এরপর ইমাম আযম বলেছেন: ‘‘মহান আল্লাহর- মহিমান্বিত হোক তাঁর নাম- বিশেষণসমূহের বিষয়ে আলিমগণ ফার্সী ভাষায় যা কিছু উল্লেখ করেছেন তা সবই বলা বৈধ, কেবলমাত্র ফার্সী ভাষায় ইয়াদ বা হাত বলা বাদে। ফার্সীতে ‘বরোয়ে খোদা’ -আয্যা ও জাল্লা- অর্থাৎ মহান আল্লাহর চেহারার ওসীলায়- এ কথা বলা যাবে, কোনোরূপ তুলনা ছাড়া এবং কোনোরূপ স্বরূপ সন্ধান ও প্রকৃতি নির্ধারণ ছাড়া।’’
আমরা জেনেছি যে, আল্লাহর বিশেষণসমূহ তুলনা ও স্বরূপ ব্যতিরেকে বাহ্যিক অর্থে বিশ্বাস করা আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতি। এখানে ইমাম আবূ হানীফা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় এ সকল বিশেষণের অনুবাদ করার মূলনীতি উল্লেখ করেছেন। অন্য ভাষায় আরবী বিশেষণটির যে আভিধানিক প্রতিশব্দ রয়েছে তা ব্যবহার করা হবে এবং তুলনা ও স্বরূপ সন্ধান ছাড়া তা বিশ্বাস করতে হবে। যেমন ওয়াজহুল্লাহ (وجه الله) অর্থ ‘রোয়ে খোদা’: ‘আল্লাহর চেহারা’ বা ‘মুখমণ্ডল’ বলা হবে। মুমিন প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস করেন যে, ‘চেহারা’ বা ‘মুখমণ্ডল’ মহান আল্লাহর একটি বিশেষণ, এর স্বরূপ আমরা জানি না এবং তা কোনো সৃষ্টির কোনো বিশেষণের সাথে তুলনীয় নয়। অন্যান্য সকল বিশেষণই এরূপ। যেমন আইন অর্থ চক্ষু, কাদাম অর্থ পদ, গাযাব অর্থ ক্রোধ, রিদা অর্থ সন্তুষ্টি, ইসতিওয়া অর্থ অধিষ্ঠান, নুযূল অর্থ অবতরণ ইত্যাদি। তবে ইয়াদ বা হাত শব্দটির ফার্সী প্রতিশব্দ ব্যবহার করতে ইমাম আযম আপত্তি করেছেন। মোল্লা আলী কারী বলেন: এ নিষেধের কারণ স্পষ্ট নয়। তবে সালফ সালিহীন সকলেই একমত যে, ইয়াদ (হস্ত) বিশেষণটি ব্যাখ্যাবিহীনভাবে গ্রহণ করতে হবে।[1]