আমরা আগেই বলেছি, এ সামান্য কিছু অকারণ গণহত্যা দাউদের হত্যাকাণ্ড-র অতি সামান্য অংশ। মূলত তাঁর মূল হত্যাকাণ্ডগুলো ছিল যুদ্ধ কেন্দ্রিক। রাষ্ট্র থাকলেই যুদ্ধের সম্ভাবনা থাকে। আর যুদ্ধ হলেই কিছু হতাহত হতেই পারে। তবে ঈশ্বরের পুত্র (ইবনুল্লাহ), প্রথম পুত্র, একজাত পুত্র, মাসীহ, নবী ও রাজা দাউদের জীবনের যুদ্ধগুলো বাইবেলের অন্যান্য নবী, শাসক ও বীরদের যুদ্ধের মতই হত্যার মহোৎসব। এখানে যুদ্ধের প্রয়োজনে হত্যার চেয়ে হত্যার প্রয়োজনে যুদ্ধের চিত্রই ভেসে ওঠে। সামান্য কয়েকটা নমুনা লক্ষ্য করুন:
(ক) অযুত অযুত হত্যা
তালুতের সৈন্য হিসেবে দাউদ যুদ্ধ করলেন। যুদ্ধে তিনি হত্যা করতেন লক্ষ লক্ষ শত্রু। বাইবেলের বর্ণনায় তিনি হয়ে গেলেন ‘কিলিং মেশিন’ বা ‘হত্যা যন্ত্র’। তাঁর শত্রু হত্যা তালুতের রাজ্যে প্রবাদে পরিণত হল। বাইবেল বলছে: ‘‘দাউদ সেই ফিলিস্তিনী জালুতকে হত্যা করবার পর লোকেরা যখন বাড়ী ফিরে আসছিল তখন ইসরাইলের সমস্ত গ্রাম ও শহর থেকে মেয়েরা নেচে নেচে আনন্দের গান গেয়ে এবং খঞ্জনী ও তিনতারা বাজাতে বাজাতে বাদশাহ তালুতকে সালাম জানাতে বের হয়ে আসল। তারা নাচতে নাচতে এই গান গাইছিল, ‘তালুত মারলেন হাজার হাজার আর দাউদ মারলেন অযুত অযুত।’’ (১ শামুয়েল ১৮/৬)
(খ) বাইশ হাজার হত্যা
রাজা হওয়ার পর দাউদ শুধু যুদ্ধ করতেন ও হত্যা করতেন: ‘‘দামেস্কের সিরীয়রা যখন সোবার বাদশাহ হদদেষরকে সাহায্য করতে আসল তখন দাউদ তাদের বাইশ হাজার লোককে হত্যা করলেন।’’ (২ শামুয়েল ৮/৫)
(গ) আঠারো হাজার হত্যা
‘‘দাউদ লবণ-উপত্যকার আঠার হাজার সিরীয়কে হত্যা করে ফিরে আসলে পর চারিদিকে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ল।’’ (২ শামুয়েল ৮/১৩)
(ঘ) চল্লিশ হাজার সাত শত হত্যা
অম্মোনীয়দের সাথে যুদ্ধে তিনি হত্যা করলেন ৪০,৭০০: ‘‘কিন্তু বনি-ইসরাইলদের সামনে থেকে তারা পালিয়ে গেল। তখন দাউদ তাদের সাতশো রথচালক ও চল্লিশ হাজার ঘোড়সওয়ারকে হত্যা করলেন।’’ (২ শামুয়েল ১০/১৮)
(ঙ) সাতচল্লিশ হাজার হত্যা
দাউদ ৪৭,০০০ সৈন্য হত্যা করলেন: ‘‘কিন্তু বনি-ইসরাইলদের সামনে থেকে তারা পালিয়ে গেল। তখন দাউদ তাদের সাত হাজার রথ চালক এবং চল্লিশ হাজার পদাতিক সৈন্য হত্যা করলেন।’’ (১ খান্দাননামা ১৯/১৮)