ব্যাংকের বিভিন্ন কার্যাবলীর মধ্যে একটি কাজ এটাও যে, ব্যাংক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক অপরিহার্য মাধ্যম। ব্যাংকের প্রতিনিধিত্ব ও মারফৎ ব্যতীত আমদানী (IMPORT) রপ্তানী (EXPORT) সম্ভব নয়।
এর বিস্তারিত বিবরণে এই বলা যায় যে, যখন কোন ব্যক্তি বহির্দেশ থেকে কোন জিনিস আমদানী (IMPORT) করতে চায়, তখন সেই দেশের বণিক এ কথার নিশ্চয়তা চায় যে, যখন সে ঈপ্সিত বস্ত্ত ক্রেতার নিকট পাঠাবে, তখন ক্রেতা সত্যসত্যই তার মূল্য আদায় করে দেবে। এ জন্যই আমদানী ও রপ্তানীকারীকে নিশ্চয়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাংক থেকে একটি জমানতনামা (যামিনপত্র) গ্রহণ করা হয়। এতে ব্যাংক বিক্রেতাকে একথার গ্যারান্টি দেয় যে, অমুক জিনিস অমুক ব্যক্তিকে বিক্রয় করা হলে মূল্য আদায়ের দায়িত্ব থাকবে ব্যাংকের উপর। একে ইংরাজীতে LETTER OF CREDIT বলা হয়। আবার সংক্ষেপে L/C বলে। ব্যাংক L/C প্রস্ত্তত করে রপ্তানীকারীর ব্যাংকে প্রেরণ করে। রপ্তানীকারীর ব্যাংককে (NEGOTIATING BANK) বলে। এবারে L/C পৌঁছনর পর ওখান (বিদেশ) থেকে মাল জাহাজে বুক করে দেওয়া হয়।
জাহাজ কোম্পানী মাল বুক হওয়ার একটি রসিদ জারী করে; যাকে BILL OF LADING (চালানি রসিদ) বলা হয়। অতঃপর রপ্তানীকারীর ব্যাংক উক্ত বিল অফ লেডিং সহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র L/C জারীকর্তা ব্যাংকে প্রেরণ করে। এবারে আমদানীকারী নিজের ব্যাংক থেকে এ সকল কাগজাদি নিয়ে ‘এল সি’র সঙ্গে মিলিয়ে দেখে। যদি কাগজাদির বিবরণ এল সির অনুরূপ হয়, তাহলে এ কাগজাদি দেখিয়ে বন্দর থেকে মাল তুলে আনে। অবশ্য ব্যাংক সাধারণতঃ উক্ত কাগজাদি আমদানীকারীকে তখনই সোপর্দ করে, যখন সে মালের যথার্থ মূল্য আদায় করে দেয়।