উত্তর: যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস করবে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নূর (বা আল্লাহর যাতী নূর) মানুষ নন, তিনি গায়েবের খবর জানেন, সে আল্লাহ এবং রাসূলের সাথে কুফুরী করল। সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শত্রু, বন্ধু নয়। কেননা তার কথা আল্লাহ ও রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, সে কাফির। আল্লাহ্ বলেন,
﴿ قُلۡ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ﴾ [الكهف: ١١٠]
“আপনি বলুন, আমি তোমাদের মতোই একজন মানুষ।” [সূরা কাহাফ, আয়াত: ১১০]
আল্লাহ বলেন,
﴿قُل لَّا يَعۡلَمُ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ ٱلۡغَيۡبَ إِلَّا ٱللَّهُۚ﴾ [النمل: ٦٥]
“আসমান-জমিনে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গায়েবের খবর জানে না”। [সূরা আন-নামল. আয়াত: ৬৫]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿قُل لَّآ أَقُولُ لَكُمۡ عِندِي خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ وَلَآ أَقُولُ لَكُمۡ إِنِّي مَلَكٌۖ إِنۡ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَيَّ﴾ [الانعام: ٥٠]
“আপনি বলুন, আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমনও বলি না যে আমি ফিরিশতা। আমি তো শুধু ঐ অহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৫০]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿قُل لَّآ أَمۡلِكُ لِنَفۡسِ نَفۡعٗا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُۚ وَلَوۡ كُنتُ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ لَٱسۡتَكۡثَرۡتُ مِنَ ٱلۡخَيۡرِ وَمَا مَسَّنِيَ ٱلسُّوٓءُۚ إِنۡ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٞ وَبَشِيرٞ لِّقَوۡمٖ يُؤۡمِنُونَ﴾ [الاعراف: ١٨٨]
“আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়েবের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু কল্যাণ অর্জন করে নিতে পারতাম। ফলে আমার কোনো অমঙ্গল কখনো হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও ঈমানদারদের জন্য সুসংবাদদাতা।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮৮]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ أَنْسَى كَمَا تَنْسَوْنَ فَإِذَا نَسِيتُ فَذَكِّرُونِي»
“আমি তোমাদের মতোই একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও আমিও তেমনি ভুলে যাই। আমি ভুল করলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিও।”[1]
যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করল এ বিশ্বাসে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো-মন্দের মালিক, সে কাফির হিসেবে গণ্য হবে। আল্লাহ বলেন,
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسۡتَكۡبِرُونَ عَنۡ عِبَادَتِي سَيَدۡخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾ [غافر: ٦٠]
“তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার ইবাদাতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে প্রবেশ করবে অপমানিত অবস্থায়।” [সূরা গাফির, আয়াত: ৬০]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلۡ إِنِّي لَآ أَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا رَشَدٗا ٢١ قُلۡ إِنِّي لَن يُجِيرَنِي مِنَ ٱللَّهِ أَحَدٞ وَلَنۡ أَجِدَ مِن دُونِهِۦ مُلۡتَحَدًا﴾ [الجن: ٢١، ٢٢]
“বলুন, আমি তোমাদের ক্ষতি সাধন করার ও সুপথে আনয়ন করার মালিক নই। বলুন, আল্লাহর কবল থেকে আমাকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ব্যতীত আমি কোনো আশ্রয়স্থল পাবনা।” [সূরা জিন্ন, আয়াত: ২১-২২]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিকটাত্মীয়দেরকে বলেছেন,
«لَا أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا»
“আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারব না।”[2]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাঁর বংশধর) তাঁর কন্যা ফাতেমা ও ফুফু সাফিয়াকে একই কথা বলেছেন। যে ব্যক্তি তাকে নূরের তৈরি বলে বিশ্বাস করে, তাকে ইমাম নিয়োগ করা এবং তার পিছনে সালাত আদায় করা বৈধ নয়।
>[2] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল ওসায়া।