ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) বলেছেন: ‘‘যে ব্যক্তি বলে যে, আল্লাহর কোনো সিফাত বা বিশেষণ সৃষ্ট অথবা নতুন, অথবা এ বিষয়ে সে কিছু বলতে অস্বীকার করে, অথবা এ বিষয়ে সে সন্দেহ পোষণ করে, তবে সে আল্লাহর প্রতি ঈমান-বিহীন কাফির।’’
বিশেষণের ব্যাখ্যা করা বা বাহ্যিক অর্থের বাইরে কোনো রূপক অর্থ গ্রহণ করাকেও ইমাম আবূ হানীফা বিশেষণ অস্বীকার করা বা বাতিল করার সমপর্যায়ের বলে গণ্য করেছেন। তিনি বলেছেন: ‘‘এ কথা বলা যাবে না যে, তাঁর হাত অর্থ তাঁর ক্ষমতা অথবা তাঁর নিয়ামত। কারণ এরূপ ব্যাখ্যা করার অর্থ আল্লাহর বিশেষণ বাতিল করে দেওয়া। এরূপ ব্যাখ্যা করা কাদারিয়া ও মু’তাযিলা সম্প্রদায়ের রীতি।’’
ইমাম আযমের এ কথার ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী কারী বলেন: অনুরূপভাবে মহান আল্লাহর আরশের উপর অধিষ্ঠানের (ইসতিওয়ার) ব্যাখ্যায় ক্ষমতা গ্রহণ (ইসতিলা) বলা যাবে না। কারণ এরূপ ব্যাখ্যার দ্বারা বিশেষণটিকে পুরোপুরিই বাতিল করা হয়।[1]
ইমাম আবূ হানীফা আরো বলেছেন: ‘‘তাঁর ক্রোধ ও সন্তুষ্টি তাঁর বিশেষণসমূহের দুটি বিশেষণ, কোনো স্বরূপ নির্ণয় ছাড়া। এ-ই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত-এর মত। মহান আল্লাহ ক্রোধান্বিত হন এবং সন্তুষ্ট হন। এ কথা বলা যাবে না যে, তাঁর ক্রোধ অর্থ তাঁর শাস্তি এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্থ তাঁর পুরস্কার। আল্লাহ নিজে নিজেকে যেরূপে বিশেষিত করেছেন আমরাও তাঁকে সেভাবেই বিশেষিত করি।’’
বস্ত্তত কুরআন বা হাদীসের কোনো কিছু কোনো মুসলিম সরাসরি অস্বীকার করেন না। কিন্তু অনেক সময় ব্যাখ্যার মাধ্যমে বাতিল করে দেন, যা অস্বীকার করারই নামান্তর। কোনো বিশেষণকে ব্যাখ্যা করে তার সরল অর্থের বাইরে নিয়ে যাওয়ার অর্থ বিশেষণটিকে বাতিল করা। আর এজন্যই ইমাম আবূ হানীফা ব্যাখ্যা বা রূপক অর্থ গ্রহণ করাও বিভ্রান্তি বলে উল্লেখ করেছেন।