মৃতদেহের নিকটবর্তী হলেই ৭ দিন নাপাক, নাপাকি দূর করতে প্রাণি হত্যা, নাপাক দূর না করলে মানুষটিকেই নির্মূল করা ইত্যাদি প্রসঙ্গে বাইবেলের নির্দেশনা পাঠক মন দিয়ে পড়ুন। কোনো যুক্তি, মানবতা বা বিজ্ঞান খুঁজে পান কিনা দেখুন:
‘‘যদি কেউ কারো মৃতদেহ ছোঁয় তবে সে সাত দিন পর্যন্ত নাপাক অবস্থায় থাকবে। তৃতীয় ও সপ্তম দিনে তাকে পাক-সাফ করবার পানি দিয়ে নিজেকে পাক-সাফ করিয়ে নিতে হবে আর তারপর সে পাক-সাফ হবে। কিন্তু যদি সে তৃতীয় ও সপ্তম দিনে এভাবে নিজেকে পাক-সাফ করিয়ে না নেয় তবে সে নাপাকই থেকে যাবে। যদি কেউ কারও মৃতদেহ ছোঁয়ার পর নিজেকে পাক-সাফ করিয়ে না নেয় তবে সে মাবুদের আবাস-তাম্বু নাপাক করে। সেই লোককে বনি-ইসরাইলদের মধ্য থেকে মুছে ফেলতে হবে। তার গায়ে পাক-সাফ করবার পানি ছিটানো হয় নি বলে সে নাপাকই থাকবে এবং তার নাপাকী তার উপরে থেকে যাবে। কোন লোক তাম্বুর ভিতরে মারা গেলে এই আইন মানতে হবে- যারা সেই তাম্বুর ভিতরে ঢুকবে আর যারা ঐ তাম্বুতেই ছিল তারা সাত দিন পর্যন্ত নাপাক অবস্থায় থাকবে। সেখানকার যে সমস্ত পাত্র ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করা হয় নি বলে খোলা অবস্থায় ছিল সেগুলোও নাপাক হয়ে গেছে।
যুদ্ধে কিংবা স্বাভাবিক ভাবে মারা গিয়ে খোলা মাঠে পড়ে আছে এমন কাউকে যদি কেউ ছোঁয় তবে সে সাত দিন পর্যন্ত নাপাক অবস্থায় থাকবে। কেউ যদি মানুষের হাড় কিংবা কবর ছোঁয় তবে সে-ও সাত দিন পর্যন্ত নাপাক অবস্থায় থাকবে। এই সব নাপাক লোকদের নাপাকী থেকে পাক-সাফ কবরার উদ্দেশ্যে যে পশু পোড়ানো হয়েছে তার কিছু ছাই একটা পাত্রের মধ্যে রেখে তার উপর স্রোতের পানি ঢেলে দিতে হবে। তারপর পাক-সাফ অবস্থায় আছে এমন একজন লোক এসোবের কয়েকটা ডাল সেই পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে সেই তাম্বু, তার ভিতরকার জিনিসপত্র ও লোকদের উপর তা ছিটিয়ে দেবে। মানুষের হাড় কিংবা কবর কিংবা মেরে ফেলা বা মরে যাওয়া লোককে ছুঁয়েছে এমন লোকের উপরেও সেই পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। পাক-সাফ অবস্থায় থাকা লোকটা নাপাক অবস্থায় পড়া লোকের উপর তৃতীয় ও সপ্তম দিনে সেই পানি ছিটিয়ে দেবে এবং সপ্তম দিনে সে তাকে পাক-সাফ করবে। যাকে পাক-সাফ করা হচ্ছে তাকে তার কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলে পানিতে গোসল করে ফেলতে হবে এবং সেই দিন সন্ধ্যা থেকে সে পাক-সাফ হবে। নাপাক হওয়ার পর যদি কেউ নিজেকে পাক-সাফ করিয়ে না নেয় তবে তাকে তার সমাজের মধ্য থেকে মুছে ফেলতে হবে, কারণ নিজেকে পাক-সাফ না করে সে মাবুদের পবিত্র তাম্বু নাপাক করেছে। ... যে লোক এই পাক-সাফ করবার পানি ছিটাবে তাকেও তার কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কেউ এই পাক-সাফ করবার পানি ছোঁয় তবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাপাক অবস্থায় থাকবে। নাপাক অবস্থায় থাকা লোকটা যা কিছু ছোঁবে তা নাপাক হয়ে যাবে এবং তার ছোঁয়া জিনিস যে ছোঁবে সে-ও সন্ধ্যা পর্যন্ত নাপাক অবস্থায় থাকবে।’’ (শুমারী ১৯/১১-২২)
এ জাতীয় আরেকটা বিধান: ‘‘যতদিন পর্যন্ত সে নাসরীয় হিসেবে নিজেকে আলাদা করে রাখবে বলে কসম খেয়েছে ততদিন পর্যন্ত তার মাথায় ক্ষুর লাগানো চলবে না। ... এই সময় সে কোন মৃতদেহের কাছে যেতে পারবে না। মা-বাবা-ভাই-বোনদের কেউ মারা গেলেও তার নিজেকে নাপাক করা চলবে না, কারণ তার মাথায় রয়েছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে আলাদা হয়ে থাকবার চিহ্ন। ... যদি কেউ হঠাৎ তার সামনে মারা যায় এবং তাতে মাবুদের উদ্দেশ্যে রাখা তার চুল নাপাক হয়ে যায় তবে সাত দিনের দিন, অর্থাৎ তার পাক পবিত্র হবার দিন তাকে মাথা কামিয়ে ফেলতে হবে। আট দিনের দিন তাকে মিলন-তাম্বুর দরজায় ইমামের কাছে দু’টা ঘুঘু না হয় দু’টা কবুতর নিয়ে যেতে হবে। মৃতদেহের কাছে উপস্থিত থাকবার দরুন সে নাপাক হয়েছে বলে তার নাপাকী ঢাকা দেবার জন্য ইমাম একটা পাখী দিয়ে গুনাহের কোরবানী এবং অন্যটা দিয়ে পোড়ানো কোরবানী দেবে। .... এ ছাড়া দোষের কোরবানীর জন্য তাকে এক বছরের একটা ভোড়ার বাচ্চা আনতে হবে...।’’ (শুমারী/ গণনাপুস্তক ৬/৫-১২)