রমাযানের কিয়াম জামাআতে পড়া বিধেয়; যেমন একাকী পড়াও বৈধ। তবে মসজিদে জামাআত সহকারে এই নামায আদায় করাই (অধিকাংশ উলামার মতে) উত্তম। পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে যে, রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সাহাবাদেরকে নিয়ে উক্ত নামায জামাআত সহকারে আদায় করেছেন। অবশ্য তা ফরয হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি জামাআত করে পড়া বর্জন করেছিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর ইন্তেকাল হল। তখনও ঐ নামাযের অবস্থা অনুরূপ জামাআতহীন ছিল। অনুরূপ ছিল আবূ বাকরের খিলাফতকালে এবং উমারের খিলাফতের প্রথম দিকেও একই অবস্থা ছিল। অতঃপর উমার (রাঃ) সকলকে একটি ইমামের পশ্চাতে জামাআতবদ্ধ করলেন।
আব্দুর রহমান বিন আব্দ্ আলক্বারী বলেন, একদা রমাযানের রাত্রে উমার বিন খাত্তাবের সাথে মসজিদে গেলাম; দেখলাম, লোকেরা ছিন্ন ছিন্ন বিভিন্ন জামাআতে বিভক্ত। কেউ তো একাকী নামায পড়ছে। কারো নামাযের ইক্তিদা করে কিছু লোক জামাআত করে নামায পড়ছে। তা দেখে উমার বললেন, ‘আমি মনে করি, যদি ওদেরকে একটি ক্বারী (ইমামের) পশ্চাতে জামাআতবদ্ধ করে দিই, তাহলে তা উত্তম হবে।’ অতঃপর তিনি তাতে সংকল্পবদ্ধ হয়ে উবাই বিন কা’বের ইমামতিতে সকলকে এক জামাআতবদ্ধ করলেন। তারপর আর এক রাত্রিতে আমি তাঁর সাথে বের হয়ে গেলাম। তখন লোকেরা তাদের ইমামের পশ্চাতে জামাআত সহকারে নামায পড়ছে। তা দেখে উমার বললেন, ‘এটা একটি উত্তম আবিষ্কার।’[1]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায পড়ে এবং তার নামায শেষ করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকে (ইক্তিদা করে), সেই ব্যক্তির জন্য সারা রাত্রি কিয়াম করার সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়।’’[2] এই হাদীসও প্রমাণ করে যে, তারাবীহর নামাযের জামাআত ও ইমাম আছে।
[2] (আহমাদ, মুসনাদ, সহীহ আবূ দাঊদ ১২২৭, সহীহ তিরমিযী, আলবানী ৬৪৬, সহীহ নাসাঈ, আলবানী ১৫১৪, সহীহ ইবনে মাজাহ, আলবানী ১৩২৭নং)