أَتَىٰ أَمْرُ اللَّهِ فَلَا تَسْتَعْجِلُوهُ
“আল্লাহর আদেশ আসবেই, সুতরাং তোমরা এর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড় না।” (সূরা-১৬ আন নাহল: আয়াত-১) (আল্লাহর আদেশ বলতে কিয়ামত অথবা কাফের ও মুশরিকদের শাস্তি অথবা ইসলামী আইন বুঝায়।)
যা এখনো ঘটেনি তা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হবেন না, আপনি কি ফল পাকার আগেই তা ছিড়ে ফেলাকে বুদ্ধিমানের কাজ মনে করেন? আজ আগামী দিনের কোনো বাস্তবতা নেই, তাই তা অস্তিত্বহীন। অতএব, আপনি তা নিয়ে ব্যস্ত হবেন কেন? ভবিষ্যৎ বিপর্যয় সম্বন্ধে কেন আপনার আশঙ্কা থাকতেই হবে? ভবিষ্যৎ দুর্বিপাকের দুর্ভাবনা নিয়ে আপনাকে কেন বিভোর থাকতেই হবে? বিশেষ করে যখন আপনি জানেন না যে, আপনি আগামী দিনের সুখটাই শুধু দেখতে পারবেন কিনা?
যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জানতে হবে তা এই যে, আগামী দিন অদৃশ্য জগতের এমন এক সেতু যা আমাদের সামনে না আসা পর্যন্ত আমরা তা অতিক্রম করতে পারি না। কে জানে, হয়তোবা আমরা কখনো সে সেতুর কাছে না-ও পৌছতে পারি, অথবা আমরা সেটার কাছে পৌঁছার পূর্বেই ওটা ধ্বসে যেতে পারে, অথবা আমরা হয়তো সে সেতুতে পৌছে তা নিরাপদে পার হব?
ভবিষ্যতের আশঙ্কায় বিভোর হওয়া আমাদের পক্ষে ধর্মকে অবজ্ঞা করার মতো; কেননা, ঐ আশঙ্কা এ জগতের সাথে আমাদের এক দীর্ঘকালীন সম্পর্ক থাকার কথা মনে করিয়ে দেয়, যে সম্পর্ককে একজন প্রকৃত মু’মিন পরিহার করে। এ পৃথিবীর বহু লোকই ভবিষ্যৎ দারিদ্র্য, ক্ষুধা, পীড়া ও দুর্যোগের ভয়ে অযৌক্তিকভাবে ভীত। এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা শয়তানের ধোকা মাত্র।
الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ وَاللَّهُ يَعِدُكُمْ مَغْفِرَةً مِنْهُ وَفَضْلًا
শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্র্যের ভয় দেখায় ও অশ্লীল কাজ করার আদেশ করে, অথচ আল্লাহ তার পক্ষ থেকে তোমাদেরকে ক্ষমা ও দানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।" (২-সূরা বাকারা: আয়াত-২৬৮)
অনেকেই এমন আছে যে, তারা নিজেদেরকে আগামী দিনের বুভুক্ষু (ক্ষুধার্ত) ভেবে, একমাস পরের রোগী ভেবে অথবা একশত বছর পর পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে এই কল্পিত ভয়ে কান্না করে। যে ব্যক্তি জানেনা কখন সে মরবে (অথচ আমাদের সবাইকে মরতে হবে), যে ব্যক্তির কাছে তার মৃত্যুর সময়ের কোনো ইঙ্গিত নেই- সে ব্যক্তির উচিৎ নয় নিজেকে এ ধরনের চিন্তা-ভাবনায় নিমগ্ন রাখা। যেহেতু আপনি আজকের কর্ম নিয়ে ব্যস্ত আছেন তাই ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা পরিহার করুন। এ পৃথিবীর ভাবী কল্পিতদৃশ্য নিয়ে অযৌক্তিকভাবে ব্যাপৃত (নিয়োজিত) হওয়া থেকে সাবধান হন।