধৈর্য ধরুন, আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আপনার ধৈর্য ধরা সম্ভব নয় এবং তাদের নিয়ে দুঃখ করবেন না। আর তারা যে চক্রান্ত করে তাতে কষ্ট পাবেন না। অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকী এবং সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।” (১৬-সূরা আন নাহল: আয়াত-১২৭-১২৮)
এ আয়াতে আল্লাহ তাদের সাথে আছেন এ কথা দ্বারা তার অনুগত বান্দাদের রক্ষণাবেক্ষণ, যত্ন, সমর্থন ও অভিভাবকত্বের এক বিশেষ রহমতের কথা বুঝানো হয়েছে। আর তাদের ঈমান, আমল ও চেষ্টার পরিমাণ মাফিকই তারা এই কল্যাণ লাভ করবে।
“অতএব, তোমরা (শক্রদের বিরুদ্ধে) দুর্বল হয়ো না এবং দুশ্চিন্তগ্রস্তও হয়ো না। আর তোমরাই (বিজয়ী হয়ে) শ্রেষ্ঠ হবে- যদি তোমরা (সত্যিকার) মু’মিন হয়ে থাক।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৩৯)
“সামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবে তারা তোমাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে। অতঃপর তাদেরকে কোনও সাহায্য করা হবে না।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১১১)
“আল্লাহ সিদ্ধান্ত করেছেন যে, অবশ্যই আমি এবং আমার রাসূলগণই বিজয়ী হবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও মহাপরাক্রমশীল।” (৫৮-সূরা আল মুজাদালা: আয়াত-২১)
“নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে আর মু’মিনদেরকে পার্থিব জীবনে এবং যে দিন সাক্ষীরা দণ্ডায়মান হবে সেদিন সাহায্য করব।” (৪০-সূরা আল মু’মিন: আয়াত-৫১)
“আর আমি আমার বিষয় আল্লাহর নিকট সমর্পণ করছি। নিশ্চয় আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি দৃষ্টি রাখেন। তাই আল্লাহ্ তাকে তাদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করলেন।” (৪০-সূরা আল মু'মিন: আয়াত-৪৪-৪৫)
“এবং আল্লাহর উপরই যেন মু’মিনগণ নির্ভর করেন।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১২২)