নবী মুবাশ্শির (ﷺ) রুকূতে স্থিরতা অবলম্বন করতেন। এ ব্যাপারে তিনি নামায ভুলকারী সাহাবীকে আদেশও করেছেন। আর তিনি বলতেন, “তোমরা তোমাদের রুকূ ও সিজদাকে পরিপূর্ণরুপে আদায় কর। সেই সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে, আমি আমার পিঠের পিছন থেকে তোমাদের রুকূ ও সিজদাহ করা দেখতে পাই। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৮৬৮নং)
তিনি এক নামাযীকে দেখলেন, সে পূর্ণরুপে রুকূ করে না, আর সিজদাহ করে ঠকঠক করে। বললেন, “যদি এই ব্যক্তি এই অবস্থায় মারা যায়, তাহলে সে মুহাম্মাদের মিল্লাত ছাড়া অন্য মিল্লাতে থাকা অবস্থায় মারা যাবে। ঠকঠক করে নামায পড়ছে; যেমন কাক ঠকঠক করে রক্ত ঠুকরে খায়! যে ব্যক্তি পূর্ণরুপে রুকূ করে না এবং ঠকঠক করে সিজদাহ করে, সে তো সেই ক্ষুধার্ত মানুষের মত, যে একটি অথবা দু’টি খেজুর খায়, যাতে তার ক্ষুধা মিটে না।” (আবু য়্যা’লা, আজুরী, বায়হাকী, ত্বাবারানী, মু’জাম, যিয়া, ইবনে আসাকির, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (ﷺ), আলবানী ১৩১পৃ:)
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, ‘আমার বন্ধু আমাকে নিষেধ করেছেন যে, আমি যেন মোরগের দানা খাওয়ার মত ঠকঠক করে নামায না পড়ি, শিয়ালের মত (নামাযে) চোরা দৃষ্টিতে (এদিক-ওদিক) না তাকাই, আর বানরের বসার মত (পায়ের রলা খাড়া করে) না বসি।’ (ত্বায়ালিসী, আহমাদ, মুসনাদ ২/২৬৫, ইবনে আবী শাইবা)
তিনি বলতেন, “সবচেয়ে নিকৃষ্ট চোর হল সেই ব্যক্তি, যে তার নামায চুরি করে।” লোকেরা বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! নামায কিভাবে চুরি করবে?’ বললেন, “পূর্ণরুপে রুকূ ও সিজদাহ না করে।” (ইবনে আবী শাইবা ২৯৬০ নং, ত্বাবা,হাকেম, মুস্তাদরাক)
একদা তিনি নামায পড়তে পড়তে দৃষ্টির কোণে দেখলেন যে, এক ব্যক্তি তার রুকূ ও সিজদায় মেরুদন্ড সোজা করে না। নামায শেষ করে তিনি বললেন, “হে মুসলিম দল! সেই নামাযীর নামায হয় না, যে রুকূ ও সিজদায় তার মেরুদন্ড সোজা করে না।” (ইবনে আবী শাইবা ২৯৫৭, ইবনে মাজাহ্, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৫৩৬ নং)
তিনি আরো বলেন, “সে নামাযীর নামায যথেষ্ট নয়, যে রুকূ ও সিজদায় তার পিঠ সোজা করে না।” (আবূদাঊদ, সুনান ৮৫৫নং, আহমাদ, মুসনাদ)
রুকূর গুরুত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি একটি রুকূ অথবা সিজদাহ করে, সে ব্যক্তির তার বিনিময়ে একটি মর্যাদা উন্নত হয় এবং একটি পাপ মোচন হয়ে যায়।” (আহমাদ, মুসনাদ,বাযযার,দারেমী, সুনান,সহিহ তারগিব ৩৮৫নং)