ঈদের খুশীর প্রধান অঙ্গ হল, ঈদের নামায। এই নামায বিধিবদ্ধ হয় হিজরীর প্রথম সনেই। এ নামায ২ রাকআত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁর জীবনের প্রত্যেক ঈদেই এ নামায আদায় করেছেন এবং পুরুষ ও মহিলা সকলকেই এ নামায আদায় করার জন্য (ঈদগাহে) বের হতে আদেশ করেছেন।[1]
সত্যানুসন্ধানী বহু উলামা ঈদের নামাযকে ওয়াজেব মনে করেন; যা কোন ওযর ছাড়া মাফ নয়। তাঁরা এর কারণ দর্শিয়ে বলেন, যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁর জীবনে প্রত্যেকটি ঈদে এ নামায আদায় করেছেন এবং কোন ঈদেই তা ত্যাগ করেন নি। মহিলাদেরকে এ নামায আদায় করার লক্ষ্যে ঘর থেকে বের হতে আদেশ করেছেন। আর আদেশ করার মানেই হল তা ওয়াজেব। তাছাড়া ঈদের নামায হল ইসলামের অন্যতম প্রতীক। আর দ্বীনের প্রতীক ওয়াজেব ছাড়া আর কি হতে পারে? যেমন ঈদ ও জুমআহ একই দিনে একত্রিত হলে এবং ঈদের নামায আদায় করলে আর জুমআহ না পড়লেও চলে। আর এ কথা বিদিত যে, কোন নফল আমল কোন ফরয আমলকে গুরুত্বহীন করতে পারে না।[2]
কিন্তু যাঁরা বলেন, ঈদের নামায ওয়াজেব নয়; বরং তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ, তাঁরা দলীলস্বরূপ সেই আরব বেদুইনের হাদীসটি পেশ করেন, যে হাদীসে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ঐ বেদুইনকে ইসলামের ফরয আমল শিক্ষা দিলেন এবং তার মধ্যে ৫ অক্ত্ নামাযও শামিল ছিল। বেদুইন তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, এ ছাড়া কি আমার উপর অন্য কিছু ফরয আছে? উত্তরে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘না, অবশ্য তুমি যদি নফল হিসাবে পড়, (তাহলে সে কথা আলাদা।)’’[3] অতএব বুঝা গেল যে, ৫ অক্ত্ নামায ছাড়া অন্য কোন নামায ফরয বা ওয়াজেব নয়।
ঈদের নামায ওয়াজেব না হলেও তার পৃথক বৈশিষ্ট্য ও বড় গুরুত্ব রয়েছে। আর আল্লাহই ভাল জানেন।
[2] (দ্রঃ মাজমূ’ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ ২৩/১৬১, কিতাবুস সালাহ, ইবনুল কাইয়্যেম ইবনুল কাইয়্যেম ১১পৃঃ, নাইলুল আওতার, ইমাম শওকানী ৩/৩১০-৩১১, আশ্শারহুল মুমতে’ ৫/১৫১, তামামুল মিন্নাহ, আল্লামা আলবানী ৩৪৪পৃঃ, ফাসিঃ মুসনিদ ১১৬পৃঃ)
[3] (বুখারী ৪৬, মুসলিম ১১নং)